ঘুস দেয়া-নেয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তির দাবি, তাকে এ কাজে বাধ্য করেছিলেন মেক্সিকোর সাবেক প্রেসিডেন্ট এনরিকে পেনা নিয়েতো৷ অ্যাটর্নি জেনারেল জানিয়েছেন, ২০১২ সালের নির্বাচনের আগে কয়েক দফায় ঘুস লেনদেন হয়েছিল৷
বিজ্ঞাপন
মেক্সিকোর তেল কোম্পানি পেমেক্স-এর সাবেক প্রধান নির্বাহী এমিলি লসোভা শাস্তি এড়াতে পালিয়ে গিয়েছিলেন স্পেনে৷ গত জুলাই মাসে সেখান থেকে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা হয় তাকে৷
মঙ্গলবার মেক্সিকোর অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় জানায়, এখন সাবেক প্রেসিডেন্ট এনরিকে পেনা নিয়েতোর বিরুদ্ধেও তদন্ত করতে হচ্ছে তাদের৷ কারণ, এমিলি লসোভোর দাবি, ২০১২ সালের নির্বাচনি প্রচার-ব্যয়ের বড় একটা অংশ ব্রাজিলের নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ওডেব্রেশটের কাছ থেকে ঘুস হিসেবে পেয়েছিলেন এনরিকে পেনা নিয়েতো৷
এক ভিডিও বার্তায় মেক্সিকোর অ্যাটর্নি জেনারেল আলেসান্দ্রো গার্ৎস মানেরো জানান, পেমেক্স-এর সাবেক প্রধান নির্বাহীর অভিযোগ, সাবেক প্রেসিডেন্ট নিয়েতো এবং তার অর্থসচিবের নির্দেশেই ওডেব্রেশটের কাছ থেকে ৪০ লাখ ডলারেরও বেশি অর্থ নিয়েছিলেন তিনি৷ পুরো টাকা নিয়তোর নির্বাচনি প্রচারে ব্যয় করা হয়েছিল বলেও এমিলি লসোভার দাবি৷
ভিডিও বার্তায় অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘‘কয়েক দফায় এক কোটি পেসোর চেয়েও বেশি অর্থের ঘুস লেনদেন হয়েছে তখন৷ টাকাটা রিপাবলিক দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর নির্বাচনি প্রচারণায় ব্যয় হয়েছে৷’’
এনরিকে পেনা নিয়েতো এবং তার সচিবের বিরুদ্ধে এখনো অভিযোগ গঠন করা হয়নি৷ ২০১২ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ছিলেন এনরিকে পেনা নিয়েতো৷
এসিবি/ কেএম (এপি, রয়টার্স)
গতবছরের নভেম্বরের ছবিঘরটি দেখুন..
ঘুসের ঝুঁকিতে থাকা শীর্ষ দেশগুলো
ঘুস দেওয়া-নেওয়ায় সবথেকে ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকা করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ঘুসবিরোধী বৈশ্বিক সংগঠন ট্রেস ইন্টারন্যাশনাল৷ এই তালিকায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে বাংলাদেশ৷
ছবি: Colourbox/W. Zwanzger
কেমন করে এই সূচক
সরকারের সঙ্গে ব্যবসায়িক মিথস্ক্রিয়া, ঘুস-বিরোধী তত্ত্ব ও প্রয়োগ, সরকার ও সিভিল সার্ভিসের স্বচ্ছতা এবং দুর্নীতি পর্যবেক্ষণ প্রকাশে সুশীল সমাজের সক্ষমতা ও গণমাধ্যমের ভূমিকা- প্রধানত এই চারটি ক্ষেত্রে ভালো-মন্দ বিবেচনায় ১-১০০’র মধ্যে স্কোরের ভিত্তিতে ঘুসের ঝুঁকি পরিমাপ করা হয়েছে৷ এই সূচকে ২০০টি দেশের অবস্থান নির্ধারণ করা হয়েছে৷
ভালো-মন্দ বিবেচনায় ১-১০০’র মধ্যে যে দেশের স্কোর বেশি সেই দেশে ঘুসের ঝুঁকি সবথেকে বেশি৷ আর যে দেশের স্কোর সব থেকে কম সে দেশে ঘুস লেনদেনের ঝুঁকিও তত কম৷
ছবি: Colourbox/W. Zwanzger
শীর্ষে সোমালিয়া
ট্রেস ইন্টারন্যাশনালের ২০১৯ সালের সংস্করণে ঘুসের ঝুঁকির ক্ষেত্রে ৯৪ স্কোর নিয়ে সব থেকে তলানিতে রয়েছে সোমালিয়া৷ এর অর্থ হলো এই দেশে ঘুসের ঝুঁকি সব থেকে বেশি৷
ছবি: AFP/Getty Images/Y. Chiba
দক্ষিণ সুদান
ঘুস দেওয়া-নেওয়ার ক্ষেত্রে উত্তর আফ্রিকার এই দেশটি ৯২ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে৷
ছবি: picture alliance/dpa/M. Messara
উত্তর কোরিয়া
পূর্ব এশিয়ার এই রাষ্ট্রটি ৮৬ স্কোর নিয়ে ঘুস লেনদেনের ঝুঁকির তালিকায় খারাপের দিক থেকে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে৷
ছবি: picture alliance/AP Photo/A. Khitrov
ইয়েমেন
মধ্যপ্রচ্যের এই দেশটি ৮৫ স্কোর নিয়ে আছে চতুর্থ স্থানে৷
ছবি: Colourbox
ভেনেজুয়েলা
ক্যারিবীয় সাগরের তীরে অবস্থিত এই রাষ্ট্রটি ঘুস লেনদেনের ঝুঁকির তালিকায় পঞ্চম স্থানে রয়েছে৷ চারটি ক্ষেত্রে ভালো-মন্দ বিবেচনায় এই দেশের স্কোর ৮৫ হলেও অন্যান্য সূচক বিবেচনায় দেশটির অবস্থান ইয়েমেনের নিচে৷
ছবি: Reuters/S. Moraes
চাড
মধ্য আফ্রিকার এই দেশটিতে নানা ধর্ম-বর্ণের মানুষের বসবাস৷ ঘুস দেওয়া-নেওয়ায় ৮৪ স্কোর নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় এর অবস্থান ষষ্ঠ৷
ছবি: Reuters/Emmanuel Braun
লিবিয়া
যুদ্ধ বিধ্বস্ত এই দেশটি ৮২ স্কোর নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ঘুসবিরোধী বৈশ্বিক সংগঠন ট্রেস ইন্টারন্যাশনালের ঘুস দেওয়া-নেওয়ায় সবথেকে ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় সপ্তম স্থানে রয়েছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/S. Honda
তুর্কমেনিস্তান
লিবিয়ার সমান পয়েন্ট (৮২) হলেও অন্যান্য সূচক বিবেচনায় ঘুস দেওয়া-নেওয়ায় সবথেকে ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় তুর্কমেনিস্তানের অবস্থান অষ্টম৷
ছবি: DW/S. Tanka Shokran
ইকুয়েটোরিয়াল গিনি
স্কোর ৮২ হলেও প্রধান চারটিসহ অন্যান্য সূচক বিবেচনায় মধ্য আফ্রিকার দেশটির অবস্থান নবম স্থানে৷
ছবি: picture alliance/ANP
ডিআর কঙ্গো
আফ্রিকা মহাদেশের যুদ্ধ বিধ্বস্ত রাষ্ট্র কঙ্গোর স্কোর ৮২ হলেও অন্য সূচক বিবেচনায় তালিকায় এর অবস্থান দশম৷ বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য ক্ষেত্রে ঘুসের ঝুঁকির বিষয়ে ব্যবসায়ী মহলে আরও বেশি নির্ভরযোগ্য তথ্যের প্রয়োজন মেটাতে ২০১৪ সালে প্রথম এই সূচক প্রকাশ করে ট্রেস ইন্টারন্যাশনাল৷
ছবি: Colourbox
কম ঝুঁকির ৫ দেশ
এই সূচকে সবচেয়ে কম ঘুসের ঝুঁকিপূর্ণ পাঁচটি দেশ হলো- নিউজিল্যান্ড (৪ পয়েন্ট), নরওয়ে (৭ পয়েন্ট), ডেনমার্ক (৭ পয়েন্ট), সুইডেন (৮ পয়েন্ট) এবং ফিনল্যান্ড (৯ পয়েন্ট)৷ সব থেকে খারাপ অবস্থানে থাকা সোমালিয়ার স্কোর ৯৪৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Melville
বাংলাদেশ ১৭৮তম
ঘুসের ঝুঁকির ক্ষেত্রে গতবারের চেয়ে দুই পয়েন্ট বেড়ে এবার ৭২ স্কোর নিয়ে বাংলাদেশ ১৭৮তম অবস্থানে আছে৷ এর অর্থ হলো- এদেশে ঘুসের ঝুঁকি আগের চেয়ে বেড়েছে৷ এই তালিকায় ৪৮ স্কোর নিয়ে ভারত ৭৮তম এবং ৬২ স্কোর নিয়ে পাকিস্তান ১৫৩তম অবস্থানে আছে৷