1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ম্যার্ক-টেগোর পুরস্কার

২৪ জানুয়ারি ২০১২

রবীন্দ্রনাথের জন্ম সার্ধ শতবর্ষে ম্যার্ক-টেগোর পুরস্কার চালু করল জার্মানির রাসায়নিক শিল্প সংস্থা ম্যার্ক৷ প্রথমবার সেই পুরস্কার পেলেন শান্তিনিকেতন প্রবাসী জার্মান প্রাবন্ধিক ও রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ ড. মার্টিন কেম্পশ্যেন৷

জার্মান প্রাবন্ধিক ও রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ ড. মার্টিন কেম্পশ্যেনছবি: DW

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গীতাঞ্জলি-র জার্মান অনুবাদ করেছিল কুর্ট ভলফ ভ্যারলাগ বলে যে প্রকাশন সংস্থা, সেই কুর্ট ভলফ ছিলেন জার্মানির ডারমস্টাট শহরের বিখ্যাত ওষুধ ও রসায়ন সংস্থা ম্যার্ক-এর মালিক পরিবারের কন্যা এলিজাবেথ ম্যার্কের স্বামী৷ এলিজাবেথই ছিলেন গীতাঞ্জলির অনুবাদক৷ রবীন্দ্রনাথের ১৫০তম জন্মবার্ষিকীতে, সেই ঐতিহাসিক সম্পর্কেরই পুনর্নবীকরণ করল ম্যার্ক পরিবার৷ কলকাতার গ্যোয়টে ইনস্টিটিউট মাক্সম্যুলার ভবনের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে চালু হল দ্বিবার্ষিক ম্যার্ক-টেগোর পুরস্কার, প্রথমবার যার প্রাপক হলেন বিশিষ্ট জার্মান রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ ড. মার্টিন কেম্পশ্যেন৷ তিনি বললেন, ‘‘১৫০ সংখ্যাটার দেখা যাচ্ছে এক জাদুকরী ক্ষমতা আছে৷ রবীন্দ্রনাথকে জানতে এই প্রথম জার্মানি আসছে ভারতের কাছে৷ কলকাতায়, শান্তিনিকতনে আসছেন সবাই, রবীন্দ্রনাথের জন্মজয়ন্তী পালন করতে৷''

ম্যার্ক সংস্থার পক্ষ থেকে ড. কার্ল লুডভিগ ক্লাই ভারত এবং জার্মানির বৃহত্তর সাংস্কৃতিক বিনিময় সম্পর্ক এবং সেই সম্পর্কের নির্মাণে ম্যার্ক পরিবারের অবদানের কথা বললেন তাঁর ভাষণে৷ ড. ক্লাই জানালেন, জার্মানির জাতীয় কবি ইয়োহান ভলফগাং ফন গ্যোয়টে একবার তাঁর এক বন্ধুকে বলেছিলেন, যদি স্বর্গ এবং মর্ত্যের আস্বাদ একই সঙ্গে পেতে চাও, তাহলে মহাকবি কালিদাস বিরচিত নাটক শকুন্তলা পড়ে দেখো৷ ঘটনাচক্রে, মহাকবি গ্যোয়টেকে আবিষ্কারের কৃতিত্ব অংশত ম্যার্ক পরিবারেরই একজনের৷ ইয়োহান হাইনরিশ ম্যার্ক ছিলেন গ্যোয়টের ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং তাঁর প্রথমদিকের সাহিত্যকীর্তির পৃষ্ঠপোষক৷ এর ১৪০ বছর পর, বিংশ শতকের শুরুতে, ফের ম্যার্ক পরিবারেরই একজন বিশ্বসাহিত্যের ইতিহাসে জার্মানির নাম যুক্ত করেছিলেন৷ সেই সঙ্গে ডার্মস্টাট শহরের সঙ্গে এই কলকাতার আত্মিক সংযোগ গড়ে উঠেছিল৷ আমি বলছি এলিজাবেথ ভলফ ম্যার্কের কথা, যিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখার প্রথম জার্মান অনুবাদ করেছিলেন৷

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরছবি: picture-alliance/dpa

ম্যার্ক পরিবারের একাদশতম উত্তরসূরি, কুর্ট ভলফের দৌহিত্র জন বাউমহাওয়ার জানালেন, ১৯১৪ সালে তাঁর দাদু বিখ্যাত জার্মান কবি রাইনার মারিয়া রিলকে-কে অনুরোধ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথের কবিতা জার্মান ভাষায় অনুবাদ করার জন্য৷ কিন্তু বিশ্ববন্দিত ওই ভারতীয় দার্শনিক সম্পর্কে শ্রদ্ধাশীল রিলকে সবিনয়ে সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেন৷ কারণ, তাঁর মনে হয়েছিল, রবীন্দ্রনাথের রচনার যে ভাষাগত সূক্ষ্মতা, তা জার্মান অনুবাদে প্রকাশ পাবে না৷

জন বাউমহাওয়ার তাঁর ভাষণ শেষ করলেন অত্যন্ত সংবেদনশীল এক মন্তব্য করে৷ তিনি বললেন, ‘‘আমরা খুব খুশি যে ভারতীয় উপমহাদেশের ধনাঢ্য বৈচিত্র্যময়তা, বিশেষত বাঙালি মননের প্রতি আমাদের অনুরাগকে আরও ভালভাবে বুঝতে, এখনও রবীন্দ্রনাথই আমাদের সহায়৷ এই বিশ্বায়নের যুগে, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও চিন্তাগত বিভেদকে অতিক্রম করে আমরা রবীন্দ্রনাথের দিকেই গভীর সম্ভ্রম নিয়ে চেয়ে থাকি৷''

ম্যার্ক পরিবারের এক উত্তরপুরুষের এই মন্তব্যই বেঁধে দিল ভারত-জার্মানি সাংস্কৃতিক সম্পর্কের মূল সুরটি৷ আবারও মনে করিয়ে দিল, রবীন্দ্রনাথ এখনও, তাঁর এই ১৫০তম জন্মবার্ষিকীতেও, দুই দেশের কাছেই কতটা প্রাসঙ্গিক৷

প্রতিবেদন: শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায়

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ