1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মুসলিমদের চোখে মোদী

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি১২ মার্চ ২০১৪

ভারতে আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে মুসলিম ভোট নিয়ে যে জোরদার বিতর্ক চলেছে, তাতে মুসলিম সমাজ কিছুটা হতবাক৷ বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু মুসলিম ভোটের অভিঘাতে রাজনৈতিক মেরুকরণ অবধারিত৷ এই ধারণা কতটা বাস্তব?

ছবি: Reuters

ভারতে ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচন শুরু হচ্ছে আগামী মাসে৷ প্রচার অভিযান চলেছে জোরেসোরে৷ বিতর্ক শুরু হয়েছে মুসলিম ভোট নিয়ে৷ বিজেপির প্রচার অভিযানে একটা শব্দবন্ধ এখন ঘুরে ফিরে আসছে৷ সেটা হলো ‘মুসলিম বনাম মোদী' ফ্যাক্টর৷ অর্থাৎ ভারতের রাজনৈতিক ভাগ্য নির্ধারণে মুসলিম ভোট কি নির্ধারক ফ্যাক্টর হয়ে উঠবে? সন্দেহ নেই, আসন্ন নির্বাচনে মুসলিম ভোট অবশ্যই একটা ফ্যাক্টর৷ কিন্তু এটা নতুন কিছু নয়৷ গত ৬০ বছর সব ক'টি নির্বাচনেই তা ছিল৷ কাজেই ভারতের ১৭ কোটি মুসলিম ভোট নরেন্দ্র মোদীর প্রধানমন্ত্রী হওয়াকে আটকাতে পারবে কিনা, এই প্রশ্ন অর্থহীনও অযৌক্তিক৷

‘মোদী-ভীতির' একটা ভ্রান্ত ধারণা মুসলিম মানসিকতায় গেঁথে দিয়েছে বিজেপি বিরোধী শক্তিগুলিছবি: Sajjad Hussain/AFP/Getty Images

বাস্তব সত্য হলো, মুসলিম সম্প্রদায় মোদীকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে না চাইলেও কিছু এসে যায় না৷ যদি যেত, তাহলে ২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গার পরে মোদী উপর্যুপরি তিনবার নির্বাচনে জিতে মুখ্যমন্ত্রী পদে হ্যাট্রিক করতে পারতেন না৷ সেটা মোদী স্বয়ং এবং তাঁর দল বিজেপি বিলক্ষণ জানেন৷ তা না হলে বর্তমান নির্বাচনে মোদী নতজানু হয়ে মুসলিমদের কাছে ক্ষমাভিক্ষা করতেন৷ মোদী বা বিজেপি জানে তাঁর নির্বাচনি ভাগ্য নির্ধারণ করবে যতটা না মুসলিম ভোট, তার চেয়ে অনেক বেশি উদারপন্থি হিন্দু ভোট৷

মোদী বনাম মুসলিম ভোট বিতর্কে ‘মোদী-ভীতির' একটা ভ্রান্ত ধারণা মুসলিম মানসিকতায় গেঁথে দিয়েছে বিজেপি বিরোধী শক্তিগুলি৷ ভীতির ছবিটা এমনভাবে তুলে ধরা হয়েছে যে, মোদীর প্রধানমন্ত্রীত্বে মুসলিমরা নিরাপদবোধ করবে না৷ মুসলিম ভোট নিজেদের দিকে টানতেই যে এটা করা হচ্ছে সেটা বোঝা কঠিন নয়৷ তবে মোদীর প্রধানমন্ত্রী হবার সম্ভাবনার প্রেক্ষিতে একটা অনিশ্চয়তার দোলাচলে রয়েছে মুসলিম সমাজ৷ এটাকে ঠিক আতঙ্ক নয়, একটা উদ্বেগ বলা যায়৷

ভারতীয় মুসলিমদের এতটা নির্বোধ ভাবার কারণ নেই যে, ১৬ই মে ভোট গণনার দিন তাঁরা নিদ্রাহীন রাত কাটাবে৷ পাশাপাশি সব মুসলিমই মোদী বিরোধী নয়৷ মুসলিমদের একাংশ মোদীকে ভোট দিতে পারে এমনটাই অনেকের ধারণা৷ কথায় আছে ‘শত্রু নিধন সম্ভব না হলে, তার সঙ্গে হাত মেলানোই শ্রেয়'৷ আসলে মোদীকে তাঁরা যতটা না ভয় পায়, তার চেয়ে ঘৃণা করে বেশি৷ নীরব দর্শক হয়ে গুজরাট দাঙ্গাকে বাড়তে দিয়েছিলেন মোদী – এই ধারণাটা বদ্ধমূল মুসলিম জনমানসে৷ গুজরাট দাঙ্গার নৃশংসতায় মোদীর বিরুদ্ধে ঘৃণা ও ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হয়৷

বিজেপির অনেক নেতাই দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থে মুসলিম সমাজের আস্থা ফেরাতে প্রয়াসী হবেনছবি: Sajjad Hussain/AFP/Getty Images

অতি সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে জনৈক মৌলবির কাছ থেকে ‘স্কাল ক্যাপ' বা টুপি নিতে অসম্মতি প্রকাশ করে মোদী মন্তব্য করেছিলেন, ‘রাজনৈতিক পরিচয়ে' তিনি বিশ্বাসী নন৷ কোনো কোনো মহলে এটার ব্যাখ্যা করা হয়েছিল যে, এতে নাকি প্রমাণ হচ্ছে মোদী প্রধানমন্ত্রী হলে তিনি ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্রে পরিণত করতে পারেন৷ আসলে হবে তার বিপরীত৷ অখণ্ড, ধর্মনিরপেক্ষ বহুত্ববাদী ভারতের জাতীয় জীবনের মূলস্রোতের বাইরে আছে – এমন মনে করা মুসলিম সম্প্রদায়কে তাতে সামিল করার চেষ্টা হবে৷

বিজেপির অনেক নেতাই দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থে মুসলিম সমাজের আস্থা ফেরাতে প্রয়াসী হবেন৷ স্মরণ করা যেতে পারে, ৯০-এর দশকে বাবরি মসজিদ ভাঙায় বিজেপির শীর্ষ নেতা এল কে আডভানির ভূমিকা ছিল৷ কট্টর হিন্দুত্ববাদী নেতা হিসেবে তিনি ছিলেন মুসলিমদের বিষনজরে৷ কিন্তু তিনি যখন বাজপেয়ীর নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হন, তখন তিনি তাঁর হিন্দুত্ববাদী তকমা ঝেড়ে ফেলে উদারপন্থি হিন্দু নেতা বলে পরিচয় দিতে স্বচ্ছন্দ বোধ করেছিলেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ