1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মেগাসিটির সমস্যা

৭ জুন ২০১৩

শহরের দূষিত বাতাসে ফাইন ডাস্ট অর্থাৎ সূক্ষ্মকণা মানুষের জন্য ক্ষতিকারক৷ বিশেষ ফিল্টার ও নির্মাণের উপকরণের সাহায্যেই বিষাক্ত পদার্থ দূরীকরণের চেষ্টা করছেন জার্মান বিজ্ঞানীরা৷

ছবি: DIBYANGSHU SARKAR/AFP/Getty Images

গাড়ির পরে গাড়ি, বিকট আওয়াজ, ধোঁয়া৷ সারা দুনিয়ায় গাড়ির ধোঁয়া থেকে দূষণ বেড়ে চলেছে৷ বিশেষ করে সাইলেন্সার থেকে বেরনো নাইট্রোজেন অক্সাইড৷ দিল্লিতে প্রতি ঘনমিটার বাতাসে সূক্ষ্ম ধাতব কণার পরিমাণ ৫৩৯ মাইক্রোগ্রাম৷ রিও ডি জানেইরো'তে ৬৪, জাকার্তায় ৪৩, বার্লিনে ২৬ মাইক্রোগ্রাম৷ এই স্মগ বা ধোঁয়াশার কারণে ২০১০ সালে সারা বিশ্বে ত্রিশ লাখের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, তার মধ্যে বিশ লাখ শুধু এশিয়াতেই৷

জার্মানির প্রখ্যাত ফ্রাউনহোফার গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মিশায়েল হ্যুবেন বাতাস থেকে ফাইন ডাস্ট অর্থাৎ সূক্ষ্মকণা – ফিল্টার দিয়ে ছেঁকে নেবার চেষ্টা করছেন৷ সেজন্য তিনি রাস্তা তৈরির উপকরণের উপর টাইটানিয়াম ডাইঅক্সাইডের আস্তরণ দিয়ে দেখতে চান৷ এই রাসায়নিক পদার্থটি রোদ উঠলে সূক্ষ্মকণার ফিল্টার হয়ে ওঠে৷ কাজেই ব্যস্ত সড়কে এই ধরনের কনস্ট্রাকশন মেটিরিয়াল ব্যবহার করা যেতে পারে৷ হ্যুবেন বললেন, ‘‘এগুলো দিয়ে যেমন শব্দ দূষণ প্রতিরোধী দেয়াল তৈরি করা হয়৷ ওপরটা ঢেউ-খেলানো বলে আরো বেশি রোদ পায়৷ এগুলো বসানো হয় হাইওয়েতে, যেখানে গাড়ি থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে৷ এগুলো সেখানেই সবচেয়ে বেশি কার্যকরী হয়৷''

বেজিং-এর দূষিত বাতাসছবি: picture-alliance/dpa

কত পরিমাণ ক্ষতিকর পদার্থ এভাবে নিষ্ক্রিয় করা সম্ভব, সেটা পরীক্ষা করা হয় বিশেষ ধরনের ‘‘আবহাওয়া কামরায়''৷ সেখানে রোদ, ঠাণ্ডা, কিংবা ঝোড়ো বাতাস তৈরি করা যায়৷ হ্যুবেন বললেন, ‘‘এবার দূষণের গ্যাস বাতাসে মিশিয়ে কামরাটিতে ঢোকানো হয়৷ টাইটানিয়াম ডাইঅক্সাইড শুধুমাত্র আলোতে কাজ করে৷ তাই কামরার আলোটি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়৷''

অতিবেগুনি রশ্মির ফলে টাইটানিয়াম ডাইঅক্সাইড সক্রিয় হয়ে ওঠে৷ বিষাক্ত নাইট্রোজেন অক্সাইড'কে তার নিরাপদ উপাদানগুলিতে পরিণত করে৷ কতটা দূষণ দূর করা গেছে, পরিশোধিত বাতাস নল দিয়ে বার করে তা আবার মাপা হয়৷ হ্যুবেন বললেন, ‘‘প্রথমে আমরা বাতাসে বিষাক্ত পদার্থের একটা বিশেষ পরিমাণ রেখেছি৷ পরে অতিবেগুনি রশ্মি যোগ করার সাথে বাতাসের পরিশোধন মাপতে শুরু করেছি৷ ধীরে ধীরে বাতাসে বিষাক্ত পদার্থের পরিমাণ যে কমছে, সেটা স্পষ্ট৷''

গেয়ারহার্ড শটনার বহুদিন ধরে বিষাক্ত পদার্থ দূরীকরণের নতুন সব পন্থা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছেন৷ তাঁর মতে, টাইটানিয়াম ডাইঅক্সাইড দিয়ে রঙ করার প্রক্রিয়াটা খুবই সম্ভাবনাময়৷ তিনি বললেন, ‘‘সর্বত্র নানা ধরনের কংক্রিট বা সিমেন্টের আস্তরণ রয়েছে, সেগুলো ব্যবহার না করাটাই অপচয়৷ এগুলো কি শুধু আমাদের ঝড়-বাতাস থেকে বাঁচাবে? বায়ু পরিশোধনের কাজ করবে না? কাজেই আমরা এই প্রযুক্তির বিকাশ ঘটাচ্ছি, যাতে বাড়ির ছাদ থেকে বাইরের দেয়াল অবধি ব্যবহার করে বাতাস আরেকটু নির্মল করা যায়৷''

বিজ্ঞানীরা ছাদের টালি, কিংবা দেয়ালের টালি বা ওয়ালপেপারে টাইটানিয়াম ডাইঅক্সাইড ব্যবহার করে দেখেছেন৷ বড় বড় শহরের দেয়ালে দেয়ালে টাইটানিয়াম ডাইঅক্সাইডের রঙ দিয়ে বাতাসে বিষাক্ত পদার্থের পরিমাণ লক্ষণীয়ভাবে কমানো সম্ভব বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা৷ তবে অতি অবশ্য রোদ থাকা চাই! শটনার বললেন, ‘‘সমস্যা হল, বাতাসে বিষাক্ত পদার্থ কমাতে হলে অতিবেগুনি রশ্মির প্রয়োজন৷ কাজেই অতিবেগুনি রশ্মি ছাড়া এই প্রযুক্তি কাজ করবে না৷ অর্থাৎ রোদ অবশ্যই থাকতে হবে৷''

বিজ্ঞানীদের ধারণা, ২০৫০ সালে সারা বিশ্বে বায়ুদূষণের মাত্রা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মেগাসিটিগুলির পর্যায়ে পৌঁছবে৷ ফ্রাউনহোফার ইনস্টিটিউটের গবেষকদের তৈরি পদ্ধতি তা রোধ করতে সাহায্য করতে পারে৷

এসি / এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ