1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফটোর মতো ছবি আঁকেন যে ওলন্দাজ শিল্পী

৪ নভেম্বর ২০২০

দেখলে ফটোগ্রাফ মনে হলেও আসলে হাতে আঁকা৷ এভাবে অবাস্তব জগতকে অত্যন্ত বিশ্বাসযোগ্য করে তুলছেন নেদারল্যান্ডসের এক শিল্পী৷ নিজে প্রথাগত শিক্ষা না পেলেও অন্যদের সেই কৌশল শেখান তিনি৷

ছবি: DW

চিত্রশিল্পী মারিসা ওস্টারলে-র সৃষ্টিকর্মের বৈশিষ্ট্য সত্যি অনবদ্য৷ খুঁটিনাটি বিষয়গুলির দিকে এত নিখুঁতভাবে নজর দেওয়া হয়েছে, যে ছবিগুলি দেখলে বোঝার উপায় নেই যে ফটো নয়, সবই হাতে আঁকা৷ নেদারল্যান্ডসের দক্ষিণে কাটভাইক শহরে তিনি নিজস্ব কৌশল ব্যবহার করে বাস্তব জীবনের দৃশ্য ক্যানভাসে ফুটিয়ে তোলেন৷

তিনি নিজের শৈলির নাম দিয়েছেন ‘কন্টেমপোরারি রিয়েলিজম’ বা সমসাময়িক বাস্তববাদ৷ মারিসা বলেন, ‘‘বাস্তবধর্মী উপায়ে আঁকতে গেলে দর্শককে বোঝাতে হয় যে সে আসলে কী দেখছে৷ শিল্পী নিজস্ব জগত, নিজস্ব বাস্তব সৃষ্টি করতে পারে৷ দর্শকের চোখে ফাঁকি দিয়ে তাদের বিশ্বাস করাতে হয়৷’’

নিজস্ব জগত যতটা সম্ভব বিশ্বাসযোগ্য করে সৃষ্টি করতে ৩৯ বছর বয়সি এই শিল্পী সবার আগে এক টেমপ্লেট প্রস্তুত করেন৷ তার জন্য মডেলের প্রয়োজন হয়৷ ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে তাদের একই পোজ দিতে হয়৷ শিল্পী স্কেচ আঁকেন, ফটো তোলেন৷ বড় আকারের প্রতিকৃতি সৃষ্টি করতে তাঁর তিন মাস পর্যন্ত সময় লাগে৷ নিজের কাজের পদ্ধতি ব্যাখ্যা করে মারিসা বলেন, ‘‘আমি কম্পিউটারে সব জোড়া দেই৷ কখনো স্কেচও সেখানেই করি৷ কখনো আমি রং, আলো ও আকার-আকৃতি বদলাতে ফটোশপ ব্যবহার করি৷ কখনো কোনো শটের একটি অংশের সঙ্গে অন্য শটের অংশ জুড়ে কম্পিউটারের মাধ্যমে পছন্দমতো ছবি ফুটিয়ে তুলি৷’’

অবাস্তব জগতকে বিশ্বাসযোগ্য করে তোলেন মারিসা

04:23

This browser does not support the video element.

মারিসা এয়ারব্রাশ ও অয়েল পেন্টিং-এর মতো নানা কৌশলের মধ্যেও মেলবন্ধন ঘটাতে ভালোবাসেন৷ তিনি কখনো শিল্পের ক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন নি৷ বহু বছর ধরে ইলাস্ট্রেটর হিসেবে কাজ করে নিজেই আঁকা শিখে নিয়েছেন৷ বিভিন্ন মিউজিয়াম ঘুরেও তিনি শিক্ষা নিয়েছেন৷ মারিসা বলেন, ‘‘প্রাচীন চিত্রকরদের ছবি ভালো করে বিশ্লেষণ ও নকল করে আমি অনেক কিছু শিখেছি৷ তারপর বই কিনতে শুরু করি৷ আমার বইভরা বিশাল লাইব্রেরি রয়েছে৷ তাতে নানা কৌশল, প্যালেট, পিগমেন্ট সম্পর্কে অনেক বর্ণনা রয়েছে৷ নিজস্ব তৈলচিত্র সৃষ্টি করতেও শিখেছি৷ তবে সেই সময় আমার নেই৷’’

২০০৩ সাল থেকে পেশাদারী শিল্পী হিসেবে তিনি কাজ করছেন৷ এরই মধ্যে কয়েকশো প্রতিকৃতি এঁকেছেন তিনি৷ আন্তর্জাতিক শিল্প সংগ্রহকারীরা তাঁর জাদুময় সৃষ্টি কিনে থাকেন৷ প্রথমদিকে তিনি যতটা সম্ভব ফটোর মতো বাস্তব চিত্র আঁকার কাজে মন দিয়েছিলেন৷ তারপর তিনি নিজের শৈলির আরও বিকাশ ঘটিয়েছেন এবং সোনার তবকের মতো উপকরণও কাজে লাগাচ্ছেন৷

তিনি বিভিন্ন কর্মশালায় বাস্তববাদী চিত্রকর্ম সম্পর্কে জ্ঞানও বিতরন করেন৷ মাত্র এক বছরের মধ্যেই তিনি ২২টি দেশে এমন কোর্স আয়োজন করেছেন৷ বর্তমানে তিনি মূলত অনলাইন পদ্ধতিতে শিক্ষা দেন৷ মারিসা বলেন, ‘‘সাধারণত শুধু ফটো বিশ্লেষণ দিয়েই শিক্ষা শুরু হয়৷ আমার ওয়ার্কশপে সেটাই শেখাই৷ একটি ছবি বেছে নিয়ে অংশগ্রহণকারীদের সেটি হুবহু নকল করতে হয়, যাতে তারা এর নেপথ্যের কৌশল বুঝতে পারেন৷ একবার কৌশল বুঝে নিলে তারপর তা কিছুটা রপ্ত করে সবরকম সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে নিজস্ব বাস্তব গড়ে তোলা সম্ভব৷’’

‘ওয়াশিং অ্যাওয়ে মাই সরোস' নামের সাম্প্রতিক সিরিজে তিনি সেই কাজই করছেন৷ একটি ছবির উপর কৃত্রিম ফেনা সমুদ্রে দূষণের সমস্যা ফুটিয়ে তুলছে, যা তাঁর অন্যতম বড় দুশ্চিন্তার কারণ৷

সমুদ্রই তাঁর সৃষ্টিকর্মের প্রেরণা৷ তাঁর স্টুডিও থেকে মাত্র ১৫ মিনিট দূরেই উত্তর সাগরের উপকূল৷ সেখানেই তিনি বড় হয়েছেন৷ প্রায়ই তিনি বাবার সঙ্গে সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতেন৷ স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে মারিসা বলেন, ‘‘আমরা সমুদ্র থেকে অনেক কিছু নিয়েছি৷ সমুদ্র আমাদের উপার্জনের সুযোগ দিয়েছে, আনন্দ দিয়েছে৷ এখন প্রতিদান দেবার সময় এসেছে৷ আজকাল চিত্রকর্মের মাধ্যমে প্রকৃতি ও দূষিত সমুদ্রের জন্য কিছু করার তাগিদ জন্মায়৷’’

শিল্পী হিসেবে সমুদ্রে নতুন অ্যাডভেঞ্চারের অভিজ্ঞতার লক্ষ্যে আগামী বছর মারিসা স্পেনে চলে যাচ্ছেন৷ তিনি সেখানেও ছুটি কাটাতে আসা পর্যটকদের আঁকা শেখাবেন এবং বাস্তববাদী শিল্প সৃষ্টির কৌশল দেখিয়ে দেবেন৷

মিরইয়া ফিভেগার/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ