1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফেরি বন্ধ, ঘূর্ণিঝড় তবুও ঈদযাত্রা

১৯ মে ২০২০

যে-কোনো উপায়ে ঢাকা ছাড়ার চেষ্টা করছেন অনেকে৷ করোনাতো আছেই তার উপর ঘূর্ণিঝড় আমফানের কারণে ফেরি বন্ধ থাকলেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হচ্ছেন মানুষ৷ আর দেশের অন্য এলাকায় যাওয়ার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে বিকল্প যান৷

যাত্রীদের ঢাকা ফেরত পাঠাতে পুলিশের উদ্যোগছবি: bdnews24

ঢাকার অদূরে মাওয়া ও পাটুরিয়া ফেরিঘাটে এখন কয়েক হাজার মানুষ অপেক্ষা করছেন বাড়ি যাওয়ার জন্য৷ ফেরি চলাচল এখন বন্ধ৷ যাত্রীরা যেখান থেকে এসেছেন সেখানে ফিরে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে৷ তারপরও তারা অনঢ়, ঈদে বাড়ি যাবেনই৷

২৬ মার্চ থেকে বাংলাদেশে করোনা প্রতিরোধে সাধারণ ছুটি চলছে৷ যাত্রী পরিবহণের জন্য যান চলাচলও সারাদেশে বন্ধ আছে৷ আর ঈদের সময় ঢাকা ছাড়া যাবে না, কর্মস্থল ত্যাগ করা যাবে না এই নির্দেশনা ছিলো আগেই৷ তার ওপর ১৭ মে পুলিশের আইজি বেনজীর আহমেদ ঘোষণা দেন, কাউকে ঈদে বাড়ি যেতে দেয়া হবে না৷ কিন্তু সব বজ্র আঁটুনি ফসকা গেরোতে পরিণত হয়েছে৷ পুলিশ প্রধানের ঘোষণার পরই ঢাকা ছেড়ে মানুষ গ্রামের বাড়িতে ছুটতে শুরু করেছেন৷

ঢাকায় গাড়ির চাপ
ঢাকা শহরেও বেড়েছে গাড়ির চাপ৷ বাস না চললেও ব্যক্তিগত যানবাহন এবং অটোরিকশা-রিকশা নেমেছে প্রচুর৷ মঙ্গলবার শ্যামলী থেকে গাবতলী পর্যন্ত দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়৷ প্রচুর গাড়ি ঢাকার বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করে৷ আর একইভাবে সোমবার উত্তরা থেকে টঙ্গি পর্যন্ত যানজট দেখা যায়৷ মঙ্গলবার ঢাকার গাবতলী এলাকা ছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় যানবাহনের চাপে যানজট তৈরি হয়৷

সাভার থানা পুলিশ জানায়, তারা ঢাকা থেকে সাভারের প্রবেশ পথ থেকে শুরু করে মানিকগঞ্জের দিকে ১৭টি চেক পোস্ট বসিয়েছে৷ ফলে গাবতলী এলাকায় যানজট হয়৷ গাড়ি সাভারের দিকে ঢুকতে না দেয়ায় ঢাকার ভিতরে যানজট হয়৷

গাড়ি ভাড়া করে ফেরিঘাট থেকে ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে:
ঢাকা থেকে কোনো গাড়ি মানিকগঞ্জে যাতে যেতে না পারে সেজন্য পাটুরিয়া ফেরি ঘাট পর্যন্ত চেকপোস্ট বসানোর কথা জানিয়েছেন সেখানকার পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে মঙ্গলাবার সকাল নয়টা থেকে পাটুরিয়া ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে৷ তারপরও কয়েক হাজার মানুষ ফেরিঘাটে অপেক্ষা করছেন পার হওয়ার জন্য৷ তারা কেউ পায়ে হেঁটে আবার কেউ মাইক্রোবাস ও অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে সেখানে হাজির হয়েছেন৷ আর মটর সাইকেলসহ ব্যক্তিগত যানবাহন তো আছেই৷ পুলিশ সুপার জানান, তারা সকাল থেকে মাইকিং করছেন ফেরিঘাট থেকে চলে যাওয়ার জন্য৷ আবার কয়েকটি বাস ভাড়া করেও অনেককে ঢাকার দিকে ফেরত পাঠানো হয়েছে৷ কিন্তু তারপরও কেউ কেউ ফেরি ঘাটে অবস্থান করছেন৷

মঙ্গলবার বিকেল তিনটা থেকে আমরা ফেরি বন্ধ করে দিয়েছি: সিরাজুল ইসলাম

This browser does not support the audio element.

ফেরিঘাটে দায়িত্ব পালনকারী বিআইডাব্লিউটিসির জিল্লুর রহমান জানান, ‘‘গত দুই দিনে প্রচুর মানুষ ফেরি পার হয়ে ঢাকা ছড়েছেন৷ গত রাতেও ফেরি চলেছে৷ তখনও মানুষ পার হয়েছে৷ এখন পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত আমরা শুধু লাশ পারাপারের সুযোগ দেব৷’’

যেকোনো উপায়ে তারা বাড়ি যাবেনই:
মাওয়া ফেরিঘাটে এখন প্রায় পাঁচ- ছয় হাজার মানুষ অপেক্ষা করছেন বলে জানান মাওয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সিরাজুল ইসলাম৷ তিনি জানান, ‘‘মঙ্গলবার বিকেল তিনটা থেকে আমরা ফেরি বন্ধ করে দিয়েছি৷ গতকালও (সোমবার) আমরা বন্ধ রেখেছিলাম৷ কিন্তু মানুষ থামছে না৷ আমরা তাদের বোঝাচ্ছি, মাইকিং করছি৷ কিন্তু তেমন কাজ হচ্ছে না৷ তারা যেকোনো উপায়ে এই করোনার মধ্যে ঈদ করতে বাড়ি যাবেনই৷ তারা যেন পাগল হয়ে গেছেন৷’’

মাওয়া ও পাটুরিয়া এলাকা সরেজমিন দেখে আসা কয়েকজন সাংবাদিকের সাথে কথা বলে জানা যায়, এখানে অপেক্ষমানদের কথা হলো ঢাকায় থাকার মতো তাদের অবস্থা নেই৷ বাসা ভাড়া দিতে পারেন না ৷ কোনো আয় নেই, বাড়ি যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই৷ আবার কেউ কেউ বলছেন, গ্রামে চলে যাই, ঈদ করি৷ সেখানেই থাকবো৷ ঢাকায় করোনার রিস্ক বেশি৷

তাদের অনেকেই সপরিবারে এমনকি শিশুদের নিয়েও রওনা হয়েছেন৷ গত দুই দিনে প্রচুর মানুষ ব্যক্তিগত যানবাহন ও ভাড়া গাড়ি নিয়ে ঢাকা ছেড়েছেন৷

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দেশের দক্ষিণাঞ্চলে যাওয়ার মাওয়া ও পাটুরিয়া ফেরি বন্ধ থাকলেও প্রচুর মানুষ সুপার সাইক্লোন আমফানের মুখেও স্পিডবোট ও ইঞ্জিন চালিত নৌকায় করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হচ্ছেন৷

আমাদের দিক থেকে কোনো ত্রুটি ছিলোনা: পুলিশের এআইজি

This browser does not support the audio element.

এদিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কেও পাবলিক বাস ছাড়া প্রুর ব্যক্তিগত ও বিকল্প যানবাহন দেখা যায়৷ তবে ঢাকার প্রবেশ ও বের হওয়ার পথগুলোতে পুলিশ চেকপোস্টে মঙ্গলবার কড়াকড়ি করায় অনেক যানবাহনকে আবার ঢাকায় ফিরে আসতে হয়৷ ফলে ঢাকার প্রবেশ পথগুলোতে তীব্র যানজট দেখা দেয়৷

আইজিপির ঘোষণার পরও কেন এমন হলো:
পুলিশপ্রধানের ঘোষণার পরও এই পরিস্থিতি কেন হলো? ব্যবস্থপনায় কি কোনো ত্রুটি ছিলো? জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) মো. সোহেল রানা বলেন, ‘‘আমাদের দিক থেকে কোনো ত্রুটি ছিলোনা৷ আমরা ঢাকার প্রবেশ ও বের হওয়ার পথগুলোতে চেকপোস্ট বসানোর পর মানুষ বিকল্প পথ ব্যবহার করেছে৷ আমরা আগে এটা ভাবতে পারিনি৷ আর লোকজন অ্যাম্বুলেন্স করে, জরুরি সেবার যানবাহনে করে, নানা অজুহাতে ব্যক্তিগত যাবাহনে ঢাকার বাইরে গেছে৷ তবে বড় একটি অংশ ঢাকার ছেড়েছে সাধারণ ছুটির মেয়াদ বাড়ানোর পরপরই৷ তবে এখন ঢাকাসহ সারাদেশে চেকপোস্টে কড়াকড়ি বাড়িয়েছি৷ পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে৷ আমাদের নির্দেশনা হলো আন্তঃজেলা ও জেলার ভেতরে জরুরি সেবা ছাড়া কোনো মুভমেন্ট হবেনা৷ এটা করতে আমরা প্রয়োজনে আইন প্রয়োগ করব৷’’

১৬ মে’র ছবিঘরটি দেখুন...

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ