1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গ্যুটেনব্যার্গ যেভাবে প্রিন্ট করতেন

ওংকার সিং জানোটি/জেডএইচ১৮ ডিসেম্বর ২০১৫

ইন্টারনেটের যুগে অনেকে স্মার্টফোনে ই-বুক পড়লেও বইয়ের গুরুত্ব কোনো অংশ কমে যায়নি৷ আর বইয়ের কথা আসলে গ্যুটেনব্যার্গের কথা আসতে হবে৷ কারণ তাঁর কারণেই প্রকাশনা বিষয়টি আজ এত সহজ হয়ে উঠেছে৷

Gutenberg Museum in Mainz
মাইনৎস শহরের গ্যুটেনব্যার্গ মিউজিয়ামছবি: picture-alliance

সাড়ে ৫০০ বছর আগে যেভাবে বই প্রকাশিত হতো

04:30

This browser does not support the video element.

প্রতিবছর ২২ লক্ষেরও বেশি বই প্রকাশিত হয়৷ এর মধ্যে অনেকগুলোর স্থান হয় লাইব্রেরিতে৷ তবে ছয়’শ বছর আগে বই পড়তে পারাটা সৌভাগ্যের বিষয় ছিল৷ এরপর ১৫ শতকে একটি বিপ্লব ঘটে যায়৷

জার্মানির মাইনৎস শহরের গ্যুটেনব্যার্গ মিউজিয়ামে সেই সময় কী ঘটেছিল, তার একটা আন্দাজ পাওয়া যায়৷ এশিয়া, বিশেষ করে চীন ও কোরিয়ায়, প্রথম মুদ্রণ প্রযুক্তির উদ্ভব ঘটে৷ চীনারা ১১ শতকে মুদ্রণ বিষয়টি আবিষ্কার করে৷ এরপর কোরীয়রা এই প্রযুক্তিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যায়৷ ১৩৭৭ সালে তারাই প্রথম ধাতব মুদ্রাক্ষর তৈরি করে৷ তবে সেটা বেশ কষ্টকর ও সময়সাপেক্ষ ছিল৷

অনেকদিন ধরে ইউরোপ এই বিষয়টি জানত না৷ এরপর সম্পূর্ণ আলাদা ও যান্ত্রিক এক প্রক্রিয়া জার্মানিকে মুদ্রণ বিপ্লবের কেন্দ্রে নিয়ে আসে৷

গ্যুটেনব্যার্গ মিউজিয়ামের কর্মকর্তা ড. কর্নেলিয়া স্নাইডার বলেন, ‘‘সেটা ছিল মধ্যযুগের এক বৈপ্লবিক ঘটনা৷ আমরা যখন ঐ সময়ের দিকে ফিরে তাকাই, তাহলে বলা যেতে পারে যে, সে সময় বিশ্ব বলতে ছিল ইউরোপ৷ গ্যুটেনব্যার্গের আগে একটি বাইবেল প্রিন্ট হতে সময় লাগত তিন বছর৷ গ্যুটেনব্যার্গও প্রায় একই সময় নিতেন, কিন্তু প্রিন্ট করতেন ২০০টি বাইবেল, একটি নয়৷''

এটাই হলো সেই বিখ্যাত বাইবেলছবি: Gutenberg-Museum

মাইনৎস-এর বাসিন্দা ইয়োহানেস গ্যুটেনব্যার্গ ইউরোপে যান্ত্রিক ও চলনশীল এক মুদ্রণ প্রক্রিয়ার প্রচলন করেন৷ পেশায় স্বর্ণকার হওয়ার কারণে গ্যুটেনব্যার্গ জানতেন, কী করে ধাতু গলানো ও তাতে চিহ্ন বসানো যায়৷ এই জ্ঞান গ্যুটেনব্যার্গ অক্ষর ঢালাইয়ের কাজে লাগিয়েছেন৷ তিনি ৩০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সীসা গলিয়ে কাঠ ও লোহার তৈরি ছাঁচে ঢালতেন৷ কয়েক মিনিটের মধ্যে সীসা শক্ত হয়ে অক্ষরে পরিণত হতো৷

উটা ব্যোন্যার্ট বলেন, ‘‘যখন আপনার সব অক্ষর তৈরি করা শেষ হয়ে যাবে, তখন আপনি সেগুলো একটি বাক্সে রাখবেন৷ যে অক্ষরগুলো আপনার প্রায়ই কাজে লাগে, সেগুলো ঐ বাক্সের নীচের ট্রে-তে, আর যেগুলো সবসময় প্রয়োজন হয় না, সেগুলো উপরে রাখতে হবে৷ বাইবেলের জন্য যে অক্ষরগুলো লাগবে, সেগুলো একটি ‘কম্পোজিং স্টিক' এ রাখতে হবে, যেটা আসলে বাইবেলের কলামের একটি লাইন৷''

অক্ষরের পর অক্ষর, তারপর লাইনের পর লাইন – এভাবে চারটি সেট তৈরির পর গ্যুটেনব্যার্গ সেগুলোর ওপর কাল রং দিয়ে দিতেন৷ লে-আউট সুন্দর দেখানোর জন্য তিনি এরকম রংয়ের স্টিক ব্যবহার করতেন৷ লাল ও নীল রংয়ের স্টিকগুলো দিয়ে কলাম পৃথক করা হতো, যেন টেক্সট আর প্যারাগ্রাফ আলাদাভাবে বোঝা যায়৷

কম্পোজ ও রং করা শেষে গ্যুটেনব্যার্গ তাঁর ধাতব মুদ্রণযন্ত্রে অক্ষর বসানো সেট এর ঠিক বিপরীতদিকে একটি কাগজ সেঁটে দিতেন৷ কালি মাখানো সেট এর উপর সেই কাগজ বসালে, কাগজের উপর কালিতে লেখা অক্ষরগুলোর ছাপ পড়বে৷

পরের ধাপে লোহার একটি ভারী বস্তু ব্যবহার করা হতো৷ এটি দিয়ে অক্ষর বসানো সেটের উলটোদিকে বসানো কাগজের উপর নির্দিষ্ট পরিমাণ ‘প্রেস' করা হতো৷ এজন্যই এই মেশিনের নাম প্রিন্টিং প্রেস৷

নতুন শব্দ ও লাইন তৈরি করতে গ্যুটেনব্যার্গ ছোট অক্ষরগুলোতে হাজারবার পরিবর্তন এনেছেন৷ তিন বছর ধরে তিনি একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছেন৷ ফলাফল ছিল বিস্ময়কর৷ গ্যুটেনব্যার্গকে তাই আধুনিক যুগের অন্যতম সেরা উদ্ভাবক বলে মনে করা হয়৷

মিউজিয়ামের আরেক কর্মকর্তা ড. কর্নেলিয়া স্নাইডার বলেন, ‘‘জ্ঞান কিংবা বুদ্ধিমত্তা আর গির্জার যাজক বা বিশপের মতো গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যে সীমাবদ্ধ রইল না৷ সবাই জ্ঞানের বিনিময় করতে সক্ষম হলেন, প্রযুক্তিতেও পরিবর্তন আনতে শিখলেন৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ