পদার্থবিদ আইনস্টাইনের 'ঈশ্বরের চিঠি' বিক্রি হলো প্রায় তিন মিলিয়্ন ডলারে৷ নিউ ইয়র্কভিত্তিক নিলাম প্রতিষ্ঠান ক্রিস্টি'স অকশন হাউস এই নিলামের আয়োজন করে৷ তবে কে বা কারা এই চিঠিটি কিনেছে, সেই তথ্য গোপন রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি৷
বিজ্ঞাপন
ক্রিস্টি'স নিলাম হাউস জানায়, তাদের ধারণা ছিল সর্বোচ্চ দেড় মিলিয়্ন ডলারে বিক্রি হতে পারে৷ তবে সব ধারণা ছাপিয়ে ঐতিহাসিক এই চিঠি ২ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি হয়৷
জার্মান ভাষায় লিখিত এই চিঠিতে আইনস্টাইন ধর্ম ও দর্শন নিয়ে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেছিলেন৷ জার্মান দার্শনিক এরিক গুটকিন্ডের কাছে তিনি এই চিঠি লেখেন৷ দার্শনিক গুটকিন্ডের ‘চুজ লাইফ: দ্য বিবলিকাল কল টু রিভল্ট' পড়ে তাঁর প্রতিক্রিয়ায় চিঠিটি লিখেছিলেন আইনস্টাইন৷ এটিই আইনস্টাইনের ধর্ম নিয়ে লেখা একমাত্র মতবাদ বলে মনে করা হয়৷
১৯৫৪ সালে এই চিঠিটি লেখার কিছুদিন পরই আইনস্টাইন মারা যান৷ চিঠিটিতে বারবার ইশ্বরে বিশ্বাস নিয়ে নানা আলাপ উঠে এসেছে৷ এবং তিনি লিখেছেন, ঈশ্বর শব্দটি তাঁর কাছে বাহুল্য৷ তিনি মনে করেন, এটি মানুষের দুর্বলতার বহিপ্রকাশ৷ তিনি এ-ও লিখেছেন, ইহুদিরা অন্যান্য সাধারণ মানুষের মতোই৷ ধর্ম আলাদা বলেই তাঁরা ভিন্ন কেউ নয়৷
চিঠিটি গুটকিন্ডের উত্তরাধিকারের কাছে ছিল৷ তিনি ২০০৮ সালে এটি চার লাখ ৪০ হাজার ডলারে বিক্রি করেন নিলামকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে৷
এলিজাবেথ শুমাখার /এফএ
স্কুলে খারাপ ছাত্র হয়েও যাঁরা সেরা বিজ্ঞানী হয়েছেন
নানা কারণে স্কুলের পড়ালেখায় ভাল ছিলেন না তাঁরা৷ সেজন্য স্কুল থেকে বের করে দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে৷ কিন্তু তারপর হয়ে উঠেছেন সেরা বিজ্ঞানী৷
ছবি: picture-alliance / akg-images
আলব্যার্ট আইনস্টাইন
শিক্ষক পছন্দ না হওয়ায় প্রাথমিক পর্যায়ের পড়ালেখায় আগ্রহ পাননি আইনস্টাইন৷ অবশ্য শিক্ষকরা ভেবেছিলেন, শিশু আইনস্টাইনের হয়ত শেখায় আগ্রহ নেই৷ পরবর্তীতে জার্মানিতে জন্ম নেয়া বিখ্যাত এই বিজ্ঞানী সুইজারল্যান্ডে গিয়ে কলেজ পর্যায়ে গণিত আর পদার্থবিদ্যায় ভালো গ্রেড পেয়েছিলেন৷
ছবি: picture-alliance / akg-images
ভিলহেল্ম কনরাড ব়্যোয়েনটগেন
এক্স-রে’র এই আবিষ্কারককে একবার স্কুল থেকে বের করে দেয়া হয়েছিল৷ কারণ, তিনি লেখাপড়া বাদ দিয়ে শিক্ষকের কার্টুন আঁকছিলেন! পরে ভর্তি পরীক্ষায় পাস করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকেছিলেন ব়্যোয়েনটগেন৷ ১৯০১ সালে পদার্থবিদ্যায় নোবেল পান৷ অথচ জার্মানিতে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে এখন যে নিয়ম, তাঁর সময় যদি সেটি থাকত, তাহলে হয়ত তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া কঠিন হতো৷ কারণ, এখন ভালো বিষয়ে পড়তে হলে স্কুলে ভালো গ্রেড থাকা চাই৷
ছবি: picture-alliance/dpa
লুই পাস্তুর
ভালো গ্রেড নিয়ে হাইস্কুল পাস করার ইচ্ছায় ফরাসি এই গবেষক একটি শ্রেণি পুনরায় পড়েছিলেন৷ স্কুলে তাঁর খারাপ করার কারণ ছিল ‘হোমসিকনেস’ অর্থাৎ বাড়ির প্রতি টান৷ চামড়া ব্যবসায়ীর পরিবারে জন্ম নেয়া পাস্তুর ভালোভাবে লেখাপড়া শেখার জন্য অল্প বয়সেই বাড়ি ছেড়ে প্যারিসের এক স্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন৷ পরবর্তী জীবনে পাস্তুর টিকা ও সংক্রামক রোগের একজন জগদ্বিখ্যাত গবেষক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলেন৷
ছবি: picture-alliance/United Archives/WHA
টমাস এডিসন
ফোনোগ্রাফ, মোশন পিকচার ক্যামেরাসহ অনেক কিছুর আবিষ্কারক এই মার্কিন বিজ্ঞানী বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পড়াশোনা করেননি৷ এমনকি তাঁর স্কুল শিক্ষকরা ভেবেছিলেন, এডিসন মেধাবী নন৷ আসলে তিনি বধির ছিলেন৷ পরবর্তীতে তাঁর স্কুল শিক্ষিকা মা তাঁর পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন৷ টেলিগ্রাফার হিসেবে চাকরিজীবন শুরু করা এডিসন পরবর্তীতে বিশ্বের অন্যতম সেরা উদ্ভাবক হয়ে উঠেছিলেন৷
ছবি: picture-alliance/United Archives/TopFoto
জর্জ ইস্টম্যান
বাবা মারা যাওয়ায় পরিবার চালাতে এডিসনের (ডান) বন্ধু ইস্টম্যানকে (বামে) স্কুলে পড়াশোনা শেষ না করেই ১৪ বছর বয়সে ব্যবসা শুরু করতে হয়েছিল৷ বিশ্বখ্যাত কোডাক কোম্পানি তাঁরই তৈরি৷ ফটো পেপার থেকে শুরু করে রোল ফিল্ম– এসবই ইস্টম্যানের আবিষ্কার৷
ছবি: AP
ভিলহেল্ম ভিয়েন
জার্মান এই বিজ্ঞানীর বেড়ে ওঠা পোল্যান্ডের মাসুরিয়ায়৷ খারাপ গ্রেডের কারণে তাঁকে স্কুল ছাড়তে হয়েছিল৷ পরে তিনি ব্যক্তিগত পর্যায়ে পড়ালেখা শিখে পাশের শহরে গিয়ে আরেক স্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন৷ এরপর বার্লিনে তিনি পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন৷ ১৯১১ সালে পদার্থবিদ্যায় নোবেল পান তিনি৷