ই-মেল কেলেঙ্কারির জের ধরে নাজেহাল হিলারি ক্লিন্টন কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারলেন৷ বারাক ওবামা তাঁকে সর্বকালের সেরা মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে বর্ণনা করে জোরালো সমর্থন জানালেন৷
বিজ্ঞাপন
একই দিনে সুসংবাদ ও দুঃসংবাদ৷ ডেমোক্র্যাট দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে হিলারি ক্লিন্টন বর্তমান প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার জোরালো সমর্থন পেলেন, যা অ্যামেরিকার রাজনৈতিক জগতে অত্যন্ত বিরল ঘটনা৷ অন্যদিকে তাঁর ই-মেল কেলেঙ্কারির ভূত আরও জোরালোভাবে তাঁর ঘাড়ে চেপে বসলো৷
কোনো ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট সাধারণত তাঁর সম্ভাব্য উত্তরসূরী থেকে কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখে চলেন৷ এটাই অলিখিত প্রথা হিসেবে অ্যামেরিকায় চলে এসেছে৷ কিন্তু বিরোধী রিপাবলিকান দলের প্রার্থী হবার পথে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো চরম বিতর্কিত মানুষ যেভাবে এগিয়ে এসেছেন, তার প্রেক্ষাপটে ওবামা সব দ্বিধা ঝেড়ে ফেলে নিজের দলের প্রার্থী ও প্রাক্তন সহকর্মীর পক্ষে জোরালো সওয়াল করলেন৷ স্পষ্ট ভাষায় তিনি বললেন, হিলারি ক্লিন্টনের হাতে তিনি ক্ষমতা হস্তান্তর করতে প্রস্তুত৷ এমন ভূয়সী প্রশংসা বোধহয় হিলারিও আশা করেননি৷ ওবামা বলেন, এর আগে অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট পদের জন্য কখনো এত যোগ্য প্রার্থী দেখা যায়নি৷
উল্লেখ্য, প্রায় তিন সপ্তাহ পর দলীয় সম্মেলনে হিলারি ক্লিন্টন আনুষ্ঠানিকভাবে ডেমোক্র্যাটিক দলের মনোনয়ন পেতে চলেছেন৷
কিন্তু তাঁর যোগ্যতার উপর কালো ছায়া ফেলেছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে তাঁর একটি আচরণ৷ রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা বজায় রাখার ক্ষেত্রে তিনি চরম গাফিলতির পরিচয় দিয়েছেন৷ সাধারণ ই-মেল অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে তিনি গোপন বিষয় সম্পর্কে অনেকের সঙ্গে পত্রালাপ করেছেন৷ মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা তাঁর এই আচরণকে ‘অত্যন্ত অসতর্ক' হিসেবে বর্ণনা করেছে৷ তবে বিস্তারিত তদন্ত চালিয়েও ইচ্ছাকৃত অসদাচরণের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি৷
অর্থাৎ ক্লিন্টন আপাতত আইনি প্রক্রিয়া থেকে রক্ষা পেয়ে গেলেন৷ যদিও তাঁর ভাবমূর্তি একটা বড় ধাক্কা খেয়ে গেল৷
বলা বাহুল্য, হিলারি ক্লিন্টনের প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্প এমন সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেননি৷ তিনি বলেন, দোষী হওয়া সত্ত্বেও ক্লিন্টন পার পেয়ে গেলেন৷ ফলে গোটা প্রশাসনিক ব্যবস্থার দুর্বলতার পরিচয় পাওয়া গেল৷ তবে এমন অসতর্ক আচরণের কারণে ক্লিন্টন কোনো উচ্চ পদের জন্য উপযুক্ত নন – বলেন ট্রাম্প৷
বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী নারীরা
২০১৫ সালে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাশীল নারীদের তালিকা প্রকাশ করেছে মার্কিন ম্যাগাজিন ‘ফোর্বস’৷ চলুন দেখে নেই তালিকায় কে কে আছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/O. Douliery
আঙ্গেলা ম্যার্কেল
ফোর্বস-এর বিবেচনায় জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নারী৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে তিনি সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে নির্বাচিত সরকারপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/K. Nietfeld
হিলারি ক্লিন্টন
মার্কিন প্রেসিডেনশিয়াল ক্যান্ডিডেট হিলারি ক্লিন্টনকে তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রেখেছে ফোর্বস৷ একসময়কার ফার্স্ট লেডি সর্বশেষ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন৷ ২০১৬ সালে ডেমোক্রেট প্রার্থী হিসেবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি৷
ছবি: Reuters/S. Morgan
মেলিন্ডা গেটস
বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা ফাউন্ডেশনের কো-চেয়ার মেলিন্ডা গেটস৷ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৩৩ দশমিক পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দান করেছে ফাউন্ডেশনটি৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/E. Agostini
জেনেট ইয়েলেন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ার জেনেট ইয়েলেন৷ বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রথম নারী চেয়ার তিনি৷
ছবি: Reuters/J. Ernst
মেরি বাররা
জেনারেল মোটরসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেরি বাররা৷ তাঁর নের্তৃত্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাঁচ দশমিক চার বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করছে গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি৷
ছবি: DANIEL ROLAND/AFP/Getty Images
ক্রিস্টিন লাগার্দ
আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল আইএমএফ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টিন লাগার্দ৷ সর্বশেষ বৈশ্বিক আর্থিক মন্দার সময় সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে ৬০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দিয়েছে আইএমএফ৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/R. Abd
ডিলমা রুসেফ
ব্রাজিলের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট তিনি৷ বর্তমানে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় রয়েছেন৷ ফোর্বস-এর তালিকায় তাঁর অবস্থান সপ্তম৷
ছবি: Getty Images/AFP/Evaristo Sa
শেরিল স্যান্ডবার্গ
ফেসবুক-এ প্রধান অপারেটিং কর্মকর্তা শেরিল স্যান্ডবার্গ৷ তাঁর লেখা বই ‘লিন ইন’-এর চলচ্চিত্র সত্ত্ব কিনে নিয়েছে সোনি পিকচার্স৷
ছবি: Getty Images
সুসান ভয়চিস্কি
বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং ওয়েবসাইট ইউটিউব-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুসান ভয়চিস্কি৷ প্রতিমাসে গড়ে এক বিলিয়ন মানুষ ইউটিউব ভিজিট করেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Google Inc.
মিশেল ওবামা
ফোর্বস-এর তালিকায় দশ নম্বরে আছেন মার্কিন ফার্স্টলেডি মিশেল ওবামা৷ প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা যে চমৎকার এক পারিবারিক জীবন উপভোগ করেন তা এই নারীর কল্যাণে৷ দুই সন্তানের জননী মিশেলকে বিভিন্ন অনলাইন প্রচারণাতেও অংশ নিতে দেখা গেছে৷