বাঙালির পাটিসাপটার ফরাসি রূপের নাম ‘ক্রেপ’৷ ফ্রান্সের ব্রিটানি অঞ্চলে নানা উপকরণ দিয়ে নানা স্বাদে এই পদ রান্না হয়৷ আঞ্চলিক বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই খাদ্য মধ্যযুগ থেকে জনপ্রিয় থেকে গেছে৷
বিজ্ঞাপন
ফ্রান্সের উত্তর-পশ্চিমে ব্রিটানি অঞ্চলের উপকূল উঁচু-নীচু টিলা ও খানাখন্দে ভরা৷ সেখানে বেশিরভাগ মানুষ পেশায় জেলে অথবা চাষি৷ বিশেষ করে গম চাষের কারণে সেখানে ফ্রান্সের বিখ্যাত ‘ক্রেপ’ বা পাটিসাপটার বেশ চল রয়েছে৷ মধ্যযুগীয় ক্যাঁপেয়ার শহরে এমন দোকানে ভিড় লেগেই রয়েছে৷
শহরের অন্যতম পুরানো দোকানের নাম ‘ক্রেপারি দ্যু ফ্রুজি’৷ ওড্রে গিয়াডের ও তাঁর সহকর্মীরা সেই দোকান চালান৷ সেখানে পাটিসাপটা তৈরি করতে নানা ধরনের গম ব্যবহার করা হয়৷ সাধারণ সাদা ময়দা ছাড়াও বজরার মতো শস্যও ব্যবহার করা হয়৷ ‘ব্লে নোয়ার’ বা কালো গমের আটা দিয়ে ‘গালেৎ’ বা ওয়েফার তৈরি হয়৷ ক্রেপ রাঁধুনী ওড্রে গিয়াডের বলেন, ‘‘এখানে লবণ দিয়েছি৷ আমার কাছে নানা রকম আটা-ময়দা রয়েছে৷ ভালো করে মেশাতে হয়৷ তারপর ডিম আর পানি দিতে হয়৷ ভালো করে মাখতে হয়৷ তারপর ক্রেপ তৈরির লোহার পাতের উপর ছড়িয়ে দিতে হয়৷ সেই লোহার তাপমাত্রা ২০০ ডিগ্রি হতে হবে৷ তার আগে তেল বা মাখনের বদলে ডিমের হলুদ অংশ দিয়ে মাখিয়ে নিতে হবে৷’’
ফ্রান্সে ‘পাটিসাপটা পিঠা’
04:33
ব্রিটানি অঞ্চলে লবণাক্ত মাখনের ব্যবহার বেশি৷ মাঝে ডিমের পোচ, তারপর চিজ ও হ্যাম৷ তারপর ভাঁজ করে উপরে লবণাক্ত মাখন দিলেই রান্না শেষ৷ ছাগলের দুধ অথবা শেওলা ধরা চিজ, সসেজ, বেকন অথবা শুকরের মাংস – ব্রিটানি অঞ্চলের পাটিসাপটা ও ওয়েফারের মধ্যে নানা রকম স্থানীয় উপকরণ যোগ করা হয়৷ এমন রসালো খাবারের সঙ্গে স্থানীয় মানুষ আপেলের ওয়াইন পান করেন৷
মধ্যযুগেই এই অঞ্চলে বজরা খাওয়া হতো৷ চীন থেকে এই শস্য ফ্রান্সে এসেছিল৷ চাষিরা খুশিমনে তা গ্রহণ করে৷ ব্রিটানি অঞ্চলের রুক্ষ মাটিতে তার ফলনও ভালো হয়৷ ওড্রে গিয়াডের বলেন, ‘‘বজরা বেড়ে উঠতে মাত্র ৩ মাস সময় লাগে৷ এত দ্রুত ফসলের কারণে সেটি বেশ জনপ্রিয় শস্য৷ কাউন্টেস আন দ্য ব্রতাইঁ নিজের উদ্যোগে এই শস্যের ব্যাপক ব্যবহার সম্ভব করেছিলেন৷ তিনি এই অঞ্চলকে উত্তর ও দক্ষিণে বিভক্তও করেছিলেন৷ উত্তরে ক্রেপ ও দক্ষিণে গালেৎ পাওয়া যেতো৷’’
শুধু পর্যটক নয়, ব্রিটানির মানুষও তাঁদের ক্রেপ ও গালেৎ খেতে ভালবাসেন৷ ‘ক্রেপারি দ্যু ফ্রুজি’ দোকানে এসে তাঁরা পছন্দমতো উপকরণ বেছে নিতে পারেন৷ এই পদের দাম কম হওয়ায় অনেকেই একাধিক পাটিসাপটা খেয়ে থাকেন৷ যেমন, শেষ পাতে মিষ্টি ক্রেপ৷ এই দোকানের আবার চকোলেট ও জ্যামের মতো একাধিক স্বাদের নিজস্ব ক্যারামেল সস আছে৷ আছে আরও বেশ কিছু সুস্বাদু পদ৷
এসবি/এসিবি
জার্মানিতে রেস্তোরাঁয় খাওয়া ও খাওয়ার নিয়ম
অন্য দেশের মতো জার্মানিতেও রেস্তোরাঁয় খাওয়া মানুষের সংখ্যা বাড়ছে৷ রেস্তোরাঁয় জার্মানরা কী খেতে ভালোবাসেন, কিংবা ভুল খাবার পরিবেশন করা হলে কী হয় অথবা খাবার অপচয় রোধ করতে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়- এরকম নানা কিছু নিয়েই এই ছবিঘর৷
ছবি: picture-alliance/dpa/O. Berg
পিৎসা এবং পাস্তা
এক সমীক্ষায় জানা যায়, জার্মানরা সবচেয়ে বেশি পছন্দ করেন ইটালীয় খাবার পিৎসা এবং পাস্তা৷ জার্মানির ভুর্টসবুর্গ শহরের এলিফান্টেন গাছে প্রথম সেই ১৯৫২ সালে পিৎজারিয়া বা পিজা রেস্তোরাঁ খোলা হয়৷ তবে সে সময় সেখানে যাঁরা খেতে যেতেন, তাঁদের বেশিরভাগই ছিলেন অ্যামেরিকান সৈন্য৷
ছবি: Reuters/C. de luca
অনলাইনে অর্ডার
পিৎসা, সুশি কিংবা মেক্সিকান- যে খাবারই হোক না কেন, আজকাল অনলাইনে সব ধরনের খাবারের অর্ডার দেওয়ার প্রবণতাই দিনদিন বাড়ছে৷ ২০১৫ সালের এক সমীক্ষায় এর সংখ্যা ছিলো আনুমানিক ৬ মিলিয়ন৷ তবে ২০২১ সালে এই সংখ্যা শতকরা ২০০ ভাগ বেড়ে ১৮ মিলিয়ন হবে বলে জানিয়েছে জার্মান পরিসংখ্যান পোর্টাল৷
ছবি: picture alliance/dpa/J. Kalaene
শিশুরাও কেনা খাবার বেশি খায়
শিশুদের ক্ষেত্রে সকালের নাস্তা ও দুপুরের খাবার বাড়িতে খাওয়ার প্রবণতা ২০০৫ থেকে ২০১৫-এর মধ্যে অনেক কমে গেছে৷ কনজিউমার্স চয়েস-এর করা এক সমীক্ষা থেকে জানা যায় এ কথা৷
ছবি: AP/S. Aivazov
পেশাজীবী মায়ের সংখ্যা বাড়ছে, তাই...
আগের তুলনায় সাম্প্রতিক সময়ে অনেক বেশি মা পেশাজীবী৷ রান্নাবান্নার ক্ষেত্রে তাঁদের সময় কমে গেছে৷ আর এ কারণেই অনেক শিশুকে দু’বেলাই বাইরের কেনা খাবার খেতে হচ্ছে৷
ছবি: Imago/Westend61/zerocreatives
ভুল খাবার পরিবেশ করলে যা হয়
আপনি রেস্তোরাঁয় যে খাবারটি অর্ডার দিয়েছেন তার পরিবর্তে কি অন্য কোনো খাবার আপনাকে দেয়া হয়েছে? এমন হলে যদি আপনি সাথে সাথেই ওয়েটারকে তা জানিয়ে দেন, তাহলে আপনাকে নতুন করে আপনার অর্ডার অনুযায়ী খাবার দেওয়া হবে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Warnecke
পরে অভিযোগ করে লাভ নেই
আর যদি কিছু না বলে ভুল খাবার চুপচাপ খেয়ে নেন এবং পরে সে কথা জানান বা অভিযোগ করেন, তাহলে কিন্তু কোনো লাভ হবে না৷
ছবি: picture alliance/Bildagentur-online
আইনি অধিকার
আর হ্যাঁ, যদি কোনো রেস্তোরাঁয় অর্ডার দেওয়ার দেড় ঘন্টা পরে খাবার পরিবেশন করা হয়, তাহলে দীর্ঘ অপেক্ষার কারণে বিলের শতকরা ৩০ভাগ কম মূল্য আপনি পরিশোধ করতে পারেন৷ জার্মানিতে এটা আপনার আইনসঙ্গত অধিকার৷
ছবি: picture-alliance
‘অপচয় ’ না করে পেট ভরে খান!
অন্যান্য অনেক দেশের মতো জার্মনিতেও এমন অনেক রেস্তোরাঁ রয়েছে যেগুলোতে লেখা থাকে ‘অল ইউ ক্যান ইট’, অর্থাৎ আপনি যত খুশি তত খান, বিল কিন্তু একই থাকবে৷ এ ক্ষেত্রে খাবার যাতে নষ্ট না করা হয় সেজন্য জার্মানির কিছু রোস্তোরাঁয় খাবার টেবিলেই লেখা থাকে, ২০০ গ্রামের বেশি খাবার নষ্ট বা প্লেটে রেখে দিলে তার জন্য নির্ধারিত অংকের ইউরো জরিমানা দিতে হবে৷