1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘প্রমাণের আগে কাউকেই মানবতাবিরোধী অপরাধী হিসাবে দেখব না'

১৬ মে ২০২৫

বেসরকারি সংস্থা খান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রোকসানা খন্দকার বলেন, দলগত অপরাধ প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত তিনি কোনো দলকেই মানবতাবিরোধী অপরাধী দল হিসাবে দেখতে চান না৷

বিক্ষোভরত জনগণ
বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ করে বিক্ষোভকারীরাছবি: Abdul Goni/REUTERS

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা প্রসঙ্গে ডিডাব্লিউর সঙ্গে সাক্ষাৎকারে এই মন্তব্য করেন তিনি৷

ডয়চে ভেলে: বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷ নিবন্ধন স্থগিত হয়েছে৷ বিশ্বের অন্য দেশেও তো এর নজির আছে৷ আপনার পর্যবেক্ষণ কী?

রোকসানা খন্দকার: বিশ্বের অন্য দেশে নজির আছে৷ এক সময় জার্মানিতেও হয়েছিলো৷ কিন্তু বাংলাদেশে প্রেক্ষিতটা আমাদের বুঝতে হবে৷ আর আমরা এখন গণতন্ত্রের কথা বলছি৷ এই অবস্থায় আমরা এখন কোনো কিছু করলে সব কিছু বিবেচনায় নিয়ে করতে হবে৷ বিভিন্ন সময় দলগুলো নানা চাপ ও প্রক্রিয়ার মধ্যে পড়েছে৷ ১৯৭৫ সালে সব দলই নিষিদ্ধ করে একদল হয়েছিলো৷ আবার ২০০৮-৯ সালের পরে একই প্রক্রিয়া দেখেছি৷ কোনো কোনো দলকে নিষিদ্ধের চেষ্টা হয়েছে৷ আবার ওয়ান ইলেভেনের সময়ও একই প্রক্রিয়া দেখেছি৷ আওয়ামী লীগের ১৫ বছর তো ভোটাধিকার ছিলো না৷ কিন্তু মানুষ যখন ভোট দেয়ার সুযোগ পেয়েছে তখন কিন্তু দুইটি বড় দলকেই ভোট দিয়েছে৷ ফলে এই যে রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা, নিষিদ্ধ করলেই কিন্তু শেষ হয়ে যায় না৷ এটা আমাদের ভাবতে হবে৷ আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা ভালো হয়েছে, না খারাপ হয়েছে, এটার জবাব কিন্তু এক কথায় দেয়া যাবে না৷ বিশ্বের অন্য দেশের চেয়ে আমাদের এখানে পরিস্থিতি ভিন্ন৷ আমরা যেমন গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি৷ তেমনি আমাদের এখানে অনেক কমপ্লেক্সও আছে৷ আমাদের সংস্কার দরকার৷ নির্বাচনও দরকার৷

অপরাধের অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি করে, সেটা কি অন্যায্য হবে?

আমি ন্যায্য-অন্যায্যের কথা বলছি না৷ কিন্তু আমাদের তো ওই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে৷ সেখানে দল হিসেবে কতটুকু করেছে৷ ব্যক্তিগতভাবে কে কতটুকু করেছে৷ এটা যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা না বুঝতে পারব, আমরা বলতে পারবো না যে এটা ভালো হয়েছে, না খারাপ হয়েছে৷

কিন্তু ব্যক্তির বিচার তো হওয়া উচিত৷

অবশ্যই ব্যক্তির বিচার হওয়া উচিত৷ আর যদি এটা প্রমাণ হয় যে ওই ব্যক্তি বা ব্যক্তিরা দলের নির্দেশে করেছে, অথবা দলের সিদ্ধান্তে করেছে, তখন সেই দলের বিষয়টি বিবেচনায় আসতে পারে৷ কিন্তু সেই প্রক্রিয়ায় কি আমরা গেছি? মানবতাবিরোধী অপরাধ তো হয়েছে৷ কিন্তু গত ৯ মাসে তো আমরা জানতে পারিনি যে এটা ব্যক্তিগতভাবে হয়েছে, না দলগতভাবে হয়েছে৷ সেটাকেতো সামনে আনতে হবে৷ আমরা গণতন্ত্রের কথা বলি৷ কিন্তু বিচার না করে কোনো দলের নিবন্ধন, কার্যক্রম যদি আমরা বন্ধ করি, তাতে যদি একজন নাগরিকের অধিকারও ক্ষুন্ন হয়, তাহলে কি সেটা গ্রহণযোগ্য হবে?

জামায়াতকে শেখ হাসিনা পতনের আগে সন্ত্রাস দমন আইনে নিষিদ্ধ করেছিলো৷ ওই আইনটিকে আমরা কালো আইন বলি৷ এখন সেই আইনেই আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধকে আপনি কীভাবে দেখেন?

আমি কোনো দলকেই মানবতাবিরোধী অপরাধী দল হিসাবে দেখব না যতক্ষণ পর্যন্ত না দলগত অপরাধ প্রমাণ হয়৷ জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার পর কী হলো? জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের পর প্রথম ৫ আগষ্ট রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা হলো তখন কিন্তু সেই নিষিদ্ধ দলের নামই প্রথম ঘোষণা করা হলো৷ সেই জন্যই বলছি, কত বিচিত্র আমাদের এই দেশ৷ তাই কোনো কিছু করার আগে আমাদের সব বিষয় বিবেচনায় নিতে হবে৷

একদিনের নোটিশে ওই দলকে বন্ধ করা যায় না: রোকসানা খন্দকার

This browser does not support the audio element.

এখন জাতীয় পার্টি, ১৪ দল নিষিদ্ধের দাবি উঠছে৷ আবার বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, এর পর যে আবার বিএনপি নিষিদ্ধের দাবি উঠবে না তার নিশ্চয়তা কী?

আমি জানি না বিএনপি নেতা কী কারণে ওটা বলেছেন৷ দাবি উঠতেই পারে৷ আমরা এমন এক পর্যায়ে গিয়েছি যে, আমরা রাস্তায় কয়েকজন মিলে একটা ব্যানার নিয়ে দাঁড়িয়ে গেলেই দাবি তোলা যায়৷ আমরা জুলাই-আগস্টের পর কোথায় যাচ্ছি৷ দাবি তুললেই হলো? দেশে কি কোনো আইনকানুন নাই? যাকে বলবে ব্যান করে দেয়া হবে৷ সবার সামনে নির্যাতন করা হবে৷ কোনো আইন, নিয়মের মধ্যে থাকবে না?

এখন তো মানবতাবিরোধী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যাল আইন সংশোধন হয়েছে৷ দল ও সংগঠনের বিচার করা যাবে৷ আওয়ামী লীগের বিচার হবে৷ ১৯৭১ সালে জামায়াতের যে ভূমিকা তা নিয়ে বিচারের প্রশ্ন উঠতে পারে কিনা?

প্রশ্ন এরইমধ্যে উঠে গেছে৷ বিভিন্ন পর্যায়ে এগুলো নিয়ে আলোচনা হচ্ছে৷ যখন আমাকে আপনি বন্ধ করবেন৷ সেই একইভাবে আপনার যদি কোনো সমস্যা থাকে আপনাকে নিয়েও তো প্রশ্ন উঠবে৷ সেই প্রশ্ন উঠছে, উঠবে৷

আমরা তো জেএমবি, হরকাতুল জিহাদসহ আরো উগ্রবাদী সংগঠনকে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ হতে দেখছি৷
আপনি যে উগ্রবাদী সংগঠনের কথা বলছেন তারা কি জনগণ দিয়ে পরীক্ষিত যে কতজন তাদের চায়৷ তারা কি নির্বাচনে অংশ নিয়েছে? তারা তো নেয়নি৷ যে দল নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এসেছে৷ ১৫ বছরে তারা নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করেছে৷ তারপরও একদিনের নোটিশে ওই দলকে বন্ধ করা যায় না৷ তাদের যারা ভোটার আছে, যারা অপরাধে যুক্ত না, তাদের কথা শুনেছেন আপনারা? তারা কী বলতে চায়৷

তারা যদি নির্বাচন না করতে পারে, রাজনীতি না করতে পারে, তার কি কোনো প্রতিক্রিয়া হতে পারে?

অনেকে হয়তো মনে করতে পারে তারা নির্বাচন না করতে পারলে ওই ভোটগুলো তারা নিতে পারবে৷ যেটা ওয়ান ইলেভেনের সময় চেষ্টা করা হয়েছে৷ কিংস পার্টি গঠন করা হয়েছে, অনেক দল হয়েছে৷ তারা মনে করেছিলো তারা কিছু করতে পারবে৷ কিন্তু তারা কিছু পারেনি, হারিয়ে গেছে৷ এবারও অনেক দল হচ্ছে৷ কিংস পার্টিও দেখছি৷ কে জানে তাদের পরিণতিও হয়তো একইরকম হবে৷

আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে, কোনো পর্যায় থেকে কোনো ক্ষমাও চাওয়া হয়নি, অনুশোচনাও নেই৷ তাহলে আপনি তাদের কীভাবে গ্রহণ করবেন?

হ্যাঁ তাদের অনুশোচনা নাই৷ ক্ষমাও চায়নি৷ কিন্তু মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের সাথে সরকার কথা বলেছে? তারা কী ভাবছে সরকার জেনেছে? অনেক নেতা তো এখনো আছে৷ তাদের কারা শেল্টার দিচ্ছে? ১৮ কোটি মানুষ৷ তাদের মধ্যে একটা অংশ এর সঙ্গে যুক্ত ছিলো৷ তাদের কতজন বাইরে গেছে? তাদেরকে আমরা ধরতে পারছি না কেন?

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ