ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি, চ্যালেঞ্জই-এসব বিষয় নিয়ে ডয়চে ভেলের সঙ্গে কথা বলেছেন নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাসউদ। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন তিনি৷
‘নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের ধারণা ইতিবাচক না। আমরা চাচ্ছি নির্বাচন ব্যবস্থার উপর যেন মানুষের একটা আস্থা তৈরি হয়।’ছবি: Bangladesh Election Commission
বিজ্ঞাপন
ডয়চে ভেলে : আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা। এই নির্বাচনকে ঘিরে আপনারা কি ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন?
আব্দুর রহমানেল মাসউদ : নির্বাচনের প্রস্তুতি বলতে, নির্বাচন করতে যে সমস্ত কাজ করা প্রয়োজন তার সব ধরনের প্রস্তুতি আমরা নিচ্ছি। সুনির্দিষ্ট করে বলা যাবে না, তবে সব ধরনের প্রস্তুতি আমরা নিচ্ছি।
এই নির্বাচন আয়োজনে আপনারা কি ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারেন বলে মনে করছেন?
সবটাই আসলে চ্যালেঞ্জ। ওই অর্থে চ্যালেঞ্জ বললে আমরা অবশ্যই আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কথা বলবো। সবার জন্যই এটা চ্যালেঞ্জ। নির্বাচনে এটা তো প্রয়োজন। একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো থাকা খুবই প্রয়োজন। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কীভাবে উন্নতি করা যায়, ভালো করা যায় বা কি কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় সে বিষয়ে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ আছে। আইন শৃঙ্খলা ভালো থাকলে ভোটারদের অংশগ্রহণ ভালো হয়। নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের ধারণা ইতিবাচক না। আমরা চাচ্ছি নির্বাচন ব্যবস্থার উপর যেন মানুষের একটা আস্থা তৈরি হয়। আমরা আমাদের কাজ দিয়ে সেটাই চেষ্টা করছি।
নির্বাচন নিয়ে জনমনে শঙ্কা-সংশয়
ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অনৈক্য ও সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েও মানুষের মধ্যে শঙ্কা রয়েছে। এসব বিষয়ে ডয়চে ভেলের সাথে কথা বলেছেন রাজনীতিবিদ, বিশ্লেষক, সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীরা।
জনমনে স্বস্তি ফেরেনি, নির্বাচন হবে কীভাবে?: রুহিন হোসেন প্রিন্স, সাধারণ সম্পাদক, সিপিবি
নির্বাচন নিয়ে শঙ্কার তিনটি কারণ আছে। প্রথমত, জনজীবনে স্বস্তি ফেরেনি, এর মধ্যে নির্বাচন হবে কীভাবে? দ্বিতীয়ত, সরকার ও নির্বাচন কমিশনের আরও কিছু দৃশ্যমান পদক্ষেপ দরকার ছিল। যেমন, রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনি যাত্রায় শামিল করার দরকার ছিল, যেটা তারা করেনি। তৃতীয়ত, সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ট রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনবিরোধী অবস্থান নিয়েই কথা বলছে। ফলে মানুষের মধ্যে সংশয় তৈরি হওয়াটাই স্বাভাবিক।
ছবি: DW
রাজনৈতিক অনৈক্য ও নিরাপত্তাহীনতা নির্বাচনে বাধা : মনিরা শারমিন, যুগ্ম আহবায়ক, এনসিপি
মানুষের মধ্যে শঙ্কার অনেক কারণ আছে। মূলত দলগুলোর মধ্যে ঐক্য তৈরি হয়নি। এটা নির্বাচন আয়োজনের ক্ষেত্রে বড় প্রভাবক। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে এখন তো সবার মাঠে থাকার কথা। বিশেষ করে একটি দল যারা শুরু থেকেই নির্বাচনের কথা বলছে তারাও কিন্তু মাঠে নামেনি। তারাও জানে, রাজনৈতিক ঐক্য ছাড়া নির্বাচন সম্ভব না৷ মানুষ গত তিনটা নির্বাচনে ভোট দিতে পারেনি। নির্বাচনহীনতার একটা সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে।
ছবি: Privat
জামায়াত-এনসিপির শর্ত শঙ্কা তৈরি করেছে : ডা. জাহেদ উর রহমান, রাজনৈতিক বিশ্লেষক
কতগুলো যৌক্তিক কারণেই সংশয় তৈরি হয়েছে। এই মুহূর্তে আওয়ামী লীগ মাঠে নেই। মূল দল জামায়াত ও এনসিপি নানা ধরনের শর্ত দিচ্ছে নির্বাচন নিয়ে। যেগুলো দেখে মনে হতে পারে তারা নির্বাচন চায় না। এটাই মানুষের মধ্যে সংশয় তৈরি করেছে। এই মুহূর্তে সবার নির্বাচনের মাঠে থাকার কথা। কিন্তু জামায়াত-এনসিপি যেসব শর্ত দিচ্ছে সেগুলো পূরণ না হলে তারা নির্বাচন করবে না। ফলে আদৌ নির্বাচন হবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কা তো আছেই।
ছবি: Samir Kumar Dey/DW
নির্বাচন ছাড়া সরকারের বিকল্প নেই : রোকসানা খন্দকার, আইনজীবী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক
দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাসের অভাব দেখা যাচ্ছে। কয়েকটি দল শর্ত দিচ্ছে, এটা না হলে, ওটা না হলে তারা নির্বাচনে যাবে না। এই শর্তের কারণে মানুষের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। তবে যতই শঙ্কা থাক, বর্তমান সরকার কিন্তু বুঝতে পেরেছে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, বিনিয়োগ নেই, কর্মসংস্থান নেই এতে মানুষ দারুনভাবে ক্ষুব্ধ। ফলে যত শঙ্কাই থাক না কেন, নির্বাচন দেওয়া ছাড়া এই সরকারের কোন বিকল্প নেই।
ছবি: Samir Kumar Dey/DW
আইন শৃঙ্খলা হচ্ছে বড় চ্যালেঞ্জ: মোস্তফা ফিরোজ, সিনিয়র সাংবাদিক
তিনটা দলকে গুরুত্ব দেন ড. ইউনূস। এর মধ্যে জামায়াত ও এনসিপি পিআর সিস্টেমে নির্বাচন চায়। তাদের এই দাবির কারণে এক ধরনের দ্বিধাদ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। আর বিএনপিও অগোছালো। তারেক রহমান দেশে নেই, প্রার্থী বাছাই করে যে তারা মাঠে নামবে সেটাও দেখা যাচ্ছে না। এসব কারণে অনিশ্চয়তা। আর আইনশৃঙ্খলা হচ্ছে বড় চ্যালেঞ্জ। পুলিশ আসলে প্রস্তুত না। সেনাবাহিনী দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব হবে না। এই কারণেও শঙ্কা বেড়েছে।
ছবি: Privat
নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা আছে : সাইদুর রহমান, রাজনীতি ও নির্বাচন বিষয়ক সম্পাদক, ইত্তেফাক
ভোট ব্যবস্থাপনার প্রতি মানুষের আস্থাহীনতা আছে। ভোটারদের কেন্দ্রে উপস্থিত নিশ্চিত করার পাশাপাশি আরেকটি চ্যালেঞ্জ নির্বাচন কমিশনকে কঠিন সংকটের মুখোমুখী ফেলতে পারে। সেটি হল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিস-ইনফরমেশন এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে ছবি বা ভিডিও বানিয়ে ছড়িয়ে দেয়া। ভোট না হওয়া পর্যন্ত শঙ্কা থাকবে। এখনো নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা আছে।
ছবি: Samir Kumar Dey/DW
পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার সুযোগ চাই : অর্পিতা সাহা, শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
জীবনের প্রথম ভোট হিসেবে আমি চাই পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে। এই নির্বাচন যেন সুষ্ঠু, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক হয়। যেখানে প্রতিটি দল সমান সুযোগ পাবে। আমার প্রত্যাশা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এমন সরকার নির্বাচিত হবে, যারা সত্যি জনগণের আশা ও কল্যাণ বাস্তবায়নে এগিয়ে আসবে। বর্তমান সরকারের প্রতি জনগণের অনেক প্রত্যাশা ছিল, কিন্তু সেই প্রত্যাশাগুলো পূরণ হয়নি। তাই ফেব্রুয়ারির নির্বাচন অত্যন্ত জরুরি।
ছবি: Samir Kumar Dey/DW
নির্ভয়ে ভোট দিতে চাই : রাতুল হাসান রাফি, শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
জনগণ ভেবেছিল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারই হবে পরিবর্তনের প্রতীক। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করবে, দুর্নীতি কমাবে, উন্নয়নের গতি বাড়াবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল ব্যর্থতাই বেশি। জনগণের আস্থা টিকিয়ে রাখতে হলে আর সময়ক্ষেপণের সুযোগ নেই। ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হতে হবে। একেবারেই স্বচ্ছ ও প্রতিযোগিতামূলক, যেখানে কোনো দল বিশেষ সুবিধা না পায়। জীবনের প্রথম ভোট হিসেবে আমি নির্ভয়ে যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দিতে চাই।
জাতীয় নির্বাচনে একজন তরুণ ভোটার হিসাবে আমার প্রধান প্রত্যাশা হলো সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব পাওয়া। আমি চাই শিক্ষা, কর্মসংস্থান প্রযুক্তিকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হোক। দুর্নীতি কমানোসহ নারী হিসাবে আমার সমান সুযোগ ও নিরাপদ পরিবেশ প্রত্যাশা করি। সবশেষে, আমি এমন নেতৃত্ব চাই যারা ন্যায়ভিত্তিক ও উন্নত বাংলাদেশ গড়বে।
ছবি: Privat
নির্বাচন যেন অবাধ সুষ্ঠু হয় : আবু বকর অনিক, শিক্ষার্থী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
আমি এখনও কোন নির্বাচনে ভোট দেইনি। জীবনে প্রথম ভোট দেবো রাকসু নির্বাচনে। আর ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে চাই। সেই নির্বাচনটি যেন যেন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হয়। যাতে জনগণ তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে নির্বাচিত করতে পারে এবং একজন প্রকৃত স্বদেশপ্রেমী প্রতিনিধির মাধ্যমে সংসদে তাদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হয়।
ছবি: Samir Kumar Dey/DW
10 ছবি1 | 10
বর্তমান প্রশাসন নিয়ে নানা ধরনের আলোচনা আছে। ফলে নির্বাচনের আগে প্রশাসনে বড় ধরনের কোন পরিবর্তনের চিন্তা আপনাদের আছে কিনা?
ওইভাবে আলোচনা না করলেও আমি যে বিষয়টি বলতে চাই, নির্বাচন পরিচালনার জন্য রির্টানিং অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসারের ভূমিকা অত্যন্ত বেশি। কাজেই সেখানে যাতে ভালো মানুষ যায়, সৎ মানুষ যায়, দক্ষ মানুষ যায় সেটা তো নির্বাচন কমিশন সবসময়ই চাইবে। এই লক্ষ্যে আমরা সরকারের সঙ্গে যোগাযোগও করবো।
আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নির্বাচনি প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। আপনারা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রস্তুতি নিয়ে কি কোন কাজ করছেন?
তাদের সঙ্গে আমাদের কাজ তো পরের দিকে। নির্বাচনের আগে তাদের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হবে। আমরাও চাচ্ছি তারা প্রস্তুতি নিক। সরকারও প্রস্তুতি নিচ্ছে, আপাতত এটুকুর মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
সংস্কার কমিশন ও সংস্কারের প্রস্তাবনা
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গেই রাষ্ট্রযন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন অংশের সংস্কার কমিটি গঠন করেন। ছবিঘরে থাকছে সেসব সংস্কার প্রস্তাবনার সারসংক্ষেপ।
ছবি: bdnews24.com
নির্বাচন কমিশন সংস্কার
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের উদ্দেশ্যে প্রায় ১৫০টির কাছাকাছি সুপারিশ করেছে কমিশন। যার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন, প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য ডাকযোগে ভোট দেয়ার ব্যবস্থা, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ, উচ্চ কক্ষের জন্য নির্বাচন, বিরোধী দলকে ডেপুটি স্পিকারের পদ দেয়া ও জাতীয় নির্বাচনে কোন আসনে ৪০ শতাংশের কম ভোট হলে পুনরায় নির্বাচনের সুপারিশ করা হয়েছে।
ছবি: Mortuza Rashed/DW
সংবিধান সংস্কার
সংবিধান সংস্কার কমিশনে যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজকে প্রধান করা হয়। ক্ষমতার প্রাতিষ্ঠানিক ভারসাম্য প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রীর একচ্ছত্র ক্ষমতা কমানোসহ সংবিধানে আমূল পরিবর্তনের সুপারিশ করেছে কমিশন। দুই কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ, সংসদের আসন বাড়ানো, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, এক ব্যক্তির দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে না পারার সুপারিশ করা হয়েছে।
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/M. Ponir Hossain
বিচার বিভাগ সংস্কার
বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন সুপ্রিম কোর্টের স্বাধীন সচিবালয়, বিচারক নিয়োগের জন্য স্বাধীন কমিশন, হাই কোর্টের বিভাগীয় বেঞ্চ, জেলা ও উপজেলা আদালত স্থাপনসহ নানা সংস্কারের সুপারিশ করেছে। প্রধান বিচারপতি নিয়োগে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত ও সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া, বিচারকদের শৃঙ্খলা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
ছবি: Munir Uz Zaman/AFP/Getty Images
পুলিশ সংস্কার কমিশন
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেয়া প্রতিবেদনে পুলিশ সংস্কার কমিশন বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ করেছে। বল প্রয়োগ, আটক, গ্রেপ্তার, তল্লাশি, জিজ্ঞাসাবাদ, মানবাধিকার, প্রভাবমুক্ত ও জবাবদিহিমূলক বাহিনী গঠন, থানায় জিডি রেকর্ড, মামলা রুজু, তদন্ত ও ভ্যারিফিকেশনসহ বিভিন্ন বিষয়ে সংস্কারের সুপারিশ করেছে পুলিশ সংস্কার কমিশন। পুলিশের সেবামূলক ও জনবান্ধব কার্যক্রম বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে।
ছবি: Nazmul Hasan/DW
দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশন
দুদক সংস্কার কমিশনের দায়িত্ব পান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। একটি সংস্কার কমিশন গঠিত হয় এবং কমিশন দুর্নীতি প্রতিরোধে ৪৭টির মতো সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে। দুদককে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, অর্থাৎ প্রাতিষ্ঠানিক স্বাধীনতা শক্তিশালীকরণকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে এই প্রতিবেদনে।
ছবি: Mamunur Rashid/NurPhoto/picture alliance
জনপ্রশাসন সংস্কার
জনপ্রশাসন সংস্কারকে একটি চলমান প্রক্রিয়া হিসেবে উল্লেখ করে কমিশন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর উপর বেশ কিছু কাঠামোগত ও পদ্ধতিগত সংস্কারের সুপারিশ করেছে। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে তথ্য ও যোগাযোগ বিভাগকে আলাদা করা, ফরিদপুর ও কুমিল্লাকে বিভাগ ঘোষণা, নাগরিক পরিষেবা উন্নয়নে প্রশাসনের ডিজিটাল রূপান্তর, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের কাঠামো ও প্রক্রিয়াগত সংস্কারের উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
ছবি: bdnews24.com
6 ছবি1 | 6
এখন কি আপনারা পুলিশকে কোন নির্দেশনা দিতে পারেন?
সেই সময় এখনও আসেনি। সিডিউল হলে তখন আইনগতভাবে তাদের উপর দায়িত্ব অর্পন হয়। এর আগে আমরা যেটা বলেছি, যেখানে পোলিং স্টেশন হবে, সেটা যেন নিরাপদ হয়। সেটার যদি কোন মেরামতের প্রয়োজন হয় করবে? পুলিশ বাহিনী যাতে সক্রিয় থাকে, তাদের সংখ্যা কত, আনসারের সংখ্যা কত, বিভিন্ন বাহিনীর যারা থাকবেন তাদের সংখ্যা কত? এগুলো আমরা জানতে চাচ্ছি। এসব বিষয়ে কিছু যোগাযোগ হচ্ছে। ভবিষ্যতে আরও হবে।
১৬ বছর বয়সিদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত কি চূড়ান্ত হয়েছে?
বিষয়টি পুরোপুরি আমার জানা নেই।
তরুন ভোটারদের আকৃষ্ট করতে আপনারা কি কোন ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছেন?
ইতিমধ্যে আমরা একটা আইনগত পদক্ষেপ নিয়েছি। আগে আইনটি ছিল যে বছর ভোট হবে সেই বছরের পহেলা জানুয়ারি যাদের বয়স ১৮ হবে শুধুমাত্র তারাই ভোটার হতে পারবে। ভোট যদি ডিসেম্বরেও হয় বা পরের বছর জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারিতেও হয় তাহলেও এরাই শুধু ভোট দিবে। মাঝখানে যে শত শত বা হাজার হাজার তরুণ ১৮ বছর অতিক্রম করবে তারা ভোট দিতে পারবে না। এবার আমরা বলেছি, ৩১ অক্টোবর যাদের বয়স ১৮ হবে তারাও ভোটার হতে পারবে। তরুণ প্রজন্মকে আকৃষ্ট করতে এটা একটা আইনি দিক। এখন তো বিশ্বে যা হচ্ছে বা নেপালে দেখেন বা অন্য জায়গায় দেখেন তরুনদেরই আধিপত্য চলছে। ফলে তারা ভোট দিতে চায় আমাদের কাছে এই ধরনের বার্তা এসেছে। আমরাও বলেছি, ৩১ অক্টোবর যাদের বয়স ১৮ বছর হবে তারা ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবে।
এবার আমরা বলেছি, ৩১ অক্টোবর যারা ১৮ হবে তারাও ভোটার হতে পারবে। তরুণ প্রজন্মকে আকৃষ্ট করতে এটা একটা আইনি দিক: আব্দুর রহমানেল মাসউদ
This browser does not support the audio element.
সীমানা নির্ধারণ ইস্যুতে বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ হচ্ছে। এই সংকট নিরসনে আপনাদের পরিকল্পনা কি?
এখানে তো টেকনিক্যাল কমিটিও কাজ করেছে। আমরা যেগুলো দেখেছি, একটি আসনে হয়ত ভোটার আছে ৫ লাখ, তার পাশের আসনে আছে হয়ত ২ বা ৩ লাখ। খুব যে বেশি করেছি, তা কিন্তু না। কিছু কিছু কারেকশান করেছি। ভাঙ্গাতে দুইটা ইউনিয়নকে এক আসন থেকে পাশের আসনে দেওয়া হয়েছে। আমরা আমাদের ভাষায় যেটা যৌক্তিক এবং টেকনিক্যাল কমিটির পরামর্শ নিয়েই করেছি। কিছু ডিসপুট দেখা যাচ্ছে। কিন্তু খুব বেশি যে তা কিন্তু না।
প্রবাসীদের ভোটার করার প্রক্রিয়া কতদূর এগিয়েছে?
এটার ক্ষেত্রে আমরা অনেকদূর এগিয়েছি। আমরা আরপিও চেঞ্জ করেছি। এখনও প্রবাসী ভোটাররা ব্যালটেই ভোট দেবে। কিন্তু তাদের নাম নিবন্ধন করতে হবে অনলাইনে। অ্যামেরিকা বা সৌদিআরব হোক, নিবন্ধন দেখে আমরা বুঝতে পারবো তিনি নোয়াখালীর লোক না চট্টগ্রামের লোক। কত নম্বর আসনের ভোটার তিনি। আমরা আইন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছি, তিনি যে আসনের ভোটার আমরা ওই আসনের ব্যালট পেপার তাকে পাঠিয়ে দেবো। তিনি ভোট দিয়ে এবং সঙ্গে একটা ডিক্লেয়ারেশন দিয়ে আমাদের পাঠানো পোস্টালে পাঠিয়ে দেবেন, যেটা যাবে ওই আসনের রির্টানিং অফিসারের কাছে। এইভাবে আমরা চেষ্টা করছি।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কবে থেকে সংলাপ শুরু হচ্ছে?
আমাদের রোডম্যাপ অনুযায়ী শিগগিরই শুরু হবে। সেখানে শুধু রাজনৈতিক দল না, সুশীল সমাজ, সাংবাদিকসহ সবার সঙ্গেই কথা হবে।