প্রথমবার আকাশে ওড়ার চেষ্টা করবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় রকেট
১৭ এপ্রিল ২০২৩
ইলন মাস্কের স্পেসএক্স কোম্পানির তৈরি স্টারশিপ রকেট সোমবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ছয়টায় প্রথমবারের মতো আকাশে ওড়ার চেষ্টা করবে৷ এই রকেট দিয়ে ভবিষ্যতে নভচারীদের চাঁদ ও মঙ্গলগ্রহে পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী রকেট হতে যাচ্ছে স্টারশিপ৷ উচ্চতা প্রায় ১২০ মিটার, অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যাচু অফ লিবার্টির চেয়ে বড় এটি৷
অবশ্য সোমবারের উড্ডয়ন সফল হবে কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত নন ইলন মাস্ক৷ রোববার টুইটার স্পেসে তিনি বলেন, ‘‘সফলতার ব্যাপারে আশান্বিত হওয়া উচিত হবে না৷ এটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ফ্লাইট৷ এটি অনেক জটিল ও বিশাল রকেটে প্রথম উড্ডয়ন চেষ্টা৷'' এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের যে স্থান থেকে স্টারশিপ উড্ডয়নের কথা সেখানকার আবহাওয়া বিবেচনায় শেষ পর্যন্ত উড্ডয়ন চেষ্টা স্থগিতও করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি৷
মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ স্টারশিপে করে চাঁদে নভচারী পাঠানোর পরিকল্পনা করছে৷ এই মিশনের নাম আর্টেসিম তৃতীয়৷ ১৯৭২ সালে অ্যাপোলো কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর এবার আবার চাঁদে মানুষ পাঠানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে৷
স্টারশিপে দুটি ভাগ আছে৷ উপরের ভাগে আছে ৫০ মিটার লম্বা স্পেসক্রাফট, যেটিতে করে নভচারী ও কার্গো যাতায়াত করবে৷ আর নিচের ৭০ মিটার অংশে থাকবে সুপার হেভি বুস্টার রকেট৷
স্পেসএক্সের রকেটে মহাকাশ পর্যটনে চারজন
ইতিহাস তৈরি হলো। মহাকাশ পর্যটনের। চারজন অসামরিক মানুষকে নিয়ে স্পেসএক্সের রকেট উড়ে গেল মহাকাশে।
ছবি: Chris O'Meara/AP/picture alliance
এই প্রথম
অ্যামেচার বা অপেশাদাররা এর আগেও মহাকাশে গেছেন। কিন্তু তাদের সঙ্গে থেকেছেন প্রশিক্ষিত নভোচারী। এভাবে চার অপেশাদারের মহাকাশ পর্যটন এই প্রথম।
ছবি: Chris O'Meara/AP/picture alliance
কারা গেলেন
শিফটফোর পেমেন্টের মালিক ৩৮ বছর বয়সি হাই স্কুল ড্রপআউট জ্যারেড আইস্যাকম্যান পুরো ট্রিপ স্পনসর করছেন। সঙ্গে আছেন পেশায় নার্স হেইলি আর্সেনাও, বাচ্চা থাকার সময় যিনি বোন ক্যান্সারকে জয় করেছেন। তিনিই মহাকাশে যাওয়া সব চেয়ে কম বয়সি অ্যামেরিকান। এছাড়া আছেন এয়ারোস্পেস ডেটা ইঞ্জিনিয়ার ক্রিস সিমব্রস্কি ও ভূবিজ্ঞানী সিয়ান প্রোক্টর।
ছবি: SpaceX/AP Photo/picture alliance
ইনস্পিরেশন ৪
এই মহাকাশ অভিযানের নাম ইনস্পিরেশন ৪। কারণ, চারজনের এই মহাকাশ অভিযান ভবিষ্যতে অন্যদের প্রেরণা দেবে।
ছবি: Inspiration4/John Kraus
যাত্রা শুরু
চারজন স্পেসএক্স ড্রাগনে বসলেন। যাত্রা শুরু হলো। ১২ মিনিট পরে ফ্যালকন ৯ রকেটের দ্বিতীয় পর্যায় চালু হলো। স্পেসএক্স জানালো, চারজন এখন মহাকাশে পৌঁছে গেছেন।
ছবি: Chris O'Meara/AP/picture alliance
নাসার মহাকাশ কেন্দ্র থেকে
ফ্লোরিডায় নাসার মহাকাশ কেন্দ্র থেকে স্পেসএক্সের রকেটের যাত্রা শুরু হলো। এখান থেকেই চাঁদে যাত্রা করেছিল অ্যাপলো ১১।
ছবি: Inspiration4/dpa/picture alliance
ফ্লোরিডাতেই ফেরা
মহাকাশ যাত্রা শেষ করে ফ্লোরিডাতেই ফিরবেন চারজন। ফেরার সময় প্যারাশুট খুলে গতি কমানো হবে মহাকাশযানের।
ছবি: Inspiration4/John Kraus
নতুন দিগন্ত
স্পেস এক্সের এই মহাকাশ অভিযানে নতুন দিগন্ত খুলে গেল। সাধারণ মানুষ মহাকাশ অভিযান করতে পারলেন এবং ভবিষ্যতেও পারবেন। এই অভিযান দেখিয়ে দিল, মহাকাশ অভিযানের জন্য পেশাদার নভোচর হওয়ার দরকার নেই। ছবিতে দেখানো হয়েছে, যেভাবে পৃথিবীর চারপাশে প্রদক্ষিণ করবে মহাকাশযান।
স্পেস এক্সের দাবি
এই মহাকাশ অভিযানের পর স্পেস এক্সের দাবি, মানবিকতার নতুন দিগন্ত খুলে গেল।
ছবি: Inspiration4/John Kraus
8 ছবি1 | 8
এর আগে কয়েকবার স্পেসক্রাফটের সাব-অর্বিটাল টেস্ট হয়েছে৷ তবে সোমবারই প্রথম স্পেসক্রাফট ও বুস্টার রকেট একসঙ্গে উড্ডয়নের চেষ্টা করবে৷
ওড়ার তিন মিনিট পর বুস্টার রকেট স্টারশিপ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মেক্সিকো উপসাগরে গিয়ে পড়বে৷
আর স্টারশিপ প্রায় দেড়শো মাইল উপরে উঠে পুরো পৃথিবী ঘুরে দেড় ঘণ্টা পর প্রশান্ত মহাসাগরে গিয়ে পড়ার কথা৷
‘‘এটি যদি অর্বিটে যেতে পারে তাহলে সেটিই হবে অনেক বড় সফলতা,'' বলছেন মাস্ক৷
নাসা তার নিজস্ব স্পেস লঞ্চ সিস্টেম এসএলএস-এ করে আগামী বছরের নভেম্বরে নভচারীদের চাঁদের অর্বিটে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে৷
এসএলএস-এর চেয়ে আকারে বড় ও শক্তিশালী হচ্ছে স্টারশিপ৷