ব্রিটেনের কর্নওয়ালের রোম্যান্টিক উপকূল: ঠিক সেখানেই ঝড়বাতাসে বয়ে আনছে টন টন আবর্জনা, বিশেষ করে প্লাস্টিক আবর্জনা৷ তাই ছোট্ট শহর পেনজান্সের অধিবাসী ও কর্মকর্তা মিলে নেমেছেন পেনজান্সকে ‘প্লাস্টিক মুক্ত' করতে৷
যেন স্বপ্নে দেখা কোনো মনোমুগ্ধকর এক অজানা দেশ৷ ব্রিটেনের পশ্চিমতম প্রান্তে অবস্থিত কর্নওয়ালের খাড়াই উপকূল: সেটাই তার আকর্ষণ – আবার সেটাই তার বিপদ সৃষ্টি করেছে৷ সাগরের স্রোত আর ঝড়বাতাসে এখানে যতো আবর্জনা ভেসে আসে, তা বোধহয় ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের অন্য কোনো জায়গায় ঘটে না৷ পরিবেশ সংরক্ষণকারী অ্যাক্টিভিস্ট রেচেল ইয়েট্স আজ একটি প্লাস্টিকের বালতি হাতে না নিয়ে পেনজান্সের সৈকতে যান না৷ ছোটবেলায় তিনি এই সৈকতে খেলা করেছেন৷ ৪৩ বছরের রেচেল আজ দেখছেন, বেলাভূমিতে আবর্জনার পরিমাণ প্রতিবছর কিভাবে বেড়ে চলেছে৷
রেচেল বলেন, ‘‘দেখে আমার রাগ হয়, কেননা আমাদের সমাজ যে গত কয়েক বছর ধরে ভুল পথে চলেছে, এটা তারও একটা লক্ষণ – আমরা যেভাবে পরস্পরের সঙ্গে ব্যবহার করি, আমরা যেভাবে জিনিসপত্র কেনাকাটা করি, আমরা যেভাবে বাঁচি৷''
প্লাস্টিক দূর করছে যে শহর
05:12
রেচেল তাই কোমর বেঁধে প্লাস্টিক আবর্জনার বিরুদ্ধে, মানুষের উদাসীনতার বিরুদ্ধে সংগ্রামে নেমেছেন৷ তিনি তাঁর জন্মের শহর পেনজান্সকে জাগিয়ে তুলেছেন, দোকানবাজারে একবারের মতো ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক দূর করার ডাক দিয়েছেন৷ আশ্চর্য এই যে, দোকানিরা যে যার নিজের মতো করে সেই ডাকে সাড়া দিয়েছেন: প্লাস্টিকের স্ট্র-এর বদলে কাগজের স্ট্র; প্লাস্টিকের কাঁটাচামচের বদলে কাঠের কাঁটাচামচ; প্লাস্টিকের গ্লাসের বদলে আঁস্তাকুড়ে পচানো যায়, এমন পদার্থে তৈরি গ্লাস৷ বাস্তবিক একটা আন্দোলন শুরু হয়েছে, এখানকার মানুষ যাকে বলেন প্রতিরোধ৷ ৩০টি বিপণী এখনও পর্যন্ত শামিল হয়েছে – তাদের দোকানের কাচে ঝুলছে ‘প্লাস্টিক বর্জিত' সার্টিফিকেট৷ রেচেল একটির পর একটি বিপণী পরিদর্শন করে এই সার্টিফিকেট বিলি করে থাকেন৷ এই ওয়াইনের দোকানটিও শামিল হতে চায়৷ তবে সার্টিফিকেট পাবার একটি চেকলিস্ট আছে; আর সেই চেকলিস্টে আছে বিভিন্ন শর্ত৷
‘‘হ্যাঁ, আমরা আর প্লাস্টিকের স্ট্র ব্যবহার করি না৷ আর আমরা কোনো প্লাস্টিকের বোতলও রাখি না – নাকি রাখি? না, সব প্লাস্টিকের বোতল শেষ হয়ে গিয়েছে বলে আমার ধারণা৷''
কাজেই ওয়াইনের দোকানটি এবার নিজেদের ‘প্লাস্টিক বর্জিত' ঘোষণা করতে পারে৷ পরিবেশ রক্ষার নামে বজ্র আঁটুনি ফসকা গেরোও ভালো নয়৷ রেচেল বললেন, ‘‘এর মানে এই নয় যে, দোকানে কোনো রকমের প্লাস্টিক থাকবে না৷ এর মানে হলa এই যে, এই সব দোকানে ডিসপোজেবল বা সিঙ্গল-ইউজ প্লাস্টিক থাকবে না৷ কেননা বাস্তব এই যে, আমাদের দৈনন্দিন জীবন থেকে কিছু কিছু প্লাস্টিকের জিনিস অতো সহজে বাদ দেওয়া সম্ভব হবে না৷''
বিশেষ করে বড় বড় চেনস্টোরগুলি এযাবৎ পরিবেশ সুরক্ষা নিয়ে বিশেষ মাথা ঘামায়নি ও আগের মতোই নিশ্চিন্ত মনে প্লাস্টিকের ব্যাগ বিলি করে চলেছে৷ পেনজান্সের সিটি কাউন্সিলর যে বিষয়ে আদৌ সন্তুষ্ট নন৷ তাঁর ছোট্ট শহরটি যে ব্রিটেনে আবর্জনা কমানোর জন্য লড়ছে, এজন্য তিনি গর্বিত৷ আবার মিডিয়ায় সে খবর বেরোচ্ছে, কাজেই পর্যটন শিল্পের পক্ষেও তা ভালো বৈ খারাপ নয়৷
প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করার দিকে এগোচ্ছে বিশ্ব
গত ১ বছরে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করার জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে৷ প্লাস্টিক বিক্রি, ব্যবহার এবং তৈরির ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে৷ আগামী বছর আরও দেশ এ নিয়ে ভাবনাচিন্তা করবে বলেই বিশেষজ্ঞদের বিশ্বাস৷
ছবি: picture-alliance/Photoshot
প্লাস্টিকহীন সুপারমার্কেট
২০১৮ সালের গোড়াতেই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে জানিয়েছেন, ২০৪২ সালের মধ্যে ব্রিটেনকে সম্পূর্ণ প্লাস্টিকমুক্ত করাই তাঁর লক্ষ্য৷ একটি স্লোগানও দিয়েছেন তিনি, ‘‘ক্লিনার, গ্রিনার ব্রিটেন৷’’ সুপারমার্কেটগুলির কাছে তাঁর আবেদন, ‘‘প্লাস্টিকের ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধ করুন৷’’
ছবি: picture-alliance/Photoshot
প্লাস্টিক ব্যাগের ব্যবহার
ইউরোপের বিভিন্ন দেশে প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যবহারের প্রবণতা ক্রমশ কমছে৷ লুক্সেমবুর্গ, ডেনমার্কের মতো বহু দেশ প্লাস্টিক ব্যাগের উপর বিপুল পরিমাণ কর বসিয়েছে৷ জার্মানির সুপারমার্কেটগুলি প্লাস্টিক ব্যাগের পরিবর্তে বার বার ব্যবহার করা যায় এমন অন্য ব্যাগের ব্যবহার চালু করেছে৷
ছবি: Getty Images
কেনিয়ার অবদান
২০১৭ সালের আগস্ট মাসে সুদূরপ্রসারী এক সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেনিয়া৷ দেশের কোথাও প্লাস্টিক ব্যাগ উৎপাদন করা যাবে না৷ ব্যবহারও করা যাবে না৷ পরিসংখ্যান বলছে, মাসে কেনিয়ায় প্রায় ২৪ মিলিয়ন প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যবহৃত হতো৷ সরকার জানিয়েছে, কেউ নতুন নিয়ম না মানলে তার চার বছর পর্যন্ত জেল এবং ৩৮হাজার ডলার পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে৷
ছবি: Reuters/T. Mukoya
জিম্বাবোয়ের পদক্ষেপ
জিম্বাবোয়েও তাদের প্যাকেজিং নীতি বদলে দিচ্ছে৷ প্লাস্টিকের তৈরি স্টাইরোফোম বাক্স বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ সাধারণত, যে ধরনের বাক্সে খাবার প্যাক করে দেওয়া হয়৷ কাগজের তৈরি নতুন বাক্স তৈরি করার চেষ্টা করছে তারা৷ বিভিন্ন ফাস্টফুড সেন্টারে প্যাক করে খাবার না দিয়ে ক্রেতাদের রেস্তোরাঁয় বসে খাওয়াদাওয়া করতে উৎসাহ দেওয়া আহ্বান জানানো হয়েছে৷
ছবি: Environment Management Agency of Zimbabwe
প্লাস্টিকের ইয়ারবাড নয়
স্কটিশ সরকার জানিয়েছে, প্লাস্টিকের তৈরি ইয়ারবাড বা কানখোঁচানি আর সে দেশে ব্যবহার করা যাবে না৷ সাধারণত এগুলি ব্যবহার করে কমোডে ফেলে দেওয়াই অভ্যাস স্কটিশদের৷ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কমোড থেকে পিটে গিয়ে সেই বাডগুলি চলে যাচ্ছে সমুদ্রে৷ সে কারণেই এই সিদ্ধান্ত৷ বায়োডিগ্রেডেবল বাড অবশ্য ব্যবহার করা যাবে৷
ছবি: Colourbox
5 ছবি1 | 5
কর্মকর্তারাও সুবিধেটা বুঝেছেন
পেনজান্স সিটি কাউন্সিলের কাউন্সিলর সাইমন রিড বললেন, ‘‘পর্যটকরা যখন সৈকত বরাবর হাঁটতে বেরোন, তখন তারা বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক দেখেন, বিশেষ করে শীতকালীন ঝড়ের মরশুমে৷ কিন্তু জার্মানি ও হল্যান্ড থেকে অনেক পর্যটক এখানে আসেন: তারা প্রত্যাশা করেন যে, আমাদের সৈকত আবর্জনামুক্ত হবে৷''
সিটি কাউন্সিলের উদ্যমে পেনজান্স এখন সরকারিভাবে ‘ব্রিটেনের প্রথম প্লাস্টিক বর্জিত শহর' ঘোষিত হয়েছে৷ খেতাবটি আবার সার্ফিং অনুরাগীদের এক সমিতির উদ্যোগে সৃষ্ট৷ কর্নওয়ালের সার্ফাররা বহুদিন ধরে পরিবেশ সুরক্ষার জন্য সক্রিয়৷ বহুদিন কেউ তাদের অনুযোগ-অভিযোগে কান দেয়নি৷ কিন্তু এখন হাওয়া বদলাচ্ছে৷ বলতে কি, সমিতির সার্ফারদের কাছে উপকূলের ১৫০টি শহর ও জনপদের আবেদনপত্র জমা পড়েছে: তারা সবাই ‘প্লাস্টিক বর্জিত' সার্টিফিকেট পেতে চায়৷ কাজেই সার্ফিং অনুরাগী ডেভিড ও তাঁর সতীর্থদের আজ সার্ফিং করারই সময় জোটে না!
সার্ফার্স এগেনস্ট সিউয়েজ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ডেভিড স্মিথ বললেন, ‘‘আমার বিশ্বাস, আজ আমরা এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছেছি, যেখানে আমরা বুঝতে পেরেছি যে, আমাদের অবশ্যই কিছু একটা করতে হবে৷ এবার আমাদের সরকারকেও রাজি করাতে হবে, যাতে তারা আরো কড়া আইন করেন, যেমন প্লাস্টিকের বোতলের ওপর ডিপোজিট চালু করেন, যা অনেকদিন আগেই হওয়া উচিত ছিল এবং যা সকলেই চায়৷'' এযাবৎ ইউরোপীয় ইউনিয়নের নীতিমালা ব্রিটেনে প্রযোজ্য ছিল, কাজেই অন্তত কিছুটা পরিবেশ সুরক্ষার গ্যারান্টি ছিল৷ আশার কথা, ব্রিটিশ সরকার ব্রেক্সিটের পর পরিবেশ সুরক্ষার মান উন্নত করার অভিপ্রায় ঘোষণা করেছে৷ রেচেল অবশ্য রাজনীতিকদের কথায় বিশ্বাস না করে, পরের প্রজন্মের ওপর বিশ্বাস রাখেন৷ কাজেই এর পর তিনি যাচ্ছেন একটি স্কুলে৷ সেখানে রেচেলকে বলতে শোনা গেল, ‘‘তোমাদের স্কুলের ক্যান্টিনে যেন আর কোনো ডিসপোজেবল প্লাস্টিক ব্যবহার করা না হয়, তোমরা তার ব্যবস্থা করতে পারো৷এই মেয়েরা তোমাদের সেই উদ্যোগে সাহায্য করবে৷''
স্কুলের ছাত্রীদের মধ্যে থেকে আটজন ‘পরিবেশ দূত' বেছে নেওয়া হয়েছে, যেমন আইডা মিডলমিস-ফ্রস্ট৷ আইডা বলল, ‘‘আমার আসল সমস্যা হল আমার বাবা-মা৷ আমি ওঁদের বার বার বলি, প্লাস্টিকের বোতল কিনো না৷ লোকজনের ‘মাইন্ডসেট' বদলানো দরকার৷''
এভাবেই কর্নওয়ালের উপকূলে ছোট্ট শহর পেনজান্সে ব্রিটেনের প্রথম প্লাস্টিক বর্জিত স্কুল জন্ম নিতে চলেছে৷
অজান্তেই পেটে যাচ্ছে প্লাস্টিক
প্লাস্টিকের ছোট ছোট অংশ প্রতিদিন আমাদের পেটে ঢুকছে৷ জানতেও পারছি না আমরা৷ গায়ে মাখার ক্রিম থেকে খাবার, প্লাস্টিক সর্বত্র৷ তেমনই কিছু খাবারের সন্ধান দেওয়া হলো এই ছবিঘরে৷
ছবি: picture alliance/JOKER/A. Stein
মুখভর্তি প্লাস্টিক
৫ মিলিমিটারের চেয়েও ছোট প্লাস্টিকের অংশকে বলা হয় মাইক্রোপ্লাস্টিক৷ ছোট ছোট এই প্লাস্টিকের অংশ গিয়ে মিশছে সমুদ্রে৷ ঢুকে পড়ছে আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য সামগ্রীতে৷ শুধু তাই নয়, বাতাসেও ছড়িয়ে রয়েছে মাইক্রোপ্লাস্টিক৷ টুথপেস্ট থেকে ক্রিম, মাছ থেকে জল সর্বত্র মাইক্রোপ্লাস্টিক৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Sauer
প্লাস্টিক দিয়ে মুখ ধোয়া
বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, কোনো কোনো কসমেটিকে বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক ব্যবহার করা হয়৷ কখনো কখনো যার পরিমাণ প্যাকেজিংয়ে ব্যবহৃত প্লাস্টিকের সমপরিমাণ বা তার চেয়েও বেশি৷ কিন্তু আপাত চোখে কসমেটিকে প্লাস্টিক দেখা যায় না৷ তা লুকিয়ে থাকে ক্রিম বা টুথপেস্টের মধ্যে৷ ব্যবহার করলে কিছু অংশ ঢুকে যায় দেহের ভিতর৷ বাকি অংশ চলে যায় ড্রেনে৷
ছবি: picture-alliance/empics/Y. Mok
পানিতেও প্লাস্টিক
ড্রেনের জলে মিশে যাওয়া প্লাস্টিক পৌঁছে যায় সমুদ্রে৷ বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, সমুদ্রে গিয়ে মেশা প্লাস্টিক ঢুকে যায় জলজ উদ্ভিদে৷ মাছ সেই উদ্ভিদ খায়৷ ফলে তাদের শরীরেও পৌঁছে যাচ্ছে বিপুল পরিমাণ মাইক্রোপ্লাস্টিক৷ ২০১৭ সালের একটি পরীক্ষায় দেখা গেছে, ইন্দোনেশিয়া এবং ক্যালিফোর্নিয়ার বাজারের ২৫ শতাংশ মাছের শরীরে মাইক্রোপ্লাস্টিকের অংশ রয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Anka Agency International
এমনকি লবণেও...
২০১৭ সালে ইউরোপ, অ্যামেরিকা এবং চিনে একটি যৌথ গবেষণা হয়েছিল৷ তার রিপোর্টে বলা হয়, শুধু মাছ নয়, সমুদ্র উপকূল থেকে সংগৃহীত নুনের মধ্যেও মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে৷ তার কারণও আছে৷ প্রতি বছর প্রায় ১২ মিলিয়ন প্লাস্টিক আবর্জনা সমুদ্রে গিয়ে মেশে৷ ফলে উপকূলবর্তী নুনেও তার অংশবিশেষ মিশে যায়৷
ছবি: picture alliance/Bildagentur-online/Tetra
নিরাপদ নয় মধু
সম্প্রতি ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন জানিয়েছে, মধুতে প্রচুর মাইক্রোপ্লাস্টিক আছে৷ এ কারণে মধু নিষিদ্ধ করারও একটি পরিকল্পনা হয়েছে৷ কিন্তু মধুতে কীভাবে মাইক্রোপ্লাস্টিক মিশছে, সে বিষয়ে এখনো পরীক্ষানিরীক্ষা সম্পূর্ণ হয়নি৷
ছবি: Colourbox
জামা নয়, প্লাস্টিক
সুতি নয়, কিন্তু সিন্থেটিক জামায় প্রচুর মাইক্রোপ্লাস্টিক থাকে৷ কাপড় ধোয়ার সময় সেই প্লাস্টিক জামা থেকে বেরিয়ে ড্রেনের পানিতে গিয়ে মেশে৷ পরীক্ষা করে দেখা গেছে, ৬ কিলোগ্রাম সিন্থেটিক জামা কাচলে তার থেকে ৭ লক্ষ প্লাস্টিক ফাইবার নির্গত হয়৷ ড্রেনের জলের মাধ্যমে তা গিয়ে পৌঁছায় সমুদ্রে৷ বস্তুত, সমুদ্রের জলে প্লাস্টিকের মোট পরিমাণের এক তৃতীয়াংশই জামা কাপড়ের মাইক্রোপ্লাস্টিক৷
ছবি: Imago/Mint Images
চাকায় প্লাস্টিক
গাড়ির চাকা থেকেও প্রচুর মাইক্রোপ্লাস্টিক পরিবেশে গিয়ে মেশে৷ রবারের সঙ্গে সিন্থেটিক পলিমার মিশিয়ে তৈরি হয় গাড়ির টায়ার৷ রাস্তার সঙ্গে টায়ারের ঘর্ষণে সেই সিন্থেটিক পলিমার থেকে মাইক্রোপ্লাস্টিক রাস্তায় গিয়ে মেশে৷ কখনো বা বাতাসেও মিশে যায়৷ নরওয়ে এবং সুইডেনের বিভিন্ন পরীক্ষায় ধরা পড়েছে, সমুদ্র থেকে পাওয়া মাইক্রোপ্লাস্টিকের একটা বড় অংশ গাড়ির চাকার পলিমার৷
ছবি: Colourbox/Akhararat
কল খুললেও প্লাস্টিক
কলের পানিতেও মিশে থাকছে প্লাস্টিক৷ বিশ্বের প্রায় সমস্ত দেশ থেকে কলের জল সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা করে দেখা গেছে, অন্তত ৮০ শতাংশ নমুনাতেই মাইক্রোপ্লাস্টিক আছে৷ বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, কলের পানিতেই প্লাস্টিক থাকলে যে কোনো খাবারেই তা সহজে মিশে যেতে পারে৷
ছবি: Imago/Westend61
বিয়ারেও ভয়
কলের পানিতেই যদি প্লাস্টিক থাকে, বিয়ারেও যে থাকবে, তা তো স্বাভাবিক! ২০১৪ সালের একটি পরীক্ষা থেকে জানা গেছে, ২৪টি জার্মান বিয়ারে প্লাস্টিক মিশে আছে৷ যদিও জার্মানির পরিবেশ সংক্রান্ত দফতর জানিয়েছে, এ বিষয়ে আরো গবেষণার প্রয়োজন আছে৷