প্রিন্স হ্যারি ও মেঘানের সঙ্গে নেটফ্লিক্সের চুক্তি
৩ সেপ্টেম্বর ২০২০
প্রিন্স হ্যারি ও মেঘানের সঙ্গে চুক্তি হলো নেটফ্লিক্সের। তাঁরা সিনেমা, ডকুমেন্টারি, সিরিয়াল প্রযোজনা করবেন।
বিজ্ঞাপন
এ বছরই যুক্তরাজ্যের রাজপরিবার থেকে তাঁরা স্বেচ্ছায় বেরিয়ে এসেছেন। সম্প্রতি তাঁরা লস এঞ্জেলসে বসবাস শুরু করেছেন। রাজকীয় স্বাচ্ছন্দ্যের বাইরে চলে এসেছেন। বেছে নিয়েছেন লস এঞ্জেলসের গ্ল্যামারকে। সাসেক্সের ডিউক ও ডাচেস তাঁদের ছেলে আর্চিকে নিয়ে এখানেই থাকেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম তাঁদের নিয়ে যে ধরনের খবর করেছিল, তাতেও তাঁরা খুব বিরক্ত। তাঁরা এ বার চুক্তি করলেন নেটফ্লিক্সের সঙ্গে।
নেটফ্লিক্সের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে প্রিন্স হ্যারি ও মেঘান বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, ''আমাদের লক্ষ্য হলো এমন বিষয় বাছা যা শুধু মানুষকে তথ্য দেবে তাই নয়, সেই সঙ্গে আশাও দেবে। আমরা সদ্য বাবা-মা হয়েছি। তাই পরিবারকে উদ্বুদ্ধ ও আশান্বিত করা কতটা জরুরি তা জানি।''
তাঁদের প্রথম প্রকল্প হলো প্রকৃতি নিয়ে একটা ডকুমেন্টারি সিরিজ এবং একটা অ্যানিমেশান সিরিজ, যা মেয়েদের উদ্বুদ্ধ করবে বলে তাঁরা আশা করছেন।
নেটফ্লিক্সের সঙ্গে তাঁদের কত ডলারের চুক্তি হয়েছে তা জানা যায়নি। তবে মেঘান পেশাদার অভিনেত্রী। আগে তিনি অ্যামেরিকার টিভি সিরিয়াল স্যুটস-এ অভিনয় করেছেন। কিন্তু বিনোদন জগতের অনুষ্ঠান প্রযোজনা করার কোনো অভিজ্ঞতা তাঁর বা প্রিন্স হ্যারির নেই। তবে তাঁরা নিজেরা ক্যামেরার সামনে আসবেন না। প্রযোজকের ভূমিকায় থাকবেন।
প্রেমের কারণে যতবার বিব্রত ব্রিটিশ রাজপরিবার
প্রেম ও বিয়ের ঘটনায় একাধিকবার বিব্রত হতে হয়েছে ব্রিটিশ রাজপরিবারকে৷ এমনই কয়েকটি ঘটনা জানুন ছবিঘরে...
ছবি: picture-alliance/AP Photo/Mary McCartney/Queen Elizabeth II
চার্লস ও ক্যামিলা
বিয়ের ১২ বছর পর ১৯৯২ সালে লেডি ডায়ানার সাথে বিচ্ছেদ হয় যুবরাজ চার্লসের৷ মনোমালিন্য ছাড়াও এই বিচ্ছেদের পেছনে অন্যতম কারণ ছিল চার্লসের প্রাক্তন প্রেমিকা ক্যামিলা পার্কার বোলস৷ রাজপরিবারের অনিচ্ছা সত্ত্বেও ২০০৫ সালে ক্যামিলাকে বিয়ে করেন চার্লস৷ এই বিয়েতে উপস্থিত ছিলেননা চার্লসের মা রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ ও তাঁর পিতা ফিলিপও৷
ছবি: AP
ডায়ানা ও দোদি
চার্লসের সাথে বিবাহিত থাকাকালীন এবং বিচ্ছেদের পরেও একাধিক পুরুষের সাথে জুড়তে থাকে ডায়ানার নাম৷ এরমধ্যে সবচেয়ে আলোচিত মিশরের চলচ্চিত্র প্রযোজক দোদি ফায়েদের সাথে তাঁর সম্পর্ক৷ ১৯৯৭ সালে প্যারিসের যে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ডায়ানা সেই গাড়িতে তাঁর সাথে ছিলেন ফায়েদও৷ ডায়ানার জীবনযাপন বিষয়ে ব্রিটিশ রাজপরিবারের অসন্তোষ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রায়ই আলোচিত হয়েছে৷
ছবি: dapd
রাজকুমারী অ্যান
চার্লসের ছোট বোন রাজকুমারী অ্যানের সাথেও জড়িয়ে ছিল নানা পুরুষের নাম, যার মধ্যে অন্যতম ক্যামিলার সাবেক স্বামী অ্যান্ড্রু পার্কার বোলসও৷ এছাড়া, অ্যানের স্বামী মার্ক ফিলিপসের নামও জড়ায় নানা কেচ্ছার সাথে৷ শুধু তাই নয়, অ্যান-মার্ক বিচ্ছেদের ফলে সংবাদমাধ্যমে আলোচিত হয় ব্রিটিশ রাজপরিবারের বিচ্ছেদ-বিরোধিতা কমার প্রবণতা৷
ছবি: picture-alliance/dpa/PA Wire/G. Fuller
মার্গারেট ও পিটার টাউনসেন্ড
রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের ছোট বোন রাজকুমারী মার্গারেট৷ মার্গারেট প্রথম শিরোনামে আসেন পিটার টাউনসেন্ডের সাথে তাঁর প্রেমের কারণে৷ সেই সময় বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে এমন কারো সাথে রাজপরিবারের সদস্যের বিয়ে হওয়া ছিল অসম্ভব৷ পরিবারের চাপে টাউনসেন্ডকে বিয়ে করতে অস্বীকার করেন মার্গারেট, কিন্তু পরবর্তীতে চিত্রগ্রাহক অ্যান্টনি আর্মস্ট্রং-জোনসের সাথে তাঁর বিয়েও সৃষ্টি করে বহু বিতর্ক৷
ছবি: AFP/Getty Images
অষ্টম এডোয়ার্ড ও ওয়ালিস সিম্পসন
মার্গারেটেরও আগে মার্কিন নাগরিক ও বিবাহ-বিচ্ছেদপ্রাপ্ত ওয়ালিস সিম্পসনকে বিয়ে করার জন্য রাজকর্তব্য থেকে সরে আসেন অষ্টম এডোয়ার্ড৷ সেই সময় রাজার আসনে বসতে চলা এডোয়ার্ডের এই পদক্ষেপ আলোড়ন তোলে৷ এর ফলে, তাঁর ছোট ভাই ষষ্ঠ জর্জ রাজা হন৷ এডোয়ার্ড-ওয়ালিসের বিবাহ এখনও রাজপরিবারের অন্যতম বিতর্কিত ঘটনা হিসাবে আলোচিত হয়৷
ছবি: picture-alliance/Photoshot
অ্যান্ড্রু
চার্লসের ছোট ভাই অ্যান্ড্রুরও পিছু ছাড়েনি বেশ কয়েকটি বিতর্কিত ঘটনা৷ যেমন মার্কিন অভিনেত্রী কু স্টার্কের সাথে তার সম্পর্ক৷ শুধু তাই নয়, পরবর্তীতে সারা ফার্গুসনকে বিয়ে করলেও কু স্টার্কের কন্যার ‘গডফাদার’ হন অ্যান্ড্রু, যা নতুন করে খবরের শিরোনামে নিয়ে আসে তাকে৷
ছবি: picture alliance/AP Photo/S. Tan
হ্যারি ও মেগান
মার্কিন অভিনেত্রী মেগান মার্কেলের সাথে রাজপুত্র হ্যারির বিয়ের পর থেকেই চলছিল নানা রকমের জল্পনা৷ বুধবার একটি বিবৃতি দিয়ে তাঁরা জানান যে রাজকর্তব্য থেকে সরে আসতে চলেছেন তাঁরা৷ রাজপরিবারের সদস্য হিসাবে নিজেদের দায়িত্ব ছেড়ে ব্যক্তিগত জীবনে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে চান বলে জানান এই জুটি৷ ইতিমধ্যেই তাঁদের এই সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বাকিংহাম প্যালেস৷
ছবি: picture-alliance/AP/D. Lipinsky
7 ছবি1 | 7
গত মার্চে ব্রিটেন ছেড়েছেন এই বহুআলোচিত দম্পতি। যুক্তরাজ্যের প্রেস নাম দিয়েছিল, 'মেগ্সিট'। প্রথমে তাঁরা ক্যানাডা যান। তারপর লস এঞ্জেলসে আসেন। রাজপরিবার ছেড়ে বেরিয়ে আসার সময়ই তাঁরা জানিয়ে দিয়েছিলেন, তাঁরা আর্থিক দিক থেকে স্বনির্ভর হতে চান। তাঁরা যুক্তরাজ্যের মানুষের করের পয়সা নেবেন না। তাই রয়্যাল ডিউটির অর্থ তাঁরা নেন না।
এরপর তাঁরা সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার পথ অনুসরণ করেছেন। ওবামা, ক্লিন্টনদের বক্তৃতার অনুষ্ঠান যাঁরা আয়োজন করে, সেই সংস্থার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন হ্যারি ও মেঘান। জুন মাসে এই চুক্তি হয়।
নেটফ্লিক্স দেখেন বিশ্বের ১৯ কোটি মানুষ। ফলে এটা বড় মঞ্চ। সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই রাজকীয় দম্পতির বিশ্বাসযোগ্যতা আছে, তাঁরা নেতৃত্ব দিতে পারেন। তাঁরা বিশ্বজুড়ে মানুষকে আশা দিতে পারবেন বলে তাঁরা মনে করছেন।