নোনাজল এসে যেখানে চাষের জমি নাশ করে সেনেগালেও৷ জমির স্যালিনাইজেশন, অর্থাৎ লবণাক্তকরণ রোখার একটি পন্থা হলো – সেনেগালের ফরাসিতে – ‘দিগেৎ’ নামের এক ধরনের বাঁধ৷ কিন্তু তারপর?
বিজ্ঞাপন
ধান আর বজরার চাষ করা হতো এখানে৷ কিন্তু আজ আর কিছুই গজায় না৷ সাগর থেকে লবণাক্ত পানি এসে ভূগর্ভস্থ পানিকে দূষিত করেছে৷ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর দ্য কনজার্ভেশন অফ নেচার বা আইইউসিএন-এর আল হাজি বালে সেই বলেন যে, এলাকার দশ শতাংশ চাষের জমি এ ভাবে নষ্ট হয়েছে: ‘‘গাছপালা মরে গেছে, মাটি লবণে ভরা৷ কোনো কোনো অংশ অম্লে পরিণত হয়েছে, যা থেকে বোঝা যায়, লবণাক্তকরণ কতদূর ঢুকে পড়েছে৷''
গ্রামের নাম হলো পেজ৷ বাসিন্দারা সাধারণত এই চত্বরটিতে মিলিত হন৷ গাঁয়ের সাড়ে চারশো মানুষের সকলেই একটু প্রাচীনপন্থি৷ তাঁরা এখানে থাকতে পারবেন কিনা, তা নির্ভর করবে লবণাক্তকরণ বন্ধ করা সম্ভব হবে কিনা, তার উপর৷ আল হাজি বালে সেই এ কাজে গ্রামবাসীদের সাহায্য করতে চান৷
ডুবতে বসেছে আশার চর
সমুদ্রের পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে বাংলাদেশের আশার চরের মানুষ নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে৷ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কমে আসছে চরের আয়তন৷ সেখানকার অধিবাসীদের জীবন ও জীবিকা হুমকির মুখে পড়েছে৷
ছবি: DW/K.Hasan
বিপজ্জনক এলাকা
আশার চর, বঙ্গোপসাগরের কোলে জেগে ওঠা এই চরটির বেশিরভাগ এলাকা এখন প্লাবিত৷ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এলাকাটিতে প্রায়ই প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দেয়৷
ছবি: DW/K.Hasan
জল থেকে স্থলে জীবিকার সন্ধান
যারা শুঁটকি বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন, তাদের কাজ শুরু হয় ভোর থেকে৷ আশার চর থেকে মাছ ধরা নৌকাগুলো ১৫ থেকে ২০ দিনের জন্য মাছের সন্ধানে বের হয়৷ ফিরে আসার পরও থাকে নানা কাজ৷ তারা মাছ বের করে সেগুলো শুকানোর কাজ শুরু করে৷
ছবি: DW/K.Hasan
প্রয়োজনীয়তা
ছয় বছর বয়স ধনেশ প্রতিদিন মাছ ধরে৷ সঠিকভাবে কাজ করার জন্য বয়সটা তার আসলেই অল্প৷ কিন্তু ভাগ্যের পরিহাসে এই কাজ করতে সে বাধ্য৷ শিশুশ্রমকে ভালো চোখে দেখা না হলেও এখনও এখনকার সমাজে প্রায়ই তা চোখে পড়ে৷ প্রতিদিন এই শিশুরা ৪০ টাকা করে পায়৷
ছবি: DW/K.Hasan
একই কাজ, অসম পারিশ্রমিক
আশার চরে নারী শ্রমিকরাও পুরুষদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে৷ কিন্তু বিশ্বের অন্যান্য অনেক দেশের মতই নারীরা পুরুষদের চেয়ে কম পারিশ্রমিক পায়৷
ছবি: DW/K.Hasan
নিরাপত্তাহীন জীবন
৫২ বছর বয়সি করিম আলী অনেক বছর ধরে এই পেশায় নিয়োজিত৷ তাঁর জীবনে তিনি অনেক প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখেছেন, সেইসাথে দেখেছেন অনেক অপহরণের ঘটনা৷ আলী জানান, একসময় তাঁর কয়েকজন শ্রমিক উধাও হয়ে যায় এবং তারা আর ফিরে আসেনি৷ এখানে জীবনের কোনো নিশ্চয়তা নেই বলে জানান তিনি৷
ছবি: DW/K.Hasan
স্থানের অভাব
আশার চরের মানুষের উপার্জনের একমাত্র মাধ্যম শুঁটকি মাছ৷ আর এই মাছ শুকানোর জন্য প্রয়োজন হয় বিস্তৃত এলাকার৷ আধুনিকতার কোন ছোঁয়া নেই আশার চরে৷ তাই নেই কোনো আধুনিক যন্ত্রপাতি, যার মাধ্যমে মাছ শুকানো যায়৷ ফলে পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে মাদুর বিছিয়ে ছয় দিন ধরে মাছগুলো শুকানো হয়৷
ছবি: DW/K.Hasan
প্রাণের বন্ধু, ভয়ঙ্কর শত্রু
বঙ্গোপসাগর আশার চরের মানুষের বেঁচে থাকার অবলম্বন, সাগরের মাছগুলোই তাদের জীবন বাঁচানোর মুখ্য উপাদান৷ কিন্তু বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ে এই সাগরই তাদের জীবনে বিপর্যয় ডেকে আনে৷
ছবি: DW/K.Hasan
হারিয়ে যাওয়া ভূমি
সমুদ্রের পানির উচ্চতা বাড়ার কারণে চরের বেশ কিছু অংশ প্রতিদিনই সমুদ্রগর্ভে চলে যাচ্ছে৷ এমনকি মাছের খামার এবং চাষের জমিও প্লাবিত হচ্ছে৷
ছবি: DW/K.Hasan
ঘূর্ণিঝড়
২০০৭ সালে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় সিডরের আঘাতে অনেক মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল৷ রেডক্রসের হিসেব অনুযায়ী ঝড়ে ৯ লাখ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল৷ যত মানুষ নিহত হয়েছিল তার মধ্যে ৪০ ভাগই শিশু৷
ছবি: DW/K.Hasan
বাইরের কোন সাহায্য নেই
আশার চরের জেলে সম্প্রদায় বৈরি পরিস্থিতির মধ্যেই কাজ করে যায়৷ এখানে সরকার কোনো ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করেনি, তেমনি নেই কোন স্যানিটেশন প্রকল্প৷ খুব ছোট ছোট ঘরে জীবন কাটান এখানকার মানুষ৷
ছবি: DW/K.Hasan
10 ছবি1 | 10
গ্রামবাসীরা খেতের ফসল থেকেই জীবনধারণ করেন৷ বর্তমানে চাষিরা ফসল বোনার জন্য খেত তৈরি করছেন৷ কিছু বজরা গতবারের ফসল থেকে বেঁচে গেছে৷ মহিলারা পরে এ দিয়ে কুসকুস তৈরি করবেন৷ আপাতত তাঁদের অন্য জায়গা থেকে শস্য কিনতে হচ্ছে৷ পেজ গ্রামের বাসিন্দা জোজো দিউফ বলেন, ‘‘লবণাক্তকরণের দরুন আমরা আর পর্যাপ্ত ধান পাচ্ছি না৷ আগে যা ফসল আনতাম, তাতে এক বছরের কাজ চলে যেত৷ কিন্তু লবণের কারণে মাটি আর তত উর্বর নয়৷ তবুও আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি৷''
‘দিগেৎ' বাঁধ প্রকল্প
আবার আমরা সেই-র সাথে পেজ গ্রামে গেলাম৷ তিনি এখানে এবং আরো পাঁচটি গ্রামে ‘দিগেৎ' নামের ছোট ছোট বাঁধ তৈরির প্রকল্প চালাচ্ছেন৷ এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো, লবণ যাতে আরো জমিতে ঢুকে না যায়, তা রোধ করা এবং জমির ক্ষয় রোধ করা৷ ‘দিগেৎ'-গুলি বৃষ্টির জল ধরে রেখে ভূগর্ভস্থ পানিতে তা যোগ করে৷ আল হাজি বালে সেই বলেন, ‘‘জমি বাঁচানোর এই সব পন্থার বাস্তবিক প্রভাব আমরা এখনো খতিয়ে দেখিনি, কিন্তু আমাদের এগুলো বেশ ইন্টারেস্টিং মনে হয়েছে, কেননা এগুলোতে বিশেষ খরচ নেই৷ আবার এগুলো প্রথাগত প্রযুক্তিও বটে৷''
গ্রামবাসীরা দিগেৎ নির্মাণ এবং প্রকল্পের অপর অংশ – পুনর্বনানীকরণ, উভয়ই সমর্থন করেন৷ নতুন চারা রোপণ করে জমির ক্ষয় স্থগিত করা এবং হাওয়ায় মাটির ক্ষয় রোখা, গাছপালা যা করতে সক্ষম – এই হলো দুই লক্ষ্য৷ আল হাজি বালে সেই জানালেন, ‘‘সরকারের তরফ থেকে একটি ন্যাশনাল পার্ক স্থাপন করা হয়েছে৷ পৌর পর্যায়েও একাধিক প্রকৃতি সংরক্ষণ এলাকা আছে৷ কিন্তু আমরা চাই যে, চাষবাসের জমিতেও প্রকৃতি আবার তার নিজের আকৃতি ফিরে পাক৷''
মরুভূমি বেড়েই চলেছে
ফসল ফলানোর জমি কমে আসছে, বাড়ছে মাটির ক্ষয়৷ মরুকরণের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চুক্তির মাধ্যমে জাতিসংঘ এই অশুভ বিকাশধারায় বাঁধ দেবার চেষ্টা করেছে৷
ছবি: DW/Stefan Dege
বন্ধ্যা পৃথিবী
পাথর, বালি আর লবণসর্বস্ব মরুপ্রান্তর৷ ভূপৃষ্ঠের এক-তৃতীয়াংশই হলো রুক্ষ, নিষ্ফলা জমি, যার অনুপাত বেড়েই চলেছে৷ এ ধরনের রুক্ষ জমির অধিকাংশই সৃষ্টি হয়েছে গত হাজার বছরে৷ যেমন আলজেরিয়ার হগার মরু অঞ্চলের এই পাহাড়গুলি৷ আজ কিন্তু মরুকরণ বাড়ছে মানুষের গতিবিধির ফলে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
শুষ্ক থেকে শুষ্কতর
মরুকরণ বলতে বোঝায় শুকনো, ক্ষয় হয়ে যাওয়া জমি৷ আফ্রিকা, অ্যামেরিকা কিংবা এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে দেখা যাবে এই নতুন ধরনের মরুকরণ৷ টেক্সাসের এই গমের ক্ষেতটি ২০১১ সালের গ্রীষ্মের খরাকে সামাল দিতে পারেনি৷
ছবি: Getty Images
মানুষেরই কাজ
প্রতিবছর প্রায় ৭০ হাজার বর্গকিলোমিটার জমি মরুতে পরিণত হয় – আয়ারল্যান্ডের যা আয়তন৷ জলবায়ু পরিবর্তনই শুধু নয়, মানুষও এর জন্য দায়ী৷ এখানে যেমন ব্রাজিলের এই চাষিটি কোদাল চালাচ্ছেন৷ ভবিষ্যতে ভালো ফসল পাবার জন্য কি করা দরকার, সেটা কি তার জানা আছে?
ছবি: picture-alliance/dpa
গোচারণ থেকে খরা
গৃহপালিত পশু বাড়ার অর্থ আরো বেশি গোচারণ, যার ফলে জমি শুকিয়ে আসছে৷ জীবজন্তুরা ঘাস, ছোট গাছপালা ইত্যাদি খেয়ে ফেলে, যার ফলে বৃষ্টি-বাদলা থেকে মাটিকে বাঁচানোর আর কোনো আস্তরণ থাকে না৷ খরা হলে, তা সহজেই মরুকরণের দিকে নিয়ে যায়৷ মাটি আরো আলগা, আরো দুর্বল হয়ে পড়ে, সহজেই ক্ষয়ে যায়৷
ছবি: DANIEL GARCIA/AFP/Getty Images
ব্যাপক চাষ, অসংখ্য খামার
খরা ছড়িয়ে পড়ার ফলে চাষিরা ইতিমধ্যেই বিপদে পড়েছেন – মেক্সিকোর এই ভু্ট্টার খেত যার প্রমাণ৷ বছরে একাধিক ফসল তোলার ফলে মাটি পুনরায় সঞ্জীবিত হবার সময় পাচ্ছে না৷ ফলে জমি তার পুষ্টি হারাচ্ছে, ফসলের পরিমাণ কমছে, বাড়ছে ভূমির ক্ষয়৷
ছবি: Ofelia Harms
ফিরে দাও সে অরণ্য
গাছের সংখ্যা কমছে৷ রান্নার কাঠ অথবা জ্বালানি হিসেবে গাছ কাটা হচ্ছে, চাষের জমি তৈরির জন্য, শিল্পাঞ্চল বা আবাসিক এলাকা গড়ার জন্য৷ অথচ গাছেরাই জলে-বাতাসে টপসয়েল বা ওপরের হালকা মাটির ক্ষয় রোধ করে৷ গাছ কেটে ফেললে জমি নিরাবরণ, নিরাভরণ হয়ে পড়ে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
জলের নাম জীবন
বিশ্বের জনসংখ্যা বাড়ছে, সেই সঙ্গে বাড়ছে পানির ব্যবহার৷ গত পঞ্চাশ বছরে বিশ্বে পানির ব্যবহার হয়েছে দ্বিগুণ৷ এর কারণ বিশেষ করে নতুন ধরনের চাষ-আবাদ, যেমন সবজির ক্ষেতে অনেক বেশি সেচ দিতে হয়৷
ছবি: AFP/Getty Images
পরিবেশের কার্যকারণ
মরুকরণ একবার শুরু হলে চেইন রিয়্যাকশনের মতো চলে৷ উদ্ভিদ প্রকৃতির অন্তর্ধানের ফলে পানি উপে গিয়ে মাটি শুকিয়ে যায়; জমিতে লবণের পরিমাণ বাড়ে, মাটি ফুটিফাটা হয়ে যায়, যেমন ভারতের কোনো কোনো প্রদেশে৷ তখন মাটির ক্ষয় রোধ করা শক্ত হয়ে ওঠে৷
ছবি: AP
সুদূরপ্রসারী ফলশ্রুতি
মরুকরণের ফলে শুধু পরিবেশেরই ক্ষতি হয় না৷ মরুকরণের ফলে বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ ও জীবজন্তু বিলুপ্ত হতে পারে, দেখা দিতে পারে দারিদ্র্য, ক্ষুধা, জলাভাব৷ বুরকিনা ফাসোর মতো দেশের মানুষজন যার শিকার হন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বন্ধ্যা পৃথিবীকে আবার সুজলা সুফলা..
মরুকরণ রোখা, এমনকি কমানোও সম্ভব, কিন্তু সেজন্য বিপুল অর্থের প্রয়োজন৷ কাজেই পুনর্বনানীকরণ একটি পন্থা হিসেবে৷ ডমিনিকান রিপাবলিকের এই বৃক্ষবিহীন ঢালগুলিতে নতুন গাছ লাগানো হচ্ছে৷ তবে সাফল্য এখনও সীমিত৷
ছবি: DW / Sascha Quaiser
‘‘আমাদের যুগের বৃহত্তম পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ’’
জাতিসংঘের মরুকরণের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চুক্তি কার্যকরি হয় ১৯৯৬ সালে৷ লক্ষ্য ছিল, শুষ্ক, নিষ্ফলা জমি হ্রাস করে মরুকরণ রুখে দেওয়া৷ জাতিসংঘের মরুকরণ রোধ দিবস ১৭ই জুন৷
ছবি: DW/Stefan Dege
11 ছবি1 | 11
স্বার্থের সংঘাত
কিন্তু সেটা সবসময় সহজ নয়৷ একটি পরিবেশ প্রণালীতে ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে অনেক আপোশের প্রয়োজন পড়ে৷ পানি ভাগাভাগি করে নিতে হয়, গরুবাছুর সর্বত্র চরতে পারবে না৷ প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা করার জন্য অনেক সময় নিজের ভোগ এবং প্রয়োজন কমাতে হয়৷ যা থেকে স্বার্থের সংঘাত দেখা দেয়৷
গ্রামবাসীদের বৈঠকে সেই সব সমস্যা আলোচিত হয়৷ এক মহিলা হয়ত অভিযোগ করেছেন যে, তাঁর গরুর পাল আর যথেচ্ছ চরতে পারছে না; কাজেই তারা কম খেতে পাচ্ছে এবং কম দুধ দিচ্ছে৷ আরেকজন বলেছেন, জনতাকে অপরের স্বার্থ বুঝতে হবে এবং সকলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে৷ অথচ নিজেদের মধ্যে নিয়মকানুন ঠিক করা সহজ কাজ নয়; এছাড়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, সব কিছু আইনানুগ হতে হবে৷
আল হাজি বালে সেই বলেন, ‘‘কখনো কখনো স্থানীয় রীতিনীতি আর হালের আইনকানুনের মধ্যে বিরোধ বাধে৷ বৈঠকে আমরা স্থানীয় রীতিনীতি এবং সরকারি আইনের মধ্যে বিরোধ মেটানোর চেষ্টা করছি৷ আপোশে এমন একটি দলিল সৃষ্টি করার চেষ্টা করছি, যার মাধ্যমে আমরা শান্তি ও সম্প্রীতি সহ প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে পারব৷''
অতীতে এই অজ্ঞাত স্থানে নাকি রাজা-রাজড়াদের গোর দেওয়া হতো৷ আজ এখানে পেজ গ্রামের অধিবাসীরা আসেন বৃষ্টির প্রার্থনা করতে, ফসলের জন্য বৃষ্টি৷ কেননা, তারা যদি তাঁদের জীবিকা হারিয়ে গ্রাম ছাড়তে বাধ্য হন, তবে তাঁরা তাঁদের সাংস্কৃতিক সত্তাও হারাবেন৷
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সক্ষম ধান
বাংলাদেশের উপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়ছে নানাভাবে৷ কৃষিও রয়েছে এর মধ্যে৷ তবে আশার কথা, এই প্রভাব মোকাবিলায় সক্ষম কিছু ধানের জাত উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা৷
ছবি: FARJANA K. GODHULY/AFP/Getty Images
বাংলাদেশেই উদ্ভব
বাংলাদেশের উপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়ছে নানাভাবে৷ কৃষিক্ষেত্রও এর মধ্যে রয়েছে৷ তবে আশার কথা, এই প্রভাব মোকাবিলায় সক্ষম কিছু ধানের জাত উদ্ভাবনের কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, ব্রি-র মহাপরিচালক ড. জীবন কৃষ্ণ বিশ্বাস৷
ছবি: N.Nanu/AFP/Getty Images
লবণাক্ততা
উপকূলীয় অঞ্চলে যেখানে জমিতে লবণের পরিমাণ বেশি সেখানে রোপা আমন মৌসুমে ব্রি ধান৪০, ব্রি ধান৪১, ব্রি ধান৫৩ ও ব্রি ধান৫৪ – এই চারটি জাত বেশ কার্যকর৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বোরো ধান
লবণাক্ত পরিবেশে জন্মানোর জন্য বোরো ধানের জাতের মধ্যে রয়েছে ব্রি ধান৪৭ এবং ব্রি ধান৬১৷
ছবি: CC/Rishwanth Jayaraj
খরা
খরা মোকাবিলায় সক্ষম দুটো উন্নত জাত হলো ব্রি ধান৫৬ এবং ব্রি ধান৫৭ – দুটোই রোপা আমন ধানের জাত৷ ‘‘আরও কিছু নতুন জাত আমাদের হাতে আছে যেগুলো খরায় আরও ভালো করবে,’’ জানিয়েছেন ব্রি মহাপরিচালক৷
ছবি: AP
হঠাৎ বন্যা
ড. বিশ্বাস বলেন, রোপা আমন মৌসুমে আরেকটি পরিস্থিতি তৈরি হয় যখন ধান লাগানোর পরে দেখা যায় যে আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে হঠাৎ করেই পানির নীচে ডুবে যায়৷ ‘‘এই অবস্থা প্রায় সপ্তাহখানেক বা তারও বেশি সময় ধরে থাকে৷ এই পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য রয়েছে ব্রি ধান৫১ ও ব্রি ধান৫২৷’’
ছবি: N.Nanu/AFP/Getty Images
অতি ঠান্ডা, অতি গরম
এই পরিস্থিতির জন্য এখনো কোনো ভালো জাত নেই৷ তবে ব্রি মহাপরিচালক বলেছেন, ‘‘গবেষণা কার্যক্রম এগিয়ে চলছে এবং আমরা আশা করি, অদূর ভবিষ্যতে এমন ধানের জাত আমরা হাতে পেয়ে যাব৷’’
ছবি: DW/P. Mani Tewari
প্রচারণা
সরকারের কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ ও দেশি-বিদেশি বিভিন্ন এনজিওর মাধ্যমে কৃষকদের ব্রি উদ্ভাবিত এসব জাত সম্পর্কে জানানো হয়৷