কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার অফিস যাত্রীরা সহ অধিকাংশ মানুষই মেট্রোর উপর নির্ভরশীল। তাই অফিস টাইমে মেট্রোর যান্ত্রিক ত্রুটি হলে যাত্রীরা চরম বিপদে পড়েন।
একদিকে মাত্রাতিরিক্ত গরম, অন্যদিকে মেট্রো বিভ্রাট। সব মিলিয়ে হাঁসফাঁস অবস্থা পথচলতি মানুষজনের। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে যে, মাটির নীচে মানুষের সফরের নিশ্চয়তা কতটা?
মেট্রো বিভ্রাট
মঙ্গলবার সপ্তাহের দ্বিতীয় কাজের দিন। সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ দমদম থেকে কবি সুভাষ স্টেশনের দিকে রওনা দেয়া একটি মেট্রো হঠাৎই দাঁড়িয়ে পড়ে শোভাবাজার স্টেশনে। মেট্রো সূত্রে খবর, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণেই মেট্রো আটকে যায় মাঝপথে। ফলে বন্ধ করে দিতে হয় ওই রুটের পরিষেবা।
এর জেরে মেট্রোর আপ এবং ডাউনলাইনে ট্রেন চলাচল বেশ ব্যাহত হয়। অফিস টাইমে অল্প সময়ের ব্যবধানে মেট্রো থাকায় পরপর সেগুলি দাঁড়িয়ে পড়ে, যার জেরে নাজেহাল হন যাত্রীরা। মেট্রোর তরফে আংশিক পরিষেবা দেয়া হলেও সমস্যা তখনই কাটেনি।
কলকাতার বৌবাজারে মেট্রোর সুড়ঙ্গ খুঁড়তে গিয়ে প্রচুর বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাসিন্দাদের সরিয়ে দেয়া হয়। এখন তাদের বাড়ি করে দিচ্ছে তারা।
ছবি: Subrata Goswami/DW
বাড়ি ভেঙে পড়েছিল
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর নির্মাণ-পর্বে সুড়ঙ্গ-বিপর্যয়ের জেরে বৌবাজারে একাধিক বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল । ঘরছাড়া হয়েছিল বহু পরিবার। ২০১৯ সালে বৌবাজারে একের পর এক বাড়িতে ফাটল দেখা দেয়। হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছিল দুর্গা পিতুরি লেন আর কাঁসারিপাড়া লেনের বেশ কিছু বাড়ি।
ছবি: Subrata Goswami/DW
সুড়ঙ্গে ওয়াটার পকেটের জন্য বিপত্তি
শিয়ালদহ থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত সুড়ঙ্গ গিয়েছে এই এলাকার মাটির ২০ মিটার নীচ দিয়ে। দুর্গা পিতুরি লেনের মাটির নিচে একটি বক্স তৈরির পরিকল্পনা করা হয়, যে বক্সে শিয়ালদহ এবং এসপ্লানেড থেকে আসা সুড়ঙ্গ মিলিত হবে। ২০১৯-এ সেই বক্সের একেবারে তলায় জল চুঁইয়ে মেট্রোর সুড়ঙ্গে ঢুকে পড়ার জেরে তৈরি হয় ওয়াটার পকেট।
ছবি: Subrata Goswami/DW
সুড়ঙ্গের মুখ বন্ধ করতে হয়
এসপ্লানেডের দিক থেকে সুড়ঙ্গ নির্মাণের কাজ শুরু হওয়ার পরে মাটি ফুঁড়ে উপরে আসা জলের তোড়ে ২০১৯ সালের ৩১ অগস্ট দুর্গা পিতুরি লেনের কাছে থেমে গিয়েছিল টিবিএম ‘চণ্ডী’। সে সময়ে জল রুখতে চণ্ডী-সহ সুড়ঙ্গের মুখ বন্ধ করে দিতে হয়।
ছবি: Subrata Goswami/DW
বহু বাড়িতে ফাটল
এলাকার অনেক বাড়িতে এবং রাস্তায় ফাটল দেখা যায়। সে যাত্রায় পর পর কংক্রিটের স্তম্ভ তৈরি করে সমস্যা রোখা গিয়েছিল।
ছবি: Subrata Goswami/DW
আট মাস পর আবার
২০১৯-এর পর ২০২২। দুই বছর আট মাস বাদে সেই সমস্যাই ফিরে আসে। মধ্যরাতে ঘর ছাড়তে হয়েছিল কলকাতার দুর্গা পিতুরি লেনের বসতবাড়ির বাসিন্দাদের। অনেকেই ঘুমচোখে সেদিন বের হয়ে এসেছিলেন সামান্য জিনিসপত্র নিয়ে। আবার কাঠগড়ায় ওঠে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের কাজ।
ছবি: Subrata Goswami/DW
একই সমস্যা
বিশেষজ্ঞেরা বলেছেন, আগের অংশ দিয়েই নতুন করে জল চুঁইয়ে ঢুকে পড়ছে মেট্রোর জন্য তৈরি সুড়ঙ্গে। ভূমিতলে বদল এসেছে। তারই প্রভাব পড়ছে ভূপৃষ্ঠের উপর দাঁড়িয়ে থাকা বাড়ি কিংবা রাস্তায়। ফাটল ধরছে তাতে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
একই বাড়িতে আবার ফাটল
দেখা যাচ্ছে, আগের বার যে বাড়ির যে যে অংশে ফাটল দেখা গিয়েছিল, এ বারও সেখানেই নতুন ফাটল ধরেছে। পাশাপাশি কয়েকটি ফাটলের দাগ একেবারেই নতুন। পুরনো ক্ষত সারার আগেই আবার নতুন ফাটল।
ছবি: Subrata Goswami/DW
থমকেছে মেট্রোর কাজ
স্তূপীকৃত কংক্রিট কেটে মেঝে ঢালাইয়ের কাজ করতে গিয়ে বার বার থমকে গিয়েছে মেট্রোর কাজ। ওই অংশে হাত দিলেই জল বেরোনোর আশঙ্কায় কাজ থামাতে হয়েছে বহুবার। এমনকি যে অংশে কাজ হচ্ছে, সেখানে দুর্গা পিতুরি লেনের দিক থেকে জল ঢোকা ঠেকাতে মাটির নিচে টন টন কংক্রিট পাঠিয়েও পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
ছবি: Subrata Goswami/DW
নিরাপদ আশ্রয়ে
মেট্রোর পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত সব বাড়ির বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। চার বছর পরেও তারা এখনও নিজেদের বাড়ি ছেড়ে অন্যত্রই বসবাস করে চলেছেন।
ছবি: Subrata Goswami/DW
সুড়ঙ্গের কাজ
বৌবাজার এলাকায় মেট্রোর সুড়ঙ্গের নির্মাণকাজ প্রায় সম্পূর্ণ হয়ে আসায় গত ডিসেম্বর মাস থেকেই বাসিন্দাদের সমস্যা মেটানোর ক্ষেত্রে তৎপরতা বেড়েছে মেট্রো কর্তৃপক্ষের। বাড়ি ভেঙে পড়ার জেরে এখনও ঘরছাড়া পরিবারগুলি আশার আলো দেখতে শুরু করেছে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
মেরামত চলছে
ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি মেরামতির কাজে হাত দিয়েছেন মেট্রোর নির্মাণ সংস্থা কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেড (কেএমআরসিএল)-এর কর্তারা। দীর্ঘ দিনের পুরনো বাড়িগুলি বিভিন্ন সময়ে নানা ভাবে ফাটলের কবলে পড়েছিল। মেট্রো কর্তৃপক্ষ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সংশ্লিষ্ট বাড়িগুলি সম্পূর্ণ মেরামত করে ফিরিয়ে দেওয়া হবে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
নতুন ২৬টি বাড়ি
ভেঙে পড়া ২৬টি বাড়ি মেট্রো কর্তৃপক্ষ পুনর্নির্মাণ করে দিচ্ছেন। মালিকদের সম্মতিক্রমে ওই ২৬টি বাড়ির নকশা তৈরি করা হয়েছে। কলকাতা পুরসভার মাধ্যমে সেই নকশা অনুমোদনের কাজও প্রায় সম্পূর্ণ। আগামী এপ্রিলে ওই সব বাড়ির নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার কথা। নির্মাণ শুরু হওয়ার পরে কাজ শেষ হতে আরও বছর দুয়েক লাগতে পারে। এই কাজের জন্য নির্দিষ্ট সংস্থাকে বরাত দেয়া হয়েছে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
ভূমিপুজো হলো
সেই সূত্রে কেএমআরসিএল এবং কলকাতা পুরসভার উদ্যোগে গত রবিবার ভূমিপূজার আয়োজন করা হয়েছিল। ক্ষতিগ্রস্থ বাড়ির লোকজনেরা অংশগ্রহণ করেছিলেন। তাদের আশা এবার হয়ত তাদের পূর্বপুরুষের বাড়ির পুননির্মাণ কাজ শুরু হবে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
সময় লাগবে
এলাকার কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে জানান, এই মেট্রো প্রকল্পের জন্য এলাকার মানুষের প্রাণ চলে গিয়েছে। ধ্বংস হয়েছে বসতবাড়ি। যদিও নবনির্মাণের কাজে সময় লাগবে, তবু শুরু তো করা গেল।
ছবি: Subrata Goswami/DW
আশা-নিরাশার দোলাচলে
পাশাপাশি রয়েছে বিরূপ প্রতিক্রিয়াও। কেউ বলছেন লোক দেখানো, আবার কেউ আশায় রয়েছেন ভেঙে পড়া বাড়ির জায়গায় নতুন বাড়ি তৈরি হলে ফিরে পাবেন তার পুরনো প্রতিবেশীকে।
ছবি: Subrata Goswami/DW
15 ছবি1 | 15
বারবার একই ঘটনা
অতীতেও কলকাতার মেট্রোতে এরকম যান্ত্রিক ত্রুটির অসংখ্য অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে পার্ক স্ট্রিট থেকে এসপ্ল্যানেড স্টেশনের মাঝে যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা গিয়েছিল। থমকে গিয়েছিল মেট্রোরেল। তার জেরে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্কের আবহ তৈরি হয়েছিল।
গত ডিসেম্বর মাসে মেট্রোর ইতিহাসে ঘটে গিয়েছিল বেশ নজিরবিহীন ঘটনা। দক্ষিণেশ্বর দমদম লাইনে স্তব্ধ হয়েছিল মেট্রোপরিষেবা। ১৭ ডিসেম্বর তার জেরে বাতিল করা হয়েছিল ৮০টি ট্রেন। জানা গিয়েছিল থার্ড রেলে বিদ্যুৎ পরিষেবার বিঘ্নতেই এই বিপত্তি ঘটেছিল।
কলকাতা মেট্রো নিয়ে অভিযোগ অনেকদিনের। অতীতে বহুবার দেখা গিয়েছে মেট্রো থেকে ধোঁয়া বার হওয়ার ঘটনা, যা যাত্রীদের আতঙ্কিত করে তোলে।
এসপ্ল্যানেড চত্বরের অফিসে কর্মরত নিত্যযাত্রী সন্দীপ সাধু ডয়চে ভেলেকে বলেন, "প্রায়ই মেট্রোতে দেরি হয়। তবে ইদানিং মেট্রোর যান্ত্রিক ত্রুটির জন্য আমাদের আশঙ্কা হয় । ঠিকঠাক অফিসে পৌঁছতে পারব কিনা বা আদৌ মেট্রো থেকে সুরক্ষিত নামতে পারব তো?"
পরিবহন বিশেষজ্ঞ, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পার্থপ্রতিম বিশ্বাস ডয়চে ভেলেকে বলেন, "অপারেশন, মেনটেনেন্স এবং সিকিউরিটি- এই তিনটি ব্যাপারে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষকে আরো যত্নবান হতে হবে। একবিংশ শতাব্দীতে মেট্রোরেলে যান্ত্রিক ত্রুটি বারবার ঘটবে আর মানুষ তার জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা মাটির নিচে অপেক্ষা করবে- এটা হতে পারে না।"
‘মানুষ ঘন্টার পর ঘন্টা মাটির নিচে অপেক্ষা করবে- এটা হয় না’
তার পরামর্শ, "একটা মেট্রোর সঙ্গে আর একটা মেট্রোর সময়ের ব্যবধান যত কমবে, তত বেশি সতর্ক হওয়া উচিত কর্তৃপক্ষের। তারা ট্রেনের ফ্রিকোয়েন্সি বাড়াচ্ছে, অথচ মনিটরিং, রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে ভাবছে না। এটা ঘটলে এই বিড়ম্বনা বাড়বে।"
প্রযুক্তির কল্যাণে একদিকে যখন কলকাতার সবকটি করিডরে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মেট্রো চালানোর পরিকল্পনা চলছে, ঠিক এই সময়েই যান্ত্রিক ত্রুটিতে মেট্রো সফরে যাত্রী হয়রানি!
অধ্যাপক বিশ্বাস বলেন, "ছোট ছোট এই যান্ত্রিক ত্রুটিগুলো থেকেই আমাদের শিখে নিতে হবে যাতে বড় বিপর্যয় না হয়। বিশেষত এরকম সময়ে যখন বাইরে ৪০ ডিগ্রির বেশি গরম। এরকম যান্ত্রিক ত্রুটির ঘটনা মাটির তলায় ঘটলে পর্যাপ্ত ভেন্টিলেশন না থাকলে সেটা আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করতে বাধ্য।"
তার মতে, "মাটির নিচে এমন বিড়ম্বনার পরিস্থিতি তৈরি হলে যাত্রীরা শুধু বিরক্ত নয়, আতঙ্কিত হয়ে পড়বেন। কর্তৃপক্ষ যদি যাত্রী নিরাপত্তার ব্যাপারটা নিয়ে উদাসীন হয়, যে পরিমাণ নজরদারি দেওয়ার দরকার, সেটা যদি না দেয়া হয়, তাহলে আরো বড় বড় বিপর্যয় আগামী দিনে আমাদের জন্য অপেক্ষা করে আছে।"
বেলগাছিয়ার বাসিন্দা চম্পা খামরুই ডয়চে ভেলেকে বলেন, "মেয়ের কলেজের পরীক্ষার দিন মেট্রোতে যান্ত্রিক গোলযোগ হয়েছিল। পরীক্ষার হলে দেরিতে পৌঁছেছে, অনেকটা ক্ষতি হয়েছে এতে। এই সমস্যা নির্মূল হয় না কেন?"
বয়সের ভারেও মেট্রোরেল আক্রান্ত হচ্ছে।কলকাতায় তিন দশক ধরে মেট্রো চলছে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, পুরনো রেকের পরিবর্তন, পরিমার্জন দরকার। পাশাপাশি সিগন্যাল ব্যবস্থা, যাত্রী সুবিধা, মেট্রোর বিদ্যুৎবাহী ট্র্যাক ইত্যাদির দিকে নিয়মিত নজরদারি দরকার।
মেট্রোরেল কর্তাদের স্বপ্ন সফল। গঙ্গার নিচ দিয়ে ছুটলো মেট্রো রেল। বলা যায়, গঙ্গায় ডুব দিয়ে মেট্রো পৌঁছে গেল কলকাতা থেকে হাওড়ায়।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
৩৩ মিটার নিচ দিয়ে
গঙ্গার ৩৩ মিটার নিচ দিয়ে তৈরি হয়েছে টানেল। কারণ, কলকাতার গঙ্গার তলায় মাটি খুব নরম। তাই অনেকটা গভীরে না গিয়ে টানেল তৈরি সম্ভব ছিল না। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে সেই টানেল তৈরি হয়েছে। মেট্রোও ঢুকে পড়লো সেই টানেলে। ঘোষণা হলো, আপনারা এবার গঙ্গার নিচে প্রবেশ করছেন। রোমাঞ্চিত হলেন এই পরীক্ষামূলক যাত্রার সওয়ারিরা।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
কলকাতাই প্রথম
ভারতের মধ্যে কলকাতাই প্রথম, যেখানে নদীর তলা দিয়ে মেট্রো ছুটবে। এখন তার পরীক্ষামূলক যাত্রা শুরু হলো। এই বছরের শেষে বা আগামী বছরের গোড়ায় যাত্রীদের জন্য খুলে দেয়া হবে এই লাইন।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
কেমন লাগে
যখন ঘোষণা হলো গঙ্গার নিচ দিয়ে যাচ্ছে মেট্রো, তখন নিঃসন্দেহে একটা অন্যরকম অনুভূতি হয়। যে চেনা গঙ্গায় কতবার নৌকা বা লঞ্চে চড়েছি, কতবার স্নান করেছি, ঘাটের পাশে চুপ করে বসে থেকেছি, এবার পাতালপথে সেই নদীর তলা দিয়ে মেট্রোয় যাত্রায় অনুভূতিটা একেবারে অন্যরকম।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
দেখার চেষ্টা
মেট্রো তখন টানেলে ঢুকে পড়েছে, কৌতূহলী কয়েকজন যাত্রী জানালার কাচে হুমড়ি খেয়ে পড়লেন, টানেলটা কীরকম তা দেখার জন্য।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
গঙ্গার তলা দিয়ে যাত্রা শেষ
গঙ্গার তলা দিয়ে যাত্রা শেষ। লিখে দিয়েছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। টানেল শেষ হয়ে গেছে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
যাত্রা শুরু হাওড়া ময়দান থেকে
মেট্রোর এই যাত্রা শুরু হলো হাওড়া ময়দান থেকে। হাওড়া স্টেশনের পাশে। হাওড়া স্টেশন থেকেই তো ১৬৯ বছর আগে পশ্চিমবঙ্গে প্রথম রেল চলাচল শুরু হয়েছিল। হাওড়ায় স্টেশন তৈরির কাজ শেষ। ঝকঝকে স্টেশনে মোটামুটি সবকিছুই তৈরি।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
৪৫ সেকেন্ড লাগবে
যখন মেট্রো নিয়মিতভাবে চলাচল শুরু করবে তখন গঙ্গার নিচে ৫২০ মিটারের টানেল পেরোতে লাগবে ৪৫ সেকেন্ড। তবে পুরো যাত্রায় গঙ্গাদর্শনের সুযোগ হবে না। টানেল ছাড়িয়ে আসার পরেও নয়। কারণ, মেট্রো এখানে পুরোটাই চলবে মাটির নিচ দিয়ে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
ট্রেন আসবে এসপ্ল্যানেডে
হাওড়া ময়দান থেকে আপাতত ট্রেন চলবে কলকাতার অফিসপাড়া বিবাদী বাগ হয়ে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত। ফলে অফিসযাত্রীরা উপকৃত হবেন। এসপ্ল্যানেডে স্টেশন তৈরির কাজ চলছে। কয়েক মাসের মধ্যে তা তৈরি হয়ে যাবে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
নতুন অভিজ্ঞতা
যারা এই মেট্রো চালানোর দায়িত্বে আছেন, তাদের কাছেও এটা নতুন একটা অভিজ্ঞতা। সকলে মিলে পরামর্শ করছেন। সব দেখেশুনে নিচ্ছেন।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
সমস্যা বৌবাজার নিয়ে
এই ইস্টওয়েস্ট মেট্রো চলবে বিধাননগর বা সল্টলেক থেকে হাওড়া পর্যন্ত। এখন সল্টলেক থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত ট্রেন চলছে। এবার চলবে এসপ্ল্যানেড থেকে হাওড়া। কিন্তু পুরোটা কবে চলবে বলা যাচ্ছে না। কারণ, বৌবাজারে মেট্রোর কাজ নিয়ে প্রচুর সমস্যা হচ্ছে। মাঝেমধ্যেই বাড়িতে ফাটল দেখা দিচ্ছে। বাসিন্দাদের হোটেলে নিয়ে রাখতে হচ্ছে। তাদের বিকল্প বাসস্থান দেয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।