ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে একটি সংবাদের লিংক৷ নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ধানের শীষে ভোট দেওয়ায় স্বামী ও চার সন্তানকে বেঁধে রেখে গৃহবধুকে গণধর্ষণ৷ ধর্ষণ শব্দটি শুনলে যেকোনো নারীরই তীব্র অসহায় লাগে, অনিরাপদ অনুভূতি মাথা চাড়া দেয়৷
বিজ্ঞাপন
একবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকে এসে আমরা মানবিক হওয়ার পরিবর্তে পাশবিক হয়ে উঠছি৷ পাশবিক আচরণের যে ধারা আমাদের উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া, সেটি থেকে বের হতে পারিনি আমরা৷ আর সেটির বড় শিকার নারীর সম্ভ্রম৷ এর বড় প্রমাণ পূর্ণিমা শীল, পারুল কিংবা বগুড়ার সেই মা-মেয়ে৷
সুদূর অতীতে না গিয়ে আমরা ২০০১ সালের নির্বাচনেই যাই, পূর্ণিমা শীল আমাদের কাছে এক জ্বলন্ত উদাহরণ৷ ‘সব হিন্দুরা আওয়ামী লীগে ভোট দেয়' তাই বিএনপির কর্মী খলিল, লিটন, আলতাফদের কাছে ধর্ষণ করেই প্রতিহিংসা চরিতার্থ করা সহজ ছিল৷ সেটাই ঘটেছিল৷ আর আমাদের কানে বেজেছে পূর্ণিমার মায়ের আর্তনাদ, ‘বাবারা তোমরা একজন একজন করে আসো, আমার মেয়েটা ছোট ও মরে যাবে'৷ এই নারকীয় ঘটনার ১৭ বছর পর পূর্ণিমার সঙ্গে একদিন দীর্ঘসময় কাটানোর সুযোগ হয়েছিলো৷ তাকে জড়িয়ে ধরে আমি শুধু ‘দুঃখিত' উচ্চারণ করতে পেরেছিলাম৷ আমার ব্যক্তিগত অক্ষমতা হয়তো এতে খানিকটা প্রশমিত হয়েছিল৷ কিন্তু পূর্ণিমার ক্ষত গত ১৮ বছরে একই আছে৷ পূর্ণিমা হাসতে হাসতে বলেছিল, ‘আমার কিসের লজ্জা, এ লজ্জা রাষ্ট্রের৷'
কেন এত ধর্ষণ? কী করলে কমবে এ জঘন্য অপরাধ?
নারী স্বাধীনতা, নারী আন্দোলন, নারী অধিকার নিয়ে সর্বত্র আলোচনা, সমালোচনা, বক্তৃতা, অন্যদিকে বেড়ে চলেছে ধর্ষণের সংখ্যা৷ কিন্তু কেন? এর জন্য কারা দায়ী, কী করে ধর্ষণ কমিয়ে আনা সম্ভব? বা ধর্ষিতা নারীদের কী-ই বা করা উচিত?
ছবি: Advocate Tanbir ul Islam Siddiqui
নারী নির্যাতন সম্পর্কে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট
নারী নির্যাতন সম্পর্কে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নতুন রিপোর্ট বলছে, বিশ্বের প্রায় এক তৃতীয়াংশ নারী যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন অহরহ৷ তার ওপর পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধের যেসব পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে, সেটাও যথার্থ নয়৷ এছাড়া বিশ্বের মোট নারীর ৭ শতাংশ নাকি জীবনের যে কোনো সময় ধর্ষণের শিকার হয়েছেন৷
ছবি: Fotolia/DW
উন্নত বিশ্বের নারীরাও রেহাই পান না
ধর্ষণ শব্দটি শুনলেই মনে হয় এ ধরণের অপরাধ হয়ে থাকে শুধু অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশগুলোতে৷ আসলে কিন্তু মোটেই তা নয়৷ সমীক্ষায় দেখা গেছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে ১৫ বছর বয়স হওয়ার আগেই শতকরা ৩৩ জন মেয়ে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়৷ এমনকি জার্মানির মতো উন্নত দেশের নারীরাও যৌন নিগ্রহ বা ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত৷
ছবি: Fotolia/detailblick
ধর্ষিতা নারীরা জানাতে ভয় পান
জার্মানিতে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত বা ধর্ষিত নারীদের সঠিক পদ্ধতিতে ‘মেডিকেল টেস্ট’-এর ব্যবস্থা করে, এমন একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত স্ত্রী বিশেষজ্ঞ ডা. সোনিয়া পিলস বলেন, ‘‘ধর্ষণের শিকার নারী লজ্জায় এবং আতঙ্কে থাকেন৷ তিনি পুলিশের কাছে গিয়ে সে অভিজ্ঞতা বা ধর্ষক সম্পর্কে তথ্য জানাতে ভয় পান, কুণ্ঠা বোধ করেন৷ অনেকদিন লেগে যায় ধর্ষণের কথা কাউকে বলতে৷
ছবি: detailblick/Fotolia
ধর্ষককে ধরার জন্য দ্রুত ডাক্তারি পরীক্ষা
ধর্ষণের পর নারীদের কী করণীয় – এ বিষয়ে জার্মানির ধর্ষণ বিষয়ক নির্দেশিকায় কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে৷ যেমন ধর্ষণের পর একা না থেকে কারো সাথে কথা বলা৷ গোসল, খাওয়া, ধূমপান, বাথরুমে যাওয়ার আগে, অর্থাৎ ধর্ষণের চিহ্ন মুঝে না যাবার আগে ডাক্তারি পরীক্ষা করানো৷ এ পরীক্ষা করালে ধর্ষক কোনো অসুখ বা এইচআইভি-তে আক্রান্ত ছিল কিনা, তা জানা সম্ভব৷ নারীর শরীরে নখের আচড় বা খামচি থাকলে ধর্ষকের চিহ্ন সহজেই পাওয়া যায়৷
ছবি: DW/M. Ruettinger
যাঁরা ধর্ষণের শিকার, তাঁদের জন্য জরুরি বিভাগ
ধর্ষক যেসব জিনিসের সংস্পর্শে এসেছে, অর্থাৎ অন্তর্বাস, প্যাড এ সব তুলে রাখুন৷ ছবিও তুলে রাখতে পারেন৷ নিজেকে দোষী ভাববেন না, কারণ যে ধর্ষণের মতো জঘণ্যতম কাজটি করেছে – সেই অপরাধী, আপনি নন৷ জার্মানির বেশ কয়েকটি শহরের হাসপাতালে যৌন নির্যাতন বিষয়ক আলাদা জরুরি বিভাগ রয়েছে৷ তাছাড়া ধর্ষণ সংক্রান্ত নানা প্রশ্নের উত্তর জানতে রয়েছে ‘গেভাল্ট গেগেন ফ্রাউয়েন’, যেখানে ২৪ ঘণ্টাই টেলিফোন করা যায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
গ্রুপ থেরাপি
যৌন নিগ্রহ বা ধর্ষণের শিকার নারীদের মানসিক ও শারীরিক সমস্যা সমাধানের জন্য জার্মানিতে রয়েছে গ্রুপ থেরাপি, যার সাহায্যে নারীরা আবার সমাজে সহজভাবে মিশতে পারেন এবং তাঁদের জীবনে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনাটি সহজে ভুলে যেতে পারেন৷
ছবি: dpa
সবচেয়ে বেশি যৌন অপরাধ হয় বাড়িতেই
ভারতের কোথাও না কোথাও প্রতি ২২ মিনিটে একটি মেয়ে ধর্ষণের শিকার হচ্ছে৷ তাই আদালতের নির্দেশে ভারতের পুলিশ বিভাগ এক সমীক্ষা চালিয়েছিল দিল্লির ৪৪টি এলাকায়৷ চলতি বছরের গত আট মাসে ২,২৭৮টি ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন এবং যৌন অপরাধের তদন্তের ফলাফলে দেখে গেছে: ১,৩৮০টি ক্ষেত্রে অভিযুক্তরা হলেন পরিবারের লোকজন এবং পরিচিতজনেরা৷ অর্থাৎ নিজের বাড়িতেও মেয়েরা নিরাপদ নয়!
ছবি: Fotolia/Miriam Dörr
সঠিক বিচার চাই
২০১৩ সালের ১৬ই ডিসেম্বর দিল্লিতে গণধর্ষণ ঘটনার পর, ভারতে ঘটা করে বিচার বিভাগীয় কমিশন বসিয়ে ধর্ষণ, যৌন নিগ্রহ দমনে আইন-কানুন ঢেলে সাজানো হয়৷ শাস্তির বিধান আরো কঠোর করা হয়৷ কিন্তু তাতে যৌন অপরাধের সংখ্যা না কমে বরং বেড়েছে৷
ছবি: picture alliance/abaca
বাংলাদেশে ধর্ষণের শিকার
বাংলাদেশে জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে ২০১১ সালে ৬২০ জন, ২০১২ সালে ৮৩৬ জন, ২০১৩ সালে ৭১৯ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন৷ চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত, অর্থাৎ মাত্র ছ’মাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৪৩১টি এবং এর মধ্যে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৮২ জন৷ তাছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে অপহরণ করে ধর্ষণ এবং পরে হত্যার ঘটনাও অনেক বেড়েছে৷
ছবি: DW
নারীর পোশাকই কি ধর্ষণের জন্য দায়ী?
বাংলাদেশের একজন পুলিশ কর্মকর্তা একটি মার্কিন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘‘বাংলাদেশের নারীরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বেপরোয়াভাবে, বেপর্দায় চলাফেলার কারণে ধর্ষণের শিকার হন৷’’ পুলিশের কর্মকর্তার দাবি, ধর্ষণের দায় প্রধানত নারীদের৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘বখাটে ছেলেরা তো ঘোরাফেরা করবেই৷’’ এ কথা শুধু পুলিশ কর্মকর্তার নয়, ভারত-বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থাই এরকম৷ ধর্ষণ বন্ধ করতে এই মধ্যযুগীয় চিন্তা, চেতনার পরিবর্তন প্রয়োজন৷
ছবি: AFP/Getty Images/M. Uz Zaman
ছোট বেলা থেকে সচেতন করতে হবে
ধর্ষণ সম্পর্কে ছোটবেলা থেকে সঠিক ধারণা দিলে স্বাভাবিকভাবে ধর্ষণের সংখ্যা কমবে৷ তাছাড়া পাঠ্যপুস্তকেও বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া উচিত৷ ধর্ষিতা নারীকে শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণার শিকার হতে হয়, সে সম্পর্কেও সচেতনতা দরকার৷ অনেকে যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন৷ গোটা সমাজও নারীকেই দোষ দিয়ে থাকে৷ ডাক্তারি বা মনস্তাত্ত্বিক সাহায্য ছাড়াও প্রয়োজন পরিবার, বন্ধুবান্ধব ও সমাজের বন্ধুবৎসল আচরণ৷
ছবি: Advocate Tanbir ul Islam Siddiqui
11 ছবি1 | 11
পূর্ণিমাদের সাজানো সংসার ছিল, বোনেদের বিয়ে হয়েছিল৷ বোন ধর্ষিত হয়েছে এই অপরাধে ফিরতে হয়েছিল পূর্ণিমার বোনদের৷ এলাকা ছাড়া হতে হয়েছিল পরিবারকে৷ এতদিনের সাজানো সংসার ছেড়ে পূর্ণিমার মাকে শুধু বেঁচে থাকার লড়াইয়ে নামতে হয়েছিল৷ সব প্রতিকূলতা ছাপিয়ে পূর্ণিমা আজ সমাজের মুখে থুতু দিয়ে উঠে দাঁড়িয়েছে কিন্তু সমাজ কী সংশোধিত হয়েছে৷ আজও পূর্ণিমাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হেনস্থা হতে হয়, কারণ তিনি ধর্ষিতা হয়েছিলেন৷ তাঁর ছবি, ফোন নম্বর ব্যবহার করে খোলা হয় পর্ন পেইজ৷ তাঁর দোষ একটাই, ধর্ষিত হয়ে তিনি সিমি বেগম বা সীমাদের মতো মরে যাননি, বেঁচে আছেন৷
এই ধারাবাহিকতায় নিকট অতীত ঘাটলে পাই বগুড়ার ঘটনা৷ দলীয় ক্যাডার দিয়ে একজন কিশোরীকে তুলে নিজের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে৷ কয়েকদিন পর আবারো ক্যাডার দিয়ে বাড়ি থেকে তুলে এনে ধর্ষণের শিকার মেয়েটি ও তার মায়ের মাথার চুল কামিয়ে দেয়া হয়েছে৷ এরপর মা মেয়ে বাড়ি ছাড়া, তিন মাস কাটাতে হয়েছে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে৷
শুধু রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী বলে চাইলেই ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটানো যায়? আর রাজনৈতিক নেতা কর্মীরা ধর্ষণকেই কেনো প্রতিহিংসার বড় অস্ত্র হিসেবে লালন করেন এই প্রশ্নের কোনও ব্যাখ্যা বা জবাব কখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি৷
মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের সঙ্গে আমাদের পাওনা ২ লাখ বীরাঙ্গনা৷ যুদ্ধের ময়দানে লড়াই করার পাশাপাশি নিজেদের পৌরুষত্বের জোর পরীক্ষা করে বীরাঙ্গনাদের নারকীয় দুঃসহ জীবন ‘উপহার' দিয়ে গেছে সেই পাষণ্ডরা৷ স্বাধীন দেশে তার পুনরাবৃত্তি চলছেই৷
সৌদি আরবে ধর্ষণের শিকার নারী
02:13
নিজ দেশের মানুষই কেবল ভোটাধিকার প্রয়োগের জের ধরে চার সন্তানের সামনে গণধর্ষণ করতে পারে৷ সুবর্ণচরের সেই নারীর স্বামীর দেওয়া বয়ান শোনার সৌভাগ্য বা দুর্ভাগ্য যেটাই বলেন সেটা হয়েছিল৷ অসহায় সে পুরুষ নিজ স্ত্রীকে ধর্ষণের হাত থেকে রক্ষা করতে পারেননি৷ নিম্নবিত্ত এই পরিবারটির বাস্তবতাটি কী কেউ খতিয়ে দেখছি! কোথায় যাবেন তারা? আমাদের সমাজ কী তাকে মেনে নেবে? বিয়ে হবে সেই নারীর সন্তানদের? পূর্ণিমাকে যেমন একঘরে করা হয়েছিল, তেমনটি হবে না? বাস্তবে তেমনটিই হবে৷ আমাদের সামাজিক ও কূপমণ্ডুক বাস্তবতা ধর্ষিতাকে প্রতিনিয়ত ধর্ষণ করবে আচরণ দিয়ে৷ আর প্রতিহিংসা চরিতার্থের যেসব উদাহরণ রেখে যাচ্ছে আমাদের তথাকথিত রাজনীতিকরা, সেটিই চর্চিত হবে বারংবার৷
পূর্ণিমা বা পারুলদের খবর আমাদের পর্যন্ত এসেছে৷ কিন্তু আরও অসংখ্য ধর্ষণের ঘটনা কেবল ধর্ষকের সামাজিক ও রাজনৈতিক দাপটের জোরে প্রকাশিত হয় না৷ ধর্ষণের মামলা হয় না অধিকাংশ ক্ষেত্রেই৷
২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে নারী ও শিশু ধর্ষণ সংক্রান্ত ১৭ হাজার ২৮৯টি মামলা হয়েছে৷ এসব মামলায় ভিকটিমের সংখ্যা ১৭ হাজার ৩৮৯ জন৷ এর মধ্যে ১৩ হাজার ৮৬১ জন নারী ও তিন হাজার ৫২৮জন শিশু৷ তিন হাজার ৪৩০টি ধর্ষণ মামলার বিচার সম্পন্ন হয়েছে৷ নিষ্পত্তি হওয়া মামলায় ১৭ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ৮০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ৫৭৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজাসহ ৬৭৩ জনকে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে৷
এবার আসুন পরিসংখ্যানে আসি৷ প্রায় সাড়ে তিন হাজার ধর্ষণ মামলার ঘটনায় সাজা পেয়েছেন মাত্র এক হাজার ৩৪৬ জন৷ অর্থাৎ অর্ধেকের বেশি মামলা ধোপে টেকেনি৷ ধর্ষিতা প্রমাণ দিতে পারেননি তিনি ধর্ষিত হয়েছিলেন৷ সুতরাং সাজা হয়নি আসামির৷
আসামি ধর্ষণ করেনি এমন প্রমাণের ভিত্তিতেই ছাড়া পেয়ে গেছে৷ ধর্ষিতা কিন্তু সমাজ ও সংসারের চোখে ধর্ষিতা হয়েই বেঁচে আছেন৷ কোথায় কেমন আছেন সেই তথ্য আমাদের কাছে নেই৷ হয়তো শিগগিরই রুহুল আমিন প্রমাণ করতে পারবেন তিনি ও তার সঙ্গীরা পারুলের গণধর্ষণের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না৷ কিন্তু পারুলের যে তকমা লেগে গেছে৷ সেটি তো আর মুছবে না৷
তবে যতগুলো ধর্ষণের ঘটনা ঘটে তার প্রায় ৭০ শতাংশ বিচারের দ্বার পর্যন্ত আসে না৷ আমাদের সমাজের বিভিষীকাময় আচরণের কাছে বেশিরভাগ পিতামাতা ও স্বজন লুকিয়ে ফেলেন ধর্ষণের ঘটনা৷ এমনটাই ঘটে এসেছে৷ প্রকাশ্য কোনও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে হয়তো এভাবেই লুকিয়ে থাকতে হবে ধর্ষিতাকে৷ আর প্রতিহিংসা চরিতার্থের অস্ত্র হিসেবে ধর্ষণ পুরুষদের প্রথম পছন্দ হিসেবে বিবেচিত হবে৷ কারণ এই অপরাধে তো শাস্তির নজির নেই৷
আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷