1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জঙ্গিরা এখন প্রতিশোধপরায়ণ!

সমীর কুমার দে ঢাকা
২৮ মার্চ ২০১৭

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অব্যহত অভিযানের মুখে জঙ্গিরা কি পিছু হঠছে? তারা কি দুর্বল হয়ে পড়ছে? নাকি আরো বেশি প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে উঠছে? সারাদেশে জঙ্গিদের তৎপরতা নিয়ে এমন বহু আলোচনা হচ্ছে৷ নিরাপত্তা বিশ্লেষকরাও বলছেন নানা কথা৷

Bangladesch Dhaka Bombenanschlag Polizei
ছবি: picture-alliance/Zuma/S. Kanti Das

নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন ডয়চে ভেলেকে বললেন, ‘‘আমাদের গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়াতে হবে৷ বর্তমানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী জঙ্গিদের প্রতিরোধের মধ্যে পড়ছে৷ ফলে তারা আগের চেয়েও বেপরোয়া৷'' জঙ্গিদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে – এ কথা মানতে রাজি নন এই নিরাপত্তা বিশ্লেষক৷ তিনি জানান, ‘‘শিক্ষিত ছেলেদের মধ্যে যারা হারিয়ে গেছে তারা তো এই পথেই আছে৷ নতুন নতুন কৌশল নিচ্ছে না৷ আসলে আমাদের খুঁজে বের করতে হবে জঙ্গিদের ‘রিক্রুটমেন্টটা' হচ্ছে কোথা থেকে৷ তাহলে আমরা মূল জায়গায় পৌঁছাতে পারব৷''

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন

This browser does not support the audio element.

আরেকজন নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশীদ ডয়চে ভেলেকে বললেন, ‘‘জঙ্গিরা আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে পড়ছে৷ সাম্প্রতিকালের তাদের তৎপরতা দেখে এমনটাই মনে হচ্ছে৷'' তাঁর কথায়, ‘‘সর্বশেষ যে দু'টি অপারেশন হলো, মূলত সিলেটে ও চট্টগ্রামে, সেখানে আমরা দেখেছি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে জঙ্গিরা অবস্থান করছে৷ ফলে বোঝা যাচ্ছে যে, তারা নতুন নতুন সদস্য আনতে না পেরে বিবাহের মাধ্যমে নতুন করে এগোনোর চেষ্টা করছে৷ নতুন সদস্য আসা অনেক কমে গেছে৷ ফলে দিন দিন তারা দুর্বল হচ্ছে৷ এখন আর তারা কোথাও দাঁড়াতে পারছে না৷ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান অব্যহত থাকলে তারা আরো দুর্বল হয়ে পড়বে বলে আমার মত৷''

এদিকে সিলেটের জঙ্গিবাড়ি আতিয়া মহলে সব ধরনের অভিযান শেষ করেছে সেনাবাহিনী৷ মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর পুরো এলাকা পুলিশের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ নিহত চারজন জঙ্গির মধ্যে একজন পুরুষের মৃত্যু হয়েছে আত্মঘাতী বিস্ফোরণে৷ একজন নারী নিজের গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করেছে৷ সেনাবাহিনী সোমবার ঐ দু'জনের লাশ পুলিশের কাছে হস্তান্তরের পর মঙ্গলবার ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে৷ বাকি দু'টি লাশ এখনও ঐ জঙ্গি আস্তানার ভেতরে রয়েছে৷ তবে দু'টি লাশের ময়নাতদন্তের পর কোতোয়ালি থানার ওসি সোহেল আহমদ জানান, ‘‘লাশ দু'টি চেনার উপায় নাই৷ অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবেই তাদের ময়নাতদন্ত হয়েছে৷ এখন লাশ দু'টি রাখা হবে হিমাগারে৷ এছাড়া পরিচয় নিশ্চিতের জন্য ডিএনএ নমুনা ও আঙুলের ছাপ রাখা হয়েছে৷''

মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশীদ

This browser does not support the audio element.

আতিয়া মহলে বিস্ফোরক শনাক্ত ও নিষ্ক্রিয় করতে মঙ্গলবার ড্রোনের ব্যবহার করছে সেনাবাহিনী৷ ড্রোনের সাহায্যে মঙ্গলবার আতিয়া মহলের ভেতরের ছবি তোলা হয়েছে৷ সেগুলো দেখে বিস্ফোরক শনাক্ত এবং নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে৷ সেনাবাহিনীর নিজস্ব ড্রোন থাকলেও, তারা সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বানানো ড্রোন এ কাজে ব্যবহার করেছে৷ ড্রোন ছাড়াও বিস্ফোরক শনাক্ত করতে অন্য প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানা গেছে৷ সেনাবাহিনী আগেই জানায়, বাড়িতে প্রচুর পরিমাণে বিস্ফোরক রয়েছে৷ তাই তাদের সাবধানে অভিযান চালাতে গিয়ে সময় বেশি লাগছে৷ মঙ্গলবারও সেখান থেকে চারটি বিস্ফোরকের শব্দ শোনা গেছে৷

মোগলাবাজার থানার ওসি খায়রুল ফজল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জানান, ‘‘সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে কাগজে-কলমে আতিয়া মহলটি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে৷ আমরা এখন বোম ডিসপোজাল ইউনিটের সুইপিংয়ের অপেক্ষায় আছি৷ এরপরই পুলিশ ভেতরে যাবে৷''

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার পঞ্চমদিনের মতো আতিয়া মহলে অভিযান অব্যাহত রাখে সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডোর টিমের সদস্যরা৷ এ দিন সেখানে কোনো গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যায়নি৷ আতিয়া মহল এলাকায় এখনও সবার প্রবেশ নিষিদ্ধ রয়েছে৷ বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে আতিয়া মহলের নীচতলায় জঙ্গিরা অবস্থান করছে বলে জানতে পারে ঢাকার কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট৷ শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে ঐ বাড়ির ভেতর থেকে গ্রেনেড ছোড়া হয়৷ পরে ঢাকা থেকে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট সোয়াতকে পাঠানো হয় ঘটনাস্থলে৷ তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সন্ধ্যা থেকে পুরো এলাকার নিয়ন্ত্রণে নেয় সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডো দল৷ সব মিলিয়ে জঙ্গি বিরোধী এই কমান্ডো অপারেশনে মারা গেছেন দুই পুলিশ কর্মকর্তা, চার জঙ্গিসহ ১০ জন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ