1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শত বছর

সুসানে স্প্র্যোয়ার/আরবি১৮ জানুয়ারি ২০১৪

প্রায় ১০০ বছর আগে ১৯১৪ সালের গ্রীষ্মে বেজে উঠেছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের দামামা৷ জড়িয়ে পড়েছিল অসংখ্য দেশ৷ এরপর একটানা চার বছর ঘটে যায় নারকীয় হত্যাযজ্ঞ৷ প্রাণ হারায় লক্ষ লক্ষ মানুষ৷

Roter Oktober - Russland Okotberrevolution
ছবি: picture-alliance/akg

কয়েক সপ্তাহ ধরে মিডিয়াগুলি এ ব্যাপারে সরগরম হয়ে উঠছে৷ চলছে আলোচনা অনুষ্ঠান, প্রকল্প, প্রদর্শনী৷ দেখানো হচ্ছে আত্মরক্ষাকারী ট্রেঞ্চ, গ্যাসমাস্ক , ছবি, পোস্টকার্ড ইত্যাদি৷ খোঁজার চেষ্টা করা হচ্ছে ১৯১৪ ও ২০১৪-এর মধ্যে সাদৃশ্য৷ সমান্তরাল যোগসূত্র৷ তবে পার্থক্য দেখানোর দায়িত্বটা কী আরো গুরুত্বপূর্ণ নয়?

সাদৃশ্য রয়েছে

বাস্তবিকই ১৯১৪ ও ২০১৪-এর মধ্যে বহু সাদৃশ্য দেখা যাবে৷

সেই সময়ও মানুষ দ্রুত পরিবর্তনশীল এক ভবিষ্যতের দিকে দৃষ্টি দিয়েছিল৷ নতুন যানবাহন (মোটর গাড়ি), নতুন মিডিয়া ( সিনেমা), নতুন যোগাযোগের মাধ্যম (টেলিফোন) মানুষের সুযোগ সুবিধা বাড়িয়ে দেয়৷ আধুনিক জীবনযাত্রার ওপর আস্থা বেড়ে যায় মানুষের৷ খুলে যায় বিশ্বায়নের দ্বার, উন্মুক্ত হয় আন্তর্জাতিক ভ্রমণের পথ৷ মানুষ নিজের চাহিদা মত ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে আগ্রহী হয়ে ওঠে৷

তৎকালীন সার্বিয়ার জাতীয়তাবাদীদের মতো আজও বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠী স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছে৷ যেমন ব্রিটেনে স্কটিশরা, স্পেনে কাটালানরা৷ কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সহিংসতা ছাড়া, যুক্তিতর্কের মাধ্যমে৷

অসংখ্য শিল্পী ও বুদ্ধিজীবী সমর্থন করেন

১৯১৪ জার্মান সাম্রাজ্যের নাগরিক সমাজ এবং অসংখ্য শিল্পী ও বুদ্ধিজীবী যুদ্ধকে সমর্থন করেছিলেন৷ ‘‘যুদ্ধ হলো পরিচ্ছন্নতা ও মুক্তি৷ আমরা মনে করেছিলাম এটা এক বিরাট আশা৷'' পরবর্তীতে নোবেল বিজয়ী লেখক টমাস মান যুদ্ধের শুরুতে এভাবেই লিখেছিলেন৷ আজ এই কথাগুলি অতি সাদাসিধা বলে মনে হয়৷ অবশ্য লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যু, শারীরিক ও মানসিক অসুস্থতা, বিকলাঙ্গদের আর্তনাদ এসব ভয়াবহতা তখনও প্রকট হয়ে দাঁড়ায়নি৷

আমরা যুদ্ধের ভয়াবহতা জানি বলেই হয়তো উপলব্ধি করতে পারি না, কেমন করে ইউরোপের দেশগুলি আলাপ আলোচনা ও সংলাপ ছেড়ে দিয়ে যুদ্ধের দিকে পা বাড়িয়েছিল৷

সামরিক প্রভাব

বিংশ শতাব্দীর শুরুতে সামরিক প্রভাব ইউরোপীয় বিশেষ করে জার্মানির সমাজের গভীরে শেকড় গেড়ে ছিল৷ আজ ফেডারেল রিপাবলিক জার্মানিতে মানুষের চিন্তা চেতনা সম্পূর্ণ ভিন্নরকম৷ ২০১১ সালে বাধ্যতামূলক সামরিক ট্রেনিং বাতিল করার পর জার্মান সেনাবাহিনীতে নতুন সেনা নিয়োগ দেওয়াই দুষ্কর হয়ে উঠেছে৷

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কলকাঠি নাড়ার দায়িত্বে ছিলেন সামরিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বয়স্ক পুরুষরা৷ আজ ইউরোপে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত সরকারের প্রতিনিধিরা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করছেন৷ এতে রয়েছেন নানা বয়সের নারী পুরুষ৷ ১৯১৪ সালে মেয়েদের ভোট দেওয়ারই অধিকার ছিল না৷ আর সাত সন্তানের জননী জার্মানির প্রতিরক্ষা মন্ত্রী৷

ভিন্নতাও কম নয়

১৯১৪ ও ২০১৪-এর মধ্যে সাযুজ্য থাকলেও ভিন্নতাও কম নয়৷ এই ১০০ বছরে অনেক পরিবর্তন হয়েছে৷ জার্মানি ও তার প্রতিবেশীরা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়েছে৷ তারা গণতন্ত্র ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে গুরুত্ব দিচ্ছে৷ এক সময়ের শত্রু আজ মিত্রতে পরিণত হয়েছে৷ ঝগড়া বিবাদ হলেও বৈরিতা নেই তাদের মধ্যে৷

ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা জাতিসংঘের মত প্রতিষ্ঠানগুলির আওতায় কাজ করে যাচ্ছে ইউরোপের দেশগুলি৷ তাদের এই পথ যে সবসময় মসৃণ তা বলা যায় না৷ কিন্তু ১৯১৪ সালের চেয়ে অনেক ভালভাবে চলছে তাদের পথচলা, যখন ইইউ ও জাতিসংঘের মত প্রতিষ্ঠানগুলির অস্তিত্ব ছিল না৷

আর যুদ্ধ নয়৷ সম্প্রীতি, সমঝোতা ও আলাপ আলোচনাই দীর্ঘস্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করতে পারবে৷ এটাই হলো আজকের দিনের মূলমন্ত্র৷ আর এ জন্য ইউরোপকে অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হয়েছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ