প্রতি বুথে আধাসেনা ছাড়াই পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত ভোট?
পায়েল সামন্ত কলকাতা
৪ জুলাই ২০২৩
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ৮২২ কোম্পানি বাহিনী মোতায়েন করা হবে পঞ্চায়েত নির্বাচনে৷ কিন্তু প্রতি বুথে আধাসেনা থাকবে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়৷ সন্ত্রাসের আশঙ্কায় বিরোধীরা৷
বিজ্ঞাপন
পঞ্চায়েতের দিন ঘোষণার পর বাহিনী নিয়ে বিরোধীদের সঙ্গে রাজ্য সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের লড়াই তুঙ্গে উঠেছে৷ উচ্চ আদালতে আইনি লড়াইয়ের পর বাহিনীর ব্যবহার নিশ্চিত হয়েছে৷ মোট ৮২২ কোম্পানি বাহিনী পাঠানোর ব্যাপারে সোমবারই পাকা কথা দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক৷ কিন্তু কমিশনের নির্দেশিকায় বোঝা যাচ্ছে না, প্রতি বুথে আধাসেনা থাকবে কি না৷
কমিশন জানিয়েছে, প্রতি বুথে সশস্ত্র বাহিনী থাকবে৷ রাজ্যে ৪৪ হাজার ৩৮২টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ৬১ হাজার ৬৩৬ বুথ রয়েছে৷ এর মধ্যে ৪ হাজার ৮৩৪ অর্থাৎ আট শতাংশের কম বুথকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করেছে কমিশন৷ এই বুথগুলিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে ধরে নেয়া যায়৷ বাকি ৯২ শতাংশ বুথে কি সশস্ত্র পুলিশ থাকবে, আধাসেনা নয়?
কমিশনের আয়োজন
আগামী শনিবার ৮ জুলাই ভোটগ্রহণ৷ কমিশনের বিচারে কোচবিহারে স্পর্শকাতর বুথের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, ১৩ শতাংশের উপরে৷ ক্যানিং, ভাঙড়, বাসন্তী কুলতলি অশান্ত হলেও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় স্পর্শকাতর বুথ ৯ শতাংশের কম৷ মুর্শিদাবাদের ক্ষেত্রে তা ১০ শতাংশের নীচে৷
কমিশন জানিয়েছে, ভোটের দিন সব বুথের ১০০ মিটারের মধ্যে থাকবে ১৪৪ ধারা৷ সূত্রের খবর, স্পর্শকাতর বুথে থাকবে বাড়তি বাহিনী৷ রাজ্য ৭০ হাজার পুলিশ দিচ্ছে বলে জানানো হয়েছে৷ কিন্তু পুলিশ এই রাজ্যের না অন্য রাজ্যের, তা নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে৷
প্রবীণ সাংবাদিক দেবাশিস দাশগুপ্ত ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘স্পর্শকাতর বুথ চিহ্নিত করলেই কমিশনের দায়িত্ব ফুরিয়ে যায় না৷ বাহিনী অন্যত্র পাহারায় থাকলে বুথে অবাধ ভোটগ্রহণ নিশ্চিত করা যাবে না৷ প্রতি বুথে আধাসেনা দেয়ার দাবি এ কারণেই তুলেছে বিরোধীরা৷’’
ভোটকর্মীদের উদ্বেগ
বিরোধীদের পাশাপাশি সরকারি কর্মীদের যৌথ মঞ্চ প্রতি বুথে আধাসেনা মোতায়েনের দাবি তুলেছে৷ এরাই ভোটকর্মী হিসেবে নিযুক্ত থাকবেন গ্রামে গ্রামে৷ রাজ্য নির্বাচন কমিশনে দরবার করেছে মঞ্চ৷ কর্মীদের বিভিন্ন সংগঠন তাই নিরাপত্তা নিয়ে অনিশ্চয়তায়৷
শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ভোটের আগের রাতে এসে আমাদের শাসানো হয়, ২০০টা ব্যালট দিন৷ ভোটের দিন বোমাবাজি করে ছাপ্পা ব্যালট ভরে দেয়া হয় বাক্সে৷ এ কাজে সাহায্য না করলে হুমকির মুখে পড়েন ভোটকর্মীরা৷’’
মঞ্চের বক্তব্য, প্রাণ বাঁচাতে আপস করেন ভোটকর্মীরা৷ নইলে আক্রমণের মুখে পড়েন৷ অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট হয়েছে, এই মন্তব্য লিখতে বাধ্য করা হয়৷ এই পরিস্থিতি থেকে রেহাই পেতে প্রতি বুথে বাহিনী চাইছে যৌথ মঞ্চ৷
বগটুইয়ে মুসলিম নারী প্রার্থী দিলো সব দল
বগটুই গ্রাম৷ ২০২২ সালে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছিল ১০ জনকে৷ সেখানে পঞ্চায়েতে সব দলের প্রার্থী মুসলিম নারী৷
ছবি: Satyajit Shaw/DW
তৃণমূলের প্রার্থী রুবিনা বিবি
গতবছর তৃণমূলের নেতা ভাদু শেখকে খুন করা হয়। তার জেরে বেশ কয়েকটা বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। ১০ জন মারা যান। বীরভূমের সেই বগটুই গ্রামে তৃণমূল প্রার্থী হলেন রুবিনা বিবি। গ্রামে ঘুরলেই দেখা যাবে তার পোস্টার ও তৃণমূলের পতাকা-সহ কর্মীদের।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
রুবিনার স্বামীর যা বললেন
রুবিনার স্বামী হীরালাল শেখের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, বগটুইকে তিনি আদর্শ গ্রাম হিসাবে গড়ে তুলবেন। আমরা সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি ও করব। আর তৃণমূলের নেতারা জানাচ্ছেন, তারা সবসময় নিহত মানুষের পরিবারের পাশে আছেন।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
বিজেপি-র প্রার্থী মেরিনা বিবি
বগটুই গ্রামে বিজেপি প্রার্থী করেছে নিহত পরিবারের সদস্য মেরিনা বিবিকে। তিনি আবার ভাদু শেখের হত্যার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে ধৃত পলাশ শেখের মা। ভাদুর হত্যার পর মেরিনা বিবির বাড়িতেও আগুন দেয়া হয়। পরিবারের অনেকে মারা যান। তৃণমূল বলছে, সিবিআইয়ের হাত থেকে বাঁচতেই প্রার্থী হয়েছেন মেরিনা বিবি। মেরিনা বিবি ডিডাব্লিউকে বলেছেন, বগটুইতে মনোনয়নপত্র পেশ করতে কোনো অসুবিধা হয়নি।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
সীমা খাতুনও বিজেপি-র প্রার্থী
মেরিনা বিবি বিজেপি-র প্রার্থী হয়েছেন গ্রাম পঞ্চায়েতে। আর পঞ্চায়েত সমিতিতে বিজেপি-র প্রার্থী হলেন সীমা খাতুন। ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেছেন, নারী, বিশেষ করে বৃদ্ধা ও বাচ্চা মেয়েদের জন্য তিনি কাজ করতে চান। দুর্নীতি ছাড়া কাজ করে দেখাতে চান। সীমাও নিহতের পরিবারের সদস্য। প্রিয়জনকে হারাবার দুঃখ তাকে এখনো তাড়া করে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
কী বলছেন সীমার স্বামী
সীমার স্বামীর নাম কিরণ। তিনি বলেছেন, এখানে আগে বিজেপি ছিল না। আমরাই বিজেপি-কে এনেছি। আমি চাইছি, সীমা জিতুক। আমার পিসি মেরিনা বিবি ও স্ত্রী সীমা খাতুন যাতে জেতে তার চেষ্টা করে যাচ্ছি।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
সিপিএমের প্রার্থী গেনেহার বিবি
সিপিএম দাঁড় করিয়েছে গেনেহার বিবিকে। তিনি ডিডাব্লিউকে বলেছেন, এখনো পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দিতে বা প্রচার করতে কোনো অসুবিধা হয়নি। পরে কী হবে, তা বলতে পারছেন না। তার আক্ষেপ, গ্রামটা পুরো শেষ হয়ে গেল। যারা মারলো এবং যাদের মারলো সবাই শাসক দলের। তাই তিনি সিপিএমের হয়ে দাঁড়িয়েছেন।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
রেজাউল হকের কথা
গ্রামে আর হিংসা চান না রেজাউল। বগটুইয়ের এই বাসিন্দার দাবি, গ্রামে এখন শান্তি আছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে তিনি ভোটটা তৃণমূলকেই দিতে চান। কারণ, তৃণমূল গরিবদের অনেক সাহায্য করে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
নাসিমুদ্দিনের পছন্দ সিপিএম
বগটুইয়ের নাসিমুদ্দিন শেখ আবার সিপিএম প্রার্থীর জয় চাইছেন। তিনি জানিয়েছেন, তৃণমূল একের পর এক দুর্নীতিতে জড়িত বলে অভিযোগ উঠছে। সবই টিভিতে দেখছেন তিনি। তাছাড়া, গরিবেরও আর উন্নতি হলো কোথায়? তাই তার পছন্দ সিপিএম।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
পোড়া বাড়ির জায়গায়
এখানে বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছিল। মানুষ আগুনে ঝলসে মারা গেছিলেন। এখন সেখানে নতুন বাড়ি উঠেছে। জীবন তো থেমে থাকে না।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
এখনো পোড়ার চিহ্ন
তবে সেই পোড়ানোর চিহ্ন এখনো আছো। পোড়া বাঁশ, হাওয়াই চটি সেই ভয়ংকর দিনের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
পুলিশ আছে
বগটুইতে এখনো পুলিশ আছে। কোনোরকম ঝুঁকি নেয়া হয়নি। উত্তেজনা যাতে আর না হয়, হলেও সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ হস্তক্ষেপ করতে পারে, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
বাধা দেয়া হয়নি
বগটুইতে অন্তত বিরোধীদের মনোনয়নপত্র পেশ করতে, প্রাচর করতে এখনো পর্যন্ত বাধা দেয়া হয়নি। এই কথাটা বারবার বলছেন সিপিএম, বিজেপি-র প্রার্থী ও কর্মীরাও।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
12 ছবি1 | 12
ধাক্কা আইএসএফের
ভাঙরের আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী আবেদন করেছিলেন বাহিনী পর্যাপ্ত না থাকায় ভোট একাধিক পর্যায়ে নেওয়া হোক৷ যদিও পরবর্তীতে ৮২২ কোম্পানি আধাসেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র৷ সোমবার কলকাতা হাই কোর্ট নওশাদের আবেদন খারিজ করে দেয়৷ একই দাবিতে মামলা করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী৷
দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপদ্রুত ভাঙড় এলাকায় আইএসএফের ৮২ জন প্রার্থীর মনোনয়ন ফের দাখিলের আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছে৷ বিচারপতি অমৃতা সিনহার সিঙ্গল বেঞ্চ এই প্রার্থীদের মনোনয়ন নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছিল কমিশনকে৷ এর বিরুদ্ধে মামলা হয় হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে৷ সোমবার বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ ফের মনোনয়নের নির্দেশ বাতিল করে দিয়েছে৷
অত্যাধিক মামলায় রুষ্ট
এবারের পঞ্চায়েত ভোট ঘিরে অভূতপূর্ব আইনি লড়াই চলছে৷ নির্বাচনের চারদিন আগেও মামলা দায়ের হচ্ছে কলকাতা হাই কোর্টে৷ এ নিয়ে সোমবার উষ্মা প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম৷ একই বিষয়ে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে ভোটের মুখে৷ নির্বাচন বাতিলের আর্জিও জমা পড়েছে আদালতে৷ এমনকী ৩৫৬ ধারা প্রয়োগের আবেদন রয়েছে মামলায়৷
এ সবের জেরে প্রধান বিচারপতি যে রুষ্ট, তা তিনি গোপন করেননি৷ আইনজীবীদের উদ্দেশে সোমবার তিনি বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে অনেক মামলা দায়ের করা হয়েছে৷ বলতে বাধ্য হচ্ছি, আপনাদের প্রত্যেকের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে৷ প্রত্যেকে হেডলাইনে আসতে চান৷’’
এতে অন্য মামলার শুনানি করতে পারছে না আদালত৷ প্রধান বিচারপতির মুখেই শোনা যায় আবেদন, ‘‘দয়া করে এ জন্য আদালতকে ব্যবহার করবেন না৷ দয়া করে আমাদের মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করবেন না৷’’
দেবাশিস দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘এ বার অধিকাংশ মামলায় নির্দেশ গিয়েছে সরকারের বিরুদ্ধে৷ শেষদিকে তারা কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে৷ কিন্তু আদালত নয়, কমিশন নয়, শেষ বিচার জনতার হাতেই৷’’
নদী বাঁচাতে ভোট চাইছেন তারক
পঞ্চায়েত ভোটের উত্তাপে তেতে আছে পশ্চিমবঙ্গ। সহিংসতার আবহে এই পঞ্চায়েত ভোটেই দেখা গেল অন্যরকম ছবি।
ছবি: Subrata Goswami/DW
অন্য ছবি
পঞ্চায়েত ভোটের উত্তাপে তেতে আছে পশ্চিমবঙ্গ। সহিংসতার আবহে এই পঞ্চায়েত ভোটেই দেখা গেল অন্যরকম ছবি। নদী বাঁচানোর বার্তা নিয়ে ভোটে লড়াইয়ের ছবি।
ছবি: Subrata Goswami/DW
জলঙ্গি বাঁচাতে
জলঙ্গি নদী বাঁচানোর বার্তা নিয়ে পঞ্চায়েত ভোটের ময়দানে নেমেছেন কৃষ্ণনগর-২ ব্লকের মায়াকোলের বাসিন্দা তারক ঘোষ। জেলা পরিষদের ২৪ নম্বর আসন থেকে নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন তিনি।
ছবি: Subrata Goswami/DW
দূষিত নদী
তারকের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন পরিবেশপ্রেমীরা। তারা জানাচ্ছেন, প্রতি বছর বর্ষার সময়ে বৃষ্টিপাতের কারণে জলঙ্গি নদী ও সুতির খালের জল বাড়তে থাকে। সুতির খালের জল ঢুকে দূষিত হয় জলঙ্গি নদী।
ছবি: Subrata Goswami/DW
কালো জল
বর্ষাকালের শুরুতে কিছুটা হলেও বেড়েছে জলঙ্গি নদীর জল। কিন্তু সেই জলের রঙ কালো। আর সেই কারণে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে নদী-সংলগ্ন এলাকার কৃষিজীবি ও মৎস্যজীবীদের। তারা প্রশ্ন তুলেছেন, প্রতি বছর একই ঘটনা ঘটলেও তেহট্ট ২ ও জেলা প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই কেন?
ছবি: Subrata Goswami/DW
দূষণরোধে কাজ হয় না
নদীকর্মী দেবাঞ্জন বাগচি বলেন, “জলঙ্গির দূষণ নিয়ে প্রশাসনের কাছে বহুবার জানানো হলেও কোনো কাজ হয়নি। ভোটের আগে প্রার্থীরা নদী সংস্কারের অঙ্গীকার করে গেলেও ভোট মিটলে কাউকে পাওয়া যায়নি, তাই এবার নিজেদেরই প্রার্থী দিতে হয়েছে।”
ছবি: Subrata Goswami/DW
উদ্যোগীা পরিবেশকর্মীরা
নির্দল প্রার্থী তারককে নিয়ে অঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় প্রচার চালাচ্ছেন দেবাঞ্জন, কৌশিকের মত পরিবেশকর্মীরা, যারা স্বেচ্ছায় এগিয়ে এসেছেন জলঙ্গিকে বাঁচাতে। কৌশিক নিজের চিকিৎসক পেশার ব্যস্ততার মাঝেও সময় বের করছেন শুধুমাত্র নদী বাঁচানোর তাগিদে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
মরে যায় মাছ
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পচা-কালো জল জলঙ্গি নদীতে প্রবেশ করতে শুরু করার ফলে নদীর রং কালো হয়ে গিয়েছে। এই কালো দূষিত জলের কারণে আগের মতো এবারেও বিভিন্ন প্রজাতির মাছ মরার আশঙ্কা করছেন মৎস্যজীবীরা। বছরভর মাছ বিক্রি করে যাঁদের সংসার চলে, মাছ মরে গেলে রুটিরুজিতে টান পড়বে তাঁদের, আশঙ্কা মৎস্যজীবীদের।
ছবি: Subrata Goswami/DW
প্রতীক দামামা
‘দামামা’ প্রতীকে লড়বেন পেশায় রঙের মিস্ত্রি তারক। স্থানীয় মানুষ মনে করছেন, নদী বাঁচানোর এই অভিনব উদ্যোগ একপ্রকার বিরল।যা সকলের নজর কেড়েছে। রাজনৈতিক কচকচানির বাইরে গিয়ে শুধুমাত্র পরিবেশ রক্ষার তাগিদ থেকে একজন মানুষ ভোটের ময়দানে নেমেছেন, এই দৃষ্টান্ত খুব একটা দেখা যায়নি আগে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
দূষণের জন্য চাষ ছেড়েছেন
তারক জানালেন, আগে তিনি চাষ আবাদই করতেন। নদীর দূষণ প্রভাব ফেলতে শুরু করেছিল তাতে। তাই একপ্রকার বাধ্য হয়েই তিনি রঙমিস্ত্রির পেশা অবলম্বন করেন। যে কারণে তাকে জেলার বাইরেও যেতে হয়। তারকবাবু বলেন, “জলঙ্গি নদীকে বাঁচাতে আমরা সবসময় চেষ্টা করি। মানুষকে সচেতনও করে এসেছি, কিন্তু এবার ভোটে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
ছবি: Subrata Goswami/DW
প্রভাব ফেলবে?
নদী বাঁচানোর জন্য ভোটের ময়দানে তারক। পরিবেশকর্মীদের সঙ্গে সমানে প্রচার করছেন তিনি। তার এবং পরিবেশকর্মীদের এই যুদ্ধ কি মূলধারার রাজনীতিকে চাপে ফেলতে পারে?