1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফের হামলা, সড়কে সশস্ত্র মহড়া

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
৫ আগস্ট ২০১৮

‘নিরাপদ সড়কের' দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর রবিবার আবারো হামলা হয়েছে৷ হামলা হয়েছে শনিবারের হামলার প্রতিবাদকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের ওপরও৷ ফটো সাংবাকিদদের মারধর করা হয়েছে পুলিশের সামনেই৷

Bangladesch Proteste von Studenten in Dhaka
ছবি: Getty Images/AFP/M. uz Zaman

রবিবার সপ্তম দিনের মতো ‘নিরাপদ সড়কে'র দাবিতে সকাল ১১টার দিকে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা শহাবাগ মোড়ে অবস্থান নেন৷ তারা গাড়ির কাগজপত্র চেক ও ট্রাফিক শৃঙ্খলার কাজ করেন৷ তাদের সঙ্গে যোগ দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েটের শিক্ষার্থীরা৷

ঘটনাস্থলে সংবাদ সংগ্রহের কাজে উপস্থিত সাংবাদিক রাফসানজানি ডয়চে ভেলেকে জানান যে, এরপর প্রায় পাঁচ হাজার শিক্ষার্থী শাহবাগ এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সায়েন্স ল্যাবরেটরি হয়ে জিগাতলা এলাকার দিকে রওনা দেয়৷ শনিবার জিগাতলা ও ধানমন্ডি এলাকায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ-যুবলীগের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটায় ওই এলাকায় আগে থেকেই সতর্ক অবস্থান নেয় পুলিশ৷

‘‘হামলাকারীরা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মী’’

This browser does not support the audio element.

তিনি বলেন, ‘‘শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকা থেকে পিলখানা পার হয়ে জিগাতলা বাসস্ট্যান্ডের দিকে গেলে পুলিশ তাদের সেখান থেকে ঘুরে চলে যেতে বলে৷ কিন্তু, তারা পুলিশের ধানমন্ডি ৩/এ সড়কে অবস্থিত আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন৷ এ সময় পুলিশ তাদের বাধা দিলে শিক্ষার্থীদের একাংশ সেখান থেকে ঘুরে সায়েন্স ল্যাবরেটরির পথ ধরে৷ পেছনের অংশ সেখানেই অবস্থান করে৷ তখন পুলিশ কয়েক রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে৷''

রাফসানজানি বলেন, ‘‘এ সময় সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে হঠাৎই ধানমন্ডি লেকের দিক থেকে একদল সন্ত্রাসী লাঠিসোঁটা, রামদা, কিরিচ ইত্যাদি নিয়ে এসে তাদের ওপর চড়াও হন৷ এ সময় ধাওয়া-পাল্টা-ধাওয়ায় ওই এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়৷ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হামলাকারীরা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মী৷''

হামলায় প্রায় একশ' শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন৷ তাদের মধ্যে ২৫-৩০ জনকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে৷

হামলাকারীদের অনেকেই ছিল মাথায় হেলমেট পড়া৷ তাদের হামলায় অনেকেরই মাথা ফেটে যায়৷ এর পরপরই সায়েন্স ল্যাবরেটরী এলাকায় যারা ফিরে যান তাদের ওপরও ব্যাপক হামলা হয়৷ জিগাতলা ও সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলকায় প্রকাশ্যেই সশস্ত্র অবস্থায় মহড়া দেয় ছাত্রলীগ যুবলীগের কর্মীরা৷ সায়েন্স ল্যাবরেটরী এলাকায় পাঁচজন ফটো সাংবাদিকসহ কয়েকজন সাংবাদিক হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন৷ বিকেল তিনটা পর্যন্ত ওই সব এলাকায় দফায় দফায় হামলার ঘটনা ঘটে৷

‘তারা রড এবং পাইপ দিয়ে আমাদের পেটায়’

This browser does not support the audio element.

হামলায় আহত ফটো সাংবাদিকরা হলেন এসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)-এর এএম আহাদ, দৈনিক বণিক বার্তার পলাশ শিকদার, নিউজ পোর্টাল বিডি মর্নিং আবু সুফিয়ান জুয়েল, দৈনিক জনকণ্ঠের জাওয়াদ ও দৈনিক প্রথম আলোর সিনিয়র ফটোগ্রাফার সাজিদ হোসেন ও  প্রতিবেদক আহম্মেদ দীপ্ত৷

এছাড়াও কয়েকজন ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফারের উপরও হামলা করেছে তারা৷ তারা হলেন, রাহাত করীম, এনামুল হাসান, মারজুক হাসান, হাসান জুবায়ের এবং এন কায়ের হাসিন৷ তারা সবাই পাঠশালার শিক্ষার্থী৷

হামলায় গুরুতর আহত বণিক বার্তার ফটো সাংবাদিক পলাশ শিকদার ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘সায়েন্স ল্যারেটরি পুলিশ বক্সের পাশে রাস্তায় আমাদের মারধর করা হয়৷ হামলাকারীরা ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয় এবং ভেঙ্গে ফেলে৷ তারা রড এবং পাইপ দিয়ে আমাদের পেটায়৷ রামদার পিছন দিক দিয়ে আঘাত করে৷''

তিনি বলেন, ‘‘আমাদের ওপর হামলার সময় পুলিশ ছিল৷ কিন্তু তারা আমাদের উদ্ধারে এগিয়ে আসেনি৷ এমনি আমরা পাশের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলেও আমাদের চিকিৎসা দেয়া হয়নি৷'' তিনি আরো বলেন, ‘‘আমাদের ওপর হামলাকারী সাতজনের ছবি আমরা তুলে রেখেছি৷''

’তাদের ওপর হামলা কারা করেছে আমরা জানি না’

This browser does not support the audio element.

তিনি আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘আমাদের ওপর শিক্ষার্থীরা হামলা করেনি৷ ধারণা করছি তারা ছাত্রলীগ যুবলীগের৷ তারা প্রকাশ্যে রাস্তায় সশস্ত্র মহড়া দিচ্ছিল৷''

রমনা জোনের উপ পুলিশ কমিশনার মারুফ হোসেন সরদার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘কোনো সাংবাদিক তাদের ওপর হামলার ব্যাপারে আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ করেননি৷ অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নিতাম৷''

ছাত্রদের ওপর হামলার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘‘বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে আমরা তাদের ছত্রভঙ্গ করেছি৷ তাদের ওপর হামলা কারা করেছে আমরা জানি না৷''

সাংবাদিকরা একটি গ্রুপের প্রকাশ্যে সশস্ত্র মহড়ার ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘‘আমরা দেখিনি৷ যারা আমাদের দিকে ঢিল ছুড়েছে আমরা তাদের ছত্রভঙ্গ করেছি৷''

এদিকে, রবিবার মিরপুর, ফার্মগেট, উত্তরা এবং বাড্ডা একায়ও শিক্ষার্থীরা সড়কে অবস্থান নেয়৷ তাদের পুলিশ ছত্রভঙ্গ করে দেয়৷ঢাকায় রবিবার থেকে পুলিশের উদ্যোগে বিশেষ ট্রাফিক সপ্তাহ শুরু হলেও সড়কে কোনো পাবলিক পরিবহণ দেখা যায়নি৷ তবে পুলিশ বক্সগুলোর কাছে স্থানীয় ছাত্রলীগ ও যুবলীগ কর্মীদের জটলা করতে দেখা গেছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ