হুম, খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন এখন৷ অন্তত খাওয়ার পানি বয়ে নেয়ার জন্য প্লাস্টিক বোতল ব্যবহারের প্রয়োজন বোধহয় খুব বেশ দিন আর থাকবে না৷ বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছে এক ভিন্ন পন্থা, যা দেখতে ‘স্মার্ট’, আর পান করতেও মজা৷
বিজ্ঞাপন
বলছি, খাওয়ার যোগ্য ছোট ছোট পানির বলের কথা৷ দেখতে অনেকটা পিংপং বলের মতো এসব পানিবাহী বোতল কার্যত পুরোটাই খাওয়া যায়৷ আর এতে খাটুনিও কম৷
লন্ডনেরস্কিপিং রকস ল্যাব ইতোমধ্যে এই পানির বল নিয়ে বিস্তর গবেষণা করেছে৷ পরীক্ষামূলকভাবে অ্যাথলিটদের খেতে দেয়া হয়েছে তা৷ সাধারণ মানুষকে পান করার সুযোগ দেয়া হয়েছে৷ শুরুতে অনেকেই মুখে দেয়ার আগে খানিকটা বিস্ময় নিয়ে তাকালেও পান করার পর হাসিই দিয়েছেন৷ বিশেষ ধরনের সমুদ্র শৈবাল ব্যবহার করে তৈরি এসব বোতলে দীর্ঘ সময় পানি রাখা যায়৷ আর কেউ চাইলে উপরে থাকা পাতলা আবরণটা সরিয়ে যে কোনো সময় তা পান করতে পারেন৷
এমন পানি বলের উদ্ভাবকরা আশাবাদী যে, শীঘ্রই এগুলো বাজারে ছাড়া সম্ভব হবে৷ আর তখন প্লাস্টিকের পানির বোতলের চাহিদা কমতে শুরু করবে, যা পরিবেশের জন্য হবে বিশেষ উপকারের৷ কেননা, একেকটি প্লাস্টিক বোতল শতশত বছর ধরে আবর্জনা আকারে থেকে যায়, প্রকৃতির সঙ্গে মিশে যেতে অনেক সময় নেয়৷ অন্যদিকে, জীবাণুবিয়োজ্য পদার্থ দিয়ে তৈরি পানি বল পরিবেশের কোনো ক্ষতিই করে না, এগুলো রিসাইক্লিংয়েরও কোনো ব্যাপার নেই৷
সুতরাং, প্লাস্টিক বোতলকে বিদায় জানানোর প্রস্তুতি নিয়ে নিন৷ আর অপেক্ষায় থাকুন পানি বলের!
এআই/এসিবি
প্লাস্টিকের পানির বোতলের জীবন
সারা বিশ্বে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ বোতল পানি বিক্রি হয়৷ কিন্তু পানি পান করার পর প্লাস্টিকের ঐ বোতলগুলোর কী হয় তা কি জানেন? ছবিঘরে থাকছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত৷
ছবি: Fotolia/zhekos
প্লাস্টিকের দামই বেশি
এক বোতল পানি কেনার জন্য আপনি যে দাম দেন তার বেশিরভাগই কিন্তু চলে যায় প্লাস্টিকের জন্য৷ এছাড়া রয়েছে বোতলের গায়ে লেবেল লাগানো, পরিবহণ, সংরক্ষণ ও বোতল নষ্ট করে ফেলার খরচ৷
ছবি: Fotolia/fottoo
তেলের ব্যবহার
অশোধিত তেল দিয়ে তৈরি হয় পলিইথিলিন টেরেফথালেট (পিইটি) প্লাস্টিক৷ এরপর সেটা দিয়েই তৈরি হয় প্লাস্টিকের বোতল৷ এই তেল উৎপাদনের সময় গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হয়৷ এছাড়া প্লাস্টিক তৈরির সময় বিভিন্ন বিষাক্ত উপাদান পরিবেশে ছড়িয়ে পড়ে৷ ছবিতে জার্মানির সবচেয়ে বড় তেলশোধন প্ল্যান্ট দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বড়ি থেকে বোতল
পরিশোধিত তেল থেকে প্রথমে প্লাস্টিকের এমন ছোট ছোট বড়ি তৈরি করা হয়৷ এরপর সেগুলোকে গলিয়ে বোতল তৈরি করা হয়৷
ছবি: Fotolia/digitalstock
চারে এক
আর্থ পলিসি ইনস্টিটিউটের হিসেবে সারা বিশ্বে উৎপাদিত চারটি পানির বোতলের অন্তত একটি ক্রেতার খোঁজে কমপক্ষে একটি আন্তর্জাতিক সীমানা অতিক্রম করে৷ অর্থাৎ, এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যায়৷ এভাবে পানি পরিবহণের জন্য ব্যবহৃত যানবাহন থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গত হয়, যা জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী৷
ছবি: picture-alliance/dpa
পানি সংকট
প্যাসিফিক ইনস্টিটিউটের হিসেবে এক বোতল পানির জন্য তিনগুণ বেশি পানি খরচ হয়৷ ফলে যে অঞ্চলে পানির ফ্যাক্টরি অবস্থিত সেখানকার ভূগর্ভে পানির স্বল্পতা দেখা দেয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
মাত্র অর্ধেক
এক হিসেবে জানা গেছে, ইউরোপে গত বছর প্রায় ৬০ মিলিয়ন প্লাস্টিক বোতল রিসাইকেল করা হয়৷ পরিমাণটা, যত বোতল ব্যবহৃত হয়েছে তার অর্ধেকের কিছু বেশি৷ বাকি বোতলগুলো বিভিন্ন জায়গায় জমে গিয়ে বিশেষ করে জলাধার ও সাগরে পড়ে গিয়ে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করছে৷
ছবি: JOSEPH EID/AFP/Getty Images
রিসাইক্লিং
ব্যবহার হওয়ার পর পানির বোতলগুলো রিসাইকেল করে বিভিন্ন পণ্য তৈরি করা হয়৷ যেমন এক ধরণের পশম, যেটা শীতবস্ত্র জাতীয় পোশাক তৈরিতে কাজে লাগে৷