বিশ্বব্যাপী নিন্দার মধ্যেও জেরুজালেমের উপকণ্ঠে ফিলিস্তিনিদের একটি গ্রামে কিছু বাড়ি গুড়িয়ে দিচ্ছে ইসরায়েল৷ নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে এই উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছে ইহুদি রাষ্ট্রটি৷
বিজ্ঞাপন
নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে সোমবার ভোরে সুর বাহের এলাকার বুলডোজার দিয়ে বাড়িগুলো ভাঙা শুরু করে ইসরায়েল৷ এ সময় সেখানে সেনাসদস্যের উপস্থিতিও দেখা গেছে৷
ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীরে অবস্থিত সুর বাহের গ্রাম৷ ফিলিস্তিন ও জেরুজালেমের সীমান্ত রেখার খুব কাছাকাছটি ভবনগুলো নির্মাণ করা হয়েছে বলে দাবি করে আসছে ইসরায়েল৷
গত কয়েক বছর ধরে আইনি লড়াই চলার পর জুনে বাড়িগুলো ভাঙার পক্ষে রায় দেয় ইসরায়েলের সুপ্রিম কোর্ট৷ আদালত বলেছে, ভবন নির্মাণের নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করে গড়ে তোলা হয়েছে এসব ভবন৷
ফিলিস্তিনিরা বলছে, নিরাপত্তার অজুহাতে তাদেরকে শহর থেকে দূরে সরানো, ওই এলাকা দখল এবং নতুন ইসরায়েলি বসতির দিকে রাস্তা তৈরির জন্য এই অভিযান চালানো হচ্ছে৷
ভোরের আলো ফোটার আগেই বেশ কিছু ভবন গুড়িয়ে দেওয়া হয়৷ এর বাইরে আরো কিছু ভবনে তল্লাশির কাজ শেষ করে সেনা সদস্যরা৷
‘‘রাত দু'টা থেকে তারা লোকজনকে জোরপূর্বক বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া শুরু করে এবং যেসব বাড়ি ধ্বংস করতে চায়, সেগুলোতে বিস্ফোরক বসায়,'' বলেছেন স্থানীয় নেতা হামাদা হামাদা৷
১৯৬৭ সালের ‘ছয়দিনের যুদ্ধে' পশ্চিম তীর ও পূর্ব ফিলিস্তিনিদের একটি অংশের জায়গা দখল করে নেয় ইসরারেয়ল৷ ২০০০ সালের দিকে জেরুজালেমের ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি বসতির মধ্যে প্রাচীর তুলে দেয় ইসরায়েল৷
এদিকে, ভবন ভাঙার নিন্দা জানিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলেছে, এটা ‘‘দু'রাষ্ট্র সমাধানের পথ এবং দীর্ঘ মেয়াদি শান্তির আশাবাদকে দুর্বল করছে৷''
এমবি/ (এএফপি, রয়টার্স)
ইসরায়েল-ফিলিস্তিনে যুদ্ধের নীরব সাক্ষী
কয়েক দশক ধরে চলছে ইসরায়েলের সঙ্গে ফিলিস্তিন কিংবা আরব দেশগুলোর যুদ্ধ আর সংঘাত৷ কিন্তু এই সংঘাতের শেষ যেন কোথাও নেই৷ যুদ্ধ আর সংঘাতের ক্ষত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ওই এলাকার অনেক স্থাপনা৷
ছবি: Reuters/R. Zvulun
পরিত্যক্ত বাড়ি
মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতের ক্ষতচিহ্ন হয়ে দাঁড়িয়ে আছে পরিত্যক্ত এই বাড়ি৷ ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর আরব-ফিলিস্তিনিদের ওই এলাকা ছাড়া করা হয়৷ জেরুজালেমের পশ্চিমপ্রান্তের প্রবেশমুখ থেকেই নজরে পড়বে বাড়িটি৷
ছবি: Reuters/R. Zvulun
বিমানবন্দরের ধ্বংসাবশেষ
মিলিয়ন ডলারের বিমানবন্দর এভাবে ধ্বংসস্তুপ হয়ে আছে৷ রাফা এলাকায় গাজা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দৃশ্য এটি৷ ১৯৯৮ সালে বিমানবন্দরটি উদ্বোধনের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনও উপস্থিত ছিলেন৷ ২০০২ সালে ফিলিস্তিনিদের দ্বিতীয় ‘ইন্তিফাদা’ বা অভ্যুত্থানের পর ইসরায়েল বিমান হামলা চালিয়ে বিমানবন্দরটি ধ্বংস করে দেয়৷ বুলডোজারে গুড়িয়ে দেওয়া হয় রানওয়ে৷
ছবি: Reuters/I. Abu Mustafa
পাখাহীন হেলিকপ্টার
দ্বিতীয় ইন্তিফিদার সময় ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট ইয়াসির আরাফাতের হেলিকপ্টারটি ধ্বংস করে দিয়েছিল৷ বর্তমানে পাখাহীন এই কপ্টারটি ফিলিস্তিনিদের শাসিত গাজা এলাকায় প্রদর্শন করা হচ্ছে৷
ছবি: Reuters/I. Abu Mustafa
জিকিম সমুদ্রসৈকত
ইসরায়েলের অন্যতম পযর্টন আকর্ষণের জায়গা জিকিম সমুদ্রসৈকত৷ যুদ্ধের ভয়াবহতা নিয়ে সেখানে দাঁড়িয়ে আছে এই ইসরায়েলি সেনাচৌকি৷ গাজা উপত্যকার অদূরের এ চৌকি এখন পরিত্যক্ত৷
ছবি: Reuters/R. Zvulun
মাইন থেকে সাবধান!
গোলান মালভূমির এই এলাকায় ভূমিমাইন থেকে সাবধান থাকতে বলা হচ্ছে৷ ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে সিরিয়ার গোলান মালভূমি দখল করে নেয় ইসরায়েল৷ এটিকে এখনো ফিরে পাওয়ার দাবি করে আসছে সিরিয়া৷
ছবি: Reuters/R. Zvulun
উল্টানো ট্যাংক
গোলান মালভূমির ‘বানিয়াস নেচার রিজার্ভ’ এলাকায় পড়ে আছে এই সিরীয় ট্যাংকটি৷ ১৯৭৪ সাল থেকে এটিকে ‘বাফার জোন’ হিসাবে রেখেছে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী৷ ইসরায়েল ও সিরিয়ার মধ্যে শান্তি আলোচনায় বড় বাধা ১৯৬৭ সালে ‘ছয় দিনের যুদ্ধে’ দখল হওয়া এই মালভূমি৷
ছবি: Reuters/R. Zvulun
এখন আর আজান হয় না
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের বাফার জোন থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরের এলাকা এটি৷ ১৯৬৭ সালে যুদ্ধের পর পরিত্যক্ত হওয়া মসজিদ এটি৷ এখানে এখন কোনো আজান কিংবা নামাজ হয় না৷ কেবল চলতিপথে মসজিদের দেয়ালে গ্রাফিতি এঁকে দিয়ে যায় পর্যটকরা৷
ছবি: Reuters/R. Zvulun
বাংকার
৫২ বছর আগে যুদ্ধের সাক্ষী হয়ে আছে এই বাংকার৷ যুদ্ধের ক্ষতচিহ্ন যেন মুছে দিতে চাইছে এসব লতাপাতা৷ সিরিয়ায় বর্তমান গৃহযুদ্ধের মধ্যেও ইসরায়েল-সিরিয়ার রকেট হামলার গতিপথও এটি৷
ছবি: Reuters/R. Zvulun
ব্রিটিশ শাসনের সাক্ষী
মধ্যপ্রাচ্যে বর্তমান সংঘাতের শেকড় বহু পুরোনো৷ ১৯৪৮ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীন হলেও তার সাক্ষ্য এখনো বহন করছে পুরাতন এই চৌকি৷ অবশ্য চৌকির দেয়ালে ম্যুরাল করা হয়েছে কয়েক বছর আগে৷
ছবি: Reuters/R. Zvulun
পরিখা
পূর্ব জেরুজালেমের বিখ্যাত ‘অ্যাম্যুনিশন হিল’-এ সাক্ষী হয়ে আছে বহু যুদ্ধের৷ ব্রিটিশ পুলিশের অস্ত্রশস্ত্র রাখার জন্য ব্যবহার হতো এই পাহাড়৷ ১৯৪৮ সালে জর্ডান এলাকাটি জয় করে৷ কিন্তু ১৯৬৭ সালেরর যুদ্ধের পর ইসরায়েল এটিকে দখলে নেয়৷ ওই পাহাড়টির উপরে এখন একটি জাদুঘর রয়েছে৷ সংরক্ষণ করা হয়েছে অনেকগুলো পরিখা৷