ইংলিশ চ্যানেলে মাছ ধরা নিয়ে তীব্র বিবাদ শুরু হয়েছে ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্যের। একটি ব্রিটিশ নৌকাকে আটক করেছে ফ্রান্স।
বিজ্ঞাপন
ব্রেক্সিটের পর থেকেই ইংলিশ চ্যানেলে মাছ ধরা নিয়ে ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য এবং জার্সির মধ্যে তীব্র বিতর্ক চলছে। ফরাসি উপকূল থেকে মাত্র ২২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত দ্বীপ জার্সি। ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের অন্তর্গত এই দ্বীপটি এবং যুক্তরাজ্য ব্রেক্সিটের নিয়ম মেনে ফরাসি জেলেদের ইংলিশ চ্যানেলে মাছ ধরার অনুমতি দিচ্ছে না বলে অভিযোগ। ফ্রান্সও পাল্টা ক্ষমতা প্রদর্শন করছে বলে যুক্তরাজ্যের অভিযোগ। বস্তুত, বৃহস্পতিবার ইংলিশ চ্যানেলে একটি যুক্তরাজ্যের মাছ ধরার নৌকোকে আটক করেছে ফ্রান্স। অভিযোগ, নিয়ম ভেঙে ফরাসি জলসীমায় ঢুকে পড়েছিল নৌকোটি। এরপরেই যুক্তরাজ্যে ফরাসি রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠায় প্রশাসন।
ইংল্যান্ড নেবে না, ফ্রান্স তাদের রাখবে না: কালে-তে শরণার্থীর ভিড়
উত্তর ফ্রান্সের ‘কালে’ শহরে অবস্থানরত শরণার্থীরা প্রতিদিনই ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করে৷ উদ্দেশ্যে ইংল্যান্ডে যাওয়া৷ কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাদের সে প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়৷ ফলে কালে শহর পরিণত হচ্ছে শরণার্থী শিবিরে৷
ছবি: Reuters/P. Wojazer
উষ্ণ অভ্যর্থনা, তবে সকলের জন্য নয়
এই চিহ্নটি টুরিস্ট এবং ট্রাক ড্রাইভারদের জন্য, শরণার্থীদের জন্য নয়৷ ব্রিটিশ শুল্ক বিভাগের কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় নানা পন্থা বার করা হয়েছে, যা-তে আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে আগত শরণার্থীরা ব্রিটেনে যেতে না পারে৷ ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হলেও, শেঙ্গেন এলাকার অংশ নয়, কাজেই সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ বজায় আছে৷
ছবি: AFP/Getty Images/Philippe Huguen
অলঙ্ঘনীয়
কাঁটাতার দেওয়া উঁচু তারের বেড়া দিয়ে বন্দর এলাকাটিকে ঘিরে রাখা হয়েছে, যা-তে অনাকাঙ্খিত অনুপ্রবেশকারীরা ইংল্যান্ডমুখী ফেরি-তে চড়ার চেষ্টা না করে৷ এই বেড়া বহুবার বদলানো হয়েছে এবং জোরদার করা হয়েছে৷
ছবি: Reuters/P. Wojazer
পন্থা বার হয় ঠিকই
শরণার্থীরা বন্দরমুখী রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকে, ট্রাক কিংবা মোটর গাড়ির আশায়৷ যানজট হলেই তারা সকলের অজান্তে সেই গাড়িতে চড়ে বসার চেষ্টা করে৷
ছবি: Reuters/P. Wojazer
ধরা না পড়ার আশা
ট্রাক ড্রাইভারের কেবিনে আত্মগোপনের প্রচেষ্টা৷ সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ জন শরণার্থী বেআইনিভাবে ফেরি-তে চড়ে ব্রিটেন ঢোকার চেষ্টা করতে গিয়ে ধরা পড়ে৷
ছবি: AFP/Getty Images/Denis Charlet
কালে-র বস্তি
যারা ধরা পড়ে, তারাও প্রচেষ্টা চালিয়ে যায়৷ বহু শরণার্থী তাঁবু কিংবা প্লাস্টিকের পাতের নীচে দিন কাটায়, পরবর্তী সুযোগের আশায়৷ উত্তর-পশ্চিম ইউরোপের শীতও তাদের পক্ষে সহজ নয়৷
ছবি: Reuters/P. Wojazer
ক্ষুধা
সুদান থেকে আগত এক শরণার্থী দু’মুঠো রেঁধে খাচ্ছেন৷ ‘ভলান্টিয়ার’ বা স্বেচ্ছাসেবীরা মাঝেমধ্যে শরণার্থীদের জন্য সুপ রেঁধে আনে৷
ছবি: Reuters/P. Wojazer
সমর্থন
ফরাসি আন্দোলনকারীরা ১০০ বছর আগে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন যারা উদ্বাস্তু হয়েছিল, তাদের সঙ্গে আজকের শরণার্থীদের তুলনা করতে দ্বিধা করেন না৷ যে ‘‘লজ্জার প্রাচীর’’ কালে বন্দরকে ঘিরে রেখেছে, তা ভেঙে ফেলা হোক – এই হলো আন্দোলনকারীদের দাবি৷
ছবি: Reuters/P. Wojazer
7 ছবি1 | 7
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সেক্রেটারি লিজ ট্রাস বৃহস্পতিবার বলেছেন, ''ইউরোপ বিষয়ক মন্ত্রী ওয়েন্ডি মর্টন ফরাসি রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠিয়েছেন। ফ্রান্স ইংলিশ চ্যানেল অঞ্চলে যুক্তরাজ্য এবং চ্যানেল দ্বীপগুলির সঙ্গে যে আচরণ করছে, মূলত তা নিয়েই কথা বলা হবে।'' ফ্রান্সের ব্যবহার অত্যন্ত হতাশাজনক বলেও মন্তব্য করেছেন যুক্তরাজ্যের মন্ত্রী।
ব্রেক্সিটের আগে ইংলিশ চ্যানেলে মাছ ধরা নিয়ে যুক্তরাজ্য, চ্যানেল আইল্যান্ড এবং ফ্রান্সের মধ্যে এত বিতর্ক ছিল না। কিন্তু যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরে ইংলিশ চ্যানেলের কোন অংশে কে মাছ ধরবে, তা নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। ফ্রান্সের অভিযোগ, তাদের মাছ ধরার লাইসেন্স দিচ্ছে না যুক্তরাজ্য। তাদের জলসীমায় ঢুকে পড়ছে যুক্তরাজ্য এবং চ্যানেল দ্বীপগুলির নৌকো। এই নিয়েই বিতর্ক ক্রমশ তীব্র হচ্ছিল। ফ্রান্স যুক্তরাজ্যের নৌকো আটকে দেওয়ার পর লড়াই অন্য পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা।