1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রধানমন্ত্রী চাইলে অবশ্যই সাগর-রুনি হত্যার বিচার হত

১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১

সাগর-রুনি হত্যার নয় বছর হয়ে গেলো অথচ আজও খুনিদের বিচার হয়নি, এর দায় কার? প্রধানমন্ত্রীর আগ্রহ নেই৷ গণমাধ্যমও প্রায় নীরব৷ সবাই কি ওদের ভুলে যেতে বসেছে? নাকি অন্য কারণে৷

সাগর-রুনি
ছবি: DW

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি সকালে সহকর্মী আরাফাতের ফোন পেলাম৷ ধরা গলায় শুধু জানালো সাগর-রুনিকে ওদের বাসায় খুন করা হয়েছে৷ কিন্তু সেকথা আমি কোনোভাবে বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না৷ ডয়চে ভেলেতে সাগর শুধু আমার সহকর্মীই ছিল না, ওকে আমার সবসময় ছোট ভাইয়ের মতো মনে হয়েছে৷ মানুষকে আপন করে নেওয়ার এক অসাধারণ ক্ষমতা দেখেছি সাগরের মধ্যে৷ অফিসে এক রুমে বসার সুবাদে অল্পদিনেই সখ্য গড়ে উঠেছিলো সাগরের সাথে৷

কিন্তু এই সাগরের মতো একজন মানুষকে কেন খুন করা হলো, এমন কি অপরাধ সে করেছিলো সে যে, শিশু সন্তানের সামনে তার সাংবাদিক মা-বাবাকে খুন হতে হল৷ শুরুর দিকে অনেক আশা করেছিলাম যে ওদের খুনিদের অবশ্যই ধরা হবে, প্রকৃত খুনিদের বিচার হবে৷ সাংবাদিক দম্পতির হত্যার বিচারের দাবিতে সাংবাদিক সহকর্মীরাও তখন বেশ সরব হয়েছিলেন৷ আলোচিত হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে দেশে-বিদেশে হয়েছে অনেক মানববন্ধনও৷ কিন্তু কিছুদিন পরে দেখা গেলো সাংবাদিকেরা নীরব হয়ে গেলেন, বিচারের দাবি প্রায় চাপা পড়ে গেলো৷ কিন্তু কেন? সাংবাদিকদের কি পিছিয়ে যেতে বাধ্য করা হয়েছে, না কি এর পেছনে সরকারের বড় কোনো চাপ রয়েছে?   

আমরা দুজন এক রুমে বসার কারণে সাগর মাঝে মাঝে নানা গল্পই করতো আমার সাথে৷ পার্বত্য চট্টগ্রামের কিছু ঘটনা নিয়ে অনুসন্ধানীমূলক কিছু লেখার ইচ্ছার কথাও বলেছিল একসময় সাগর৷ ওই এলাকা সম্পর্কে অনেক তথ্য জানা সেটা ওর কথাতেই বুঝতাম৷ পরে অবশ্য একটি বই লিখেছে সাগর, যদিও আমার সেটা পড়া হয়নি৷ পার্বত্য চট্টগ্রামের ঘটনা নিয়ে আরো একটি অনুসন্ধানীমূলক বই লেখার কথা ছিলো সাগরের৷ সেকথা জানাল সহকর্মী আরাফাত একটি ভিডিওতে, যেটা আজ ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করা হয়েছে৷

সেই তখনকার ছোট্ট শিশু মেঘের মুখ খুব মনে পড়ে৷ ওর মা-বাবাকে হত্যার অল্পদিন পরে দেশে গেলে মেঘকে দেখতে গিয়েছিলাম৷ আমার কোলে এসে বসেছিলো ছেলেটি কিন্তু কোনো কথা বলেনি, শুধু তাকিয়েছিল৷ যেন ওর ছলছলে চোখ দুটোতে ছিলো খুন হওয়া মা-বাবাকে নিয়ে কত প্রশ্ন! কেন যেন সাগর-রুনিকে নিয়ে লিখতে গিয়ে কথাগুলো ঠিক গোছাতে পারছিনা৷

নুরুননাহার সাত্তার, ডয়চে ভেলেছবি: DW/A. Islam

 সাগর-রুনির খুনিদের ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই গ্রেপ্তার করা হবে বলে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন আশ্বাস দিয়েছিলেন৷ তারপর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়ে এলেন মহিউদ্দীন খান আলমগীর৷ সাংবাদিক দম্পতির হত্যাকাণ্ডের বিচারের অগ্রগতি হচ্ছে বলে আবারো শান্ত করলেন সবাইকে৷ তারপর থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মো.আসাদুজ্জামান খান কামাল প্রায় প্রতি ১১ ফেব্রুয়ারিতে বিচারের অগ্রগতি নিয়ে একই কথার পুনরাবৃত্তি করেন৷

বাংলাদেশে দেরিতে হলেও নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের বিচার, বিশ্বজিত হত্যার বিচার বা কিংবা দীপন হত্যার বিচারের মতো কিছু হত্যাকান্ডের বিচার তো হয়েছে৷ কিন্তু সাগর-রুনির হত্যার বিচার কেন হচ্ছে না৷ আর কতদিন অপেক্ষা করতে হবে বা আদৌ হবে কি বিচার? সবার মতো আমারও এই একই প্রশ্ন৷ তবে কি  বিচার শুরু হলে গোপন কোনো তথ্য ফাঁস হয়ে যাবে?

সত্যি কথা বলতে কি বেশিদিন বিদেশে থাকার কারণেই কিনা জানি না বাংলাদেশের রাজনীতিকদের কথার জটিল মারপ্যাচ আমি তেমন বুঝি না৷ তবে একটা বিষয় খুব ভাল করেই বুঝি যে, প্রধানমন্ত্রী চাইলে সাগর-রুনির হত্যাকাণ্ডের বিচার এতদিনে অবশ্যই হত৷

২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারির ছবিঘরটি দেখুন..

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ