1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

হিন্দুদের ঘরবাড়ি ও মন্দিরে হামলা

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
৩১ অক্টোবর ২০১৬

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হিন্দুদের ঘরবাড়ি ও মন্দিরে হামলার জন্য প্রশাসনের অবহেলা, ঢিলেমিকে দায়ী করছেন সংখ্যালঘু নেতা ও মানবাধিবার কর্মীরা৷ তাঁদের অভিযোগ, পুলিশকে একদিন আগে হামলার আশঙ্কার কথা জানানো হলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি৷

কালী ঠাকুর
ছবি: bdnews24.com

ফেসবুকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে একটি পোস্টের কথা বলে প্রতিবাদের নামে রবিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দু জনপদে দিনভর সহিংসতা চালায় দুর্বৃত্তরা৷ ঐ ঘটনায় একটি মামলার বাদী কাজল দত্ত ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘ফেসবুকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের প্রতিবাদের নামে রবিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত নাসিরনগর উপজেলা সদরে ঘোষপাড়া, দাসপাড়া, নমঃসূদ্রপাড়া, দত্তপাড়ায় কয়েকশ লোক লাঠি-সোটা নিয়ে একযোগে হামলা চালায়৷ এ সময় তারা শতাধিক বাড়ি ঘরে হামলা-ভাঙচুর এবং লুটপাট করে৷

কাজল দত্ত

This browser does not support the audio element.

ভেঙে ফেলে প্রাচীন গৌরমন্দির, লোকনাথ মন্দির, কালী মন্দির, মহাদেব মন্দিরসহ অন্তত ১০টি মন্দির৷ তার মন্দিরের প্রতিমাও ভেঙে ফেলে৷ এ সময় নাসিরনগর গৌর মন্দিরের সেবায়েত শংকর সেন ব্রাক্ষচারীসহ হিন্দু পাড়ার অসংখ্য নারী-পুরুষকে বেধড়ক পেটানো হয়৷ এ ঘটনায় এখনও পুরো এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে৷''

এদিকে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি রানা দাশগুপ্ত ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘পরিকল্পিতভাবে হিন্দুদের বাড়ি-ঘর ও মন্দিরের ওপর হামলা চালানো হয়েছে৷ পুলিশকে আগাম জানিয়েও কোনো নিরপত্তা পাওয়া যায়নি৷ শনিবার বিকেলেই নাসির নগরে উত্তেজনা দেখা দেয় একটি কথিত ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে৷ এরপর পুলিশকে বিষয়টি জানানো হলে তারা ঐ যুবককে আটক করে, কিন্তু সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি৷''

তিনি বলেন, ‘‘এই পরিস্থিতি পুলিশ সুপার আবার ধর্মীয় অবমাননার বিরুদ্ধে সমাবেশের অনুমতি দেন, যা উত্তেজনা বাড়াতে সহায়তা করে৷''

রানা দাশগুপ্ত

This browser does not support the audio element.

রান দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘এটা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়৷ যারা দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে চায়, তারাই এর সঙ্গে জড়িত৷''

মানবাধিকার কর্মী এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক নূর খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘যদি কেউ ফেসবুকে ধর্মীয় অবমাননাকর পোস্ট দিয়েও থাকেন সেটা তো তার দায়৷ এ জন্য একটি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ওপর কোনো যুক্তিতেই হামলা হতে পারে না৷ তাছাড়া পুলিশ প্রশাসন আগাম নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিলে এই হামলা হতো না৷''

তিনি বলেন, ‘‘এই হামলার ফলে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় আরো নিরপত্তাহীনতায় ভুগবে৷ এরইমধ্যে নিরাপত্তাহীনতার কারণে বেশ কিছু হিন্দু পরিবার বাংলাদেশ ছেড়ে চলে গেছে৷ কেউ কেউ গ্রাম ছেড়ে নিরাপত্তার জন্য শহরে আসছেন৷''

তিনি আরো বলেন, ‘‘রামুর বৌদ্ধ মন্দিরে হামলা, বাগেরহাটে সংখ্যালগুদের ওপর হামলারই ধারাবহিকতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হামলা৷ সরকারকে এই হামলা রোধ করে তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে৷''

নূর খান

This browser does not support the audio element.

এখন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে কোনো ধরনের সাহায্য সহযোগিতা করা হয়নি বলে জানা গেছে৷ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, ‘‘ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে৷ এরপর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হবে৷'' পুলিশ আগাম নিরাপত্তা দেয়নি এই অভিযোগের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘‘আমরা যত দ্রুত সম্ভব ব্যবস্থা নিয়েছি৷''

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ ইকবাল হোসাইন জানান, ‘‘রবিবারের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পক্ষে কাজল দত্ত এবং নির্মল চৌধুরী বাদী হয়ে নাসিরনগর থানায় পৃথক দুটি মামলা করেছেন৷ দুই মামলায় অজ্ঞাত ১২'শ জনকে আসামি করা হয়েছে৷ নাসিরনগর থানা পুলিশ এরইমধ্যে চারজনকে আটক করেছে৷ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে৷''

এদিকে সোমবার বিকেলে নাসির নগরে শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ সেখানে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার উপস্থিত ছিলেন৷ ঢাকায়ও প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে৷ নাসিরনগরে তিন প্লাটুন বিজিবি, দুই শতাধিক পুলিশ এবং বিপুল পরিমাণ র‌্যাব মোতায়েন করা হয়েছে৷ ক্ষতিগ্রস্তরা এই ঘটনার বিচার ও ক্ষতিপূরণ এবং নিরাপত্তা দাবি করেছেন৷

আপনার এলাকাতেও কি এ ধরনের হামলার ঘটনা ঘটেছে, ঘটছে? জানান আমাদের, লিখুন নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ