বার্তা সংস্থা রয়টার্স প্রেসিডেন্ট উইন মিইন্টের দপ্তরের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ক্ষমা পেতে যাওয়া মোট কয়েদির সংখ্যা ২৪ হাজার ৮৯৬ জন৷ এর মধ্যে ৮৭ জন বিদেশি৷
‘‘দেশের নাগরিকদের একটি খুশির উপলক্ষ দেয়া এবং মানবিক দিক বিবেচনা করে'' এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মিইন্ট৷
তবে এই আসামীরা কী ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তা জানা যায়নি৷
এদিকে, কয়েদিদের মুক্তি দেয়ার সঙ্গে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কোনো সম্পর্ক নেই বলে রয়টার্সের কাছে দাবি করেছেন কারাগার কর্তৃপক্ষ৷ চীনের এই প্রতিবেশী দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৮৫ জন নতুন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এবং চারজন মারা গেছেন৷
এদিকে, খবর পেয়ে ইয়াঙ্গুনের ইনসাইন কারাগারের সামনে করোনা পরিস্থিতির নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে জড়ো হয়েছেন আসামীদের স্বজনেরা৷
মানবাধিকার সংস্থাগুলোর হিসেবে, মিয়ানমারের কারাগারগুলোতে ৯২ হাজার কয়েদি আছেন, যাদের অনেকেরই বিচার চলছে৷ নিউইয়র্কভিত্তিক হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এ মাসের শুরুতে কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে মিয়ানমারের কারাগারের জনসংখ্যা কমানোর তাগিদ দেয়৷ লন্ডনভিত্তিক অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল গত সপ্তাহে সব রাজনৈতিক বন্দিদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করে৷
এ বছর মুক্তি পাওয়াদের ভেতর রাজনৈতিক মামলার শিকার কেউ আছেন কিনা তা এখনো জানা যায়নি৷ ২০১৬ সালে অং সান সুচির দল ক্ষমতায় যাওয়ার পর শত শত রাজনৈতিক বন্দিকে মুক্তি দেয়৷
‘‘সরকার তাদের রাজনৈতিক বন্দি বলে না, কিন্তু আমরা ৭০ জনের একটি তালিকা দিয়েছি,'' স্থানীয় মানবাধিকার সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্সের কর্মী অং মিও কিয়াও রয়টার্সকে বলেন৷
গত বছর মিয়ানমার প্রায় ২৩ হাজার কয়েদিকে ক্ষমা করে দেয়৷ তার আগের বছর মুক্তি দেয় আট হাজার জনকে৷
জেডএ/এসিবি (রয়টার্স, এপি)
এক নজরে দেখে নিন গত বছরের এই ছবিঘরটি-
১৯৪৮ সালে স্বাধীন বার্মা রাষ্ট্রের জন্মের পর থেকে নিজভূমে অধিকার পাননি রোহিঙ্গা মুসলমানরা৷ সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে ১৯৭০ থেকে দেশ ছাড়তে শুরু করেন তারা, এ পর্যন্ত ১৭ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/D. Yasinমিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে রাখাইন ছেড়ে বাংলাদেশে আসতে শুরু করেন রোহিঙ্গারা; এই সংখ্যা কিছু দিনের মধ্যে পৌঁছে যায় সাত লাখে৷ আর আগে থেকে বাংলাদেশে অবস্থান করছিল আরও চার লাখ রোহিঙ্গা৷
ছবি: Reutersদুই লাখের মত রোহিঙ্গা বর্তমানে পাকিস্তানে বসবাস করছেন৷ ১৯৪২ সালে বর্মায় সামরিক অভিযানের পর তারা পাকিস্তানে যেতে শুরু করেন৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/D. Yasinমিয়ানমার থেকে মালয়েশিয়া যাওয়ার পথ হিসেবে রোহিঙ্গারা থ্যাইল্যান্ডকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করত৷ এই দেশটিতে এখন এক লাখ রোহিঙ্গার বসবাস৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Y. Pruksarakইউএনএইচসিআর এর হিসেব অনুযায়ী ৫৯ হাজার রোহিঙ্গা মালয়েশিয়ায় রয়েছেন৷ দেশটি জাতিসংঘের শরণার্থী কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী না হওয়ার রোহিঙ্গাদের শরণার্থীদের স্বীকৃতি দেয়নি৷ এখন তারা রোহিঙ্গাদের অস্থায়ীভাবে আশ্রয় দিয়েছে৷
ছবি: Getty Images/Afp/C. Archambaultমিয়ানমার থেকে অবৈধভাবে ৪০ হাজার রোহিঙ্গা ভারতে গিয়ে বসবাস করছে৷ সীমান্তপথে ভারতে অনুপ্রবেশ করে পশ্চিমবঙ্গ, জম্মু ও আসামে বসবাস করছেন তারা৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A. Qadriএশিয়ার দেশগুলোর বাইরে যুক্তরাষ্ট্রে ১৩ হাজারের মত রোহিঙ্গা বসবাস করছে৷ মিয়ানমারে নিপীড়নের শিকার এই জনগোষ্ঠীকে ২০০২ সাল থেকে সেখানে থাকতে দেওয়া হচ্ছে, বেশিরভাগ রোহিঙ্গা শরণার্থী শিকাগোতে বসবাস করে৷
ছবি: DW/A. Islam ইন্দোনেশিয়ায় ১১ হাজার ৯৪১ জন নিবন্ধিত রোহিঙ্গা মুসলিম শরণার্থী রয়েছে৷ মালয়েশিয়ার মতো ইন্দোনেশিয়াও জাতিসংঘের শরণার্থী কনভেনশনের স্বাক্ষরকারী না হওয়ায় তারা প্রথমে রোহিঙ্গাদের গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায়৷ পরে এদের সাময়িকভাবে আশ্রয় দেয়৷
ছবি: DW/M. Mostqfigur Rahmanনেপালে এখন ২০০ জন রোহিঙ্গা বসবাস করছেন৷ বাংলাদেশে ও ভারত হয়ে এরা নেপালে চলে যায়৷
ছবি: picture-alliance/abaca/O. Elif Kizil