1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
ব্যবসা-বাণিজ্যএশিয়া

প্রবাসে অনিশ্চয়তায় রেমিট্যান্সের রেকর্ড?

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
৩০ জুলাই ২০২০

করোনায় সময়ে প্রবাসে বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশি কর্মীরা কাজ হারাচ্ছেন৷ একটি অংশ ফেরতও এসেছেন৷ তারপরও কেন রেকর্ড পরিমান রেমিট্যান্স আসছে? আর এই প্রবাসী আয় দেশে আসার রেকর্ড কি অব্যাহত থাকবে?

Katar Doha Baustelle Arbeiter OVERLAYFÄHIG
ছবি: Getty Images

চলতি জুলাই মাসের প্রথম ২৭ দিনে ২ দশমিক ২৪২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা৷ যা আজ (বৃহস্পতিবার) দিন শেষে  ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা করা হচ্ছে৷ জুলাই মাসের প্রথম ২৭ দিনে যে রেমিট্যান্স এসেছে তা পুরো জুন মাসের চেয়ে শতকরা ২২ ভাগ বেশি৷ আর গত বছর এই সময়ের চেয়ে ৩৯ শতাংশ বেশি৷ গত জুন মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ১ দশমিক ৮৩৩ বিলিয়ন ডলার৷

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসেবে গত  অর্থবছরে ৩০ জুন পর্যন্ত মোট ১৮ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে৷ ২০১৮-১৯ অর্থবছরের চেয়ে যা ১০ দশমিক ৮৫ ভাগ বেশি৷ ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মোট ১৬ দশমিক ৪২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে৷ আর নতুন অর্থ বছরের শুরুতে জুলাই মাসের ২৭ দিনে যে রেমিট্যান্স এসেছে তা সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে৷ অতীতে কখনোই এক মাসে এই পরিমাণ রেমিট্যান্স আসেনি৷

কারণ কী?

অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংক খাতের বিশ্লেষকদের সাথে কথা বলে  রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স আসার বেশ কয়েকটি কারণ জানা গেছে৷ আর তার মধ্যে প্রধান কারণ হিসেবে উঠে এসেছে এই করোনায় প্রবাসে অনিশ্চয়তা এবং চাকরি হারিয়ে ফিরে আসার ভয়৷

প্রবাসীরা অনিশ্চয়তায়: মোস্তাফিজুর

This browser does not support the audio element.

সিপিডির ফেলো অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান  জানান, কোরবানির ঈদের সময় অতীতেও বেশি রেমিট্যান্স এসেছে৷ কিন্তু এবার তা অতীতের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে৷ শুধু তাই নয়, গত কয়েক মাসেও রেমিটেন্স বেশি এসেছে৷ তার মতে,‘‘এটা মাসিক আয়ের রেমিট্যান্স নয়, ধারণা করছি প্রবাসীরা অনিশ্চয়তার কারণে তাদের যে জমানো টাকা বা পুঁজি আছে তা পাঠিয়ে দিচ্ছেন দেশে৷ কারণ তাদের চলে আসতে হলে ওই সময় নগদ টাকা কতটা নিয়ে আসতে পারবেন তার নিশ্চয়তা নেই৷'' 

করোনার কারণে শুধু বাংলাদেশ নয় পুরো বিশ্বই সংকটে আছে৷ বাংলাদেশে প্রবাসীদের যে স্বজন বা পরিবারের সদস্যরা আছেন তাদেরও আয় নেই৷ তার ওপর বন্যা৷ তাই অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ ড. জায়েদ বখত মনে করেন, ‘‘কোরবানি তো আছেই তার ওপর দেশে স্বজনদের সহায়তার জন্য হয়তো প্রবাসীরা অর্থ বেশি পাঠাচ্ছেন৷ কারণ তাদের স্বজনেরা এখানে সংকটে আছেন৷''

এর ওপরে যোগ হয়েছে ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা পাঠালে শতকরা  দুই ভাগ নগদ সহায়তা৷ এই করোনার সময় হুন্ডি নিয়ন্ত্রিত ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে৷ আর নগদ সহায়তার কারণে কার্ব মার্কেট এবং ব্যাংকে টাকা পাঠানোর সুবিধা এখন একই পর্যায়ে৷ তাই বৈধ চ্যানেলে টাকা পাঠানোর প্রবণতাও বেড়েছে বলে মনে করেন বিশ্লেকরা৷ ড. জায়েদ বখত বলেন,‘‘এর বাইরেও এখন মোবাইল ব্যাংকিং-এর মাধ্যমে টাকা পাঠাতে পারেন প্রবাসীরা৷ তারা এখন হুন্ডির মাধ্যমে টাকা তেমন পাঠাচ্ছেন বলে মনে হয়না৷''

অ্যামেরিকা ও ইউরোপ থেকেও বাড়ছে: জায়েদ

This browser does not support the audio element.

সিপিডির ড. মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে অতিরিক্ত আরো একটি কারণ যোগ করেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের রেমিট্যান্সের বড় অংশ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে আসলেও এখন অ্যামেরিকা ও ইউরোপ থেকেও রেমিট্যান্স আসার পরিমাণ বাড়ছে৷ ওইসব দেশ থেকে যে রেমিট্যান্স আসে তা  স্থায়ী৷  ঈদ এবং দেশে করোনা সংকটের কারণে দেশে স্বজনদের জন্য তারও হয়তো বেশি টাকা পাঠাচ্ছেন৷''

এই প্রবাহ কি অব্যাহত থাকবে?

তিনজন  বিশ্লেষকই মনে করছেন এখন যে রেকর্ড পরিমান রেমিটেন্স প্রবাসীরা দেশে পাঠাচ্ছেন তাতে তাদের রেগুলার ইনকামের বাইরের অর্থও যোগ হচ্ছে৷ কেউ হয়তো তাদের জমানো টাকার পুরোটাই দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছেন৷ আবার কেউ হয়তো বিদেশে তাদের ব্যবসার পুঁজিও দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছেন৷ করোনা পরিস্থিতি কোন দিকে যায় শেই শঙ্কা থেকে তারা এটা করছেন৷

সরকারি হিসেবে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে ২২ হাজার প্রবাসী কর্মী ফেরত এসেছেন৷ বাস্তবে সংখ্যাটা আরো বেশি হবে৷ আবার অনেকে কাজ হারিয়ে এখনো সেখানে অবস্থান করছেন৷ রেগুলার ইনকাম থেকে টাকা পাঠালে রেমিট্যান্স বাড়ার কথা নয়৷  জমানো টাকা বা পুঁজি দেশে পাঠানোর কারণেই এটা বাড়ছে৷ ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘‘এই বাড়তি রেমিট্যান্স প্রবাহ তাই অব্যাহত থাকবে কিনা সেটাই প্রশ্ন৷''

আরো কয়েক মাস গেলে বোঝা যাবে পরিস্থিতি কী হয়৷ তারা হয়তো এখন ধাপে ধাপে জমানো টাকা পাঠাচ্ছেন৷ জমানো টাকা বা পুঁজি দেশে পাঠানো শেষ হলে এই প্রবাহ থাকার কথা নয় বলে মনে করেন তিনি৷

সরকার এরইমধ্যে প্রবাসে এই করোনায় যাতে বাংলাদেশিরা চাকরি বা কাজ না হারায় সেই জন্য উদ্যোগ নেয়ার কথা বলেছে৷ কিন্তু এই উদ্যোগটা আরো কার্যকর ও দ্রুত হওয়া উচিত৷ নয়তো রেমিট্যান্সের হঠাৎ রেকর্ড উল্টো রেকর্ডেও পরিণত হওয়ার আশঙ্কা আছে৷

করোনার আগের হিসেব পাবেন ছবিঘরে:

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ