1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রতীক বরাদ্দের আগেই পাঁচ সিটিতে পোস্টার ব্যানার শোডাউন

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২৭ এপ্রিল ২০২৩

এখন পর্যন্ত মনোনয়নপত্র দাখিলের সময়ই শেষ হয়নি দেশের পাঁচ সিটি নির্বাচনে, হয়নি চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ও প্রতীক বরাদ্দ। প্রতীক বরাদ্দের পর প্রচার শুরুর আইনি বিধান আছে।

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবিছবি: DW/M. Mostafigur Rahman

কিন্তু কে শোনে কার কথা, কে মানে আইন। প্রার্থীদের সালাম আর দোয়ার পোস্টারে ছেয়ে গেছে পাঁচ সিটি এলাকা। চলছে শোডাউন। আর এতে এগিয়ে আছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরাই।

নির্বাচন কমিশনের হুমকিতেও কাজ হচ্ছে না। নির্বাচন  কমিশনার মো. আলমগীর বলেছেন, "প্রতীক বরাদ্দ যেদিন হয়, সেদিন থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু করা যাবে। কেউ এই আচরণবিধি না মানলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরইমধ্যে পাঁচ সিটিতে চিঠি দেয়া হয়েছে প্রচার বন্ধের জন্য।”

ঈদের আগে থেকেই এই প্রচার শুরু হয়েছে। এরমধ্যে পোস্টার ছাড়াও আছে ব্যানার ও ফেস্টুন। ঈদ শুভেচ্ছা, দোয়া এবং সালামের নামে এইসব পোস্টার ছাপা হয়েছে প্রার্থীদের ছবি দিয়ে। ব্যানার ফেস্টুনেও একই কৌশল। মেয়র প্রার্থী থেকে কাউন্সিলর কেউ বাদ নেই।

ঈদের সময় জাকাত, ফিৎরা আর ঈদ উপহারের নামে যে শোডউন এবং প্রচার শুরু হয়েছে তা এখনো চলছে। এখন চলছে ঈদ পরবর্তী পুনর্মিলনী, ঈদ পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময়। নানা অনুষ্ঠানের নামে নির্বাচনী প্রচার। আর এতেও আছে টাকার ছড়াছড়ি।

গাজীপুরে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খানের টঙ্গীর বাসার সামনে বিশাল একটি নৌকা রাখা হয়েছে।  সকাল ৮টার পর থেকে বিভিন্ন থানা এবং ওয়ার্ডের নেতা-কর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। সারাদিন চলে শোডাউন। দোয়া চেয়ে, সালাম জানিয়ে তার পোস্টার বেশ চোখে পড়ছে। অন্যান্য প্রার্থীরাও পোস্টার লাগিয়েছেন। বৃহস্পতিবার আজমত উল্লাহ খান মনোনয়নপত্র দাখিল করতে গিয়েও শোডউন করে আচরণ বিধি লঙ্ঘন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সর্বোচ্চ পাঁচজন লোক নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার নিয়ম থাকলেও তিনি শতাধিক লোক নিয়ে শোডাউন করে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

‘আর্থিক লেনদেন হলে তা নির্বাচনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে’

This browser does not support the audio element.

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) গাজীপুর মহানগরীর সভাপতি আমাজাদ হোসেন বলেন, "এই পরিস্থিতি যদি চলতে থাকে। সালাম ও শুভেচ্ছো বিনিময়ের নামে আর্থিক লেনদেন হলে তা সুষ্ঠু নির্বাচনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। নির্বাচন কমিশন আগে থেকেই সক্রিয় না থাকায় পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন ও শোডাউনের সুযোগ নিয়েছেন অনেক প্রার্থী। এতে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট হয়। তবে এখন নির্বাচন কমিশন সক্রিয় হয়েছে।” আজমত উল্লাহ খান প্রসঙ্গে তিনি বলেন,"প্রার্থীদের আচরণ বিধি মানা উচিত।”

খুলনা সিটি নির্বাচনকে ঘিরে নগরীর অলিগলিতে ছেয়ে গেছে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের নির্বাচনী পোস্টারে।   একজন কাউন্সিলর প্রার্থী প্রায় চার হাজার মানুষের মাঝে ঈদ উপহার হিসেবে শাড়ি ও লুঙ্গি এবং প্রায় ৫০০ পরিবারের মাঝে এক হাজার টাকা মূল্যমানের ঈদসামগ্রী  বিতরণ করেছেন।  আরেকজন চার হাজার মানুষের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ করেছেন। ভোট চেয়ে প্রচার শুরু করেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।

বরিশাালেও  আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়সহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যানার ফেস্টুনে ভরে গেছে। লাগানো হয়েছে পোস্টার। এখন নির্বাচনী আমেজ বিরাজ করছে। জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পিছিয়ে নেই।

বরিশাল আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মানবেন্দ্র বটব্যাল বলেন, "এগুলো আধিপত্য বিস্তারের জন্য করা হয়েছে। নগরীর সৌন্দর্যও নষ্ট হচ্ছে। নির্বাচন কশিমনের আগে থেকেই এসব ব্যাপাারে শক্ত অবস্থানে যাওয়া উচিত ছিল। দ্রুত এগুলো অপসারণের  ব্যবস্থা করা উচিত।”

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠে নামেন।

সিলেটের দেয়ালে দেয়ালে শোভা পাচ্ছে ‘অমুককে কাউন্সিলর' পদে দেখতে চাই। শুভেচ্ছান্তে অমুক সমর্থক গোষ্ঠী। আছে মেয়র প্রার্থীদের পোস্টার।

‘বিষয়গুলো দেখার জন্য আমরা ম্যাজিষ্ট্রেট নিয়োগ করেছি’

This browser does not support the audio element.

রাজশাহীতে  নির্বাচনী প্রচারের অংশ হিসেবে ঈদের আগে নগরবাসীকে ঈদ শুভেচ্ছা জানিয়ে রাজশাহীর ৩০টি ওয়ার্ডে প্রায় ২০ হাজার ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টার লাগিয়েছে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।  ঈদের আগে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, কৃষকলীগ, আওয়ামী লীগের মহল্লা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে ঈদ শুভেচ্ছা বাবদ দিয়েছেন সম্মানী। ঈদের পর থেকে প্রচার চালানোর জন্য দলীয় নেতাকর্মীসহ নগরীর বিভিন্ন নাগরিক ফোরাম, এসোসিয়েশন ও সুশীলদের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন মেয়র প্রার্থী। সেইসঙ্গে চলেছে নির্বাচনী প্রচার।

চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর প্রতীক বরাদ্দের দিন থেকেই প্রচার চালানো যাবে ভোট গ্রহণের ৭২ ঘন্টা আগ পর্যন্ত । কিন্তু এখনই প্রচার বন্ধ করতে নির্বাচন কমিশন চিঠি দিয়ে পোস্টার , ব্যানার, ফেস্টুন নামিয়ে ফেলতে বলেছে। কোনো নির্বাচনি মিছিল ও শোডাউনের ওপর আরোপ করেছে নিষেধাজ্ঞা।

নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানান,"আমরা এরইমধ্যে পাঁচ সিটিতে বিষয়গুলো দেখার জন্য ম্যাজিষ্ট্রেট নিয়োগ করেছি। আর নির্দেশ দিয়েছি পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন বা প্রচারপত্রে যার নাম বা ছবি আছে তাকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে এগুলো সরিয়ে ফেলতে হবে। সরিয়ে না ফেললে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।”

তিনি বলেন," প্রতীক বরাদ্দের আগে কোনোভাবে প্রচার চালানো যাবে না।” গাজীপুর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "ওখানকার ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”

গত  ৩ এপ্রিল পাঁচ সিটি কর্পোরেশনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। তফসিল অনুযায়ী, গাজীপুর সিটির ভোটে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ২৭ এপ্রিল, বাছাই ৩০ এপ্রিল। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ৮ মে আর ভোট গ্রহণ ২৫ মে। খুলনা ও বরিশাল সিটিতে ভোটের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ১৬ মে, বাছাই ১৮ মে, প্রত্যাহারের শেষ সময়  ২৫ মে ও ভোটগ্রহণ ১২ জুন।

রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ২৩ মে। এই দুই সিটিতে মনোনয়ন পত্র বাছাই হবে ২৫ মে। আর মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ১ জুন। আর এই দুই সিটিতে ভোট গ্রহণ করা হবে ২১ জুন। সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত ইভিএমে একটানা ভোট নেওয়া হবে।

আওয়ামী লীগ পাঁচ সিটিতে তাদের মেয়র পদে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করেছে। তবে বিদ্রোহী প্রার্থীও আছে। বিএনপি দলীয়ভাবে এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। জাতীয় পার্টিসহ আরো কিছু দল নির্বাচনে প্রার্থী দিচ্ছে।

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ