1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে আস্থা নেই বিরোধীদের

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২৬ জানুয়ারি ২০১৯

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে বিরোধীদের সংসদে যোগদান ও জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানালেও বিরোধীরা তাঁর কথায় আস্থা রাখতে পারছেন না৷ তাঁদের কথা, প্রধানমন্ত্রী অতীতেও অনেক কথা বলেছেন, কিন্তু তা রাখেননি৷

শেখ হাসিনা
ছবি: picture-alliance/Photoshot

প্রধানমন্ত্রী শুক্রবার তাঁর ভাষণে বলেন, ‘‘সংখ্যায় যত কমই হোক না কেন, আমরা সংসদে বিরোধীদের উপস্থিতি চাই৷ সংসদে বিরোধী দলের যে কোনো সদস্যের ন্যায্য ও যৌক্তিক প্রস্তাব, আলোচনা-সমালোচনার যথাযথ মূল্যায়ন করা হবে৷ আমি বিরোধী দলের নির্বাচিত সদস্যদের শপথ নিয়ে সংসদে যোগদানের আহ্বান জানাচ্ছি৷''

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একইসঙ্গে সকল মতপার্থক্য ভুলে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলে দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করার কথাও বলেন৷

প্রধানমন্ত্রীর ঐ বক্তব্যের পর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শনিবার সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন৷ প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় ঐক্যের ডাক নিয়ে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘শেখ হাসিনা জাতীয় ঐক্যের যে ডাক দিয়েছেন, তা মেনে নেওয়ার কোনো কারণ নেই৷ নির্বাচনের আগে তিনি যখন আমাদের সঙ্গে সংলাপ করেন, তখন তিনি যে কথাগুলো বলেছিলেন সেগুলো কি তিনি রাখতে পেরেছেন? একটাও রাখতে পারেননি৷ এই যেমন তিনি বলেছিলেন, কোনো গ্রেপ্তার ও নতুন কোনো মামলা হবে না৷ বলেছিলেন, নির্বাচনের জন্য একটা ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড' তৈরি করা হবে৷ সেটাও কিন্তু তিনি করেননি৷''

শামসুজ্জামান দুদু

This browser does not support the audio element.

প্রধানমন্ত্রী বিরোধীদের সংসদে যোগ দেয়ার যে আহ্বান জানিয়েছেন সে প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘‘এখন যে কথাগুলো প্রধানমন্ত্রী বলছেন, তা শুধু কথার কথা৷ এগুলো তিনি সব সময় বলেন৷ আমরা তো নির্বাচনের ফলাফলই প্রত্যাখান করেছি৷ সেখানে নতুন করে শপথ নেওয়া বা সংসদে যাওয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না৷''

এ প্রসঙ্গে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আসলে জাতীয় ঐক্য এবং বিরোধীদের সংসদে যোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করতে চাচ্ছেন৷ রাজনৈতিক দলগুলোকে বিভ্রান্ত করতে চাচ্ছেন৷ যেখানে গণতন্ত্রের ছিটোফোটা নেই – মানুষ কথা বলতে পারে না, আতঙ্কের মধ্যে আছে, জবাবদিহিতা নেই, আইনের শাসন নেই – সেখানে এই আহ্বানের, প্রতিশ্রুতির মূল্যায়নের খুব সুযোগ আছে বলে আমার মনে হয় না৷ তিনি নির্বাচনের আগে দেওয়া কোনো কথা রাখেননি৷ এমনকি একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেওয়ার কথাও রাখেননি৷ তাই তাঁর ওপর আস্থা রাখা যায় না৷''

মাহমুদুর রহমান মান্না

This browser does not support the audio element.

এরপরও কোনো সুযোগ আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘আমার কথা হলো, গণতন্ত্রে যদি তিনি (প্রধানমন্ত্রী) ফিরতে চান, তাহলে তাঁর প্রথম পদক্ষেপ হতে হবে বিতর্কিত নির্বাচন থেকে সরে আসা৷ অর্থাৎ এই পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়া পদত্যাগ করা এবং ভালো একটি নির্বাচনের জন্য আলোচনার আহ্বান জানানো৷ এই কাজটি তিনি করলে, তবেই রাজনৈতিক দলগুলোর আবারো তাঁর প্রতি আস্থা ফিরে আসতে পারে৷''

ওদিকে নাগরিক ঐক্যের প্রধান মাহমুদুর রহমান মান্না ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘জাতীয় ঐক্যের ব্যাপারে যে যার জায়গা থেকে বলছেন৷ উনিও (প্রধানমন্ত্রী) নিজের জায়গা থেকে কথা বলেছেন৷ ৩০ তারিখের এই প্রহসনের পর জাতীয় ঐক্য হবে কীভাবে? তাই আমার মতে, নির্বাচনের পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে, নির্বাচন বাতিলের দাবি মেনে নিতে হবে৷ তারপর না জাতীয় ঐক্যের প্রশ্ন আসবে৷''

সংসদে যোগ দেয়ার আহ্বান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে তো মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকালই (শুক্রবার) বলে দিয়েছেন যে ওনারা সংসদে যাবেন না৷ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আগের সিদ্ধান্তই হচ্ছে যে, নির্বাচন যেহেতু গ্রহণ করছি না, অতএব ফলাফল গ্রহণ করারও কোনো প্রশ্ন আসে না৷ তাই সংসদে যোগ দেয়ার চিন্তা তো নেই-ই৷''

শান্তনু মজুমদার

This browser does not support the audio element.

তিনি আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী একটা বক্তৃতা দিলেই বিরোধীদের ‘অনার' করা হয়ে গেল? তিনি আন্তরিকভাবে ডাকবেন, কথা বলবেন...৷ একমাত্র তবেই যেটা হয়ে গেছে, তারও একটি ‘সলিউশন' হতে পারে হয়ত বা৷ কিন্তু বক্তৃতা দেওয়াটা কোনো ‘পজেটিভ সিগন্যাল' না৷''

বিষয়টি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. শান্তনু মজুমদার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে এবার আস্থার সংকট প্রবল৷ তারা নির্বাচনকেই গ্রহণ করছে না৷ তাই প্রধানমন্ত্রী সংসদে যোগ দেওয়ার যে আহ্বান জানিয়েছেন, তাতে তারা সাড়া দেবে বলে আমার মনে হয় না৷ তারা তাদের আগের অবস্থানেই থেকে যাবে৷ তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী যে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন, সেটা এত সহজ বলে আমার মনে হয় না৷ কারণ মতাদর্শগত দিক দিয়ে আমাদের মধ্যে বিভক্তি অনেক গভীর৷ এই ঐক্যের জন্য আরো কয়েক প্রজন্ম লাগতে পারে৷''

বন্ধু, শেখ হাসিনার আহ্বানে কি বিরোধীদের এগিয়ে আসা উচিত? আপনার মন্তব্য লিখুন নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ