1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফুকুশিমা বিপর্যয়ের পর আশার আলো দেখিয়েছে স্করপিয়ন

২৭ জুলাই ২০২১

ফুকুশিমা পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিপর্যয়ের পর পরিস্থিতি সামলাতে মানুষের অসহায় অবস্থা স্পষ্ট হয়ে গেছে৷ একের পর এক রোবট পাঠিয়েও সার্বিক অবস্থা এখনো জানা যায়নি৷ তবে বিজ্ঞানীরা হাল ছাড়তে নারাজ৷

রোবট স্করপিয়ন
রোবট স্করপিয়নছবি: Shizuo Kambayashi/AP Photo/picture alliance

জাপানের সরকার ছোট ‘স্করপিয়ন’ রোবট তৈরির কাজে অনেক অর্থ বিনিয়োগ করেছে৷ রোবটের প্রলম্বিত হাতের উপর ক্যামেরা বসানো হয়েছে৷ কাঁকড়াবিছের দাঁড়ার মতো সেই হাত বিভিন্ন দিক থেকে ছবি তুলতে পারে৷ হাত মোড়া থাকলে এই রোবট প্রেশার চেম্বারে অনায়াসে প্রবেশ করতে পারে৷

পুরু সিমেন্টের দেওয়ালে ১৪ সেন্টিমিটার ফাটল ঘটিয়ে রোবটের প্রবেশের বন্দোবস্ত করা হয়েছে৷ এ ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই৷

তবে দুই নম্বর চুল্লিতে অভিযান শুরু করার আগেই প্রথম সমস্যা দেখা দিলো৷ স্করপিয়নের যাত্রাপথ স্পষ্ট করার প্রস্তুতি হিসেবে ছবি তোলার জন্য অন্য একটি রোবট সেখানে পাঠানো হয়েছিল৷ কিন্তু তেজস্ক্রিয়তার উচ্চ মাত্রার কারণে এক সপ্তাহ আগেই রোবটের ক্যামেরা বিকল হয়ে গেছে৷

পরমাণু দুর্ঘটনায় উদ্ধারকাজে সহায়ক রোবট স্করপিয়ন

04:11

This browser does not support the video element.

তা সত্ত্বেও স্করপিয়নের কর্মসূচিতে রদবদল করা হয়নি৷ সাকুরা ও রোজমেরির মতো স্করপিয়নের ক্ষেত্রে ওয়্যারলেস যোগাযোগের কোনো সুযোগ ছিল না৷ কারণ, এই রোবটকে অত্যন্ত গভীরে প্রবেশ করতে হয়েছে৷ ফলে দীর্ঘ কেবল টেনে চুল্লির প্রেশার চেম্বারের নীচে তেজস্ক্রিয় উপাদানের সন্ধান চালাতে হয়েছে৷ এমন উপাদানের অস্তিত্ব নিশ্চিত হলে ভবিষ্যতে সেটি উদ্ধারের চেষ্টা চালানো হবে৷

অনেকটা সময় ধরে মিশন ভালোই চলেছে৷ স্করপিয়ন দিব্যি এগিয়ে গিয়ে বেশ ভালো ছবি তুলে পাঠিয়েছে৷ কিন্তু তারপরই অঘটন ঘটলো৷

চূড়ান্ত গন্তব্যে পৌঁছানোর প্রায় তিন মিটার আগে স্করপিয়ন হাল ছেড়ে দিলো৷ ঠিক কী ঘটেছিলো, আজও তা জানা যায় নি৷ রোবট কি কোথাও আটকে পড়েছিল? নাকি তেজস্ক্রিয় বিকিরণ সেটিকে অকোজো করে দিয়েছিল?

অবশেষে কোনো উপায় না দেখে রোবটের কেবেল কেটে ফেলে মিশনটির ব্যর্থতা মেনে নিতে হয়েছিল৷

স্করপিয়ন বিফল হওয়ার পর অন্য সমাধানসূত্রের খোঁজ শুরু হলো৷ দুই নম্বর চুল্লির মিশন বন্ধ করে তিন নম্বর চুল্লির প্রতি মনোযোগ দেওয়া হলো৷ কিন্তু সেখানেও বিশাল চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করে ছিল৷ ২০১১ সালে বিস্ফোরণের পর ‘কোর' অংশ ঠান্ডা করতে এবং আরও বড় বিপর্যয় এড়াতে চুল্লিগুলির প্রেশার চেম্বারে পানি ভরে দেওয়া হয়েছিল৷ মাত্র ১৪ সেন্টিমিটার খাঁজ দিয়ে প্রেশার চেম্বারে প্রবেশ করতে গিয়ে রোবটের মোটা কেবেল নিয়ে সমস্যা দেখা দিলো৷ অথচ  ছবি তোলা, বিপদের সময়ে টেনে বার করা এবং সাঁতারের জন্য এমন কেবেল ছিল জরুরি৷

কাজটা সহজ না হলেও জাপানের ইঞ্জিনিয়াররা একটি সমাধানসূত্র বার করলেন৷ মুশকিল আসান হিসেবে ‘লিটল সানফিশ' আসরে নামলো৷ স্করপিয়নের ব্যর্থ অভিযানের পর ভুলত্রুটি এড়ানোই ছিল মূল লক্ষ্য৷ কয়েক মাস ধরে পরীক্ষামূলকভাবে ‘লিটল সানফিশ' কাজে লাগানো হয়েছিল৷ ল্যাবের পুলে ক্যামেরা ও মিনি প্রপেলার নিয়ে সেই রোবট সাঁতার কেটেছে৷ অন্ধকারের মধ্যে নিজের শরীর ও কেবেল সামলে সেটি অনায়াসে চলাফেরা করেছে৷

পরমাণু চুল্লি পরীক্ষায় রোবট

03:51

This browser does not support the video element.

টানটান উত্তেজনার মধ্যে ‘লিটল সানফিশ'-এর অভিযান চালানো হয়েছিল৷ একজন পাইলট কনট্রোলারের সাহায্যে রোবটটিকে পানির মধ্য দিয়ে চালনা করেছেন৷ দেখলে কম্পিউটার গেমসের কথা মনে পড়তে পারে৷ প্রথম দিনে কোনো প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়া যায়নি৷

তারপর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ হলো৷ দ্বিতীয় দিনে রোবট প্রেশার চেম্বারের মেঝের উপর মোমের মতো এক উপাদান খুঁজে পেলো৷ দেখা গেল, তেজস্ক্রিয় উপাদান গলে নীচে চলে গেছে৷ মিনি রোবট সফলভাবে সেটি চিহ্নিত করেছে৷

সাকুরা, রোজমেরি, স্করপিয়ন, লিটল সানফিশের মতো অনেক রোবট আগে ও পরে ফুকুশিমার ধ্বংসস্তূপ সম্পর্কে আরও ভালো করে জানা ও ক্ষতিকর পদার্থ উদ্ধারের চেষ্টায় সহায়তা করছে৷ রোবটের প্রধান কাজ অনুসন্ধান করা৷ তেজস্ক্রিয় উপাদানের মাত্রা ও সুনির্দিষ্ট অবস্থান সম্পর্কে ইতোমধ্যে কিছু ধারণা পাওয়া গেছে৷

তেজস্ক্রিয় উপাদান উদ্ধার করা হবে আগামী বছরগুলির প্রধান চ্যালেঞ্জ৷ সেই কাজেও রোবটের সহায়তার প্রয়োজন হবে৷ বর্তমানে ‘রোবো বাডলার' নিয়ে পরীক্ষা চলছে৷ অদূর ভবিষ্যতে ফুকুশিমা পরমাণু কেন্দ্র বিপদমুক্ত করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে৷

ডরোটে গ্যুন্টার/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ