1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফেলনা বস্তুকে শিল্পে রূপান্তরিত করেন অ্যান ক্যারিংটন

১৯ মার্চ ২০২১

শিল্পসৃষ্টি করতে কি সবসময়ে দামী রং বা মূল্যবান উপাদানের প্রয়োজন? এক ব্রিটিশ শিল্পী দৈনন্দিন জীবনের অনেক তুচ্ছ, ফেলনা বস্তুকেও অসাধারণ সুন্দর করে তোলেন৷

অ্যান ক্যারিংটন
অ্যান ক্যারিংটন ছবি: DW

অ্যান ক্যারিংটন পুরানো মুক্তা, ব্রোচ, লকেট এবং অন্যান্য গয়নাগাটি দিয়ে প্রাচীন আমলের অসাধারণ সব জাহাজের মূর্তি তৈরি করেন৷ এমন সূক্ষ্ম কাজ অত্যন্ত কঠিন পরিশ্রমের ফসল৷ যেমন বাতিল হ্যাঙার দিয়ে মুকুটের পালক৷ পুরানো বোতাম তার হাতে ক্যানভাসের উপর ডাকটিকিট হয়ে ওঠে৷

ক্যান ও বোতলের ছিপি দিয়ে ক্লাসিক ঐতিহ্য অনুযায়ী আবক্ষ মূর্তি৷ অ্যান ক্যারিংটন ফেলনা বস্তুকে শিল্পে পরিণত করেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি এমন অবহেলিত উপকরণ ব্যবহার করে সেগুলির প্রতি মানুষের নজর আকর্ষণ করার চেষ্টা করি৷ বোতাম বা বোতলের ছিপির মতো সামান্য বস্তু চোখ এড়িয়ে গেলেও আসলে কিন্তু সুন্দর৷ এমন বস্তুকে আকর্ষণীয় করে তুলে সেগুলি সম্পর্কে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দিলে ভালোই হয় বলে আমি মনে করি৷’’

তুচ্ছ বস্তুকে অসাধারণ করে তোলেন তিনি

04:25

This browser does not support the video element.

বাতিল ধাতু দিয়ে ফুলের তোড়াও তৈরি করেছেন ব্রিটেনের এই শিল্পী৷ পুরানো ছুরি, কাঁটা, চামচ বাঁকিয়ে অথবা ওয়েল্ডিং করে ফুলের পাপড়ি ও কাণ্ডে পরিণত করেন তিনি৷ বাতিল রুপোর বাসনের সেট ওয়েল্ডিং করে ফুলের তোড়াও তৈরি করেন৷ প্রাচীন তৈলচিত্র দেখে তিনি এই ভাস্কর্য তৈরির প্রেরণা পেয়েছিলেন৷

স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে অ্যান বলেন, ‘‘আমস্টারডামে রাইক্সমিউজিয়ামে একটি ফুলের তোড়া দেখে প্রেরণা পেয়ে এটি তৈরি করেছি৷ এই ‘স্টিল লাইফ’ চিত্রকর্ম থেকে প্রেরণা নিয়ে আমি একটি ভাস্কর্য তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম৷’’

এখন অ্যান ক্যারিংটনের নিজস্ব বর্ণাঢ্য ফুলের তোড়া লন্ডনের ভিক্টোরিয়া অ্যান্ড অ্যালবার্ট মিউজিয়ামে প্রদর্শিত হচ্ছে৷ এমন শিল্পকর্মের মূল্য এক লাখ ইউরো পর্যন্ত ছুঁতে পারে৷ অনেক বিখ্যাত মানুষের বাসায় ক্যারিংটনের শিল্পকর্ম শোভা পাচ্ছে৷ এমনকি ব্রিটেনের রাজপরিবারের রুচিও তিনি পূরণ করছেন৷

২০১২ সালে রানি এলিজাবেথের সিংহাসন আরোহনের ৬০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে প্রায় পাঁচ লাখ সোনালি বোতাম দিয়ে অ্যান ক্যারিংটন এক বর্নাঢ্য ব্যানার সৃষ্টি করেছিলেন৷ প্রিন্স চার্লসের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে সেটির ডিজাইন স্থির করা হয়েছিল৷ রাজপরিবারের প্রমোদ তরীর পেছনদিকে সেটি মুড়ে দেওয়া হয়েছিল৷ সেই অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিতে গিয়ে অ্যান ক্যারিংটন বলেন, ‘‘অসাধারণ দেখতে লাগছিল৷ অনেক বছর ধরে আমি বোতাম দিয়ে রানিকে নিয়ে ডাকটিকিট তৈরি করছি৷ সরাসরি তার জন্য একটি শিল্পকর্ম তৈরির সুযোগ ছিল অসাধারণ৷’’

ক্যারিংটন ইংল্যান্ডের দক্ষিণ-পূর্বে পছন্দের মারগেট শহরে ছোট ছোট দোকান ঘুরে নিজের কাঁচামাল সংগ্রহ করেন৷ কখনো নির্দিষ্ট কোনো বস্তু নজরে এলে সেটিকে ভিত্তি করে নতুন সৃষ্টির কাজে মেতে ওঠেন তিনি৷ অ্যান ক্যারিংটন জানান, ‘‘আমি শিল্পকর্মের জন্য প্রায় একইরকম উপাদান ব্যবহার করি৷ এমন কোনো জায়গায় এলে আমি জানি, যে বেশি সংখ্যায় পছন্দের বস্তু কিনতে পারবো৷ চাহিদা পূরণ করতে না পারলে ইবে ওয়েবসাইট থেকে কিনে নেবো৷ অথবা বাতিল জিনিসপত্রের গুদাম কিংবা নিলামে চলে যাব৷’’ 

প্রায় ৩০ বছর আগে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সময়ও অ্যান দৈনন্দিন জীবনের বস্তু নিয়ে কাজ করতেন৷ এমনকি টিনের মতো নানা তুচ্ছ উপকরণও তিনি কাজে লাগাতেন৷ একটি বস্তু আজও তাকে হাতছানি দেয়৷ অ্যান বলেন, ‘‘আমি আসলে কাচ নিয়ে কাজ করতে চাই৷ তাই সম্প্রতি আমি কাচ নিয়ে কাজের প্রশিক্ষণ নিয়েছি৷ কাচ ফুলিয়ে বুদবুদ তৈরি করতে পারি বটে, কিন্তু এখনো বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠি নি৷ এমন সব বস্তুর খোঁজ করে ভাবছি ক্রিস্টাল দিয়ে ফুল অথবা পারফিউমের বোতল দিয়ে বিল্ডিং ব্লক করতে পারলে দারুণ হবে৷’’

হাতে যাই পান না কেন, তিনি সৃষ্টির কাজে মেতে ওঠেন৷ অ্যান ক্যারিংটন তুচ্ছ ফেলনা বস্তুকেও সুন্দর শিল্পে পরিণত করেন৷ 

ফিলিপ ক্রেচমার/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ