সময়ের হিসেবে পেরিয়েছে প্রায় দুই দশক৷ কিন্তু অভিশপ্ত ওই প্রশ্নটি বাংলাদেশের পিছু তাড়া করছে প্রতিনিয়ত — টেস্ট ক্রিকেটে আসলে কতটা এগোল বাংলাদেশ?
বিজ্ঞাপন
এরপর আরো ৪৯টি টেস্ট খেলেছেন তিনি৷ কিন্তু প্রথমটি ভোলেন কী করে! সে কারণে কণ্ঠে হৃদয়ের সবটুকু আবেগ ঢেলে হাবিবুল বাশার বলতে পারেন, ‘‘প্রথম টেস্টের প্রতিটি বল, প্রতিটি শট, প্রতিটি মিনিট, প্রতিটি সেকেন্ড আমার মনে আছে৷ আমার জীবনে এর চেয়ে গর্বের মুহূর্ত খুব বেশি আসেনি৷''
দ্বিতীয়জন এরপর আর দ্বিতীয় কোনো টেস্ট খেলেননি৷ ক্রিকেট ছাড়ার পর ক্রিকেটের সঙ্গেও নেই কোনোভাবে৷ তবু জীবনের সবচেয়ে গর্বের স্মৃতিচারণে মুহূর্তখানেক সময়ও নেন না মাহমুদুল হাসান, ‘‘অবশ্যই দেশের হয়ে প্রথম টেস্ট খেলাই সবচেয়ে আনন্দের৷ আমার মতো ব্যাংকার তো কতশত রয়েছেন, কিন্তু প্রথম টেস্ট খেলার কারণেই লোকে এখনো আমাকে চেনে৷''
প্রথমজনকে চেনাটা কোনো সমস্যা নয়৷ বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে সফল ব্যাটসম্যানদের একজন হাবিবুল বাশার৷ তাঁর অধীনে টেস্টে প্রথম জয়ও পেয়েছে বাংলাদেশ৷ এখনও ক্রিকেটের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে, আছেন জাতীয় দলের নির্বাচকের দায়িত্বে৷ পরেরজনের নাম খানিক ধন্ধে ফেলে দিতে পারে৷ ২০০০ সালের নভেম্বরের সেই ঐতিহাসিক টেস্টের স্কোরকার্ডেও তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাবে না৷ বাঁহাতি পেসার বিকাশ রঞ্জন দাস যে ধর্মান্তরিত হয়ে নাম বদলে ফেলেছেন! তবু বাংলাদেশের ক্রিকেট রূপকথায় অমর হয়ে আছেন তিনি৷ দেশের সেই প্রথম টেস্ট খেলার কারণেই৷
হাবিবুল-মাহমুদুলদের স্মৃতির পুকুরে ঢিল পড়ার কারণ ইডেন টেস্ট৷ যেখানে উপমহাদেশের প্রথম দিবারাত্রির টেস্টে মুখোমুখি হচ্ছে ভারত-বাংলাদেশ৷ উপলক্ষ্যটি স্মরণীয় করে রাখার নানা আয়োজনে ব্যস্ত ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলি; বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে যাঁর প্রথম৷ ইডেনে তিনি আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট স্কোয়াডের সবাইকে৷ গর্বের স্মৃতি নিয়ে তাই কলকাতা উড়াল দিয়েছেন হাবিবুল-মাহমুদুল, যে আনন্দভ্রমণে তাঁদের সঙ্গী বেদনার এক প্রশ্ন —১৯ বছরে টেস্ট ক্রিকেটে আসলে কতটা এগোল বাংলাদেশ?
টেস্টে যা করেছে টাইগাররা
২০০০ সালে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর থেকে এখন অবধি ১১৬টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ, জিতেছে মাত্র ১৩টি৷ এক নজরে টাইগারদের টেস্ট রেকর্ড দেখে নিন৷
ছবি: Getty Images/AFP/M.U. Zaman
আফগানদের বিরুদ্ধে বড় পরাজয়
বিশ্ব ক্রিকেটে নবীন দল আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টটিতে হেরেছে টাইগাররা৷ ২০১৯ সালে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে ২২৪ রানের ব্যবধানে হারে স্বাগতিকরা৷
ছবি: Getty Images/AFP/STR
অস্ট্রলিয়ার বিপক্ষে জয়
এখন পর্যন্ত বড় যে দলগুলোকে টেস্টে হারাতে পেরেছে টাইগাররা, তাদের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া অন্যতম৷ ২০১৭ সালে ঘরের মাঠে একটি টেস্ট জিততে সক্ষম হয় টাইগাররা৷ তবে, অন্য ম্যাচে অসিরা জয় নিশ্চিত করায় সিরিজটি ড্র হয়৷ দু’দল এখন অবধি মোট ছয়বার মুখোমুখি হয়েছে৷ এরমধ্যে পাঁচবারই জিতেছে অস্ট্রেলিয়া৷
ছবি: Getty Images/R. Cianflone
হেরেছে ইংল্যান্ডও
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মোট দশটি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ৷ এরমধ্যে হরেছে নয়টিতে৷ ২০১৬ সালে ঢাকায় একটি টেস্টে ইংলিশদের ১০৮ রানে হারাতে সক্ষম হয় টাইগাররা৷
ছবি: Getty Images/AFP/D. Sarkar
ভারতের বিপক্ষে বড় পাওয়া ড্র
টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর বাংলাদেশ প্রথম টেস্টটি খেলে ভারতের বিপক্ষে৷ সে খেলায় প্রথম ইনিংসে জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়ে তুললেও শেষ অবধি তা হয়নি৷ প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২০ নভেম্বর অবধি ১০টি টেস্ট খেলেছে টাইগাররা৷ এরমধ্যে হেরেছে আটটিতে, ড্র হয়েছে বাকি দু’টি৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A. Rahi
নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সাকিবের রেকর্ড
কিউয়িদের বিরুদ্ধে ১৫টি টেস্ট খেললেও এখন অবধি জয়ের মুখ দেখেনি টাইগাররা৷ তবে, তিনটি ম্যাচ ড্র হয়েছে৷ কিউয়িদের বিরুদ্ধে অবশ্য সাকিব আল হাসান একাধিক রেকর্ড গড়েছেন৷ ২০১৭ সালে ওয়েলিংটন টেস্টে এক ইনিংসে ২১৭ রান করেন তিনি৷ টেস্টে এটাই তাঁর সর্বোচ্চ রান৷ বোলিংয়ে এক ইনিংসে ৩৮ রানের বিনিময়ে সাত উইকেট নেয়ার রেকর্ডটিও তিনি গড়েছেন কিউয়িদের বিরুদ্ধেই৷
ছবি: Getty Images/H. Hopkins
পাকিস্তানের বিপক্ষে তামিমের দ্বিশতক
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অংশ নেয়া দশটি টেস্ট ম্যাচের নয়টিতেই হেরেছে টাইগাররা৷ একটি ম্যাচ ড্র হয়েছে৷ দলটির বিরুদ্ধে তামিম ইকবালের একটি দ্বিশতক রয়েছে৷ ২০১৫ সালে খুলনা টেস্টে এক ইনিংসে ২০৬ রান করেন তিনি৷ টেস্টে এটাই তামিমের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
জয় মেলেনি দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধেও
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১২টি টেস্ট খেলেছে টাইগাররা, হেরেছে ১০টিতে৷ তবে দু’টি ম্যাচ ড্র হয়েছে৷ দলটির বিপক্ষে শাহাদাত হোসেনের এক ইনিংসে ২৭ রানের বিনিময়ে ছয় উইকেট নেয়ার রেকর্ড রয়েছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
হেরেছে শুধু শ্রীলঙ্কা
দক্ষিণ এশিয়ার টেস্ট খেলুড়ে দলগুলোর মধ্যে একমাত্র শ্রীলঙ্কাই এখন অবধি বাংলাদেশের কাছে হেরেছে৷ দু’দলের মধ্যে আয়োজিত ২০টি টেস্টের ১৬টিতে হরেছে টাইগাররা, জিতেছে একটিতে, আর ড্র হয়েছে বাকি তিনটি৷ টেস্টে মুশফিকুর রহিমের দু’টি দ্বিশতকের একটি এসেছে এই দলের বিরুদ্ধে৷ ২০১৫ সালে গল টেস্টে এক ইনিংসে ২০০ রান করেন তিনি৷ সেই টেস্টে মোহাম্মদ আশরাফুল করেছিলেন ১৯০ রান৷
ছবি: Getty Images/AFP/I. S. Kodikara
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জয়
এখন অবধি যেসব দলের বিরুদ্ধে টেস্টে জিতেছে বাংলাদেশ, তার মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ৷ দলটির বিরুদ্ধে ১৬ টেস্টের মধ্যে চারটিতে জিতেছে টাইগাররা, হেরেছে দশটিতে৷ মেহেদি হাসান মিরাজের টেস্টে সবচেয়ে ভালো বোলিংয়ের রেকর্ডও এই দলের বিরুদ্ধে৷ ২০১৮ সালে ঢাকায় ৫৮ রানের বিনিময়ে সাত উইকেট নেন তিনি৷
ছবি: Getty Images/AFP/R. Brooks
জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি জয়
জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে খেলা ১৬ টেস্টের মধ্যে ছয়টিতে জিতেছে টাইগাররা৷ হেরেছে সাতটিতে, আর ড্র তিনটি৷ টেস্টে বাংলাদেশি কোনো ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটি হয়েছে এই দলের বিরুদ্ধে৷ ২০১৯ সালে ঢাকায় এক টেস্টে ২১৯ রানে অপরাজিত ছিলেন মুশফিকুর রহিম৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
10 ছবি1 | 10
একে একে ১১৬টি টেস্ট খেলা হয়েছে৷ সময়ের হিসেবে পেরিয়েছে প্রায় দুই দশক৷ কিন্তু অভিশপ্ত ওই প্রশ্নটি বাংলাদেশের পিছু তাড়া করছে প্রতিনিয়ত৷ ইন্দোরে ভারতের বিপক্ষে চলতি সিরিজের প্রথম টেস্টে তিন দিনে অসহায় আত্মসমর্পনের পর আবারও৷ ইডেন গার্ডেন্সের আরেক ইতিহাসের অংশ হবার আগে এ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তাই কেমন অসহায়ই না শোনায় তাঁদের কণ্ঠ!
‘‘অবশ্যই আমাদের আরো উন্নতি করা উচিত ছিল৷ শুরুর দিকে টেস্টের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সমস্যা হচ্ছিল, সেটি অস্বীকার করার উপায় নেই৷ কিন্তু এত দিন টেস্ট খেলার পর তো আর সেটি বলা যাবে না৷ তাহলে তা অজুহাতের মতো শোনাবে৷ টেস্টে যে প্রত্যাশিত উন্নতি করতে পারিনি, সেটি আমাকে অনেক পোড়ায়৷'' হাবিবুলের হাহাকার ঝরে পড়ে এভাবেই৷
বাঁহাতি পেসার মাহমুদুলের কথাতেও এর প্রতিধ্বনি, ‘‘প্রথম টেস্টে ভারতের সদগোপান রমেশকে বোল্ড করেছিলাম, ‘‘বলের আঘাতে বেলস ভেঙে যায়৷ আম্পায়ার স্টিভ বাকনর আমার হাতে সেই বেলস তুলে দিয়ে বলেন, ‘এটি স্মৃতি হিসেবে তোমার কাছে রাখো৷' পরের ১৯ বছরে আমাদের ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত এমন অনেক আনন্দের স্মৃতি তৈরি হয়েছে৷ কিন্তু দল হিসেবে বাংলাদেশের এমন ক'টা স্মৃতি হয়েছে বলতে পারেন?'' তাঁর কষ্টমাখা প্রশ্নেই মিশে থাকে উত্তর৷
১৯ বছরে ১১৬টি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ৷ এর মধ্যে জয় মোটে ১৩ ম্যাচ৷ দেশের বাইরে জয় মাত্র চারটিতে৷ টেস্টে ৮৭ পরাজয়ের মধ্যে ৪১টিতে ইনিংস ব্যবধানে৷ এ বছর খেলা চার টেস্টের তিনটিতেই অমন করুণ পরিণতি৷ ৫০ টেস্টে তিন সেঞ্চুরিতে ৩০২৬ রান করা হাবিবুলের দুঃখের তাই শেষ নেই, ‘‘১৯ বছর আগের সঙ্গে তুলনা করলে আমাদের অবকাঠামোর অনেক উন্নতি হয়েছে৷ অবশ্যই আমাদের আরো অনেক উন্নতির অবকাশ রয়েছে৷ কিন্তু টেস্টে যে ভালো করতে পারছি না, সেজন্য টেস্টের উপযোগী ক্রিকেটার তৈরি করতে না পারার দায়টাই বেশি৷ ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিতে পারে, এমন সামর্থ্যের চারজন বোলার আমরা একসঙ্গে কখনোই পাইনি৷ আমাদের ব্যাটসম্যানরা সেঞ্চুরি করেছেন, ডাবল সেঞ্চুরিও করেছেন৷ কিন্তু সামগ্রিক অর্থে বড় ইনিংস খেলার টেকনিক-টেম্পারমেন্টের একঝাঁক ব্যাটসম্যানও কখনো একসঙ্গে পাইনি৷''
ছোট্ট আন্তজার্তিক ক্যারিয়ারের মাহমুদুলও দ্বিমত করেন না৷ তবে সেজন্য তিনি মূল দায় দেন অনুন্নত অবকাঠামোকেই, ‘‘বাংলাদেশে অনেক প্রতিভাবান ক্রিকেটার রয়েছেন৷ কিন্তু তাঁদের তুলে আনার মতো, তাঁদের পরিচর্চা করার মতো অবকাঠামো আমাদের ক্রিকেট বোর্ড তৈরি করতে পারেনি৷ আরেকটা বিষয় খুব গুরুত্বপূর্ণ৷ টেস্টের প্রতি মনোভাব৷ ওয়ানডে কিংবা এখনকার টি-টোয়েন্টিকে বোর্ড যেভাবে গুরুত্ব দেয়, টেস্টকে সেভাবে দেয় বলে আমার কাছে মনে হয় না৷'' এ সত্যকে অস্বীকার করার উপায় কী!
সে কারণেই টেস্টে ধুঁকছে বাংলাদেশ৷ এখনকার নির্বাচক হাবিবুলের দাবি, চার বছরের মধ্যে অবস্থার পরিবর্তন হবে৷ তবে টেস্টের প্রতি বোর্ড-ক্রিকেটারদের মনোভাবের কারণে তাতে বিশ্বাস রাখা কঠিন৷ এই যেমন হাবিবুল বলছেন, ‘‘টেস্টের মজা অন্য কোনো ফরম্যাটে নেই; ইস, যদি গোলাপি বলে দিবা-রাত্রির এই টেস্ট খেলতে পারতাম!'' কিংবা মাহমুদুলের কথায়, ‘‘শুনেছি গোলাপি বলে নাকি সুইং বেশি হয়, খেলতে পারলে ফাটিয়ে দিতাম৷'' মনের গহীন থেকে এমন রোমাঞ্চ কি সত্যি অনুভব করেন তাঁদের পরবর্তী প্রজন্ম? অথবা প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের অবকাঠামোর উন্নয়নে বিসিবি কি সত্যি আন্তরিক? ২০ কোটি ক্রিকেটপাগল বাঙ্গালিও কি টেস্টের আনন্দরস ঠিক সেভাবে উপভোগ করেন?
সুমন চট্টোপাধ্যায়ের সেই বিখ্যাত গানের সুরেই যেন ধরা থাকে তা৷ প্রশ্নগুলো সহজ আর উত্তরও তো জানা!
সুমনের চোখে বাংলাদেশের সেরা টেস্ট একাদশ
টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ গত ১০ নভেম্বর উনিশ বছর পূর্ণ করে বিশে পা রেখেছে৷ সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমনের গড়া বাংলাদেশের সেরা টেস্ট একাদশে কারা এবং কেন স্থান পেয়েছেন তা জানতে দেখুন আমাদের এই ছবিঘর৷
ছবি: AP
মাশরাফি
সেরা একাদশের নেতৃত্ব নির্দ্বিধায় মাশরাফি বিন মর্তুজার হাতে তুলে দিয়ে সুমন বলেছেন, ‘‘এত জোরে বল করতে আমি দেশের খুব কম বোলারকেই দেখেছি৷ সুইংও ছিল৷ অত্যন্ত বুদ্ধিমান বোলার৷’’
ছবি: AP
তামিম
‘সেরা পারফর্মার‘ হিসেবেই ওপেনিংয়ে জায়গা করে নিয়েছেন তামিম ইকবাল৷ লর্ডসে সেঞ্চুরি করা এই খেলোয়াড়কে একাদশে রাখার পেছনে দেশ ও দেশের বাইরে পারফর্ম্যান্সকেই বড় করে দেখেছেন হাবিবুল বাশার৷ তিনি বলেন, ‘‘পেস ও স্পিন সমান ভালো খেলে৷ সবচেয়ে বড় কথা, ওর ব্যাটিং অন্য ব্যাটসম্যানদেরও আত্মবিশ্বাস দেয়৷ ওকে এক নম্বরে রাখতে তাই একদমই সময় লাগেনি৷’’
ছবি: picture-alliance/A. Salahuddin
জাভেদ ওমর
৪০টি টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা এবং টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের হাবুডুবু খাওয়ার সময়ে উইকেট আঁকড়ে পড়ে থাকার মানসিকতাকে গুরুত্ব দিয়ে জাভেভ ওমরকে দলে রেখেছেন সুমন৷
ছবি: Shamsul Hoque Tanku
মুমিনুল
তিন নম্বর পজিশনে স্থান পেয়েছেন তিনি৷ সুমন বলছেন, মুমিনুলকে বাছতে কষ্ট হয়নি তার৷ তবে এই পজিশনে মুমিনুলকে বাদ দিলে নিজেকে জায়গা দিতেন তিনি৷ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান মুমিনুলকে একাদশে রাখার ব্যাখ্যায় সুমন বলছেন, ‘‘রান করার দক্ষতা অনেক এবং ব্যাকফুটে শক্তিশালী৷’’
ছবি: Getty Images/AFP/M. U. Zaman
বুলবুল
বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান আমিনুল ইসলাম বুলবুলকে একাদশে রেখে সুমন বলছেন, ‘‘বাংলাদেশের ক্রিকেটকে আরো অনেক কিছুই দেওয়ার ছিল তাঁর৷’’ মাত্র ১৩ টেস্ট ক্যারিয়ারেও বুলবুল সর্বকালের সেরা একাদশে থাকার মতো ঝলক দেখিয়েছিলেন বলে বিশ্বাস করেন হাবিবুল বাশার সুমন৷
ছবি: Shamsul Hoque Tanku
আকরাম খান
১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফিজয়ী অধিনায়ক আকরাম খানকে সেরা একাদশে জায়গা দিয়ে সুমন বলছেন, ‘‘যে-কোনো বোলিং আক্রমণকে ছিঁড়ে-খুঁড়ে ফেলার ক্ষমতা ছিল উনার৷ পেস ও স্পিন খেলার সামর্থ্যের দিক থেকে অত্যন্ত উঁচু দরের ব্যাটসম্যান তিনি৷’’
ছবি: DW/Z. Chowdhury
সাকিব
অলরাউন্ডার হিসেবে একাদশে জায়গা করে নিয়েছেন সাকিব আল হাসান৷ সব ফরম্যাটে বাংলাদেশের সেরা খেলোয়াড়ও তিনি৷
ছবি: Munir uz Zaman/AFP/Getty Images
মুশফিক
সুমন বলছেন, মুশফিক অলরাউন্ডার, কারণ, তিনি উইকেটের পেছনেও দাঁড়াবেন৷ বিশেষজ্ঞ উইকেটরক্ষক হিসেবে খালেদ মাসুদ অপ্রতিদ্বন্দ্বী হলেও মুশফিককে দিয়ে কিপিং করালে বাড়তি একজন ব্যাটসম্যান খেলাতে পারার চিন্তা থেকেই তাঁর ওপর আস্থা রেখেছেন সুমন৷
ছবি: Getty Images/AFP/I. S. Kodikara
রফিক
এই সি্পন বোলারকে একাদশে রেখে সুমন বলছেন, ‘‘রফিক আমার দলে সব সময়ই থাকবে৷ আমি অধিনায়ক থাকাকালে সে আমাকে খুব কমই বঞ্চিত করেছে৷ রান আটকানোর পাশাপাশি উইকেট তুলে নেওয়ায় ওর চেয়ে ভালো আর কেউ নয়৷’’
ছবি: Getty Images/AFP/F. K. Godhuly
শাহাদাত
ভীতিকর পেসার হিসেবে একাদশে শাহাদাত হোসেনকে রেখে সুমন বলছেন, ‘‘টেস্ট ক্রিকেটে অধিনায়ক যে রকম আক্রমণাত্মক বোলার চায়, শাহাদাত সে রকমই একজন৷ সত্যিকারের টেস্ট বোলার৷’’
ছবি: AP
মুস্তাফিজ
টেস্ট ক্যারিয়ারে এখনো বলার মতো কিছু না করলেও মুস্তাফিজকে যে-কোনো উইকেটে উইকেট নেওয়ার মতো বোলার বলেই মনে করেন সুমন৷ এজন্য তাঁর সেরা টেস্ট একাদশে জায়গা করে নিয়েছেন তরুণ এই বোলার৷
ছবি: Getty Images/AFP/I. S. Kodikara
11 ছবি1 | 11
প্রিয় পাঠক, আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷