উত্তর নরওয়ের স্ভেলবার্ড দ্বীপপুঞ্জে এক ফরাসি পর্যটককে আক্রমণ করা একটি শ্বেত ভালুককে মেরে ফেলেছে কর্তৃপক্ষ৷ ভালুকের আক্রমণে ভুক্তভোগীর হাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
নরওয়ের প্রত্যন্ত স্ভালবার্ড দ্বীপপুঞ্জের একটি ক্যাম্পিং সাইটে গত সোমবার ভালুকের আক্রমণে আহত হন এক পর্যটক নারী৷ স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক নয়৷ তবে পরবর্তীতে সেই ভালুকটিকে তারা মেরে ফেলেছে৷
স্ভেলবার্ডের মধ্যভাগে স্ভেসলেট্টা নামের একটি জায়গায় ২৫ জনের একটি দলের সঙ্গে ছিলেন ঐ নারী৷ উত্তর নরওয়ের মূল ভূখণ্ড থেকে স্থানটির দূরত্ব প্রায় ৮০০ কিলোমিটার৷
পর্যটককে আক্রমণের খবর ছড়িয়ে পড়লে কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থলে হেলিকপ্টার পাঠায়৷ এসময় ভয়ে দিগ্বিদিক ছুটতে থাকা ভালুকটিকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়৷
বরফের ব্যবসার নানা দিক
04:04
পরে আহত পর্যটককে হেলিকপ্টারে করে লঙ্গিয়ারবুয়েন হাসপাতালে পাঠানো হয়৷ স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে ঐ নারীর বয়স চল্লিশ এবং তিনি সামান্য আহত বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ৷
এদিকে গুলিতে ভালুকটি গুরুতরভাবে আহত হয়৷ পেশাদারদের মাধ্যমে পরীক্ষার পর সেটিকে ব্যাথা না দিয়ে মেরে ফেলা হয় বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ৷
এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০০৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ১৪টি মেরু ভালুককে গুলি করা হয় বলে জানিয়েছে নররওয়ের সম্প্রচার মাধ্যম এনআরকে৷ আর্কটিক অঞ্চলে ২০ হাজার থেকে ২৫ হাজার মেরু ভালুকের বসবাস৷
এই ভালুকদের আক্রমণে বিভিন্ন সময়ে মানুষের মৃত্যু হয়েছে৷ বিশেষ করে খাদ্যাভাবে অনেক সময় পর্যটকদের শিকারে পরিণত করে তারা৷ ২০১৫ সালে স্ভালবার্ডে এক চেক পর্যটককে তার তাবু থেকে টেনে নিয়ে যায় একটি ভালুক৷ পরে গুলি করে সেটিকে তাড়ানো হয়৷ কর্তৃপক্ষ ভালুকটিকে চিহ্নিত করে মেরে ফেলে৷
এফএস/কেএম (এপি, ডিপিএ)
অন্যরকম এক ‘বীজ ব্যাংক’-এর কথা
কোনো সংকটের কারণে একটি নির্দিষ্ট জাতের বীজ যেন চিরতরে হারিয়ে না যায় সেই লক্ষ্যে কাজ করে ‘স্ভালবার্ড গ্লোবাল সিড ভল্ট’৷
ছবি: Michael Marek
১২০ মিটার ভেতরে
দেখছেন ‘স্ভালবার্ড গ্লোবাল সিড ভল্ট’-এর প্রবেশমুখ৷ নরওয়ের মূল ভূখণ্ড থেকে জাহাজে করে প্রায় সাড়ে ন’শ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে যেতে হবে স্ভালবার্ডে৷ সেখানেই পাহাড়ের প্রায় ১২০ মিটার ভেতরে আছে এই ভল্ট৷
ছবি: Michael Marek
সংকটের সময় যেন কাজে লাগে
ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন ভল্টের ভেতরের অংশ৷ এই টানেলের শেষপ্রান্তে ভল্টের মূল অংশের দেখা পাওয়া যায়৷ স্থানীয় কিংবা বৈশ্বিক সংকটের কারণে বিশ্বের কোথাও কোনো বীজ হারিয়ে গেলে যেন একটা উপায় খুঁজে পাওয়া যায় সে লক্ষ্যে ২০০৬ সালে এটি প্রতিষ্ঠা করা হয়৷
ছবি: Michael Marek
এই সেই দরজা
টানেলের শেষপ্রান্তে পৌঁছে গেছেন আপনি৷ এটাই ভল্টের দরজা৷ মার্কিন কৃষিবিদ ক্যারি ফাওলার-এর উদ্যোগে ভল্টটি তৈরি হয়েছে৷ খাদ্যশস্যের বৈচিত্র্যতা হারিয়ে গেলে মানবজাতি অনেক বিপদে পড়তে পারে, সেই আশংকা থেকেই ভল্টটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে৷
ছবি: Michael Marek
নরওয়ে সরকারের অর্থায়ন
ভল্টটি তৈরিতে প্রায় ৯ মিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে৷ পুরোটাই দিয়ে নরওয়ে সরকার৷ তবে কার্যক্রম চালানোর খরচ জোগাতে নরওয়ে সরকারের সঙ্গে যোগ দিয়েছে ফাওলারের প্রতিষ্ঠান ‘গ্লোবাল ক্রপ ডাইভারসিটি ট্রাস্ট’৷ গেটস ফাউন্ডেশন সহ অন্যান্য সংগঠন এই ট্রাস্টে অর্থ সহায়তা দিয়ে থাকে৷
ছবি: Michael Marek
এক প্রজাতির ৫০০ বীজ
এবার আপনি ভল্টের মধ্যে ঢুকে পড়েছেন৷ এখানেই বীজগুলো রাখা হয়৷ প্রায় ৪৫ লক্ষ জাতের বীজ রাখার ব্যবস্থা আছে সেখানে৷ একেক প্রজাতির প্রায় ৫০০টি করে বীজ রাখা হয়৷ বীজ রাখার জন্য বছরে তিনবার এই ভল্ট খোলা হয়৷ ভল্টের তাপমাত্রা সবসময় মাইনাস ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রাখা হয়৷
ছবি: Michael Marek
বিশেষ প্যাকেট
দেখছেন জার্মানি থেকে সেখানে পাঠানো বীজ৷ এমন বিশেষ প্যাকেটে বীজ রাখা হয়৷ বর্তমানে সারা বিশ্ব থেকে যাওয়া ৫,১০৩টি জাতের প্রায় সাড়ে আট লক্ষ বীজ সেখানে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে৷
ছবি: Michael Marek
প্রথম ঘটনা
এ ধরণের ভল্ট যে কেন প্রয়োজন তার প্রমাণ ইতিমধ্যে পাওয়া গেছে৷ ছবিতে সিরিয়ার যে সংগঠনটির নাম দেখছেন চলমান সিরিয়া সংকটের শিকার হয়ে আলেপ্পোতে থাকা সেই সংগঠনের সদর দপ্তর ধ্বংস হয়ে গেছে৷ ফলে হারিয়ে গেছে খাদ্যশস্যের বীজ৷ কিন্তু ভাগ্য ভালো তারা আগেই তাদের বীজগুলো স্ভালবার্ডের সিড ভল্টে রেখে দিয়েছিলেন৷ এখন তারা সেগুলো চেয়ে পাঠিয়েছেন৷
ছবি: Michael Marek
কেন স্ভালবার্ড?
কারণ নরওয়ে সাধারণত যুদ্ধ-বিগ্রহ থেকে দূরে থাকে৷ তাছাড়া স্ভালবার্ড এলাকাটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৩০ মিটার উঁচুতে৷ ফলে বন্যার সম্ভাবনা নেই৷ আশেপাশে নেই কোনো আগ্নেয়গিরি৷ এমনকি ভূমিকম্পের সম্ভাবনাও সেখানে সীমিত৷ এবার ভল্ট নিয়ে ভিডিও দেখতে চাইলে উপরে ‘+’ চিহ্নতে ক্লিক করুন৷