ফ্যাশন ফটোর মডেল হওয়া মোটেই সহজ কাজ নয়৷ তবে শুধু মানুষ কেন, অন্য প্রাণীও এমন ছবির বিষয়বস্তু হতে পারে৷ ইটালির দুই আলোকচিত্রী একটি প্রাণীকে বেছে নিয়ে অভিনব ছবি তুলে যাচ্ছেন৷
বিজ্ঞাপন
মিলানের দুই আলোকচিত্রী মাটেও ট্রাংকেলিনি ও মোরেনো মন্টির ছবির সংগ্রহে আত্মসচেতন মোরগ ও মুরগির বিলাসবহুল পালকের পোশাক শোভা পাচ্ছে৷ দুজনেই স্বীকার করেন, যে তাঁরা মুরগির প্রেমে পড়ে গেছেন৷ এমনকি নিজেরাও ফ্যাশনদূরস্ত মুরগি পালন করছেন৷ মোরেনো বলেন, ‘‘সেটা ছিল প্রথম দর্শনেই প্রেম৷ কখনো ভাবিনি এমনটা হবে৷ মুরগি খুবই ফটোজিনিক, ছবির জন্য আদর্শ৷ মডেল হিসেবেও মুরগি উপযুক্ত৷ ঠিক জানে কখন কী করতে হয়, বোঝানোর প্রয়োজন হয় না৷’’
মাটেও ট্রাংকেলিনি সেইসঙ্গে বলেন, ‘‘মেক আপ প্রায় লাগে না বললেই চলে৷ বিজ্ঞাপন ও ফ্যাশন ক্ষেত্রে আমাদের অভিজ্ঞতা হলো, মুরগি সেরা ও স্বতঃস্ফূর্ত মডেল৷’’
সম্ভবত ধৈর্যের বিচারেও মুরগি সেরা৷ সেটে ফটোগ্রাফার যেমনটা চান, তেমনটাই করে এই প্রাণী৷ বর্তমান প্রকল্পের জন্য মাটেও ও মোরেনো ৬০টি জাতের মধ্যে দুই জোড়া মুরগিকে প্রেমিক-যুগল হিসেবে বেছে নিয়েছেন৷ শিরোনাম হিসেবে ‘চিকেন ইন লাভ’ মন্দ হয় নি৷ মাটেও ট্রাংকেলিনি বলেন, ‘‘মোরগ আর মুরগির মধ্যে সম্পর্ক কীরকম? খুবই গভীর প্রেম, শর্তহীন ভালবাসা৷ মুরগি নিজের মোরগকে খুব ভালবাসে, সবসময়ে পেছন পেছন ঘোরে৷ প্রতিদিন সকালে মোরগ তার মুরগিকে এমনভাবে দেখে, যেন আগে কখনো দেখে নি৷ দেখেছো, একটা মুরগি!’’
ছবির মডেল যখন মুরগি
04:04
পোষ্যের খোঁজে দুই আলোকচিত্রী পাঁচ বছর আগে একটি পাখির মেলায় গিয়ে এত জাতের মুরগি দেখে অবাক হয়েছিলেন৷ তাঁরা ক্যামেরা বার করতেই মোরগ ও মুরগিও নানারকম পোজ দিতে থাকে৷
এভাবে ‘চিকেন’ নামে তাঁদের প্রথম ছবির সংকলন প্রকাশিত হয়৷ একশোটি ভিন্ন মুরগির জাতের ২০০ ছবি তাতে স্থান পেয়েছিল৷ মাটেও বলেন, ‘‘এ ক্ষেত্রে নান্দনিক দিকটা আমাদের নাড়া দিয়েছিল৷ বইয়ের সৌন্দর্য ও সাফল্যের মধ্যে তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে৷ কারণ মুরগি যে এত সুন্দর হতে পারে, এমনটা কেউ ভাবতে পারে না৷’’
যেমন মিলানে মাটেও-র বাগানে কেভিন নামের মোরগের গর্বের শেষ নেই৷ শানেল ও সামান্থা নামের দুই মুরগি নিয়ে তার সংসার৷ ঊনবিংশ শতাব্দীতে ব্রিটেনের রানি ভিক্টোরিয়া বড় আকারের কোচিন জাতের এই মুরগি এশিয়া থেকে ইউরোপে নিয়ে এসেছিলেন৷
‘চিকেন ইন লাভ’ সংকলনের জন্য দুই আলোকচিত্রী বিভিন্ন জাতের মুরগিকে প্রেমিক-যুগল হিসেবে মিলিয়ে মিশিয়ে তুলে ধরেছিলেন৷ মাটেও ট্রাংকেলিনি বলেন, ‘‘কোন কোন জাতের মুরগি যুগল হিসেবে সুন্দর দেখায়, আমরা তা খতিয়ে দেখেছি৷ প্রজননকারী যেভাবে জোড় খোঁজে, সেভাবে নয়৷ মানুষের সমাজের মতোই নানা জাত ও বর্ণের সুন্দর বৈচিত্র্যের খোঁজ করি৷’’
তবে মোরগই সব সময়ে মধ্যমণী হয়ে থাকতে ভালোবাসে৷ মাটেও ও মোরেনো অবশ্য দেখিয়ে দিয়েছেন, যে মুরগিও আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হতে পারে বৈকি৷
মিশায়েল কাডেরাইট/এসবি
মুরগি নিয়ে কিছু কৌতুক
বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি দেশ বা অঞ্চলের কৌতুক থেকে সেখানকার সামাজিক অবস্থা ও মানুষ সম্পর্কে অনেক কিছু জানা যায়৷ আজ আপনাদের জন্য থাকছে মুরগি নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের কিছু কৌতুক৷
ছবি: picture-alliance/dpa/N. Bothma
পুরান ঢাকা
ক্রেতা গেছে মুরগি কিনতে। কিন্তু মুরগি তো ঝিমায়। তো বিক্রেতাকে ক্রেতা বললেন,
- এই মুরগি কিনমু না। হালার অছুখ আছে। দেহো না কেমুন ঝিমাইতাছে? ডাক্তারের কাছে লয়া যাও না ক্যালা!
বিক্রেতা সঙ্গে সঙ্গে মুরগির গালে থাপ্পড় দিয়ে বলে,
- হালার পো হালা, কালকেই বারবার কইছিলাম, ছারা রাত জাইগা কাওয়ালি ছুনিছ না।
ছবি: FOOD: Bigger than the Plate/Sponsored by BaxterStorey/Koen Vanmechelen
চীন
এক দম্পতি গেছেন বেইজিং-এর এক রেস্টুরেন্টে খেতে৷ মেন্যুতে মজার মজার সব খাবারের নাম দেখে অর্ডার দিলেন ‘চিকেন সারপ্রাইজ’৷ কিছুক্ষণ পর ওয়েটার বিশাল এক ঢাকনাওয়ালা থালা নিয়ে হাজির৷ একটি পরেই ঢাকনার নীচ থেকে উঁকি দিলো এক জোড়া চোখ আর শক্ত ঠোঁট৷ লাফ দিয়ে উঠে ম্যানেজারকে ডাকলেন দম্পতি৷ ম্যানেজার বললেন, স্যরি স্যার, আপদের ভুলে চিকেন সারপ্রাইজের বদলে পিকিং ডাক দিয়ে গেছে৷’
ছবি: DW
পাকিস্তান
চিকেনের বাবার নাম কী?- চিকেন কাবাব
চিকেনের মায়ের নাম কী?- চিকেন কিমা
স্নান করছে, এমন চিকেনের নাম কী?- চিকেন শাওয়ার্মা (শর্মা)
চিকেনকে ফোনে না পেলে কী ম্যাসেজ পাঠাবেন?- কলমি চিকেন
ছবি: picture-alliance/AP Photo/S. Rehman
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
এক কর্পোরেট অফিসে কাজের ব্যাপারে খুব কড়াকড়ি৷ বস একদিন অফিসে কাজ করা মুরগিদের নতুন নির্দেশ দিলেন, ‘‘কাল থেকে সবাইকে দুটো করে ডিম পাড়তে হবে৷ নাহলে চাকরি নট৷’’ পরের দিন দেখা গেলো সবাই দুটো ডিম নিয়ে হাজির হলেও একজন একটা ডিম নিয়ে কাঁচুমাচু দাঁড়িয়ে রয়েছে৷ বস খুব জোরে ধমক দিলেন, ‘‘কতো বড় সাহস! একটা ডিম নিয়ে আমার সামনে এসেছো!’’ সে তখন ভয়ে ভয়ে বললো, ‘‘স্যার, আমি আসলে মোরগ৷’’
ছবি: picture-alliance/dpa/N. Bothma
ইংল্যান্ড
এক দুষ্টু বালক গির্জায় কনফেশনে গেছে মোরগ হাতে নিয়ে৷ ফাদারকে সে বললো, ‘‘ফাদার, আমি এই মুরগিটা চুরি করেছি৷ আমার তো পাপ হবে, আপনি এটা নিয়ে নেন৷’’ ফাদার বললেন, ‘‘এভাবে তো হয় না বৎস৷ এটা যার মুরগি, তাকে নিতে বলো৷’’ ছেলেটা জবাব দিলো, ‘‘অনেক চেষ্টা করেছি, মালিক নিতে চায় না৷’’ ফাদার বললেন, ‘‘তাহলে এতে তোমার কোনো পাপ হবে না, বরং সত্য কথা বলার জন্য পূণ্য হবে৷’’ রাতে বাসায় ফিরে ফাদার দেখেন তার মোরগটা নেই৷
ছবি: picture-alliance/Anka Agency International
দক্ষিণ আফ্রিকা
জিরাফকে দেখে এক মুরগি মনে খুব কষ্ট নিয়ে মোরগকে বলছে, ‘‘আহা, অতো বড় হলে উপর থেকে কতো কিছু দেখতে পেতাম৷’’ মোরগ দিয়েছে এক দাবড়ানি, ‘‘অতো ওপর থেকে পাড়লে ডিমের কি হতো শুনি!’’