1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফের আন্দোলনে আন্না হাজারে, তোপ মোদীকে

১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০

ছ'বছর পর ফের রাজনীতির আঙিনায় আন্না হাজারে। এ বারে কৃষকদের দুর্দশা নিয়ে অনশনে তিনি। মুখ খুললেন বিজেপির বিরুদ্ধেও।

ছবি: dapd

২০১৪ সালে তাঁকে ঘিরে তোলপাড় হয়েছিল দেশ। লোকপালের দাবিতে দিল্লির ময়দানে ঝড় তুলেছিলেন আন্না হাজারে। অনির্দিষ্ট কালের জন্য অনশন আন্দোলনে বসেছিলেন। মাঝে কেটে গিয়েছে ছ'বছর। ফের মহারাষ্ট্রে অনশনে বসেছিলেন তিনি। দিন কয়েক আগে অনশন ভাঙলেও এখনও আন্দোলন জারি রেখেছেন। এ বার তাঁর দাবি কৃষকদের স্বার্থে। তবে সেই আন্দোলনের মঞ্চ থেকে আশি পার করা প্রৌঢ় যা বলেছেন, বর্তমান রাজনীতির প্রেক্ষাপটে তা অভূতপূর্ব। আন্না বলেছেন, ২০১৪ সালে তাঁর আন্দোলনকে হাতিয়ার করেই ক্ষমতায় এসেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। তিনি বিষয়টি সে সময় বুঝতে পারেননি। বুঝলে, এমনটা হতে দিতেন না।

জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে মহরাষ্ট্রে নিজের গ্রামে অনশনে বসেছিলেন আন্না হাজারে। জানিয়েছিলেন, কৃষকদের সমস্যার সুরাহা না হলে তিনি অনশন ভঙ্গ করবেন না। লাগাতার অনশনে শারীরিক অবনতিও হয় অশিতীপর বৃদ্ধের। দ্রুত ওজন কমতে থাকে। পরিস্থিতি বুঝে তাঁর সঙ্গে কথা বলতে রাজি হন কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি মন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমার এবং মহারাষ্ট্র সরকার। গত সপ্তাহে সেই বৈঠক হওয়ার পরে অনশন ভঙ্গ করেন আন্না। কিন্তু আন্দোলন থেকে এখনও সরে আসেননি। দিন কয়েক আগে তিনি ফের জানিয়েছেন অহিংস আন্দোলন শুরু করবেন। তাঁর বক্তব্য, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তাঁর সঙ্গে কথা বললেও এখনও পর্যন্ত লিখিত আশ্বাস দেননি। যতক্ষণ পর্যন্ত তিনি তা দিচ্ছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত তাঁর মুখের কথাকে সত্য বলে ধরে নেওয়া সম্ভব নয়।

২০১১ সালের ছবিতে আন্না হাজারেকে কেজরিওয়ালকে জুস পান করাতে দেখা যাচ্ছেছবি: AP

মহারাষ্ট্রে ওই বিক্ষোভেই আন্না ২০১৪ সালের প্রসঙ্গ তোলেন। বলেন, লোকপালের দাবিতে তাঁর সেই আন্দোলনকে রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহার করেছিলেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং নরেন্দ্র মোদী। বস্তুত, দেশের প্রায় সমস্ত রাজনৈতিক বিশ্লেষক এক কথায় স্বীকার করে নেন যে, কেজরিওয়াল আন্নার আন্দোলনের ফসল। আন্নার আন্দোলনে যোগ না দিলে কেজরিওয়াল আজ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হয়তো হতেই পারতেন না। অন্য দিকে, বিজেপিও ২০১৪ সালে আন্নার আন্দোলনকে কংগ্রেস বিরোধী আন্দোলনের মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করেছে। সে সময় আন্নার মঞ্চে যাঁদের দেখা যেত পরবর্তীকালে তাঁদের অনেককেই বিজেপিতে যোগ দিতে দেখা গিয়েছে।

রাজনৈতিক ভাষ্যকার এবং আন্নার রাজনীতি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ সুনীল চাওকের বক্তব্য, ''আন্নাকে একাধিকবার আরএসএস ব্যবহার করেছে। আরএসএস প্রকাশ্যে বহু সময় আন্নার আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছে। ফলে তারা এবং বিজেপি যে আন্নাকে ব্যবহার করেছে, এতে কোনও গোপনীয়তা নেই। আন্নার বিষয়টি বুঝতে কেন এত দিন সময় লাগল, সেটাই খানিক আশ্চর্যের।''

কংগ্রেস অবশ্য আন্নার এই বিবৃতিকে রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে। কংগ্রেস নেতা শুভঙ্কর সরকার ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ''আমরা সে সময়ই বলেছিলাম যে তাঁর রাজনীতিকে বিজেপি ব্যবহার করছে। কিন্তু আন্না তখন আমাদের কথায় গুরুত্ব দেননি। আমরা তাঁর অহিংস আন্দোলনের বিরোধিতা আগেও করিনি, এখনও করব না। তবে সত্যিই যদি তাঁর বোধদয় হয়ে থাকে, তবে সংবিধান বাঁচানোর আন্দোলনে তিনি সামিল হন।'' কংগ্রেস এবং এনসিপি এর আগে একাধিকবার অভিযোগ করেছে, আন্না আসলে আরএসএসের হয়ে কাজ করেন৷

সিএএ নিয়ে দেশ জুড়ে যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, তা নিয়ে অবশ্য এখনও পর্যন্ত নিজের মতামত জানাননি আন্না। তাঁর বক্তব্য কেবলমাত্র কৃষকদের দুর্দশা নিয়ে। রাজনৈতিক মহলের একাংশের প্রশ্ন, গত ছ'বছরে কার্যত আড়ালে থাকার পরে এই উত্তাল সময়ে ফের কেন রাজনীতির আলোকবৃত্তে নেমে পড়লেন আন্না? এই আন্দোলন জারি রেখে ফের কী দিল্লির বুকে নতুন কোনও ঝড় তোলার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর? উত্তর দেবে সময়।

এসজি/জিএইচ (ইন্ডিয়া টুডে, এনডিটিভি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ