1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রধানমন্ত্রীর ভারত ও চীন সফরের অপেক্ষা

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১৮ জুন ২০২৪

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২১ জুন দুই দিনের সফরে ভারত যাচ্ছেন। ৯ জুলাই চারদিনের সফরে যাচ্ছেন চীন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
গত ৯ জুন দিল্লীতে  নরেন্দ্র মোদীর শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দেন শেখ হাসিনা। সেই অনুষ্ঠানের পর মোদীর সঙ্গে তার দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়ছবি: Mohammad Ponir Hossain/REUTERS

২০১৬ সালে চীনা রাষ্ট্রপতির বাংলাদেশ সফরের পর থেকে দু দেশের সম্পর্কে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। চীন বাংলাদেশের এখন অন্যতম উন্নয়ন-সহযোগী।  আর ভারত বাংলাদেশের সম্পর্ক অনেক পুরোনো। সর্বশেষ আলোচনার কেন্দ্রে আছে বাংলাদেশের তিস্তা মহাপরিকল্পনা। এই প্রকল্পে চীন অংশ নিচ্ছে। চীনের কাছে বাংলাদেশ অর্থ সহায়তাও চেয়েছে।

সাবেক রাষ্ট্রদূত  মেজর জেনারেল (অব.) এম শহীদুল হক বলেন ,"গত ১৫ বছরে বাংলাদেশকে ৭.৩৬ বিলিয়র ডলার ঋণ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ভারত। কিন্তু পাওয়া গেছে প্রতিশ্রুতির মাত্র ২৩ ভাগ।  অন্যদিকে মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্র ছাড়া বাংলাদেশের প্রায় সব বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্প, বিশেষ করে অবকাঠামোগত উন্নয়নে চীন আমাদের সহায়তা করেছ। সময়ের আগে তারা কাজ শেষ করেছে।”

তার কথা, "তাই ভারত ও চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনীতি দেশের উন্নয়ন বিবেচনায় হওয়া উচিত। আমরা মনে হয় আমরা একটা ব্যালেন্স তৈরি করছি। প্রধানমন্ত্রীর পর পর এই দুই দেশ সফরে তারই প্রতিফলন ঘটবে।”

কূটনীতি দেশের উন্নয়ন বিবেচনায় হওয়া উচিত: শহীদুল

This browser does not support the audio element.

প্রসঙ্গত,  প্রস্তাবিত তিস্তা মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের ভাটি থেকে তিস্তা-যমুনার মিলনস্থল পর্যন্ত নদীর প্রস্থ কমিয়ে ৭০০ থেকে ১০০০ মিটারে সীমাবদ্ধ করা হবে। নদীর গভীরতা বাড়বে ১০ মিটার। নদীশাসনের মাধ্যমে তিস্তা নদীকে সঠিক ব্যবস্থাপনার আওতায় আনা, ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে পানি বহনক্ষমতা বাড়ানো, নদীর দুই পারে বিদ্যমান বাঁধ মেরামত করা, দুই পারে মোট ১০২ কিলোমিটার নতুন বাঁধ নির্মাণ করা ইত্যাদি করা হবে।

গত ৯ জুন দিল্লীতে  নরেন্দ্র মোদীর শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দেন শেখ হাসিনা। সেই অনুষ্ঠানের পর মোদীর সঙ্গে তার দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে ২১ জুনের ষফর হবে শেখ হাসিনার চতুর্থ মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথম কোনো দেশে দ্বিপাক্ষিক সফর । ২১ জুন প্রধানমন্ত্রী দিল্লী যাবেন। হাসিনা-মোদি বৈঠক ২২ জুন। ২৩ জুন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। তাই দুই দিনের এই সংক্ষিপ্ত সফর হচ্ছে। এর আগে ভারতের সঙ্গে এত অল্প সময়ের ব্যবধানে দ্বিপাক্ষিক সফর হয়নি।  ২০২১ সালে শেষবার ঢাকায় আসেন মোদী । ২০২২ সালে দ্বিপক্ষীয় সফর এবং ২০২৩ সালে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে মোদীর আমন্ত্রণে দিল্লী যান শেখ হাসিনা।

 প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন সফর ভূরাজনীতির অনেক বিষয় প্রাধান্য পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভারতের কাছে নিরাপত্তা ইস্যু গুরুত্বপূর্ণ। তারপরও ভারতের ঋণচুক্তি বাস্তবায়ন, বাংলাদেশে যেকোনো পরিস্থিতিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য এমওইউর মতো বিষয়গুলো  নিয়ে আলোচনা হবে। অর্থনৈতিক সহযোগিতা, বাণিজ্য, তিস্তা চুক্তি, জ্বালানি, সীমান্ত হত্যা, প্রতিরক্ষা, নতুন প্রযুক্তিসহ নানা বিষয়ে শীর্ষ বৈঠকে আলোচনা হতে পারে।  তবে এই সফর রাজনৈতিক অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করার সফর বলে মনে করা হচ্ছে।

ভারসাম্যমূলক কূটনীতি, সফরে আরো স্পষ্ট হবে: মুন্সি

This browser does not support the audio element.

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গত ১০ বছরে চারবার গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়েছে। ২০১৪ সালে বেইজিংয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপক্ষীয় সফর, ২০১৬ সালে শি জিনপিংয়ের ঢাকা সফর, ২০১৯ সালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর আবার বেইজিং সফর এবং ২০২৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের সাইডলাইনে তাদের মধ্যে বৈঠক। আর এবার ৯ জুলাই থেকে ১২ জুলাই এই চারদিনের দ্বিপাক্ষিক সফরে শেখ হাসিনা বেইজিং যাচ্ছেন।

প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরে কী কী বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে তা নিয়ে এখনো কিছু জানায়নি পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে  তারা কাজ করছেন।

তবে জানাগেছে বাংলাদেশের দিক থেকে উন্নয়ন প্রকল্প ও বাণিজ্যকে প্রাধান্য দেয়া হবে। তবে চীন এই অঞ্চলের ভূরাজনীতিতে বাংলাদেশকে একটি ভারসাম্য অবস্থানে দেখতে চায়। চীন মনে করে বাংলাদেশ তার অবস্থানকে আরো সংহত  করতে সহায়তা করতে পারে।

মুন্সি ফয়েজ আহমেদ বলেন, " সব সম্পর্কেরই ভূরাজনৈতিক গুরুত্ব আছে। চীনের সাথে আমরা কী করছি, আমাদের সম্পর্ক এটা নিয়ে ভারত অহেতুক চিন্তিত হবে বলে আমি মনে করি না। এর আগে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের যৌথ সামরিক মহড়া হওয়ার কথা ছিলো। সেটা না হলেও ভবিষ্যতে হবে বলে আশা করি। আর এটা তো কারুর বিরুদ্ধে যুদ্ধের মহড়া নয়। এটা পেশাগত উন্নয়নের মহড়া।”

তার কথা," বাংলাদেশ ভারত ও চীনের মধ্যে এখন একটা ভারসাম্যমূলক কূটনীতিতে আছে। সেটা প্রধানমন্ত্রীর  এই দুই দেশ সফরে আরো স্পষ্ট হবে।”

নিজের স্বার্থই আগে বিবেচনা করা উচিত: শান্তনূ

This browser does not support the audio element.

কোনো দিকে বেশি হেলতে চাইছে না বাংলাদেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের  অধ্যাপক ড. শান্তনূ মজুমদার বলেন," ২০১৬ সালে চীনা প্রেসিডেন্টের ঢাকা সফরের পর থেকে চীন ও ভারতের মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বাংলাদেশ একটা ভারসাম্য রক্ষা করতে চাইছে। বাংলাদেশ কোনো দিকে অধিক হেলে পড়তে চাইছেনা। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সম্পর্ক। আর চীন এখন বাংলাদেশের বড় উন্নয়ন ও বাণিজ্য পার্টনার।”

তার কথা," আমার মনে হয় ভূরাজনীতিকে মাথায় রেখে বাংলাদেশকে প্রত্যেক দেশের সঙ্গে তার সম্পর্ককে আলাদাভাবে বিবেচনা করছে। সেটা সব দেশই করে। বাংলাদেশের নিজের স্বার্থই আগে বিবেচনা করা উচিত।”

আর এম শহীদুল হক বলেন," তিস্তার পানি বন্টন এবং তিস্তা ব্যারাজের মহা প্রকল্প আলাদা ইস্যু। দুইটি ইস্যুই আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।  আমাদের তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্প অনেক পুরনো। চীন এটায় এগিয়ে এসেছে। এটা  আমাদের অনেক উপকারে আসবে। ভারত ভূরাজনৈতিক কারণে এখন তিস্তা ব্যারাজে আগ্রহ দেখাচ্ছে। ভারত আগে তিস্তার পানি দিক। তারপরে ব্যারাজ নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা করা যায়। তার আগে নয়। এখানে আমাদের দেশের স্বার্থ আগে বুঝতে হবে।”

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ