‘অজ্ঞাতনামা' ছবির গল্পের মতোই একটি খবর একবার প্রকাশ হয়েছিল৷ অজ্ঞাতনামা এক সৌদি প্রবাসী বাংলাদেশির লাশ ভুল করে পাঠানো হয় পাকিস্তানে৷ নেহাতই নামবিভ্রাটের কারণে৷ পরে অবশ্য ঐ লাশ আবার ফেরত পাঠানো হয় সৌদি আরবে৷
বিজ্ঞাপন
প্রবাস থেকে লাশ ফেরা নিয়ে জটিলতা এবং ভুল ঠিকানায় পৌঁছানোর পর সেই লাশ নিয়ে ভোগান্তির উপর নির্মিত চলচ্চিত্র ‘অজ্ঞাতনামা' ২০১৬ সালে বাংলাদেশের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছে৷
প্রবাসী বাংলাদেশিদের সমস্যা নিয়ে তৈরি তৌকির আহমেদ পরিচালিত এ চলচ্চিত্রটি একটি মাইলফলক হিসেবে ধরা যেতে পারে৷ কেননা প্রবাসীদের গল্প নিয়ে এ ধরনের ছবি বাংলাদেশে অন্তত কেউ নির্মাণ করেননি৷
প্রবাস থেকে লাশ আসা নিয়ে ভোগান্তি দীর্ঘদিনের৷ তৌকির পরিচালিত সিনেমাটি এ সব বিষয় পুরোপুরি আসেনি৷ সিনেমার জন্য এর পুরোটা আনার প্রয়োজনও নেই৷ তবে যা এসেছে, তাতে রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের সাধারণ দুর্দশা ও তাদের পরিবারের অসহায়ত্ব ভালোভাবেই ফুটে ওঠে৷
বাংলা চলচ্চিত্রের এ কী দশা
চলছে বাংলা চলচ্চিত্রের চরম দুঃসময়৷ মানসম্পন্ন সিনেমার অভাবে দর্শকরা যেন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন দেশীয় চলচ্চিত্র থেকে৷ দর্শকের অভাবে বহু সিনেমা হল বন্ধ৷ আর যেগুলো টিকে আছে সেগুলোও চলছে ধুকে ধুকে৷ ছবিঘরে থাকছে সেই গল্পই৷
ছবি: Getty Images
এখনো আছে মধুমিতা
ঢাকার প্রায় পঞ্চাশ বছরের পুরনো সিনেমা হল ‘মধুমিতা’ টিকে আছে এখনো৷ প্রায় ৬০ বছর আগে ‘মুখ ও মুখোশ’ সিনেমার মধ্য দিয়ে বাংলা চলচ্চিত্রের পথচলা শুরু হয়েছিল৷ মাঝে অনেকটা সোনালি সময় পার করেছে এই চলচ্চিত্র৷ কিন্তু পাঁচ যুগ পরে এসে এখন তা অনেকটাই মুখ থুবড়ে পড়েছে৷
ছবি: DW/M. Mamun
চলচ্চিত্র প্রদর্শনে বিপর্যয়
১৯৯৯ সাল থেকে এ দেশে ব্যাপক হারে অশ্লীলতানির্ভর নিম্নমানের ছবি নির্মাণ শুরু হয়৷ সাধারণ দর্শক তাই পরিবারের সবাইকে নিয়ে সেরকম ছবি দেখার কথা ভাবতেই পারেনি৷ এছাড়া সিনেমা হলে মৌলবাদীদের হামলার ঘটনাও চলচ্চিত্র প্রদর্শনে বিপর্যয়ের আরেক কারণ৷
ছবি: Getty Images
এক হলে ১৩ জন দর্শক!
হাটখোলা এলাকায় ঢাকার আরেকটি পুরনো সিনেমা হল ‘অভিসার’৷ এ ছবি তোলার সময় সেখানে প্রদর্শনী চলছিল প্রায় এক হাজার আসনের এ সিনেমা হলে এ প্রদর্শনীতে সর্বমোট দর্শক সংখ্যা ছিলেন মাত্র ১৩ জন৷
ছবি: DW/M. Mamun
দুরবস্থার কারণ
২৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে ঢাকার অভিসার সিনেমা হল পরিচালনায় যুক্ত কবির হোসেন৷ চলচ্চিত্রের এ দুর্দশার জন্য তিনি সিনেমার মান আর বিভিন্ন সহজলভ্য স্যাটেলাইট টেলিভিশনকেই দায়ী করেন৷
ছবি: DW/M. Mamun
ভালো ছবির কদর
ঢাকার আরেকটি সিনেমা হলের পরিচালক মতিন মিয়া৷ ঢাকার ‘গীত সঙ্গীত’ সিনেমা হল পরিচালনা করছেন তিনি গত প্রায় আঠারো বছর ধরে৷ তাঁর মতে ভালো নির্মাতা, নায়ক-নায়িকার অভাবই চলচ্চিত্রের দুর্দশার মূল কারণ৷ কেননা, এখনো দু-একটি ভালো সিনেমা এলে হল ভর্তি দর্শক দেখা যায়৷
ছবি: DW/M. Mamun
ব্যবসা কোথায়?
ছবিটি ঢাকার ‘গীত’ সিনেমা হলের৷ প্রায় দর্শকশূন্য হল৷ প্রায় ১১০০ আসনের এ হলে সেদিন দর্শক ছিল মাত্র ৩৪ জন৷ হলমালিকরা এ পরিস্থিতি নিয়ে প্রায়ই হতাশা প্রকাশ করেন৷ তাঁদের প্রশ্ন – এমন চলতে থাকলে ব্যবসা চালানো কিভাবে সম্ভব?
ছবি: DW/M. Mamun
দুর্দশার আরেকটি চিত্র
ঢাকার আরেক সিনেমা হল ‘সঙ্গীত’-এরও একই অবস্থা৷ এ হলেও প্রায় সব আসন ফাঁকা রেখে শো চালানো প্রায় নিয়মিত ঘটনা৷
ছবি: DW/M. Mamun
বন্ধ হলো ‘গীত’ ও ‘সঙ্গীত’
ঢাকার ধোলাইপাড় এলাকায় ‘গীত’ ও ‘সঙ্গীত’ সিনেমা হল৷ গত প্রায় দশ বছর ধরে ধুকে ধুকে চলার পর এ বছর রোজার আগেই বন্ধ করা হচ্ছে হল দুটি৷ এক সময় সারা দেশে সিনেমা হলের সংখ্যা ছিল এক হাজার ২০০ টি৷ বন্ধ হতে হতে এখন সারা দেশে সিনেমা হল টিকে আছে ২০০টির মতো৷
ছবি: DW/M. Mamun
সিনেমা হলের জায়গায় মার্কেট কমপ্লেক্স
বাংলাদেশে সিনেমা হল বন্ধের হিড়িক শুরু হয় মূলত ২০০১ সাল থেকে৷ ঢাকার ‘গুলিস্তান’ ও ‘নাজ’ সিনেমা হল ভেঙে নির্মাণ করা হয় মার্কেট কমপ্লেক্স৷ একইভাবে পুরনো ঢাকার ‘মুন’ ও ‘স্টার’ সিনেমা হল ভেঙেও করা হয়েছে বিশাল মার্কেট৷ এভাবে পুরনো ঢাকার ‘শাবিস্তান’, পোস্তগোলার ‘পদ্মা’, ‘মেঘনা’, ‘যমুনা’ ইত্যাদি সিনেমা হলও একে একে বন্ধ হয়েছে৷
ছবি: DW/M. Mamun
হল ভেঙে নতুন হল
ঢাকার ‘শ্যামলী’ সিনেমা হল ভেঙে মার্কেট কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হলেও সেখানে আধুনিক একটি সিনেমা হল রাখা হয়েছে৷
ছবি: DW/M. Mamun
দর্শক অশ্লীলতাবিমুখ
ঢাকার মিরপুরের ‘সনি’ সিনেমা হলে ৩২ বছর ধরে কাজ করছেন সামাদ মিয়া৷ তাঁর হলে একসময় অনেকে পরিবারের সবাইকে নিয়ে সিনেমা দেখতে আসতেন৷ কিন্তু এখন আর সে দৃশ্য তিনি দেখেন না৷ সেজন্য সিনেমার অশ্লীলতাকে দায়ী করেন তিনি৷
ছবি: DW/M. Mamun
টিকে থাকার কৌশল
ঢাকায় যে ক’টি হল টিকে আছে, তার মধ্যে মিরপুরের ‘সনি’ সিনেমা হল একটি৷ দীর্ঘ দিন লোকসান দিয়ে হলটি টিকিয়ে রেখেছেন এক সময়ের চলচ্চিত্র পরিচালক মোহামম্দ হোসেন৷ এই কমপ্লেক্সে কিছু বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান থাকায় লোকসান দিয়েও চালানো সম্ভব হচ্ছে হলটির কার্যক্রম৷
ছবি: DW/M. Mamun
ঢাকায় হল কমে প্রায় অর্ধেক
ঢাকার দারুসসালাম এলাকায় আরেকটি পুরনো সিনেমা হল ‘এশিয়া’৷ গাবতলী বাস স্টেশনের কাছাকাছি হওয়ায় এ সিনেমা হলটির দর্শক ঢাকার অন্যান্য হলের তুলনায় কিছুটা বেশি৷ আশির দশকে ঢাকা শহরে ছিল ৪৪টি সিনেমা হল৷ বর্তমানে কমতে কমতে সংখ্যাটি পঁচিশেরও নীচে নেমে এসেছে৷
ছবি: DW/M. Mamun
সাধারণ দর্শক যা মনে করেন
ঢাকার সাধারণ হলগুলোতে নিয়মিত সিনেমা দেখেন রুবেল৷ তাঁর মতে, আগে সিনেমাগুলো অনেক কাহিনিনির্ভর ছিল, কিন্তু বর্তমানের সিনেমাগুলোর কাহিনি থেকে শুরু করে নির্মাণ কৌশল সবকিছুই খারাপ৷
ছবি: DW/M. Mamun
পরোক্ষে মৌলবাদ
অনেকেই মনে করেন, বাংলা চলচ্চিত্র থেকে দর্শকদের মুখ ফিরিয়ে নেয়ার অন্যতম কারণ অশ্লীলতা৷
ছবি: DW/M. Mamun
অপর্যাপ্ত আধুনিকায়ন
চলচ্চিত্রে সংকটময় এই পরিস্থিতির জন্য সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতাকে দায়ী করেন সংশ্লিষ্টরা৷ চলচ্চিত্র নির্মাণে প্রযুক্তির ব্যবহারও খুব বেশি বাড়েনি৷ বিগত বছরগুলোতে বিএফডিসির কোনো আধুনিকায়নই হয়নি৷ সাভারের কবিরপুরে ফিল্ম সিটি গড়ে তোলার জন্য ১০৫ একর জমি বরাদ্দ হলেও আজ পর্যন্ত তার বাস্তবায়ন হয়নি৷
ছবি: DW/M. Mamun
পর্নো ছবি
ঢাকার কিছু সিনেমা হলে দীর্ঘকাল ধরে চলে আসছে বিদেশি সিনেমা৷ ‘এক টিকেটে ২ ছবি’-র এসব প্রদর্শনীতে মূলত দেখানো হয় পর্নো সিনেমা৷
ছবি: DW/M. Mamun
মাল্টিপ্লেক্সই ভরসা?
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যখন সিনেমা হল বন্ধের মহোৎসব চলছে, সে সময়ে কিছুটা হলেও দর্শক নিয়ে আসছে ঢাকার মাল্টিপ্লেক্স সিনেমা হলগুলো৷ সংখ্যায় খুবই কম হলেও ভালো পরিবেশের কারণে এসব মাল্টিপ্লেক্স হলে দর্শকরা আসছেন৷
ছবি: DW/M. Mamun
মাল্টিপ্লেক্সে বেশি-বিদেশি চলচ্চিত্র
বসুন্ধরা সিটির স্টার সিনেপ্লেক্সে প্রতিদিনই দর্শকরা ভিড় জমান বিভিন্ন সিনেমা দেখতে। তবে এসব সিনেমা হলে প্রদর্শিত সিনেমার অধিকাংশই বিদেশি৷
ছবি: DW/M. Mamun
পরিবারের সবার বিনোদনের স্থান
ঢাকার বসুন্ধরা সিটিতে স্টার সিনেপ্লেক্স মাল্টিপ্লেক্স সিনেমা হলের একটি৷ পরিবার-পরিজন নিয়ে এখানে দর্শকরা আসেন সিনেমা দেখতে৷
ছবি: DW/M. Mamun
20 ছবি1 | 20
প্রবাসীদের একটি বড় অংশের দীর্ঘদিনের দাবি হচ্ছে, প্রবাসে মৃতদের লাশ রাষ্ট্রীয় খরচে এবং ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশে পাঠানো৷ প্রায়ই খবর পাওয়া যায়, অমুক দেশে তমুক বাংলাদেশির লাশ বেওয়ারিশ হয়ে পরে আছে৷ বিশেষ করে মালয়েশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের প্রবাসী শ্রমজীবীদের জন্য এটা একটা সাধারণ ব্যাপারে দাঁড়িয়েছে৷
বাংলাদেশের বহুল পঠিত অনলাইন পত্রিকা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রবাস পাতার দায়িত্বে থাকার সময় প্রায়ই এ ধরনের সংবাদ ছাড়তে হতো৷ অনেকক্ষেত্রেই লাশ সনাক্ত করার মতো কাউকে পাওয়া যায় না৷
‘অজ্ঞাতনামা' চলচ্চিত্রের গল্পের মতোই একটি খবর প্রকাশ পায় একসময়৷ অজ্ঞাতনামা এক সৌদি প্রবাসী বাংলাদেশির লাশ সেবার ভুল করে পাকিস্তানে পাঠানো হয়৷ আসলে নামবিভ্রাটের কারণে ওই ঘটনাটি ঘটেছিল৷ পরে পাকিস্তান থেকে ওই লাশ আবারো ফেরত পাঠানো হয়েছিল সৌদি আরবে৷ তবে সেই বাংলাদেশির লাশ শেষ পর্যন্ত ফেরত এসেছিল কিনা জানা নেই!
আরেকবার ছাপাতে হয়েছিল, আরব আমিরাতের একটি হাসপাতালে তিনমাস বেওয়ারিশ হয়ে পরে থাকা এক বাংলাদেশির লাশের খবর৷ সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ভাইরাল হলে ঐ ব্যক্তির পরিবার জানতে পারে তার মৃত্যুর খবর৷
দীর্ঘদিন ধরে মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, আরব আমিরাতসহ নানা দেশের প্রবাসী বাংলাদেশিরা সরকারি ব্যবস্থাপনা ও খরচে লাশ দেশে নিয়ে আসার ব্যাপারে দাবি জানিয়ে আসলেও সেটা আমলে নেয়নি বাংলাদেশ সরকার৷
সিনেমা হলে ঢোকার আগে যা জানা প্রয়োজন
সিনেমা হলে প্রবেশের পর অনেকক্ষেত্রেই বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়, বিশেষ করে জার্মানিতে৷ তাই এ দেশে ছবি দেখতে যাওয়ার আগে কিছু বিষয় জেনে যাওয়া জরুরি৷ চলুন সেগুলো দেখে নেই৷
ছবি: picture-alliance/dpa
দ্রুত টিকিট সংগ্রহ করুন, দেরিতে আসুন
জার্মানরা যদিও ছুটি কাটাতে গিয়ে সুইমিং পুলের পাশের সিটটা আগের রাতেই তোয়ালে রেখে দখল করে আসে, সিনেমা হলে সেটার প্রয়োজন নেই৷ অধিকাংশক্ষেত্রে টিকিট কাটার সময়ই আপনি সিট নম্বর সংগ্রহ করে নিতে পারেন৷ তাই আগেভাগে টিকিট কেটে, সিনেমা শুরুর কিছুক্ষণ আগে হলে চলে যান৷ এমনটা করলে অকারণে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হবে না৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Fredrik Von Erichsen
নোনতা নাকি মিষ্টি?
জার্মানির সিনেমা হলে সাধারণত মিষ্টি পপকর্ন পাওয়া যায়৷ তবে অনেক সিনেমা হলে নোনতা পপকর্নও থাকে৷ তাই অর্ডার দেয়ার সময় আপনার পছন্দের কথা পরিষ্কারভাবে জানান৷ তা না হলে মিষ্টি পপকর্নই কিন্তু কপালে জুটবে!
ছবি: Colourbox
কারো আইসক্রিম লাগবে?
আগে সিনেমা শুরুর আগে এবং বিজ্ঞাপন দেখানোর পর সিনেমা হলেরই এক ব্যক্তি বড় ট্রেতে করে আইসক্রিম নিয়ে হলের মধ্যে ঘুরতেন৷ কেউ চাইলে তার কাছ থেকেই আইসক্রিম কিনে নিতে পারতেন৷ কিন্তু এখন এটা তেমন আর দেখা যায় না৷ তবে কিছু সিনেমা হলে এই চর্চাটা আজও থেকে গেছে৷ তাই হঠাৎ এরকম কাউকে দেখলে অবাক হবেন না৷
ছবি: picture-alliance/dpa
একই চেহারা, ভিন্ন গলা
ইউরোপের অন্যান্য দেশে ইংরেজি ছবি সাবটাইটেলসহ দেখানো হয়৷ তবে জার্মানিতে সেটা দেখানো হয় ভাষান্তর করে৷ যাঁরা ডাবিং করেন, তাঁরা সাধারণত একজন অভিনেতার জন্য সারা জীবন কাজ করেন৷ ফলে জার্মানরা জর্জ ক্লুনি কিংবা ব্র্যাড পিটের যে গলার সঙ্গে পরিচিত, আদতে সেটা তাদের গলা নয়৷ তাই আপনি প্রথমবার সিনেমা হলে গিয়ে ভিন্ন গলা শুনলে, অবাক হবেন না কিন্তু৷
ছবি: picture-alliance/dpa/D. Deme
প্রেক্ষাগৃহ নিজেই যখন গল্প বলে
জার্মানির বহু সিনেমা হলেরই নিজস্ব ইতিহাস আছে৷ যেমন বার্লিনের চিড়িয়াখানার অদূরে ‘সো পালাস্ট’ বা ‘জু প্যালেস’ প্রেক্ষাগৃহ৷ একসময় জার্মানির সবচেয়ে মনোহর প্রেক্ষাগৃহ হিসেবে পরিচিত এই জায়গায় রুমি শ্নাইডার এবং সোফিয়া লোরেন্সের মতো বড় তারকারা তাঁদের প্রথম সাফল্য উদযাপন করেছেন৷ প্রেক্ষাগৃহটি সম্প্রতি সংস্কার করে আবারো চালু করা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
পাশের সেটে চিত্রায়ন
আপনি যদি জার্মানিতে, বিশেষ করে বার্লিনে কোনো সিনেমা দেখেন তাহলে হতে পারে যে, সিনেমাটির কিছু অংশ সেই প্রেক্ষাগৃহেরই বাইরে চিত্রায়ন করা হয়েছে৷ ইউরোপ এবং হলিউডের চিত্র পরিচালকদের এক পছন্দের জায়গা বার্লিন৷ অনেক ছবির চিত্রায়ন এখানে হয়েছে, হচ্ছেও৷
ছবি: picture-alliance/dpa
6 ছবি1 | 6
এমন অনেকক্ষেত্রেই হয়েছে প্রবাসী বাংলাদেশিরা নিজেরাই চাঁদা বা তহবিল তুলে প্রবাসে মৃত ব্যক্তির লাশ দেশে তার সামর্থ্যহীন পরিবারের কাছে ফেরত পাঠিয়েছেন৷
২০১৭ সালের অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী ২৫ বছর বয়সি এক বাংলাদেশি ছাত্রের মৃত্যুর পর এ রকম তহবিল তোলার ঘটনার কথা মনে পরে৷ মোহাম্মদ কিবরিয়া নামের ওই ছেলেটির মা ছাড়া কেউ ছিল না৷ বাবা মারা যাওয়ায় প্রবাসে শিক্ষার খরচ জোগাতেই সে হিমশিম খাচ্ছিল৷ তার অকাল এবং হঠাৎ মৃত্যুর পর প্রবাসী বাংলাদেশিরা সরকারি খরচে লাশ দেশে পাঠানোর জন্য বাংলাদেশ দূতাবাসের সাহায্য চান৷
কিন্তু মৃত কিবরিয়া প্রবাসী বাংলাদেশিদের ‘ওয়েজ আরনার্স বোর্ডে'-র সদস্য না হওয়ায় তার লাশ সরকারের টাকায় বহন করার ‘কোনো সুযোগ' ছিল না বলে দূতাবাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়৷ পরে সিডনি প্রবাসীরা পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর শাহরিয়ার আলমের সাথে ই-মেলে যোগাযোগ করলে তিনিও দুঃখ প্রকাশ করে একই কথা লিখেন৷
সবশেষ প্রবাসীরা নিজেরাই ফেইসবুক ও অন্যান্য মারফতে ক্যাম্পেইন চালিয়ে কিবরিয়ার লাশ দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন৷
জীবিকার তাগিদে সৌদি আরব, মালয়েশিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্য এমনকি ইউরোপেরও নানা দেশে অবৈধভাবে প্রচুর বাংলাদেশি যান৷ এদের অনেকেই ‘ওয়েজ আর্নার্স বোর্ডে'-র সদস্য নন৷
তবে তাঁদের অধিকাংশই কিন্তু রেমিটেন্স যোদ্ধা৷ অথচ বিদেশ বিভুঁইয়ে তাঁদের কারও কারও নিঃস্ব অবস্থায় মৃত্যু হলে, অনেকসময়ই অযত্নে বেওয়ারিশ হিসেবে কিংবা ‘অজ্ঞাতনামা' হিসেবে ভিনদেশের মাটিতেই কবর দেওয়া হয়৷
তৌকির পরিচালিত ‘অজ্ঞাতনামা' এ সব প্রবাসীর কথা মনে করিয়ে দেয়৷ নিছক সিনেমায় বলা গল্পের বাইরেও যেন অনেক গল্প এক লহমায় বলে ফেলে৷
শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের পুরস্কারটা তাই অপাত্রে যায়নি বলাই যায়!