নতুন বছরে এই নিয়ে ছয়বার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করল উত্তর কোরিয়া। বৃহস্পতিবার দুইটি ব্যালিস্টিক মিসাইল পরীক্ষার কথা জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া।
বিজ্ঞাপন
দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফ অফ স্টাফ বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বিবৃতি জারি করে বলেছেন, ফের ব্যালিস্টিক মিসাইল পরীক্ষা করেছে উত্তর কোরিয়া। তাদের বক্তব্য, উত্তর কোরিয়ার পূর্বে সমুদ্রে দুইটি মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়েছে। দুইটি মিসাইলই প্রায় ১৯০ কিলোমিটার দূরে গিয়ে সমুদ্রে মিশে যায়। ২০ কিলোমিটার উচ্চতায় পৌঁছেছিল মিসাইল দুইটি।
উত্তর কোরিয়াকে কাবু করতে জাতিসংঘের কিছু ‘অস্ত্র’
পারমাণবিক অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার কোনো তোয়াক্কাই করছে না উত্তর কোরিয়া৷ দেশটির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান রয়েছে তাই জাতিসংঘেরও৷ দেখা যাক, কত রকমের নিষেধাজ্ঞার বেড়াজালে আটকা পড়েছে উত্তর কোরিয়া৷
ছবি: Reuters/S. Sagolj
কয়লা এবং লোহার ওপর নিষেধাজ্ঞা
২০১৭ সালের আগস্ট মাসে উত্তর কোরিয়ার ওপর সব ধরনের কয়লা, লোহা এবং লোহার আকরিক আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে জাতিসংঘ৷ওপরের ছবিতে উত্তর কোরিয়ার সীমান্ত সংলগ্ন ড্যানডং শহরের লিয়াওনিং গ্রিনল্যান্ড এনার্জি কয়লাখনি৷ খনিটি অবশ্য চীনের৷
ছবি: Reuters/B. Goh
মুদ্রায় নিষেধাজ্ঞা
বিদেশে কোনো ব্যাংক খুলতে পারে না উত্তর কোরিয়া৷ এমনকি জাতিসংঘের কোনো সদস্য দেশ যাতে পিয়ংইয়ংয়ের জন্য লাভজনক কোনো আর্থিক লেনদেন বা চুক্তিতে না যায়, নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে সে বিষয়টিও নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছে জাতিসংঘ৷ জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়েছে, কোনো দেশের নাগরিক যদি উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে এমন কোনো ব্যবসায়িক যোগাযোগ স্থাপন করে, তাহলে সংশ্লিষ্ট দেশটিকে অবশ্যই ওই নাগরিককে বহিষ্কার করতে হবে৷
ছবি: Mark Ralston/AFP/Getty Images
জাহাজ চলাচল
ছবির এই জাহাজটি উত্তর কোরিয়ার৷ ২০১৬ সালের মার্চে ফিলিপাইন্সে এটিকে থামানো হয়৷ উত্তর কোরিয়ার কোনো জাহাজে পণ্য পরিবহনও নিষিদ্ধ করেছে জাতিসংঘ৷ এমনকি পিয়ংইয়ংযে নিজেদের জাহাজে অন্য দেশের পতাকা লাগিয়ে কাজ চালাবে, সেই পথও বন্ধ৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/J. Dumaguing
আকাশেও নিষেধাজ্ঞা
উত্তর কোরিয়ার জাতীয় এয়ারলাইন্স ‘এয়ার কোরিও’ অবশ্য পুরোপুরি নিষিদ্ধ নয়৷ এখনো তাদের বিমান রাশিয়া আর চীনে যাওয়া-আসা করে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Yonhap
জ্বালানিতেও...
২০১৭ সালের ডিসেম্বরে জাতিসংঘের আরোপ করা নিষেধাজ্ঞার পর থেকে জ্বালানি আমদানিতেও কঠোর বিধিনিষেধের আওতায় উত্তর কোরিয়া৷ ফলে জনজীবনেও এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে৷ নিষেধাজ্ঞার কারণে বছরে মাত্র ৪০ লক্ষ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল আমদানি করতে পারে উত্তর কোরিয়া৷ তাই সে দেশের নাগরিকদের প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম ডিজেল এবং কেরোসিন পেয়েই খুশি থাকতে হয়৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Ralston
বিদেশে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং স্থাবর সম্পত্তি
উত্তর কোরিয়ার কূটনীতিকদের ওপরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে জাতিসংঘ৷ জার্মানিসহ এখনো হাতে গোনা যে কয়েকটি দেশে উত্তর কোরিয়ার দূতাবাস আছে, সেখানে উত্তর কোরীয় কূটনীতিকরা চাইলেও একটার বেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন না৷ দেশের বাইরে দূতাবাস ছাড়া আর কোনো কাজে ঘর ভাড়াও করতে পারে না উত্তর কোরিয়া৷
ছবি: picture alliance/dpa/S.Schaubitzer
সামরিক প্রশিক্ষণ
কোনো দেশ উত্তর কোরিয়ার সামরিক বাহিনী, পুলিশ, বা আধা সামরিক বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিতে পারে না৷ এ বিষয়েও রয়েছে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা৷
ছবি: Reuters/S. Sagolj
কিম জং উনের মূর্তি
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের আবক্ষ মূর্তি দেখতে বা পছন্দের কোনো জায়গায় রাখতে চান? তা জাতিসংঘের একেবারেই কাম্য নয়৷ তাই উত্তর কোরিয়ার ওপর যে কোনো ধরনের মূর্তি বিক্রিতেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে জাতিসংঘ৷
ছবি: picture alliance/dpa/robertharding
8 ছবি1 | 8
উত্তর কোরিয়া এখনো পর্যন্ত নতুন মিসাইল পরীক্ষার সত্যতা স্বীকার করেনি। তবে এর আগে এবছর একাধিক মিসাইল পরীক্ষার কথা জানিয়েছিল উত্তর কোরিয়া। নতুন বছরে এই নিয়ে ছয়বার মিসাইল পরীক্ষা করল তারা। এর আগে সুপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা তারা করেছিল বলে সংবাদমাধ্যমকে জানানো হয়েছিল।
২০১৯ সালে শেষবার এভাবে ঘনঘন মিসাইল পরীক্ষা করেছিল কিম জং উনেরপ্রশাসন। ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পর অস্ত্রের ক্ষমতা দেখাতে শুরু করেছিল তারা। বস্তুত, একবার আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পরে ট্রাম্পও আর কিম জংয়ের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব দেননি।
বাইডেন ক্ষমতায় আসার পরে ফের কিমের সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু অ্যামেরিকার শর্ত, প্রথমে উত্তর কোরিয়াকে ঘনঘন অস্ত্র পরীক্ষা বন্ধ করতে হবে। তাদের পরমাণু অস্ত্রের সম্ভার ধ্বংস করতে হবে। উত্তর কোরিয়া পাল্টা জানিয়েছে, তাদের উপর থেকে একাধিক নিষেধাজ্ঞা আগে তুলতে হবে। তারপর আলোচনার রাস্তা খুলবে। বস্তুত, কিছুদিন আগেও উত্তর কোরিয়ার একাধিক প্রশাসনিক কর্মকর্তার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে অ্যামেরিকা।