প্রথমে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে ইসরায়েলের বর্ডার পুলিশের লড়াই, তারপর গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলা।
বিজ্ঞাপন
গত ২১ মে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে সংঘর্ষ-বিরতি নিয়ে সমঝোতা হয়েছিল। কিন্তু তারপর থেকে ছোটখাট হাঙ্গামা হয়েছে। কিন্তু শনিবার সব চেয়ে বেশি সহিংসতা হলো। এর ফলে ১৩ বছর বয়সি এক বালক গুরুতরভাবে আহত। ইসরায়েলের বর্ডার ফোর্সের কয়েকজনের আঘাতও গুরুতর।
গাজার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাচ্চার মাথায় গুলি লেগেছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। বাকি আহতদের পা, পিঠ, পেটের নীচে গুলি লেগেছে। মোট ৪১ জন সাধারণ মানুষ আহত হয়েছেন।
এই সংঘর্ষের পরই গাজায় হামাসের উপর আক্রমণ চালায় ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর ফাইটার জেট। এই হামলার ফলে অনেকে আহত হয়েছেন।
ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাতে প্রাণহানির তথ্য
জাতিসংঘের সংস্থা ‘অফিস ফর দ্য কোঅর্ডিনেশন অব হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্স’ ওসিএইচএ ২০০৮ সাল থেকে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাতে হতাহতের সংখ্যার হিসাব রাখছে৷ ছবিঘরটি সেই তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি৷
ছবি: Imago
ফিলিস্তিনির প্রাণহানি
জাতিসংঘের সংস্থা ‘অফিস ফর দ্য কোঅর্ডিনেশন অফ হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্স’ ওসিএইচএ ২০০৮ সাল থেকে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাতে হতাহতের সংখ্যার হিসাব রাখছে৷ তাদের হিসেবে ১ জানুয়ারি ২০০৮ থেকে ২৬ জুলাই ২০২১ পর্যন্ত পাঁচ হাজার ৯৫৩ জন ফিলিস্তিনি (এর মধ্যে সাধারণ নাগরিক তিন হাজার ৩৮৮ জন) প্রাণ হারিয়েছেন৷
ছবি: Reuters
ইসরায়েলি প্রাণহানি
২০০৮ সালের ২৪ জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ১৮ মে পর্যন্ত মারা যাওয়া ইসরায়েলির সংখ্যা ২৬২ জন (এর মধ্যে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনাকারী ৯৯ জন ও সাধারণ নাগরিকের সংখ্যা ৪১)৷
ছবি: Reuters
আহত
উল্লেখিত সময়ে এক লাখ ২৮ হাজার ২৭৭ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন৷ ইসরায়েলি আহত হয়েছেন পাঁচ হাজার ৭০৯ জন৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
লিঙ্গ ও বয়সভেদে হিসাব (ফিলিস্তিন)
মারা যাওয়া পাঁচ হাজার ৯৫৩ জন ফিলিস্তিনির মধ্যে তিন হাজার ৯৮৪ জন পুরুষ, ৬১১ জন নারী, এক হাজার ৭৪ জন বালক ও ২৬৭ জন বালিকা৷ ছবিতে দুই বছরের ফিলিস্তিনি শিশু মালেক শাতের মরদেহ হাতে তার স্বজনদের দেখা যাচ্ছে৷ ২০১১ সালে ইসরায়েলের হামলায় মালেকের মৃত্যু হয়৷
ছবি: Imago
লিঙ্গ ও বয়সভেদে হিসাব (ইসরায়েল)
প্রাণ হারানো ২৬২ জনের মধ্যে ২০৮ জন পুরুষ, ৩১ জন নারী, ১৫ জন বালক ও ছয়জন বালিকা রয়েছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/G. Tibbon
সবচেয়ে বেশি হতাহত যে বছর
২০১৪ সালে দুই হাজার ৩২৯ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারান৷ ঐ বছর ইসরায়েলি মারা গেছেন ৮৮ জন৷ হামাসের দুই সদস্য কর্তৃক ইসরায়েলের তিন টিনএজার অপহরণ ও হত্যার পর ঐ বছরের ৮ জুলাই হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজায় হামলা শুরু করেছিল ইসরায়েল৷ শেষ হয়েছিল ২৬ আগস্ট৷ ছবিতে ২০২০ সালে ইসরায়েলি পুলিশের গুলিতে নিহত আয়াদ হালাকের ছবি হাতে তার মাকে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/M. Illean
বছরভেদে প্রাণহানি (ফিলিস্তিন)
২০০৮ সালে ৮৯৯, ২০০৯ সালে ১০৬৬, ২০১০ সালে ৯৫, ২০১১ সালে ১২৪, ২০১২ সালে ২৬০, ২০১৩ সালে ৩৯, ২০১৫ সালে ১৭৪, ২০১৬ সালে ১০৯, ২০১৭ সালে ৭৭, ২০১৮ সালে ৩০০, ২০১৯ সালে ১৩৭, ২০২০ সালে ৩২ ও ২০২১ সালের ২৬ জুলাই পর্যন্ত ৩১২৷
ছবি: Reuters
বছরভেদে প্রাণহানি (ইসরায়েল)
২০০৮ সালে ৩৪, ২০০৯ সালে ১১, ২০১০ সালে ৮, ২০১১ সালে ১৬, ২০১২ সালে ৭, ২০১৩ সালে ৬, ২০১৫ সালে ২৬, ২০১৬ সালে ১২, ২০১৭ সালে ১৭, ২০১৮ সালে ১৩, ২০১৯ সালে ১০, ২০২০ সালে ৩ ও ২০২১ সালের ১৮ মে পর্যন্ত ১১৷
ছবি: imago/UPI Photo
8 ছবি1 | 8
কী করে এই সংঘর্ষ হলো?
গাজার সীমানায় প্রচুর ফিলিস্তিনি জড়ো হন। তারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন। হামাস ও অন্য কিছু গোষ্ঠী এই প্রতিবাদ সংগঠিত করেছিল।
হামাস জানিয়েছে, ৫২ বছর আগে জেরুসালেমের আল-আকসা মসজিদ জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছিল। তারই প্রতিবাদ করছিলেন তারা। হাজার হাজার মানুষ এই প্রতিবাদে অংশ নিয়েছিলেন।
প্রতিবাদ চলার সময় তরুণ ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলি সেনাকে লক্ষ্য করে পাথর ও ফায়ারবম্ব ছোড়ে। তারা টায়ারও জ্বালিয়ে দেয়। তারা সীমান্তের দেওয়াল টপকাবার চেষ্টা করে।
ইসরায়েলি সেনা প্রথমে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। তারপর তারা গুলি চালায়। প্রতিবাদকারীরাও গুলি চালায়। তাতে একজন ইসরায়েলি সেনা আহত হয়েছে। সেনার তরফ থেকে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ইসরায়েলি বর্ডার পুলিশের এক জওয়ান গুরুতরভাবে আহত।
ইয়রায়েলের বিমান হামলা
সেনার তরফ থেকে জানানো হয়েছে. সহিংসতার প্রতিক্রিয়ায় তারা বিমান হামলা করেছে। ইসরায়েলের যুদ্ধবিমান হামাসের চারটি অস্ত্রের গুদাম ও অস্ত্র তৈরির কারখানায় হামলা চালিয়েছে। এরপর কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা জানা যায়নি। ইসরায়েল জানিয়েছে, সীমান্তে তারা আরো সেনা মোতায়েন করেছে।
হামাসের মুখপাত্র জানিয়েছেন, শনিবারের বিমান হামলা দেখিয়ে দিয়েছে, ইসরায়েল তাদের ব্যর্থতা ঢাকতে এইভাবে আক্রমণ করছে। এর বিরুদ্ধে হামাস প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।