দেশ-বিদেশের ত্রাণ এসে পৌঁছালেও ফিলিপাইন্সের ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে ত্রাণ বণ্টনের কাজে জটিলতা কাটছে না৷ যথেষ্ট উদারতা দেখিয়ে সাহায্য করতে ব্যর্থ হওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়ছে চীন৷ অন্যদিকে ওয়াশিংটন যথেষ্ট তৎপরতা দেখাচ্ছে৷
বিজ্ঞাপন
টাকলোবান সহ ফিলিপাইন্সের ঝড়ে বিধ্বস্ত এলাকার মানুষ নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফেরার চেষ্টা করছে৷ তার মধ্যে একটি বেদনাদায়ক কাজ হলো মৃতদেহগুলির সৎকার করা৷ বৃহস্পতিবার টাকলোবান শহরের বাইরে পাহাড়ের কোলে একটি কবরখানায় অনেক মৃতদেহ দাফন করা হয়৷ অনেক মৃতদেহ শনাক্ত না করতে পারায় গণকবর দিতে হয়েছে৷ কর্তৃপক্ষ তাদের পরিচয় জানার চেষ্টা এখনো ছেড়ে দেয়নি৷ তবে মৃতদেহগুলির ডিএনএ নমুনা রাখা হচ্ছে কিনা, তা এখনো স্পষ্ট নয়৷
ত্রাণ তৎপরতা নিয়ে জটিলতা এখনো কাটেনি৷ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কাছে বিচ্ছিন্নভাবে খাদ্য ও পানীয় জল পৌঁছাচ্ছে বটে, কিন্তু অনেক মানুষই প্রয়োজনীয় সাহায্যের নাগাল পাচ্ছে না৷ লুটপাটের ঘটনা বাড়ছে, ফলে নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তা দেখা দিচ্ছে৷ অনেক ক্ষেত্রে সামরিক বাহিনীর পাহারায় ত্রাণ বণ্টন করতে হচ্ছে৷ যথেষ্ট পারদর্শিতা দেখাতে না পারায় প্রেসিডেন্ট বেনিগনো অ্যাকুইনোর প্রশাসন প্রবল সমালোচনার মুখে পড়ছে৷
স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফেরার চেষ্টা করছে দুর্গতরা
টাকলোবানসহ ফিলিপাইন্সের ঝড়ে বিধ্বস্ত এলাকার মানুষ নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফেরার চেষ্টা করছে৷ তার মধ্যে একটি বেদনাদায়ক কাজ হলো মৃতদেহগুলির সৎকার করা৷
ছবি: Nicolas Asfouri/AFP/Getty Images
শনাক্ত করা যাচ্ছে না মৃতদেহ
টাকলোবান শহরের বাইরে পাহাড়ের কোলে একটি কবরখানায় অনেক মৃতদেহ দাফন করা হয়৷ অনেক মৃতদেহ শনাক্ত না করতে পারায় গণকবর দিতে হয়েছে৷ কর্তৃপক্ষ তাদের পরিচয় জানার চেষ্টা এখনো ছেড়ে দেয়নি৷ তবে মৃতদেহগুলির ডিএনএ নমুনা রাখা হচ্ছে কিনা, তা এখনো স্পষ্ট নয়৷
ছবি: Reuters
প্রয়োজনীয় সাহায্যে পাচ্ছে না মানুষ
ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কাছে বিচ্ছিন্নভাবে খাদ্য ও পানীয় জল পৌঁছাচ্ছে বটে, কিন্তু অনেক মানুষই প্রয়োজনীয় সাহায্যের নাগাল পাচ্ছে না৷ লুটপাটের ঘটনা বাড়ছে, ফলে নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তা দেখা দিচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
১ কোটি ১৫ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত
জাতিসংঘের মানবিক সাহায্য সংস্থার প্রধান ভ্যালেরি আমোস টাকলোবান বুধবার পরিদর্শন করেছেন৷ তিনি বলেন, টাইফুন হাইয়ানের ফলে প্রায় ১ কোটি ১৫ লক্ষ মানুষ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷
ছবি: Kevin Frayer/Getty Images
২ হাজার মানুষ নিখোঁজ
সামার প্রদেশে এখনো অন্তত ২ হাজার মানুষ নিখোঁজ বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা৷ সেখানে মৃতের সংখ্যা প্রায় তিনশো বলে জানিয়েছেন স্থানীয় এক সরকারি কর্মকর্তা৷
ছবি: Reuters
ত্রাণের বন্টন নিয়ে সমস্যা
রাজধানী ম্যানিলা ও সেবু-র বিমানবন্দরে দেশ-বিদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ ত্রাণসামগ্রী এসে জমা হচ্ছে৷ কিন্তু তার বণ্টন নিয়ে সমস্যা রয়ে গেছে৷ টাকলোবান শহরের অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বিমানবন্দরে চিকিৎসা তৎপরতা চলছে৷
ছবি: Reuters
খাদ্যের জন্য ঘুরে ফিরছেন শত শত মানুষ
স্বজনদের খোঁজে এবং খাদ্যের জন্য ঘুরে ফিরছেন শত শত মানুষ৷ লেটের একজন মেডিকেল শিক্ষার্থী জানালেন, মানুষ খাদ্যের জন্য পাগলের মতো হেঁটে বেড়াচ্ছেন৷
ছবি: Reuters
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি
ফিলিপাইন্সের জাতীয় পুলিশ-বাহিনীর মুখপাত্র সোমবার এবিএস-সিবিএন টেলিভিশনকে জানিয়েছেন, স্থানীয় পুলিশবাহিনী লুটপাটকারীদের হামলার শিকার হচ্ছেন, এমনকি তাঁদের পরিবারও বাদ যাচ্ছে না৷ সেনা মুখপাত্র কর্নেল রেমন জাগালা বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, সামারে চার হাজার সেনা আছে৷ কিন্তু তাঁদের অনেকেই ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
চীনের প্রভাব দেখানোর চেষ্টা
চীন সামগ্রিকভাবে গোটা অঞ্চলে প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টা করলেও ফিলিপাইন্সের ত্রাণের প্রশ্নে যথেষ্ট উদার মনোভাব দেখাচ্ছে না৷ ফলে বেইজিংয়ের প্রশাসন দেশে-বিদেশে সমালোচনার মুখে পড়ছে৷
ছবি: Nicolas Asfouri/AFP/Getty Images
8 ছবি1 | 8
জাতিসংঘের মানবিক সাহায্য সংস্থার প্রধান ভ্যালেরি আমোস টাকলোবান বুধবার পরিদর্শন করেছেন৷ তিনি বলেন, টাইফুন হাইয়ানের ফলে প্রায় ১ কোটি ১৫ লক্ষ মানুষ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ যারা মাথার উপর ছাদ হারিয়েছে, তাদের সহায়তা করাই আপাতত সবচেয়ে জরুরি বলে মন্তব্য করেন আমোস৷ ঝড়ের ৬ দিন পরেও সব ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছানো সম্ভব না হওয়ায় তিনি দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেন৷ রাজধানী ম্যানিলা ও সেবু-র বিমানবন্দরে দেশ-বিদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ ত্রাণসামগ্রী এসে জমা হচ্ছে৷ কিন্তু তার বণ্টন নিয়ে সমস্যা রয়ে গেছে৷ টাকলোবান শহরের অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বিমানবন্দরে চিকিৎসা তৎপরতা চলছে৷
ফিলিপাইন্সে ত্রাণ তৎপরতার বিষয়টিকে কেন্দ্র করে এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বিভিন্ন দেশের প্রভাব-প্রতিপত্তির বিষয়টিও বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে৷ চীন সামগ্রিকভাবে গোটা অঞ্চলে প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টা করলেও ফিলিপাইন্সের ত্রাণের প্রশ্নে যথেষ্ট উদার মনোভাব দেখাচ্ছে না৷ ফলে বেইজিংয়ের প্রশাসন দেশে-বিদেশে সমালোচনার মুখে পড়ছে৷ বৃহস্পতিবার চীন অবশ্য চাপের মুখে তৎপরতা বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছে৷
এই শূন্যস্থান পূরণ করতে বাড়তি উদ্যম নিয়ে এগিয়ে আসছে অ্যামেরিকা৷ দাবি করা হচ্ছে, যে সে দেশের ইতিহাসে এত বড় ত্রাণ তৎপরতা দেখা যায়নি৷ মার্কিন সামরিক বাহিনী রণতরী সহ বড় রকমের সাজ-সরঞ্জাম নিয়ে সাহায্যের কাজ চালাচ্ছে৷