1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘ফুটবল ক্ষতিকর'

২১ মে ২০১৪

অন্তত পেশাদারি ফুটবলাররা মাঠে নেমে – এবং ট্রেনিং-এ – যে ধরনের চোট পান, অথবা দশ-বিশ বছর সর্বোচ্চ পর্যায়ে ফুটবল খেলার পর তাদের গাঁট থেকে শুরু করে হাড়গোড়ের যে অবস্থা হয়, তার কথাই হচ্ছে৷ ওদিকে সামনে বিশ্বকাপ!

পর্তুগালের রোনাল্ডো কি ফিট থাকবেন? জার্মানির শোয়াইনস্টাইগার, লাম কিংবা নয়ারেরই বা কি হবে? ফুটবলের সাথে ইনজুরির গাঁটছড়া তো আজকের নয়৷ তলপেটে টান, পায়ের হাড় ভাঙা, পায়ের ডিমে টান, হাঁটুর লিগামেন্ট ছেঁড়া: ফুটবলে কিনা ঘটে৷ এবং সেটা বিশ্বকাপ আসছে বলেই থেমে থাকে না৷

জার্মানির ডুইসবুর্গ-এসেন বিশ্ববিদ্যালয়ে বায়োমেকানিক্সের অধ্যাপক এভাল্ড হেনিগ বলেন: ‘‘আমরা বড় দলগুলো সম্পর্কে জানি যে, সবসময়েই তাদের ২০ থেকে ৩০ শতাংশ খেলোয়াড় ইনজিওর্ড থাকে৷ এটা একটা বড় সমস্যা৷'' এই সমস্যার মূল আবার ফুটবল খেলার ধরন ও প্রকৃতিতে৷

ফুটবলে যে ধরনের ‘স্কিল্স' বা কর্মক্ষমতা ও দক্ষতার প্রয়োজন পড়ে, সেগুলোর অনেকটাই এসেছে মানব ইতিহাসের সেই আদিপর্ব থেকে, যখন মানুষ ‘শিকারি-সংগ্রাহক' ছিল, মানুষের কৃষিজীবী হবার অনেক আগে৷ আজও ক্ষিপ্রতা, নমনীয়তা এবং ‘বডি কনট্যাক্ট', অর্থাৎ শারীরিক সংঘাতই হল ফুটবলের উপজীব্য৷ যে কারণে বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলার মধ্যে ইনজুরিতে ফুটবল নিজেই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন৷

ঘন ঘন ইনজুরির কারণ হিসেবে সেই সঙ্গে যোগ করতে হবে: পেশাদারি ফুটবলের সুদীর্ঘ মরশুম এবং জনতার দাবির ফলশ্রুতি হিসেবে ‘জমাটি' খেলা; এছাড়া ফুটবলের সাজপোশাক এবং ট্রেনিং-এ নিত্যনতুন অভিনবত্বও কিছুটা দায়ী৷ ফুটবলারদের ট্রেনিং আজকাল অনেক বেশি বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে, বলে প্রফেসর হেনিগের ধারণা৷

‘২০ থেকে ৩০ শতাংশ খেলোয়াড় সবসময় ইনজিওর্ড থাকে’ছবি: Reuters

মাসল কন্ডিশনিং ট্রেনিং-এর কথাই ধরা যাক৷ আগে এই ট্রেনিং-এ প্লেয়ারদের দৌড়ে চড়াইয়ে উঠতে হতো, কিন্তু তারা পায়ে হেঁটে নীচে নামতে পারতেন৷ এখন ট্র্যাক আর ফিল্ডের অ্যাথলিটদের অনুকরণে ফুটবল প্লেয়াররাও ওৎরাই কিংবা সিঁড়ি বেয়ে দৌড়ে নীচে নামেন৷ এর ফলে গাঁট ও হাড়ের ওপর বেশি চাপ পড়ে, যার ফলে ইনজুরির সম্ভাবনা বাড়ে৷

ফুটবলারদের ‘কিট' অর্থাৎ সাজপোশাক কিংবা সাজসরঞ্জামের কথায় এলে বলতে হয়, ফুটবলের বিস্মৃত অতীতে ফুটবল বুটের ওজন ছিল প্রায় এক কিলোগ্রাম অবধি; সেগুলো ছিল শক্তপোক্ত এবং উচ্চতায় বেশি, যা-তে গোড়ালির গাঁট সুরক্ষিত থাকে, বিপক্ষ প্লেয়ারের বুটের স্টাড অথবা অন্য কোনো শকে আঘাত না পায়৷ আজকালকার ফুটবল শু-এর ওজন মাত্র ১০০ গ্রাম৷ এ গুলোর ট্র্যাকশন বেশি, তাই প্লেয়াররা দিক পরিবর্তন করার সময় চাপ বেশি পড়ে, পেশি ঘুরে যায়, যার ফলে পেশির স্ট্রেস ও ইনজুরির সম্ভাবনা বাড়ে৷

কিন্তু খেলোয়াড়দের সবচেয়ে বড় শত্রু হল ক্লান্তি: শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তি৷ ১২ই জুন বিশ্বকাপ শুরু হতে চলেছে, তার মাত্র তিন সপ্তাহ বাকি থাকতে এখনও ইউরোপের কয়েকটি বড় টুর্নামেন্ট শেষ হতে চলেছে৷ অথচ প্লেয়ারদের ঠিকমতো বিশ্রাম নেওয়ার জন্য অন্তত মাসখানেক ব্যবধানের প্রয়োজন ছিল৷

গবেষণা চলেছে৷ যেমন ইনজুরির জন্য ম্যাচের শেষ পনেরো মিনিটই সবচেয়ে বিপজ্জনক৷ সেই সময়ে ঠিক ঐ ক্লান্তির ফলেই উল্টোপাল্টা ‘ট্যাকল' হতে পারে৷ কোনে দল হয়ত গোল করেছে; কিংবা হলদে কি লাল কার্ড দেখেছে; কিংবা এগিয়ে রয়েছে: ঠিক সেইরকম সময়ে ইনজুরির ঝুঁকি থাকে বেশি৷ সুইডেনের একটি প্রতিষ্ঠান বিগত তিনটি বিশ্বকাপের তথ্য ঘেঁটে এই সব সিদ্ধান্তে এসেছে৷

কিন্তু সিদ্ধান্ত নিয়ে কি হবে? জনতা চায় উত্তেজনাপূর্ণ, দ্রুতগতির খেলা; তারা চায় আগ্রাসনপূর্ণ খেলা৷ আর ফুটবল খেলোয়াড়রা চায় জিততে৷ কাজেই সোনায় সোহাগা৷ সাথে কিছু ইনজুরি রইল কি না রইল, তা নিয়ে মাথা ঘামায় ক'জন?

এসি/ডিজি (এএফপি, এপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ