বাংলাদেশে জামায়াত নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী আপিল বিভাগের রায়ে মৃত্যুদণ্ড থেকে রেহাই পেয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডে দণ্ডিত হওয়ায়, তোপের মুখে রয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন টিম৷
প্রতীকী ছবিছবি: AP
বিজ্ঞাপন
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এখন রাষ্ট্র নিয়োজিত আইনজীবী বা প্রসিকিউটর ১৭ জন৷ ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নির্বাহী সভাপতি শাহরিয়ার কবির দাবি করেছেন, তাঁদের অধিকাংশই ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর হবার যোগ্য নন৷ তিনি ডয়চে ভেলের কাছে অভিযোগ করে বলেন, ‘‘প্রসিকিউটরদের অধিকাংশই খণ্ডকালীন হিসেবে কাজ করছেন৷ ‘ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর' – এই সাইনবোর্ড ব্যবহার করে তাঁরা অন্য আদালতে বিভিন্ন ধরণের মামলা পরিচালনা করছেন৷ এমনকি কোনো কোনো প্রসিকিউটরের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালের বাইরে জামায়াত নেতাদের মামলা পরিচালনার মতো অনৈতিক কাজের অভিযোগও আছে৷''
কাদের মোল্লার ফাঁসি পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসিতে ঝোলা কাদের মোল্লাকে ইসলামপন্থিরা বলছেন ‘শহিদ৷’ এই শহিদের মৃত্যুর প্রতিবাদে বিভিন্ন জেলায় চলছে সহিংসতা৷ মোল্লার ফাঁসি পরবর্তী চব্বিশ ঘণ্টা নিয়ে আমাদের বিশেষ ছবিঘর৷
ছবি: AP
ইসলামপন্থিদের কাছে ‘শহিদ’
জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা কাদের মোল্লাকে মনে করছেন একজন ‘শহিদ৷’ যিনি ‘‘ইসলামি আন্দোলন করার কারণে’’ ফাঁসির দড়িতে ঝুলেছেন৷ এই ‘শহিদের’ মৃত্যুতে তাই শুক্রবার বিভিন্ন জেলায় গায়েবানা জানাজার আয়োজন করে জামায়াত-শিবির৷ মোল্লার জন্য পাকিস্তানেও গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ ছবিটি সেখানকার৷
ছবি: Rizwan Tabassum/AFP/Getty Images
অনেকের কাছে ‘মিরপুরের কসাই’
তবে বাংলাদেশে অনেকেই কাদের মোল্লাকে মনে করেন ‘মিরপুরের কসাই,’ যিনি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন৷ ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তার বিরুদ্ধে আনা মানবতাবিরোধী ছয়টি অভিযোগের পাঁচটি প্রমাণিত হয়েছে৷ ফলে তাকে দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের সাজা বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত দশটা এক মিনিটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে কার্যকর হয়৷
ছবি: Mustafiz Mamun
মোল্লার পরিবার আক্রান্ত
জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর ঢাকার মগবাজারে তার পরিবারের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে৷ কাদের মোল্লার ছেলে হাসান জামিল বাংলাদেশের একাধিক সংবাদপত্রের কাছে দাবি করেন, ‘‘কিছু ছাত্রলীগের নেতা পরিবারের সদস্যদের উপর হামলা চালায়৷’’ এসময় মোল্লা পরিবারের কয়েক সদস্যকে পুলিশ থানায় নিয়ে যায়৷
ছবি: Getty Images/Afp/Munir Uz Zaman
ফরিদপুরে শেষ ঠিকানা
বৃহস্পতিবার রাতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর মাইক্রোবাসে করে কাদের মোল্লার মরদেহ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বের করা হয়৷ বাংলাদেশে ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম লিখেছে, ‘‘স্থানীয় সময় রাত ৪টার দিকে ফরিদপুরের আমিরাবাদ গ্রামে লাশ পৌঁছানোর পর জানাজা শেষে লাশ দাফন করা হয়৷’’
ছবি: Mustafiz Mamun
ফাঁসির রায় উদযাপন
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে কাদের মোল্লার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকার শাহবাগে সমবেত হন অসংখ্য মানুষ৷ তাদের আন্দোলনের ফলে পরবর্তীতে আইন সংশোধন করে কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়৷ সেই আপিলে মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত হয় মোল্লার৷ রায় কার্যকরের পর স্বাভাবিকভাবেই তাই শাহবাগে আনন্দ মিছিল দেখা গেছে৷
ছবি: Mustafiz Mamun
ব্যাপক সহিংসতা
এদিকে, শুক্রবার বাংলাদেশে সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে পাঁচ ব্যক্তি৷ রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সড়ক অবরোধ করে, সেতু ভেঙে, গাড়ি পুড়িয়ে চালানো হচ্ছে নাশকতা৷ এমতাবস্থায় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল৷
ছবি: DW/M. Mamun
তবে সাঈদীর মতো নয়
নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ শাহেদুল আনাম খান এবং শরীফ এ কাফি অবশ্য ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘জামায়াত তার সহিংস তত্পরতা নিয়ে কতদূর এগোতে পারবে তাও দেখার বিষয় আছে৷ কারণ সাঈদীর ফাঁসির রায়ের পর তারা যে মাত্রায় সহিংসতা চালাতে সক্ষম হয়েছিল এবার এখন পর্যন্ত তারা সেই মাত্রায় যেতে পারেনি৷ এর কারণ আগের অভিজ্ঞতা থেকে সরকার পূর্ব-প্রস্তুতি নিয়েছে৷’’ তবে এই প্রস্তুতি যথেষ্ট নয় বলেই মনে করেন এই দুই বিশেষজ্ঞ৷
ছবি: DW/M. Mamun
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
জামায়াত নেতা কাদের মোল্লাকে ফাঁসি না দিতে বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধ করেছিল জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন৷ তবে মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকরের পর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আব্দুল কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিষয়টি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়৷
ছবি: Reuters
মৃত্যুদণ্ড সমর্থন করে না জার্মানি
বৃহস্পতিবার জার্মানির মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনার মার্কুস ল্যোনিং এক বিবৃতিতে কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর না করতে বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন৷ তিনি বলেছিলেন, ‘‘জার্মানি নীতিগতভাবে মৃত্যুদণ্ড সমর্থন করে না৷’’ তাই ফাঁসির পরিবর্তে কারাদণ্ড দেবার অনুরোধ জানিয়েছিলেন তিনি৷
ছবি: dapd
ট্রাইব্যুনাল নিয়ে বিতর্ক
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ২০১০ সালে ঢাকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা করে৷ তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিরোধী দল বিএনপি মনে করে, সরকার বিরোধী দলকে দুর্বল করতে এই ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা করেছে৷ আন্তর্জাতিক পর্যায়েও এই ট্রাইব্যুনাল নিয়ে বিতর্ক রয়েছে৷
ছবি: AP
10 ছবি1 | 10
তিনি বলেন, ‘‘সরকার প্রসিকিউটরদের পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা না দেয়ায় এখানে ভালো আইনজীবী পাওয়া যায় না৷ ফলে শুরু থেকেই ট্রাইব্যুনালে একটি অদক্ষ প্রসিকিউটর এবং তদন্ত দল গঠিত হয়েছে৷'
শাহরিয়ার কবির দাবি করেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর মামলা পরিচালনায় অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছে৷ অ্যাটর্নি জেনারেল আপিল বিভাগে মামলা পরিচালনায় ট্রাইব্যুনালের আইনজীবীদের সহায়তা নেননি – যা ছিল একটি ভুল সিদ্ধান্ত৷ তিনি সাধারণ আইনজীবী দিয়ে মামলা পরিচালনা করেছেন৷ ফলে ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদণ্ডের রায় আপিল বিভাগে বহাল থাকেনি, হ্রাস পেয়েছে৷''
তাঁর মতে, ‘‘ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন এবং তদন্ত সংস্থাকে এখন ঢেলে সাজান উচিত৷ এছাড়া আপিল বিভাগের মামলা পরিচালনায় দ৭ আইনজীবীদের কাজে লাগান প্রয়োজন৷''
তিনি বলেন, ‘‘প্রসিকিউিটরদের হতে হবে দক্ষ, সত্ ও মুক্তিযুদ্ধের প্রতি দায়বদ্ধ৷ তা না হলে ভবিষ্যতে আরো বিপর্যয় দেখা দিতে পারে৷''
শাহবাগ আন্দোলনের বছরপূর্তি
যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে শুরু হওয়া শাহবাগ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার শপথ নিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা৷ তবে জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী আরো অনেক ইস্যুতে এখন সরব গণজাগরণ মঞ্চ৷ শাহবাগ আন্দোলনের বর্ষপূর্তি নিয়ে আমাদের ছবিঘর৷
ছবি: Harun Ur Rashid Swapan
সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার শপথ
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে শুরু হওয়া শাহবাগ আন্দোলনের এক বছর পূর্ণ হয়েছে গত পাঁচ ফেব্রুয়ারি৷ বর্ষপূর্তিতে সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার শপথ নিয়েছেন আন্দোলনের কর্মীরা৷ গণজাগরণ মঞ্চের নেতৃত্বে চলবে এই আন্দোলন৷
ছবি: DW/M. Mamun
জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু
পাঁচ ফেব্রুয়ারি শাহবাগে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু হয় গণজাগরণ মঞ্চের অনুষ্ঠান মালা৷ তিনদিনব্যাপী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উদযাপন করা হয় বর্ষপূর্তি৷
ছবি: DW/M. Mamun
‘ফাঁসির’ দাবি
শাহবাগ আন্দোলনের এক বছর পূর্তির শোভাযাত্রায় একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের ‘ফাঁসির’ দাবিতে সোচ্চার ছিলেন গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা৷
ছবি: DW/M. Mamun
জনতার ভিড়
গণজাগরণের মঞ্চের আয়োজিত বর্ষপূর্তির বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় সাধারণ মানুষের ঢল নামে৷ এক বছর পূর্তিতে ঢাকার শাহবাগ থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করে গণজাগরণ মঞ্চ কর্মীরা৷
ছবি: DW/M. Mamun
‘প্রতীকী ফাঁসি’
শোভাযাত্রায় ‘প্রতীকী ফাঁসির’ চিত্রও তুলে ধরা হয়৷ বলাবাহুল্য, একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের উদ্যোগকে সমর্থন করলেও ফাঁসির বিষয়ে সমর্থন নেই আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের৷
ছবি: DW/M. Mamun
আলোকচিত্র প্রদর্শনী
আন্দোলনের বছর পূর্তিতে শাহবাগে আলোকচিত্র প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়৷ যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে শুরু হওয়া এই আন্দোলন শাহবাগ ছাড়িয়ে গোটা বাংলাদেশে এবং পরবর্তীতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে৷
ছবি: DW/M. Mamun
‘নাস্তিক ব্লগার’
শাহবাগ আন্দোলন থেকে সৃষ্ট গণজাগরণের মঞ্চের গত এক বছরের পথচলা মোটেই সহজ ছিল না৷ বরং আন্দোলনের এক পর্যায়ে খুন হন ব্লগার রাজিব হায়দার৷ এরপর ঢালাওভাবে ব্লগারদের নাস্তিক এবং ইসলাম ধর্মবিরোধী আখ্যা দিয়ে তাঁদের শাস্তির দাবিতে রাজপথে নামে হেফাজতে ইসলাম৷ এক পর্যায়ে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ব্লগে ‘ইসলাম ধর্ম নিয়ে উসকানিমূলক মন্তব্য ও কটূক্তির' অভিযোগে চার ব্লগারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷
ছবি: Getty Images
‘সমর্থন আগের মতোই’
তবে ‘নাস্তিক ব্লগার’ প্রচারণার কারণে শাহবাগে জনসমর্থন কমেনি বলে মনে করেন ব্লগার আরিফ জেবতিক৷ শাহবাগ আন্দোলনের অন্যতম এই কর্মী বলেন, ‘‘আমাদের শুরুতে যে জনসমর্থন ছিল, আজকেও সেই একই জনসমর্থন আছে৷ এবং আমি চ্যালেঞ্জ করি যে কোনো মিডিয়া এটা জরিপ চালিয়ে দেখতে পারে৷’’
ছবি: Arif Jebtic
ভিন্নমত
শুরুর দিকে শাহবাগ আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্লগার আসিফ মহিউদ্দীন অবশ্য মনে করেন, ‘‘রাজনৈতিক দল এবং আমাদের রাজনীতিক নেতারা আসলে আমাদের আন্দোলনটা খেয়ে ফেলেছে৷’’ দুর্বৃত্তের হামলায় গুরুতর আহত আসিফ গত বছর বাংলাদেশে কয়েকমাস কারাভোগের পর বর্তমানে জার্মানিতে অবস্থান করছেন৷
ছবি: DW/A. Islam
বিভিন্ন ইস্যুতে সরব গণজাগরণ মঞ্চ
প্রসঙ্গত, একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবির পাশাপাশি আরো অনেক ইস্যুতে সরব রয়েছে গণজাগরণ মঞ্চ৷ সর্বশেষ দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকেন্দ্রিক সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় ‘রোড মার্চ’ করে গণজাগরণ মঞ্চ৷
ছবি: Harun Ur Rashid Swapan
10 ছবি1 | 10
ওদিকে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর রানা দাসগুপ্ত ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সাঈদীর রায় দিতে প্রসিকিউটররা অদক্ষ তা বলা যাবে না৷ কারণ ট্রাইব্যুনালে সাঈদীর ফাঁসি হয়েছে৷ বরং আপিল বিভাগ তাঁকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছে৷ কিন্তু তারা রায়ে কোথাও বলেননি যে তদন্তে বা সাক্ষ্য প্রমাণে ত্রুটি আছে৷ ট্রাইব্যুনালে যে অপরাধ প্রমাণ হয়েছে, আপিল বিভাগেও সেই অপরাধই প্রমাণ হয়েছে৷ এখন আপিল বিভাগ কী দণ্ড দেবে – তা তাদের এখতিয়ার৷''
রানা দাসগুপ্ত বলেন, ‘‘মৃত্যুদণ্ড এবং আমৃত্যু কারাদণ্ডের মধ্যে কতটুকু দূরত্ব তা বুঝতে হবে৷ এই দু'টি দণ্ডের মধ্যে চুল পরিমাণ ব্যবধান থাকতে পারে৷''
রানা দাসগুপ্তের কথায়, ‘‘কাদের মোল্লাকে তো ট্রাইব্যুনাল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল৷ আর আপিল বিভাগ দিয়েছে মৃত্যদণ্ড৷ এর কী ব্যখ্যা থাকতে পারে?''
সরকার ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনে পরিবর্তন আনবে – আইনমন্ত্রীর এই কথার জবাবে রানা দাসগুপ্ত বলেন, ‘‘সরকার চাইলে পরিবর্তন আনতে পারে৷ কারণ ট্রাইব্যুনাল সরকারের আদেশে গঠিত হয়েছে৷ এটা সরকারে এখতিয়ার৷''
তিনি বলেন, ‘‘আমিও শুনেছি পরিবর্তন আসবে, তবে কবে তা জানি না৷''