1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

৩০ লক্ষ শহিদের প্রতিশোধ

১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৩

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় জামায়াত নেতা কাদের মোল্লাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ৷ ব্লগওয়াচে থাকছে এ বিষয়েরই দুটি লেখা নিয়ে আলোচনা৷

Abdul Quader Molla, 64, the fourth-highest ranked leader of the Jamaat-e-Islami party, gestures at the central jail in Dhaka on February 5, 2013. A Bangladeshi court sentenced a senior Islamist opposition official to life in prison Tuesday for mass murder and crimes against humanity during the 1971 liberation war against Pakistan. AFP PHOTO/STR (Photo credit should read STRDEL/AFP/Getty Images)
ছবি: Strdel/AFP/Getty Images

সামহোয়্যার ইন ব্লগে একাত্তরে ভয়ঙ্কর নৃশংসতার জন্য ‘মিরপুরের কসাই' নামে পরিচিতি পাওয়া কাদের মোল্লাসহ সব যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি চাওয়ারই বিরোধিতা করেছেন মুজিব রহমান৷ তাঁর লেখার শিরোনাম ‘আমরা অসভ্য বলেই বিচারের পরিবর্তে ফাঁসি চাই'৷ সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘‘আমার তীব্র কষ্ট হয় যখন দেখি আমার প্রগতিশীল বন্ধুরা ফাঁসির জন্য অধীর উৎসাহে অপেক্ষা করছে৷ দেশে ফাঁসির চেয়ে বড় চাহিদা আমাদের নেই৷ বিপক্ষরা আবার যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিপক্ষে৷ একাত্তরে যারা আমাদের নির্বিচারে নির্মম ও বর্বোচরিতভাবে হত্যা করেছে তাদের অবশ্যই বিচার হওয়া উচিত৷ একাত্তরের রাজাকারদের অপরাধ ক্ষমার অযোগ্য৷ সেই সময় যে নারী ধর্ষিতা হয়েছেন, যে মানুষকে খুন করেছে তার বিচার অবশ্যই হবে, তবে সেটা ফাঁসি কেন? আমরা কি সভ্য দুনিয়ার মতো এই ফাঁসির বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারি না?''

মুজিবের মতে, ‘‘একজন মানুষের ফাঁসি চাওয়া কোনো সভ্য মানুষের পক্ষে সম্ভব'' নয়৷ বিশ্বে সভ্য কারা? বাংলাদেশে মানুষকে ‘অসভ্য' বলে সভ্য দেশ, সভ্য জাতি সম্পর্কে খানিকটা ধারণাও দিয়েছেন মুজিব৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘আজকের আমেরিকা ও ইউরোপের মতোও আমরা সভ্য নই৷ আমরা এখনও ফাঁসির জন্য চিৎকার করি, এটা কত বছর আগে করেছে আমেরিকা, ইউরোপ?''

আবদুল কাদের মোল্লাছবি: Reuters

মুজিব রহমান যুক্তরাষ্ট্রের কথা লিখে ভুল করেছেন, কেননা সেখানে এখনো মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে৷ সামান্য চুরির অপরাধে যেমন কোনো দেশের আইন হাত কেটে ফেলাকে বৈধতা দিয়ে রেখেছে, সেভাবে অপরাধের মাত্রা বুঝে যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুদণ্ডকে এখনো সমাজে সুবিচার প্রতিষ্ঠার অপরিহার্য উপায় হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে৷ ইরান, চীন, মিশর, ভারত, পাকিস্তান, ইরাক, জাপান, সৌদি আরব, সিরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বেশ কিছু দেশে এখনো ফাঁসিই সর্বোচ্চ শাস্তি৷ সামহোয়্যারইন ব্লগের আরেকটি লেখার শিরোনাম, ‘সব মানবাধিকার শুধু খুনিদের পক্ষে?' ছদ্মনামে লেখা হয়েছে বলে প্রশ্নটি অনেকের কাছে যুক্তিসঙ্গত মনে হতে পারে জেনেও লেখার বিবরণ পাঠকদের জানানো গেলনা৷

তবে আমারব্লগে জান্নাতুল ফেরদৌস স্বনামেই লিখেছেন এবং যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি চাইতে গিয়ে কলেজ থেকে সাময়িক বহিষ্কারের শাস্তিও মেনে নিয়েছেন তিনি৷ লেখায় সে খবরও জানিয়েছেন পাঠকদের৷ ‘আজ কাদের কসাইয়ের ফাঁসির রায় হয়েছে, আজ জনতার বিজয় হয়েছে, আজ শাহবাগের বিজয় হয়েছে' তাঁর লেখার শিরোনাম বেশ দীর্ঘ৷ মুক্তিযুদ্ধ, যুদ্ধাপরাধ, যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি – এসব বিষয়ে নিজের মত এবং আবেগ প্রকাশ করতে গিয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস লিখেছেন, ‘‘ফাঁসির রায় শোনার সাথে সাথে মা-কে খবর টা দিতে ছুটে গিয়েছিলাম৷ মা রান্না করছিল৷ একটু পর আমি আর আমার ভাই বের হবো স্কুল – কলেজের জন্য, এরকমই প্ল্যান৷ আমি মাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে নিজের অজান্তেই কেঁদে ফেললাম৷ আম্মু তো পুরাই অবাক, মেয়ে এইরকম হাউমাউ করে কাদতেসে কেন !!!''

জান্নাতুলের লেখায় আঞ্চলিকতার প্রভাব হয়তো তীব্র আবেগের কারণেই৷ শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চ হওয়ার পর থেকে যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবির আন্দোলনে নিজের সম্পৃক্ততার কথা জানিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘‘আমি এতদিন কলেজ থেকে, আমার নিজের বাবার কাছ থেকে কী ব্যবহারগুলো, কী শাস্তিগুলো, কী উপেক্ষাগুলো সহ্য করেছি তা আমি জানি, আমার মা জানে৷ নীরব প্রতিবাদ ছাড়া সেই মুহূর্তগুলোতে হয়ত আমাদের কিছুই করার ছিল না৷ কলেজ থেকে সাময়িক বহিষ্কারকেও মেনে নিতে হয়েছে শাহবাগকে ভালোবেসে৷ আজ সেইসব স্মৃতি বিজয় উপহার হয়ে যেন সামনে আসছিল আমার আর আম্মুর৷.......... আজ ত্রিশ লাখ শহীদ আর দুই লাখ মা – বোনের নির্যাতনের বদলা আমরা নিতে পেরেছি, আজ কবি মেহেরুন্নেসা হত্যার বদলা আমরা নিতে পেরেছি৷''

সংকলন: আশীষ চক্রবর্ত্তী

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ