এটা এখন প্রায় সবাই বলছেন যে ফেসবুক গুজবের একটি বড় জায়গায় পরিণত হয়েছে৷ আর সত্য ঘটনার চেয়ে গুজবই যেন ফেসবুকে ভাইরাল হয় বেশি৷ এই গুজবকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে অনেক অঘটনও ঘটছে৷
বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ ভোলার বোরহানউদ্দিনের ঘটনাই যদি দেখি তাহলে গুজব এবং এর পরিণতি নিয়ে কোন অস্পষ্টতা থাকার কথা নয়৷ একটি কথিত ফেসবুক ম্যাসেজকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে চারজন নিহত হলো৷ হিন্দুদের বাড়ি ঘরে হামলা হলো৷ কিন্তু যে ফেসবুক ম্যাসেজ দিয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে তার ফেসবুক আইডিটি হ্যাক হয়েছে আগেই৷ আর ওই হ্যাকড আইডি থেকে অন্যকেউ উদ্দেশ্যমূলকভাবে ধর্মীয় অবমাননার ম্যাসেজ দিয়ে তার স্ক্রিনশট ছড়িয়েছে৷ তাহলে এটা পরিস্কার যে এই গুজব ছাড়ানোর পিছনে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্বার্থ আছে৷ তাদের টার্গেট ছিলো ধর্মীয় উন্মাদনা ছড়িয়ে হিন্দুদের আক্রমণ এবং ফায়াদা লোটা৷
‘‘গুজব ছড়ানোর নতুন টুল হচ্ছে ফেসবুক’’
শুধু ভোলা নয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, রংপুর, রামু - এই সব জায়গায়ই ফেসবুকে গুজব ছড়িয়ে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে৷
অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট আরিফ জেবতিক ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘গুজব আগেও ছিলো, এখানো আছে৷ ফেসবুক আসার কারণে যে গুজব তৈরি হচ্ছে তা নয়৷ তবে ফেসবুকের কারণে গুজব ছাড়ানো সহজ হচ্ছে৷ কিন্তু গুজব প্রতিরোধেও আবার ফেসবুকেরই বড় ভূমিকা আছে৷ এখানেই গুজবের বিরুদ্ধে কথা হচ্ছে৷ যেটা গুজব সেটাকে চিহ্নিত করা হচ্ছে৷ আগে কিন্তু এই সুযোগ ছিলোনা৷''
তিনি বলেন, ‘‘ফেসবুক আসার আগে গণমাধ্যম গুজব ছড়িয়েছে৷ নব্বইয়ের দশকে ঢোল কলমি নামে পোকার আক্রমণে মানুষ মারা যাচ্ছে এই গুজব কিন্তু তখনকার একটি প্রতিষ্ঠিত দৈনিকই ছড়িয়েছিল৷ তখনতো ফেসবুক ছিল না৷''
সব বয়সী মানুষের কাছেই জনপ্রিয় এক সামাজিক মাধ্যম এখন ফেসবুক৷ যা ব্যবহার ছাড়া অনেকে একটি মুহূর্ত ভাবতে পারেন না৷ মাধ্যমটি অষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে গেছে মানুষের জীবন যাত্রার সাথে৷ যা ভালোর পাশাপাশি অনেক মন্দ প্রবণতারও জন্ম দিয়েছে৷
ছবি: Reuters/D. Ruvic
‘দ্য ফেসবুক’ থেকে শুধু ‘ফেসবুক’
২০০৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি দ্য ফেসবুক নামের একটি ওয়েবসাইট খোলেন যুক্তরাষ্ট্রের হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মার্ক জাকারবার্গ ও তার বন্ধুরা৷ শুরুতে এটি ছিল শুধু হাভার্ডের ব্যবহারকারীদের জন্য৷ ২০০৫ সালে নামের শুরুতে থাকা ‘দ্য’ ফেলে দেয় ফেসবুক৷ ২৬ সেপ্টেম্বর ২০০৬ থেকে উন্মুক্ত করে দেয়া হয় ১৩ বছরে উপরের সব বয়সীদের জন্য৷
ছবি: REUTERS
১০০০ ডলার থেকে বিলিয়ন ডলার
২০০৪ সালে যাত্রা শুরুর সময় দ্য ফেসবুকে জাকারবার্গদের বিনিয়োগ ছিল মাত্র এক হাজার ডলার৷ বর্তমানে সেই কোম্পানির বার্ষিক আয় দাড়িয়েছে পাঁচ হাজার ৫৮৩ কোটি ডলারে৷ ২০১৮ সালে তাদের নিট মুনাফা হয়েছে দুই হাজার ২১১ কোটি ডলার৷ ফোর্বসের তালিকায় সবচেয়ে দামী ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে ফেসবুক আছে শীর্ষ পাঁচে৷
ছবি: AP
বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যা
বর্তমানে বিশ্বে ফেসবুক সক্রিয় ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২২৫ কোটির বেশি৷ সাম্প্রতিক সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি ভুয়া অ্যাকাউন্ট নিয়ে বেশ চ্যালেঞ্জের মধ্যে আছে৷ চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে ২২০ কোটি অ্যাকাউন্ট এ কারণে বন্ধ করে দিয়েছে ফেসবুক৷
ছবি: Reuters/D. Ruvic
বাংলাদেশে তিন কোটি
বাংলাদেশে এই মুহূর্তে ফেসবুক ব্যবহারকারী কত তার কোন সঠিক পরিসংখ্যান নেই৷ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী দেশে তিন কোটি মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি ব্যবহার করে৷
ছবি: Getty Images/AFP/Y. A. Thu
যোগাযোগের নতুন মাধ্যম
ফেসবুক এখন সামাজিক যোগাযোগের সবচেয়ে বড় এক মাধ্যম৷ যেখানে খুজে পাওয়া যায় পরিচিত মানুষ৷ রাখা যায় তাদের খোঁজ, খবর৷ যোগাযোগের এই গণ্ডি পেরিয়ে যেতে পারে এমনকি দেশের সীমানা৷ আর এভাবে গড়ে উঠছে নতুন নতুন বন্ধুত্ব৷ বিভিন্ন বিষয়ে বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে চেনা অচেনা মানুষ সাহায্যও করছে একে অপরকে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A. Alfiky
তাৎক্ষণিক যোগাযোগ, ফোন কল
ফেসবুক অনেকের কাছে তাৎক্ষণিক যোগাযোগের এক মাধ্যমও৷ মোবাইল নেটওয়ার্কে বার্তা পাঠানোর বদলে ফেসবুকের মাধ্যমেই যোগাযোগ চলে৷ ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে এমনকি ফোনে কথা বলার কাজও সারে৷
ছবি: Imago/ZUMA Press
অনলাইন মার্কেটিং, এফ কমার্স
ফেসবুকের মাধ্যমে এখন অনেকে আয় রোজগার করছেন৷ বিভিন্ন ব্যবসায়িক পেইজ খুলে তারা নিজেদের পণ্যের বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন, সরাসরি যোগাযোগ করছেন ক্রেতাদের সাথে৷ এই ধরণের ব্যবসা পরিচিত এফ কমার্স নামে৷ ই কমার্স ব্যবসায়ীদের সংগঠন ই-ক্যাবের হিসাবে, দেশে এখন এমন প্রায় ২০ হাজার ফেসবুক পেইজ আছে৷ যার মধ্যে ১২ হাজার চালাচ্ছেন নারীরা৷
ছবি: Colourbox/T. Vitsenko
শিক্ষামূলক পেইজ
ফেসবুকে আছে বিভিন্ন শিক্ষামূলক সাইট ও গ্রুপ৷ তেমনই একটি সার্চ ইংলিশ৷ বাংলাদেশের জনপ্রিয় এই ফেসবুক গ্রুপটিকে নিয়ে একটি তথ্যচিত্রও নির্মাণ করেছে ফেসবুক বিজনেস৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Kiran
তথ্যের উৎস
ফেসবুক এখন অনেকের কাছে হয়ে উঠেছে তথ্য ও সংবাদের উৎস৷ ব্যবহারকারীরা নিজেরাই প্রত্যক্ষদর্শী হয়ে অনেক সময় বিভিন্ন খবর বা তথ্য জানাচ্ছেন৷ আবার বিভিন্ন গণমাধ্যমগুলোর পেইজ থেকেও সবশেষ খবর পাওয়া যায় ফেসবুকে৷
ছবি: picture-alliance/maxppp/P. Proust
রক্তদান
কারো জরুরি রক্তের প্রয়োজনে ফেসবুকের সহযোগিতা নিতে পারেন৷ বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশে ২০১৮ সালে ‘ব্লাড ডোনেশনস হাব' তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি৷ এতে আগ্রহী রক্তদাতারা সাইন আপ করতে পারেন৷ আর যাঁদের রক্তের প্রয়োজন, তাঁর আশপাশে রক্তদাতা কে আছেন সেই তথ্য জানাতে পারেন৷
ছবি: Fotolia
প্রতিবাদের মাধ্যম
ফেসবুক অনেকের কাছে মত প্রকাশ আর প্রতিবাদের মাধ্যমও৷ দেশের বিভিন্ন অপরাধের ঘটনায় ফেসবুকে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে৷ এতে অনেক সময় তৎপর হয় সরকার বা আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী৷ নারায়ণগঞ্জের শিক্ষক শ্যামলকান্তির অবমাননা,
সিলেটে শিশু রাজন হত্যাসহ শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ গড়ে ওঠায়ও ভূমিকা ছিল ফেসবুকের৷
ছবি: Facebook/Mushfiqur Rahim
ব্যক্তিগত সম্প্রচার মাধ্যম
অনেকের কাছে ফেসবুক হয়ে উঠেছে ব্যক্তিগত সম্প্রচার মাধ্যম৷ নিজেদের সৃজনশীল কাজ, লেখালেখি, বক্তৃতা করে কেউ কেউ এমনকি সেলিব্রেটিও বনে গেছে৷ ফেসবুকে তাঁদের লাখো ফলোয়ার বা অনুসারীও আছে৷
ছবি: Facebook/A. Sadiq
নারী অবমাননা
ফেসবুকে অনেক সময় প্রতারণা আর নিপীড়নের শিকার হন নারীরা৷ আইডি হ্যাক করে, অপ্রিতীকর ছবি ছড়িয়ে দিয়ে এমনকি পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে নারীদের ব্ল্যাকমেইল করে অনেক অপরাধী৷
ছবি: DW
অপরাধ প্রবণতা
ফেসবুক অপরাধ প্রবণতা তৈরি করছে অনেক কিশোর ও তরুণদের মধ্যে৷ ঢাকার উত্তরা এলাকায় এক কিশোর হত্যার ঘটনায় তরুণদের ফেসবুক ব্যবহারের চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে৷ তারা ফেসবুক পেজ খুলে গড়ে তোলো নানা সন্ত্রাসী গ্রুপ৷আবার ধানমন্ডিতে এক কিশোরকে আরেক কিশোর গ্রুপ মারধর করে তার ভিডিও আপলোড করে দেয় ফেসবুকে৷ তরুণদের একাংশ প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে, ব্ল্যাকমেল করতে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমটি ব্যবহার করছে৷ (প্রতীকী ছবি)
ছবি: Bangla Tribune/Humayun Masud
ভুয়া খবর ও গুজব
চলতি বছরের জুন-জুলাই মাসের দিকে ‘পদ্মা সেতুতে মানুষের মাথা লাগবে’ বলে ফেসবুকের মাধ্যমে সারাদেশে গুজব ছড়ানো হয়৷ এরপর ছেলেধরা সন্দেহে কয়েকজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে৷ গত বছর কিশোরদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনেও শিক্ষার্থী ধর্ষণের গুজবে সংঘর্ষ বাড়ে৷ ফেসবুকে হরহামেশাই এমন গুজব আর ভুয়া তথ্য ছড়াচ্ছে এক শ্রেণীর মানুষ৷
ছবি: Getty Images/AFP/P. Singh
সাম্প্রদায়িক সহিংসতা
কারো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে সেখান থেকে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে ধর্মীয় অবমাননাকর পোস্ট৷ যাকে কেন্দ্র করে তৈরি করা হচ্ছে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা৷ কক্সবাজারের রামুতে হামলা থেকে শুরু করে গত কয়েক বছরে এমন বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে৷ যার সবশেষটি হয়েছে ভোলাতে৷
ছবি: AFP/Getty Images
রাষ্ট্রীয় দমন, সন্ত্রাসীদের নিপীড়ন
ফেসবুকে মত প্রকাশ করতে গিয়ে রাষ্ট্রীয় বা সন্ত্রাসীদের নিপীড়নের মধ্যেও পড়তে হয়েছে অনেককে৷ ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের অধীনে এজন্য অনেককে জেলেও যেতে হয়েছে৷ আবার ফেসবুক স্ট্যাটাসের ভিন্ন মত সহ্য করতে না পেরে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাও ঘটেছে বুয়েটে৷
ছবি: Reuters/M. Ponir Hossain
17 ছবি1 | 17
বাংলাদেশে কয়েকমাস আগে ছেলে ধরার গুজবও এই ফেসবুকের মাধ্যমেই ছড়োনো হয়৷ পদ্মা সেতুতে শিশুর রক্ত আর মাথা লাগার ওই গুজব শুধু ফেসবুকেই সীমবাদ্ধ থাকেনি, মানুষের মুখে মুখেও ছড়িয়ে পড়ে৷ আর তার পরিণতি হয় ভয়াবহ৷ ছেলেধরা সন্দেহে অনেককেই জীবন দিতে হয় গণপিটুনিতে৷ ঢাকায় এক মা ও তার সন্তানকে স্কুলে ভর্তির খোঁজ খবর নিতে গিয়ে গণপিটুনির শিকার হয়ে জীবন দেন৷ আর ডেঙ্গু প্রকোপের সময় নানা গুজবের মধ্যে হারপিক দিয়ে মশা মারার গুজবও ফেসবুকে ভাইরাল হয়৷ তবে ফেসবুকেই আবার সেই গুজবের বিরুদ্ধেও কথা হয়৷
বিভিন্ন পর্যায়ে কথা বলে যা স্পষ্ট হয়েছে তা হলো: কিছু গুজব আছে মানুষ না জেনে এবং না বুঝেই ছাড়ায়৷ আর কিছু গুজব আছে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ছাড়ানো হয়৷ উদ্দেশ্যমূলক গুজবের পিছনে রাজনৈতিক, ধর্মীয় বা ব্যক্তিগত স্বার্থ থাকে৷ আর অদক্ষতা এবং তথ্যের সত্যতা কিভাবে নিশ্চিত করতে হয় তা জানা না থাকায় অনেকে নিজেই গুজব ছড়ানোর প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়ে যান৷
যেমন কোথাও আগুন লাগলে ঘটনাস্থলের মানুষ নানা কথা বলেন৷ হয়তো একজন শ্রমিক পোশাক কারখানার ভিতরে ১৬ জনকে পড়ে থাকতে এসে বললেন ভিতরে ১৬টি লাশ দেখেছেন৷ একজন হয়তো সেটা শুনেই না বুঝে ১৬ জন মারাগেছে বলে ফেসবুকে পোস্ট দিলেন৷
কয়েক দিন আগে ধানমন্ডির সংসদ সংদস্য শেখ ফজলে নূর তাপস ফেসবুকে অভিনন্দনের বার্তায় ভাসছিলেন৷ তাঁকে যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করা হয়েছে এই খবরে ফেসবুক পোস্টের প্রতিযোগিতা শুরু হয়৷ সবাই যেন ফেসবুকে ব্রেকিং নিউজ দিতে প্রতিযোগিতা শুরু করেন৷ কিন্তু তথ্যটি কেউ চেক করেননি৷ ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মধ্যেও ব্রেকিং নিউজ দেয়ার একটা প্রবণতা দেখা যায়৷ আর এটা করতে গিয়ে অনেকেই ভুল তথ্য পরিবেশন করেন৷
ফেসবুকে এই গুজব ছাড়ানোর জন্য বাংলাদেশে আইনগত পদক্ষেপ সরকারের দিক থেকে তেমন দেখা যায়না৷ তবে ফেসবুকে সত্য ঘটনা প্রকাশ বা সরকারের কোনো পদক্ষেপের সমালোচনা করে হামলা মামলার শিকার হওয়ার উদাহরণ অনেক৷ বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ ফেসবুকে ভারতের সাথে চুক্তির সমালোচনা করার কারণেই নির্যাতন এবং হত্যার শিকার হয়েছেন৷ ক্ষমতাবানদের নিয়ে কথা বলে কটূক্তির অভিযোগে অনেককেই জেলে যেতে হয়েছে৷ কিন্তু ধর্ম অবমাননার গুজব এপর্যন্ত যারা ছড়িয়েছে তাদের কাউকেই আইনের আওতায় আনার নজির নেই৷
‘‘ফেসবুক আসার আগে গণমাধ্যম গুজব ছড়িয়েছে’’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. জিয়া রাহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘গুজব ছড়ানোর নতুন টুল হচ্ছে ফেসবুক৷ আধুনিক এই তথ্য প্রযুক্তি ভিত্তিক মাধ্যম আমরা পেয়েছি তাকে এটা ব্যবহারের জন্য শিক্ষা এবং দক্ষতা আমাদের সবার নেই৷ যার ফলে বিপর্যয় ঘটছে৷''
তিনি বলেন, ‘‘যারা রাজনৈতিক, ধর্মীয় বা অন্যকোনো কারণে উদ্দেশ্যমূলকভাবে গুজব ছাড়ায় তারা জেনে শুনেই এটা করেন৷ তারা তখনো ধর্মীয় উত্তেজনা ছড়াতে, রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করতে বা সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে গুজব তৈরি করে৷ আর অনেক সময়ই সাধারণ ফেসবুক ব্যবহারকারী না বুঝে তাদের ফাঁদে পা দিয় গুজব ছাড়াতে ভূমিকা রাখে৷ তাই গুজব সৃষ্টিকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে৷''
প্রিয় পাঠক, আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷