বেসরকারি সংস্থা খান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রোকসানা খন্দকার বলেন, দলগত অপরাধ প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত তিনি কোনো দলকেই মানবতাবিরোধী অপরাধী দল হিসাবে দেখতে চান না৷
বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ করে বিক্ষোভকারীরাছবি: Abdul Goni/REUTERS
বিজ্ঞাপন
আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা প্রসঙ্গে ডিডাব্লিউর সঙ্গে সাক্ষাৎকারে এই মন্তব্য করেন তিনি৷
ডয়চে ভেলে: বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷ নিবন্ধন স্থগিত হয়েছে৷ বিশ্বের অন্য দেশেও তো এর নজির আছে৷ আপনার পর্যবেক্ষণ কী?
রোকসানা খন্দকার: বিশ্বের অন্য দেশে নজির আছে৷ এক সময় জার্মানিতেও হয়েছিলো৷ কিন্তু বাংলাদেশে প্রেক্ষিতটা আমাদের বুঝতে হবে৷ আর আমরা এখন গণতন্ত্রের কথা বলছি৷ এই অবস্থায় আমরা এখন কোনো কিছু করলে সব কিছু বিবেচনায় নিয়ে করতে হবে৷ বিভিন্ন সময় দলগুলো নানা চাপ ও প্রক্রিয়ার মধ্যে পড়েছে৷ ১৯৭৫ সালে সব দলই নিষিদ্ধ করে একদল হয়েছিলো৷ আবার ২০০৮-৯ সালের পরে একই প্রক্রিয়া দেখেছি৷ কোনো কোনো দলকে নিষিদ্ধের চেষ্টা হয়েছে৷ আবার ওয়ান ইলেভেনের সময়ও একই প্রক্রিয়া দেখেছি৷ আওয়ামী লীগের ১৫ বছর তো ভোটাধিকার ছিলো না৷ কিন্তু মানুষ যখন ভোট দেয়ার সুযোগ পেয়েছে তখন কিন্তু দুইটি বড় দলকেই ভোট দিয়েছে৷ ফলে এই যে রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা, নিষিদ্ধ করলেই কিন্তু শেষ হয়ে যায় না৷ এটা আমাদের ভাবতে হবে৷ আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা ভালো হয়েছে, না খারাপ হয়েছে, এটার জবাব কিন্তু এক কথায় দেয়া যাবে না৷ বিশ্বের অন্য দেশের চেয়ে আমাদের এখানে পরিস্থিতি ভিন্ন৷ আমরা যেমন গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি৷ তেমনি আমাদের এখানে অনেক কমপ্লেক্সও আছে৷ আমাদের সংস্কার দরকার৷ নির্বাচনও দরকার৷
অপরাধের অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি করে, সেটা কি অন্যায্য হবে?
আমি ন্যায্য-অন্যায্যের কথা বলছি না৷ কিন্তু আমাদের তো ওই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে৷ সেখানে দল হিসেবে কতটুকু করেছে৷ ব্যক্তিগতভাবে কে কতটুকু করেছে৷ এটা যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা না বুঝতে পারব, আমরা বলতে পারবো না যে এটা ভালো হয়েছে, না খারাপ হয়েছে৷
কিন্তু ব্যক্তির বিচার তো হওয়া উচিত৷
অবশ্যই ব্যক্তির বিচার হওয়া উচিত৷ আর যদি এটা প্রমাণ হয় যে ওই ব্যক্তি বা ব্যক্তিরা দলের নির্দেশে করেছে, অথবা দলের সিদ্ধান্তে করেছে, তখন সেই দলের বিষয়টি বিবেচনায় আসতে পারে৷ কিন্তু সেই প্রক্রিয়ায় কি আমরা গেছি? মানবতাবিরোধী অপরাধ তো হয়েছে৷ কিন্তু গত ৯ মাসে তো আমরা জানতে পারিনি যে এটা ব্যক্তিগতভাবে হয়েছে, না দলগতভাবে হয়েছে৷ সেটাকেতো সামনে আনতে হবে৷ আমরা গণতন্ত্রের কথা বলি৷ কিন্তু বিচার না করে কোনো দলের নিবন্ধন, কার্যক্রম যদি আমরা বন্ধ করি, তাতে যদি একজন নাগরিকের অধিকারও ক্ষুন্ন হয়, তাহলে কি সেটা গ্রহণযোগ্য হবে?
জামায়াতকে শেখ হাসিনা পতনের আগে সন্ত্রাস দমন আইনে নিষিদ্ধ করেছিলো৷ ওই আইনটিকে আমরা কালো আইন বলি৷ এখন সেই আইনেই আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধকে আপনি কীভাবে দেখেন?
আমি কোনো দলকেই মানবতাবিরোধী অপরাধী দল হিসাবে দেখব না যতক্ষণ পর্যন্ত না দলগত অপরাধ প্রমাণ হয়৷ জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার পর কী হলো? জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের পর প্রথম ৫ আগষ্ট রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা হলো তখন কিন্তু সেই নিষিদ্ধ দলের নামই প্রথম ঘোষণা করা হলো৷ সেই জন্যই বলছি, কত বিচিত্র আমাদের এই দেশ৷ তাই কোনো কিছু করার আগে আমাদের সব বিষয় বিবেচনায় নিতে হবে৷
একদিনের নোটিশে ওই দলকে বন্ধ করা যায় না: রোকসানা খন্দকার
This browser does not support the audio element.
এখন জাতীয় পার্টি, ১৪ দল নিষিদ্ধের দাবি উঠছে৷ আবার বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, এর পর যে আবার বিএনপি নিষিদ্ধের দাবি উঠবে না তার নিশ্চয়তা কী?
আমি জানি না বিএনপি নেতা কী কারণে ওটা বলেছেন৷ দাবি উঠতেই পারে৷ আমরা এমন এক পর্যায়ে গিয়েছি যে, আমরা রাস্তায় কয়েকজন মিলে একটা ব্যানার নিয়ে দাঁড়িয়ে গেলেই দাবি তোলা যায়৷ আমরা জুলাই-আগস্টের পর কোথায় যাচ্ছি৷ দাবি তুললেই হলো? দেশে কি কোনো আইনকানুন নাই? যাকে বলবে ব্যান করে দেয়া হবে৷ সবার সামনে নির্যাতন করা হবে৷ কোনো আইন, নিয়মের মধ্যে থাকবে না?
এখন তো মানবতাবিরোধী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যাল আইন সংশোধন হয়েছে৷ দল ও সংগঠনের বিচার করা যাবে৷ আওয়ামী লীগের বিচার হবে৷ ১৯৭১ সালে জামায়াতের যে ভূমিকা তা নিয়ে বিচারের প্রশ্ন উঠতে পারে কিনা?
প্রশ্ন এরইমধ্যে উঠে গেছে৷ বিভিন্ন পর্যায়ে এগুলো নিয়ে আলোচনা হচ্ছে৷ যখন আমাকে আপনি বন্ধ করবেন৷ সেই একইভাবে আপনার যদি কোনো সমস্যা থাকে আপনাকে নিয়েও তো প্রশ্ন উঠবে৷ সেই প্রশ্ন উঠছে, উঠবে৷
আমরা তো জেএমবি, হরকাতুল জিহাদসহ আরো উগ্রবাদী সংগঠনকে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ হতে দেখছি৷
আপনি যে উগ্রবাদী সংগঠনের কথা বলছেন তারা কি জনগণ দিয়ে পরীক্ষিত যে কতজন তাদের চায়৷ তারা কি নির্বাচনে অংশ নিয়েছে? তারা তো নেয়নি৷ যে দল নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এসেছে৷ ১৫ বছরে তারা নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করেছে৷ তারপরও একদিনের নোটিশে ওই দলকে বন্ধ করা যায় না৷ তাদের যারা ভোটার আছে, যারা অপরাধে যুক্ত না, তাদের কথা শুনেছেন আপনারা? তারা কী বলতে চায়৷
তারা যদি নির্বাচন না করতে পারে, রাজনীতি না করতে পারে, তার কি কোনো প্রতিক্রিয়া হতে পারে?
অনেকে হয়তো মনে করতে পারে তারা নির্বাচন না করতে পারলে ওই ভোটগুলো তারা নিতে পারবে৷ যেটা ওয়ান ইলেভেনের সময় চেষ্টা করা হয়েছে৷ কিংস পার্টি গঠন করা হয়েছে, অনেক দল হয়েছে৷ তারা মনে করেছিলো তারা কিছু করতে পারবে৷ কিন্তু তারা কিছু পারেনি, হারিয়ে গেছে৷ এবারও অনেক দল হচ্ছে৷ কিংস পার্টিও দেখছি৷ কে জানে তাদের পরিণতিও হয়তো একইরকম হবে৷
আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে, কোনো পর্যায় থেকে কোনো ক্ষমাও চাওয়া হয়নি, অনুশোচনাও নেই৷ তাহলে আপনি তাদের কীভাবে গ্রহণ করবেন?
হ্যাঁ তাদের অনুশোচনা নাই৷ ক্ষমাও চায়নি৷ কিন্তু মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের সাথে সরকার কথা বলেছে? তারা কী ভাবছে সরকার জেনেছে? অনেক নেতা তো এখনো আছে৷ তাদের কারা শেল্টার দিচ্ছে? ১৮ কোটি মানুষ৷ তাদের মধ্যে একটা অংশ এর সঙ্গে যুক্ত ছিলো৷ তাদের কতজন বাইরে গেছে? তাদেরকে আমরা ধরতে পারছি না কেন?
বিশ্বে নিষিদ্ধ ঘোষিত কয়েকটি রাজনৈতিক দল
জনপ্রিয়তা, রাজনৈতিক শক্তি বা শাসনক্ষমতায় ছিল বিশ্বের এমন অনেক মূল ধারার রাজনৈতিক দলই পরে নিষিদ্ধ হয়৷ এদের অনেকের বিরুদ্ধে চরমপন্থা, সহিংসতা, রাষ্ট্রবিরোধিতা, কিংবা মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়৷
ছবি: The Holbarn Archive/Leemage/picture alliance
নাৎসি পার্টি (জার্মানি)
আডল্ফ হিটলারের নাৎসি পার্টি ১৯৩৩ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত জার্মানিতে ক্ষমতায় ছিল৷ হিটলারের নেতৃত্বাধীন ফ্যাসিস্ট পার্টি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নেতৃত্ব দেয়৷ এই দলটির বিরুদ্ধে হলোকাস্টের মাধ্যমে প্রায় ৬০ লাখ ইহুদি ও অন্যান্য সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়৷ যুদ্ধ শেষে মিত্র বাহিনী দলটিকে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করে এবং ১৯৪৫ সালে জার্মানির আইনে নাৎসি প্রতীক, স্লোগান ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়৷
ছবি: Reproduction by TASS/picture alliance
জার্মানির কমিউনিস্ট পার্টি
জার্মানির কমিউনিস্ট পার্টি বা কেপিডি ছিল একটি প্রভাবশালী মার্কসবাদী দল৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পশ্চিম জার্মানিতে দলটি সক্রিয় থাকলেও ১৯৫৬ সালে জার্মান কেন্দ্রীয় সাংবিধানিক আদালত দলটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে৷ নিষেধাজ্ঞার কারণ হিসেবে বলা হয়, দলটির আদর্শ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য হুমকি স্বরূপ এবং এটি সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রভাবে রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতায় যুক্ত৷
ছবি: picture-alliance/akg-images
ফ্যাসিস্ট পার্টি (ইটালি)
ফ্যাসিস্ট পার্টি ছিল বিশ্বের প্রথম সংগঠিত ফ্যাসিবাদী রাজনৈতিক দল, যার আদর্শ ছিল কট্টর জাতীয়তাবাদ৷ ইটালির স্বৈরশাসক মুসোলিনির শাসনে গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ ও গণহত্যা চালানো হয়৷ ১৯৪৩ সালে মুসোলিনির পতনের পর তাকে হত্যা করা হয় এবং ইটালির নতুন সরকার ফ্যাসিস্ট পার্টিকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে৷
ছবি: CPA Media Co. Ltd/picture alliance
মুসলিম ব্রাদারহুড
মুসলিম ব্রাদারহুড একটি ইসলামপন্থি রাজনৈতিক ও সামাজিক আন্দোলন৷ ২০১২ সালের মিশরের গণতান্ত্রিক নির্বাচনে দলটির প্রার্থী মোহাম্মদ মোরসি রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন৷ কিন্তু ২০১৩ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মোরসিকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিয়ে দলটিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়৷ পরে ২০২১ সালে অস্ট্রিয়াও এই দলটিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করে এবং ২০২৫ সালে জর্ডান এর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে৷
ছবি: Jamal Nasrallah/dpa/picture alliance
বাথ পার্টি (ইরাক)
সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের বাথ পার্টি ছিল আরব জাতীয়তাবাদী ও সমাজতান্ত্রিক মতাদর্শে বিশ্বাসী একটি দল, যা ইরাকে দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় ছিল৷ সাদ্দাম হোসেনের নেতৃত্বে দলটি কুর্দি ও শিয়া জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ব্যাপক নিপীড়ন ও গণহত্যার জন্য অভিযুক্ত৷ ২০০৩ সালে ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসনের পর দলটি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয় এবং সাদ্দাম সরকারের কর্মকর্তাদের রাষ্ট্রীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়৷
ছবি: Karim Sahib/dpa/picture-alliance
ইন্দোনেশিয়ার কমিউনিস্ট পার্টি
পিকেআই বা ইন্দোনেশিয়ার কমিউনিস্ট পার্টি এক সময় বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম কমিউনিস্ট দল ছিল এবং ইন্দোনেশিয়ায় এর ব্যাপক গণভিত্তি ছিল৷ ১৯৬৫ সালে একটি ‘সামরিক অভ্যুত্থান চেষ্টার পর’ সরকার তাদেরকে দায়ী করে এবং ব্যাপক দমনপীড়ন চালায়৷ অনুমান করা হয়, এই সময় প্রায় ৫ থেকে ১০ লাখ কমিউনিস্ট সমর্থককে হত্যা করা হয়েছিল৷ পরবর্তীতে সরকার দলটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে৷
ছবি: Public Domain
হিজবুত তাহরীর
হিজবুত তাহরীর একটি ইসলামপন্থি দল, যার লক্ষ্য বিশ্বব্যাপী ইসলামিক খেলাফত প্রতিষ্ঠা৷ দলটি নির্বাচন বা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না এবং অনেক দেশে এটিকে উগ্রপন্থার অভিযোগে নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷ যুক্তরাজ্য, জার্মানি, রাশিয়া, বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশে দলটিকে নিষিদ্ধ করেছে, কারণ একে রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে বিবেচিত করা হয়৷
ছবি: DW
ইউক্রেনের কমিউনিস্ট পার্টি
সোভিয়েত যুগের শক্তিশালী দলটি ইউক্রেনের স্বাধীনতার পরেও বেশ জনপ্রিয় ছিল৷ তবে ২০১৪ সালে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর ইউক্রেন ‘ডিকমিউনাইজেশন আইন’ প্রণয়ন করে এবং ২০১৫ সালে দলটিকে নিষিদ্ধ করে৷ সরকার দাবি করে, দলটি রুশপন্থি এবং ইউক্রেনের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি৷
ছবি: Max Vertrov/AFP/Getty Images
রেফাহ পার্টি (তুরস্ক)
তুরস্কে রেফাহ পার্টি ছিল একটি ইসলামপন্থি দল৷ তারা ১৯৯০-এর দশকে দেশটিতে উল্লেখযোগ্য জনপ্রিয়তা অর্জন করে৷ দলের নেতা ছিলেন নেজমেত্তিন এরবাকান এবং পরবর্তীতে এরদোয়ানও এই দলের মাধ্যমে রাজনীতিতে আসেন৷ ১৯৯৮ সালে তুরস্কের সংবিধানিক আদালত দলটিকে নিষিদ্ধ করে কারণ এটি ধর্মীয় আইন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ধর্মনিরপেক্ষতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে বলে অভিযোগ আনা হয়৷
ছবি: Getty Images/AFP/D. Meyer
গোল্ডেন ডন (গ্রিস)
গোল্ডেন ডন ছিল একটি উগ্র-ডানপন্থি, জাতীয়তাবাদী দল৷ এটি শরণার্থী ও সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে হিংসাত্মক কার্যকলাপের জন্য কুখ্যাত৷ ২০১২ সালে দলটি গ্রিক পার্লামেন্টে জায়গা পায়৷ পরে এর নেতারা রাজনৈতিক সহিংসতা, খুন ও অপরাধ সংগঠনের জন্য অভিযুক্ত হন৷ ২০২০ সালে একটি ঐতিহাসিক রায়ে দলটিকে কার্যত নিষিদ্ধ করা হয়৷
ছবি: Robert Geiss/Robert Geiss/picture alliance
জব্বিক (হাঙ্গেরি)
জব্বিক এক সময় হাঙ্গেরির একটি চরম ডানপন্থি দল ছিল, যার আদর্শ ছিল জাতিগত বিদ্বেষ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নবিরোধী অবস্থান৷ যদিও দলটি সরাসরি নিষিদ্ধ হয়নি, তবে ২০১৩-২০১৮ সালের মধ্যে এটি ব্যাপক আইনি ও সামাজিক চাপের মধ্যে পড়ে৷ পরে দলটি তাদের আদর্শ পরিবর্তন করে একটি মধ্যপন্থি দল হিসেবে নিজেদের গড়ে তোলে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Koszticsak
কাটালান স্বাধীনতাপন্থি দল (স্পেন)
স্পেনের কাটালুনিয়ার স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলনরত কয়েকটি দল, যেমন সিইউপি বা জুন্টস, ২০১৭ সালে স্পেনের সংবিধান লঙ্ঘনের দায়ে আইনি বাধার মুখে পড়ে৷ যদিও দলগুলো পুরোপুরি নিষিদ্ধ হয়নি, তবে স্বাধীনতা ঘোষণা ও গণভোট করার কারণে কয়েকজন রাজনৈতিক নেতাকে গ্রেফতার ও দলীয় কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়৷
ছবি: Reuters/A. Gea
আওয়ামী লীগ
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের৷ সেই অভ্যুত্থানকে রাষ্ট্রীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে দমন করতে গেলে পুলিশের গুলিতে কয়েক শত মানুষ মারা যান৷ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার পরে ২০২৫ সালে এসব হতাহতের ঘটনার বিচার না হওয়া পর্যন্ত দলটির কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে৷
ছবি: Saiful Islam Kallal/AP Photo/picture alliance