মাদাগাস্কারের এক মানুষ একইসঙ্গে ফ্যাশন ও সংগীত সৃষ্টি করেন৷ প্রথা ভেঙে নতুন ধরনের সৃষ্টির পথ বেছে নিয়ে তিনি অনেকেরই নজর কাড়ছেন৷ নিজেই দক্ষতা আয়ত্ত করে সৃজনশীলতার পথে চলেছেন এই নারী৷
সাশা বাম বাম বলেন, ‘‘শিল্পকলা জগতের মানুষের জন্য সন্ধ্যাবেলায় বের হবার উপযোগী আমি এই সব ডিজাইন সৃষ্টি করেছি৷''ছবি: JFK/EXPA/picturedesk.com/picture alliance
বিজ্ঞাপন
সাশা বাম বামের সৃষ্টি করা ব্যতিক্রমী ফ্যাশন আন্তানানারিভোর রাজপথে বেশ কিছু মানুষের ভ্রুকুটির কারণ হয়৷ তিনি বলেন, ‘‘শিল্পকলা জগতের মানুষের জন্য সন্ধ্যাবেলায় বের হবার উপযোগী আমি এই সব ডিজাইন সৃষ্টি করেছি৷''
নাতাশা ফেনোয়ারিসোয়া ওরফে সাশা বাম বাম এমন সব পোশাকের স্রষ্টা৷ নিজের সৃষ্টিকর্মের মূলমন্ত্র ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘‘আমার স্টাইল সত্যি সীমা লঙ্ঘন করে৷ আমি ‘মাসাক' নামে নিজস্ব ব্র্যান্ড চালু করেছি৷ এর অর্থ সাহসি, দৈনন্দিন জীবনে সাহস দেখানো, নিজেকে অন্যদের তুলনায় ভিন্ন তকে তোলা৷ সবার মাঝে থেকে নজর কাড়াই হলো উদ্দেশ্য৷ কারণ অসামান্য ব্যক্তি হিসেবে আমি অসাধারণ সব কিছু ভালোবাসি৷''
মাদাগাস্কারের রাজধানী আন্তানানারিভো বৈপরিত্য, সংস্কৃতি ও রংয়ে ভরা এক শহর৷ মাদাগাস্কার বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম দ্বীপ৷ প্রথমে প্রাচীন ইন্দোনেশিয়া, পরে ফ্রান্স সেখানে উপনিবেশ স্থাপন করেছিল৷ এমন বৈচিত্র্য সত্ত্বেও সাশা বাম বামের ফ্যাশন সত্যি নজর কাড়ার মতো৷ তাঁর তৈরি বেশিরভাগ পোশাকই মিউডিক ভিডিও বা ফ্যাশন শো-য় কাজে লাগানো হয়৷
ফ্যাশন সংক্রান্ত বেশিরভাগ জ্ঞান তিনি বাসায় ছোট ওয়ার্কশপে নিজেই আয়ত্ত করেছেন৷ সাশা বাম বাম বলেন, ‘‘এটা একটা ইভনিং গাউন, যা পুনর্ব্যবহারযোগ্য উপাদান দিয়ে আমি তৈরি করেছি৷ এই সব মুক্তা আগেও ব্যবহার করা হয়েছে৷ এই সজ্জা আমি খুঁজে পেয়ে সেলাই করেছি৷ খুবই উৎকৃষ্ট৷''
সাশা বহুমুখী প্রতাভাধর মানুষ৷ ফ্যাশনের পাশাপাশি সংগীতও সৃষ্টি করেন তিনি৷ তিনি নিজের ব্যান্ডের সঙ্গে রিহার্সালে যোগ দেন৷
বর্তমানে অবশ্য সাশা সংগীতের তুলনায় ফ্যাশনের জন্য বেশি সময় ব্যয় করছেন৷ কিন্তু মনের মধ্যে সব সময় দুই শাখারই স্থান থাকে৷
আদ্রিয়ান ক্নেশ/এসবি
ইটালির ফ্যাশন মঞ্চে বাংলাদেশি নারীসহ অভিবাসীরা
দেশ ছেড়ে এসেও কোথাও যেন ঘর খুঁজে পেয়েছেন মানুষগুলো। তারা মেতেছেন সৃজনশীলতার আনন্দে। ইটালির ফ্যাশন জগতে নিজেদের জায়গা খুঁজে নিতে চাইছেন কয়েকজন অভিবাসী।
ছবি: Giordano Riccardo/IPA/ABACA/picture alliance
রোমের ফ্যাশন শো-তে বাংলাদেশি নারী
ফ্যাশন ডিজাইনার হতে চাওয়া ১৯ জন অভিবাসীর ছয় মাসের একটি কোর্স শেষ হলো গত শনিবার। তারই সমাপ্তি অনুষ্ঠান ছিল জমজমাট। ইটালির 'রিফিউজিস লাইভ ফ্যাশন শো'-তে অংশ নেন বাংলাদেশি নারী ফিরদৌসী বেগম। হিজাব পরে মঞ্চে হেঁটেছেন এই ফ্যাশন ডিজাইনার।
ছবি: Remo Casilli/REUTERS
নতুন উদ্যমে বাঁচা
দুই বছরেরও কম সময় আগে ৩৫ বছর বয়সি ইউলিয়া দোব্রোহুরস্কা ইউক্রেনীয় শহর কোনোটোপে রুশ বোমা হামলায় প্রাণ হারানোর ভয় পেয়েছিলেন। দেশ ছেড়ে আশ্রয় নেন ইটালিতে। সেখানেই 'ফ্যাশন জুয়েলার্স' হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে চান এখন। রোমের একটি গয়নার দোকানে শিক্ষানবিশ হিসাবে কাজ শুরু করবেন ইউলিয়া।
ছবি: Remo Casilli/REUTERS
ক্যাটওয়াকেও শরণার্থী
পেশাদার মডেলের পাশাপাশি রোমের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ আয়োজিত ‘রিফিউজিস লাইভ ফ্যাশন শো‘-র ক্যাটওয়াকের মঞ্চে পা মেলান ইউলিয়া। শরণার্থীদের দ্বারা তৈরি আটটি পোশাক এবং নানারকম নকশার গয়না পরেছিলেন ইভেন্টের মডেলরা।
ছবি: Remo Casilli/REUTERS
সৃজনশীলতায় মুক্তি
যুদ্ধ, সহিংসতা থেকে পালিয়ে আসা মানুষদের মুক্তির দরজা খুলে দিয়েছিলো এই ফ্যাশন ইভেন্ট। গাম্বিয়ার অভিবাসী এবং গয়না ডিজাইনার ওউসমান থর্প অনুষ্ঠানের শেষে দর্শকদের কৃতজ্ঞতা জানান।
ছবি: Remo Casilli/REUTERS
গয়না তৈরির কৌশল
রোমের মায়ানি ফ্যাশন একাডেমি আয়োজিত কোর্সের সময় ইউলিয়ার মতোই গয়না তৈরির প্রাথমিক খোদাইয়ের কাজ, মোম ঢালাই এবং এমবোসিং কৌশল (ছবি বা নামও যেখানে ধাতুর সাহায্যে খোদাই করা যায়) শিখেছিলেন ওলেনা জাবহোরোদনিয়াও। তিনি ইউক্রেনীয় এক শরণার্থী।
ছবি: Remo Casilli/REUTERS
ইটালির সমাজে একাত্ম হওয়া
মায়ানি একাডেমি ১১০টি সংস্থার একটি নেটওয়ার্কের অংশ। শিল্পের মাধ্যমে ৯৫টি দেশের আশ্রয়প্রার্থী এবং শরণার্থীদের কর্মসংস্থানে একীভূতকরণের কাজ করে তারা। সংস্থাটি মনে করে, "সংস্কৃতিই স্বাস্থ্য।" মায়ানির এই কোর্সের ফলে অভিবাসীরা ইটালীয় সংস্কৃতিতে একীভূত হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। এছাড়া ভাষা শেখারও সুযোগ ছিল। ইউক্রেনের ইয়ানা কসলভস্কাও প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এখানে। তিনিও একজন জুয়েলারি ডিজাইনার।
ছবি: Remo Casilli/REUTERS
মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সৃজনশীলতা
জনকার্লো সান্তোনে নামের এক মনোরোগ বিশেষজ্ঞ রোমের স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে কাজ করেন। তারা ইভেন্টটি আয়োজন করে। তিনি বলেন, "এই ইভেন্টের ফলে আমরা সন্তুষ্ট কারণ যুদ্ধ এবং চরম সহিংসতার শিকার হওয়া অভিবাসীদের স্বাস্থ্যের উপর যে কেমন প্রভাব পড়তে হতে পারে, সেটা জানি।" (প্রতীকী ছবি)