ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে ফ্রান্স-সহ কয়েকটি দেশের প্রস্তুতি
২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ ইঙ্গিত দিয়েছেন যে সোমবার তিনি সৌদি আরবের মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের দ্বিরাষ্ট্র সংক্রান্ত সমাধানের বিষয়ে একটি বৈঠকে যোগ দেবেন৷
ব্রিটেন, ক্যানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও পর্তুগালের পর ফিলিস্তিনকে আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে চলেছে ফ্রান্স৷ ছবি: Romuald Meigneux/SIPA/picture alliance
বিজ্ঞাপন
ব্রিটেন, ক্যানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও পর্তুগালের পর ফিলিস্তিনকে আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে চলেছে ফ্রান্স৷ জাতিসংঘের অধিবেশনে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা আগে থেকেই জানিয়েছে ফ্রান্স ও বেলজিয়াম৷
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ ইঙ্গিত দিয়েছেন যে সোমবার তিনি সৌদি আরবের মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের দ্বিরাষ্ট্র সংক্রান্ত সমাধানের বিষয়ে একটি বৈঠকে যোগ দেবেন৷ মাক্রোঁর কথায়, ‘‘তারা একটি রাষ্ট্র চায়, আমাদের তাদের হামাসের দিকে ঠেলে দেওয়া অনুচিত৷’’ তার দাবি, দ্বিরাষ্ট্র বিষয়ক সিদ্ধান্ত সফল হলে ক্ষমতা কমবে হামাসের৷ তিনি আরও বলেন, হামাস কর্তৃক ইসরায়েলি পণবন্দিদের মুক্তি ফিলিস্তিনে ফ্রান্সের দূতাবাস খোলার পূর্বশর্ত হিসেবে রাখা হবে৷
এই বিষয়ে সোমবারই জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োহান ভাডেফুল বলেন, ‘‘আলোচনার মাধ্যমে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান হলে তাইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের শান্তি ও নিরাপত্তার সঙ্গে বসবাসের সুযোগ তৈরি করবে৷’’ তার কথায়, ‘‘জার্মানির ক্ষেত্রে ফিলিস্তিনকে আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি দ্বিরাষ্ট্র সমাধান প্রক্রিয়ার শেষে আসবে৷ তবে এই প্রক্রিয়াটি এখনই শুরু হতে হবে৷’’
এদিকে জার্মানির বামপন্থি দলের দাবি, জার্মানির দ্রুত ফিলিস্তিনকে আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত৷ চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎসকে সেই বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছে তারা৷ যদিও বার্লিন মনে করে, ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতির দেওয়ার সঠিক সময় এখনও আসেনি৷
এসটি/জেডএইচ (এএফপি, ডিপিএ)
যুদ্ধকে লজ্জা দিতে যেখানে বেজে ওঠে সংগীতের সুর
বিধ্বস্ত গাজার বাতাসে ভেসে বেড়ায় মানুষের কান্না, যন্ত্রণার খতিয়ান৷ তার মধ্যেও বেঁচে থাকার রসদ খোঁজেন তরুণ সংগীতশিল্পীরা৷ শান্তি খোঁজেন সুর ও গানের মধ্যে দিয়ে৷ খোঁজেন আশার আলোও৷ বিস্তারিত ছবিঘরে...
ছবি: Dawoud Abu Alkas/REUTERS
ভয়ের বিরুদ্ধে আশার লড়াই
গাজা সিটি দখল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েল৷ যুদ্ধে ভেঙেছে গাজা কলেজের ঘর৷ গুলিবিদ্ধ দেওয়াল, ভাঙা জানলা৷ মোহাম্মদ আবু মেহেদির কাছে এ আর নতুন কিছু নয়৷ তাই এমন পরিস্থিতিতেও তিন ছাত্রী ও এক ছাত্রকে তিনি শেখাতে পারেন গিটার৷ মেহেদি মনে করেন, এই দুর্বিষহ সময়ে সংগীত মানুষকে একটু হলেও মানসিক শান্তি দিতে পারে৷
ছবি: Dawoud Abu Alkas/REUTERS
হার না মানা এক শিক্ষক
২০২৪ সালের শুরুতে যুদ্ধবিধ্বস্ত দক্ষিণ গাজায় সংগীতের ক্লাস নিতে শুরু করেন আহমদ আবু আমশা৷ এডওয়ার্ড সাইদ ন্যাশনাল কনজার্ভেটরি অব মিউসিক-এর অন্যতম শিক্ষক তিনি৷ দক্ষিণ গাজার যুদ্ধের আতঙ্কগ্রস্ত ভীত কিশোর-কিশোরীদের গান ও বাজনা শেখাতে শুরু করেন আহমদ৷
ছবি: Dawoud Abu Alkas/REUTERS
‘সংগীত আমাকে আশা জোগায়’
‘‘গান-বাজনা আমাকে আশা জোগায় ও সব উৎকণ্ঠা দূর করে৷’’ জানিয়েছে ১৫ বছরের রিফান আল কাসাস৷ ন‘বছর বয়স থেকে সে আরবি বাদ্যযন্ত্র ‘উদ’ বাজাতে শিখেছে৷ তার আশা, একদিন সে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাজাবে৷
ছবি: Dawoud Abu Alkas/REUTERS
পরিস্থিতি ভয়াবহ
সংগীত শিক্ষকের তাঁবু থেকে বেরোলেই চোখের সামনে বিধ্বস্ত গাজা শহরের চিত্র৷ আপৎকালীন আশ্রয়শিবিরে শত শত মানুষ৷ একটু খাবার, ওষুধ, একফোঁটা জলের জন্য হাহাকার৷ শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উভয়েই ক্লান্ত, ক্ষুধার্ত৷ কেউ কেউ ক্লাসে আসতেও পারেন না৷ দৃশ্যটি ১২ আগস্টের৷
ছবি: Dawoud Abu Alkas/REUTERS
মৃত্যু ও যন্ত্রণাকে হারাতে
ধ্বংস হয়ে যাওয়া স্কুলবাড়ির সামনে নিজের বাদ্যযন্ত্র উদ নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন ১৮ বছরের ইউসেফ সাদ৷ স্কুলের বাকি সব বাদ্যযন্ত্রই ধ্বংস হয়ে গেছে৷ ১৮ বছরের এই তরুণের স্বপ্ন, ‘‘একদিন আমি নিশ্চয়ই শিশুদের সংগীতের পাঠ দিতে পারবো, যাতে তারা ধ্বংসলীলা সত্ত্বেও সৌন্দর্যকে বেছে নেয়৷’’
ছবি: Dawoud Abu Alkas/REUTERS
মঞ্চ, শ্রোতা ও দর্শক
পরিস্থিতি ভয়াবহ, কিন্তু সংগীত তো সবসময়েই শ্রোতাকে খুঁজে নেয়৷ যুদ্ধবিধ্বস্ত শহরে একটি তাঁবুর মধ্যেই অনুষ্ঠানের আয়োজন৷ সে অনুষ্ঠানের শেষে প্রশংসা ও হাততালিতে ফেটে পড়ে সেই তাঁবু৷ ২০ বছরের এক তরুণ শিক্ষার্থী জানান, ‘‘সংগীতের নতুন ধরন নিয়ে জানতে আমার ভালো লাগে৷ তার চেয়েও ভালো লাগে রক (সংগীতের এক বিশেষ ঘরানা)৷’’ দৃশ্যটি ৪ আগস্টের৷
ছবি: Dawoud Abu Alkas/REUTERS
এক মুহূর্তের আনন্দ
কোনোরকমে খাড়া করা মঞ্চে শিশুদের কচি গলার গান যেন হারিয়ে দেয় প্রতিদিনের বিস্ফোরণের শব্দকে৷ দৃশ্যটি ৪ আগস্টের৷
ছবি: Dawoud Abu Alkas/REUTERS
যন্ত্রণা বনাম সংগীত
ওসামা জাহৌজ ‘নেই’ নামক একটি বাঁশি বাজান৷ মূলত আরবি, ফারসি ও তুর্কী সংগীতে এই বাঁশি বাজানো হয়৷ তার কথায়, ‘‘ বোমা বিস্ফোরণ তীব্র হলে আমি শ্বাসের ব্যায়াম করি, বা খুব নিচু লয়ে বাঁশি বাজাই৷ বাজানোর সময় মনে হয় আমি আবার স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিতে পারছি৷ নেই যেন আমার যন্ত্রণাকে ধীরে ধীরে মুছে দিচ্ছে৷’’