প্রয়াত হাসান আজিজুল হক
১৬ নভেম্বর ২০২১৮২ বছর বয়সে মৃত্যু হলো কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের। সমকালের বাংলা সাহিত্যের প্রবাদপ্রতিম এই ব্যক্তিত্ব সোমবার রাত নয়টা নাগাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তার রাজশাহীর বাড়িতে। মঙ্গলবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে তার মরদেহ শায়িত থাকবে শেষশ্রদ্ধা জানানোর জন্য।
১৯৩৯ সালে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানে যবগ্রামে জন্ম আজিজুল হকের। দেশভাগের সময় পশ্চিমবঙ্গ ছেড়ে পূর্ববঙ্গে চলে যায় তার পরিবার। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন নিয়ে স্নাতকস্তরের পড়াশোনা শুরু করেন তিনি। জড়িয়ে পড়েন রাজনীতিতেও। পাকিস্তান সেনার হাতে নির্যাতিত হওয়ার কাহিনি নিজেই বলেছেন লেখায় এবং সভাসমিতিতে। পরবর্তীকালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েই অধ্যাপনার কাজ শুরু করেন।
১৯৬০ এর দশক থেকেই লেখালেখির কাজ শুরু করেন আজিজুল হক। তবে তার প্রথম উপন্যাস প্রকাশিত হয় ২০০৬ সালে। আগুনপাখির প্রেক্ষাপটে উঠে এসেছে অবিভক্ত রাঢ়বঙ্গের আখ্যান। রাজনীতি, সাম্প্রদায়িকতা, অনাহার, মহামারি। সমসময়ের বাংলা উপন্যাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই আখ্যান দুই বঙ্গেই সাড়া ফেলে দিয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গে তাকে এই লেখার জন্য আনন্দ পুরস্কার দেওয়া হয়। পূর্ববঙ্গে বহু পুরস্কার এবং সম্মান পেয়েছেন তিনি। একুশে পদক অর্জন করেছেন। পাশাপাশি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
গত অগাস্ট মাস থেকে বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন আজিজুল হক। সুগারের সমস্যা ছিল, হার্টের সমস্যাও হয়েছিল। ২১ অগাস্ট এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। চিকিৎসায় সাড়া দিয়েছিলেন তিনি। সেপ্টেম্বরে বাড়ি ফিরে গেছিলেন। কিন্তু সম্পূর্ণ সুস্থ হননি। বাড়িতেই চিকিৎসা চলছিল। মাঝে পড়ে গিয়ে কোমরেও চোট পেয়েছিলেন।
কথাসাহিত্যিকের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার সকালে শোকবার্তা প্রকাশ করেছেন। শোকের ছায়া নেমে এসেছে পশ্চিমবঙ্গের সাহিত্য মহলে।
এসজি/জিএইচ (প্রথম আলো, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)