1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রাণীদের উপর বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার কার্যকর বিকল্প

১ অক্টোবর ২০১৮

গবেষণাগারে প্রাণীদের উপর পরীক্ষা শুধু নিষ্ঠুর ও কষ্টকরই নয়, বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গিতে তা সবসময় কার্যকরও নয়৷ জার্মানির একদল বিজ্ঞানী এর বিকল্প ও অনেক নিখুঁত পদ্ধতি সৃষ্টি করেছেন৷

Ratte im Käfig
ছবি: picture-alliance/dpa/R. Wittek

মার্সেল লাইস্ট-এর নেতৃত্বে গবেষকদের এক দল জানতে চান, কোন পদার্থ মস্তিষ্কের ক্ষতি করতে পারে৷ কোষগুলি এমন এক নেটওয়ার্ক তৈরি করে, যা অনেকটা ক্ষুদ্রকায় মস্তিষ্কের মতো৷ ভ্রূণের মস্তিষ্কের সঙ্গে তার তুলনা করা চলে৷

বিজ্ঞানীরা তাতে কীটনাশক যোগ করলে টাইমল্যাপ্স ভিডিওতে দেখা যায়, স্নায়ুকোষের নেটওয়ার্ক কীভাবে ধীরে ধীরে ভেঙে পড়ে৷ প্রাণীর উপর পরীক্ষা চালিয়ে তা দেখা সম্ভব হতো না৷ মার্সেল লাইস্ট বলেন, ‘‘এগুলি মানুষের নিউরন৷ আমরা ইঁদুরের উপর বিষক্রিয়ার প্রভাব নিয়ে আগ্রহী নই৷ তাহলে তো ইঁদুরের বিষ তৈরি করতাম৷ আমরা মানুষের ক্ষেত্রে পূর্বাভাষ দিতে চাই৷ আমাদের মতে, একমাত্র মানুষের কোষ দিয়েই তা সম্ভব৷''

টোমাস হার্টুং ও মার্সেল লাইস্ট দীর্ঘকাল ধরে একসঙ্গে কাজ করছেন৷ আশির দশকে ট্যুবিঙেন শহরে উচ্চশিক্ষার সময়ে বিষক্রিয়া সংক্রান্ত গবেষণার ক্ষেত্রে প্রাণীদের উপর পরীক্ষা স্বাভাবিক বিষয় ছিল৷ কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রাণীদের উপর পরীক্ষার সার্বিক ব্যবস্থা সম্পর্কে তাঁদের মনে সংশয় বাড়ছে৷ মার্সেল বলেন, ‘‘শিল্পজগতে এবং পরে ওষুধ সৃষ্টির কাজ করার সময় আমার দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আসে৷ আমরা বার বার দেখেছি, যে প্রাণীদের ক্ষেত্রে আমাদের পর্যবেক্ষণ হাসপাতালে হুবহু কাজ করেনি৷''

টোমাস হার্টিং বাল্টিমোরে যে সফটওয়্যার সৃষ্টি করেছেন, তাঁর ছাত্রছাত্রীদের তিনি তা দেখাচ্ছেন৷ সেটি প্রাণীদের উপর পরীক্ষা সংক্রান্ত বিশাল তথ্যভাণ্ডার মূল্যায়ন করে৷ তাতে দেখা গেছে, এমনকি একটি প্রাণীর উপর পরীক্ষা চালালে তার ফলাফল অন্য প্রাণীর ক্ষেত্রেও পুরোপুরি খাটে না৷

টেস্ট টিউবে মানুষের কোষ নিয়েইন-ভিট্রো পদ্ধতিতে পরীক্ষা চালানোই এর সমাধানসূত্র৷  এই কোষগুলি ‘মিনি-মস্তিষ্ক'-এর মতো ক্ষুদ্রকায় ইন্দ্রিয় তৈরি করে৷ বৈজ্ঞানিকদের মনে সুস্পষ্ট প্রশ্ন থাকলে তবেই ইন-ভিট্রো পদ্ধতি কাজ করে৷ যেমন কোন পদার্থ মস্তিষ্কের কোন কোষের ক্ষতি করে? তবে প্রাণীদের উপর পরীক্ষা পুরোপুরি বন্ধ হতে অনেক সময় লাগবে৷ বিশ্বব্যাপী বছরে আনুমানিক ৪ লক্ষ খরগোশকে এমন যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়৷ অথচ টোমাস হার্টুং এর বিকল্প প্রক্রিয়া সৃষ্টি করেছেন৷

পাইরোজেন পরীক্ষার সময় খরগোশের কানে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে ওষুধ, টিকা অথবা রক্ত প্রবেশ করানো হয়৷ সেই কারণে জ্বর হলে জ্বর সৃষ্টিকারী পাইরোজেন পরীক্ষার স্যাম্পেলগুলি অশুদ্ধ করে তোলে৷

হার্টুং-এর পদ্ধতিতে খরগোশের বদলে মানুষের রক্ত ব্যবহার করা হয়৷ তরলের রং পরিবর্তনই স্যাম্পেলের অশুদ্ধতা দেখিয়ে দেয়৷ তার থেকেও খারাপ বিষয় হলো, এখন আর এমন পরীক্ষা প্রায় হয়-ই না৷

অর্থাৎবিকল্প ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও কোম্পানিগুলি প্রাণীর উপর পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে৷মার্সেল লাইস্ট তাতে দমে যাবার পাত্র নন৷ ২০০৬ সাল থেকে তিনি কনস্টানৎস বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন৷ জার্মানিতে এই ক্ষেত্রে প্রথম এমন পদ সৃষ্টি করা হয়েছিল৷ এর মধ্যে বেশ কিছু পরিবর্তনও ঘটেছে৷ মার্সেল লাইস্ট বলেন, ‘‘১০ বছর আগে এমন পরীক্ষার সুযোগই ছিল না৷ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাব ছাড়া কারো কাছে এমন প্রক্রিয়া ছিল না৷ এর মধ্যে এমন পরীক্ষার বিকল্প পদ্ধতির সরঞ্জাম কেনা যায়৷ যত বেশি কোম্পানি অন্যান্য কোম্পানিগুলিকে এই পদ্ধতি ব্যবহার করতে দেখছে, সেই পদ্ধতির ব্যবহারও বাড়ছে৷''

এর মধ্যে শিল্পজগতে গবেষণার ক্ষেত্রে প্রাণীর উপর পরীক্ষার প্রায় ৮০ শতাংশ বন্ধ করে নতুন পদ্ধতির প্রয়োগ করা হচ্ছে৷ তার পেছনে কনস্টানৎস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের বিশাল অবদান রয়েছে৷

মানুয়েল গ্যার্বার/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ